In this Article
- মাতৃত্বকালীন ছুটি কি?
- মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়কাল কি?
- কখন থেকে আপনি মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়া শুরু করতে পারেন?
- কীভাবে মাতৃত্ব-কালীন ছুটির জন্য আবেদন করবেন?
- বৈতনিক ও অবৈতনিক উভয় প্রকার ছুটিরই কি মত দেওয়া হয়?
- মাতৃত্ব-কালীন ছুটি নেওয়ার সময় কোনওরকম ট্যাক্স দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি?
- আপনি 26 সপ্তাহ পরে আপনার গর্ভাবস্থাকালীন ছুটি-কে কি বাড়াতে পারেন?
- যদি আপনার মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায় কি হতে পারে?
- আপনি গর্ভবতী হওয়ার কারণে কি আপনার বস আপনার উপরে রেগে যেতে পারেন?
- গর্ভাবস্থার জন্য ছুটি নেওয়ার সময় আপনি কি কি সুবিধা গুলি পেতে পারেন?
- একটি সন্তান দত্তক নেওয়ার জন্য বা একটি পালিত শিশু গ্রহণের জন্য আপনি কি মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতে পারেন?
- আপনার কি প্রসূতি বীমার প্রয়োজন আছে এবং কীভাবে আপনি পেতে পারেন?
- মাতৃত্বকালীন ছুটির দিন শেষ হয়ে গেলে যদি আপনি কাজে ফিরে না যান তবে কি হতে পারে?
- গর্ভবতী মহিলার অধিকারের অন্যান্য সুবিধাগুলি কি কি?
- মাতৃত্বকালীন সুবিধা আইন 2017 কি?
আমাদের দেশে মাতৃত্বকালীন ছুটি আইনের সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলির সাথে আরও অনেক নতুন তথ্য ধরা পড়ার মত রয়েছে যদি আপনি গর্ভধারণের পরিকল্পনা করে থাকেন।এখানে আমরা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি আপনার গর্ভাবস্থায় সন্তান ধারণের সময় আপনি যে ছুটি গুলি পেতে পারেন সে বিষয়ে এবং তা ছাড়াও এ বিষয় সংক্রান্ত আরও অন্যান্য কিছু সাধারণ জিজ্ঞাস্য সম্পর্কে।
মাতৃত্বকালীন ছুটি কি?
মাতৃত্বকালীন ছুটি হল এমন এক ধরণের ছুটি যা গর্ভবতী মহিলাদের দেওয়া হয়ে থাকে সদ্যজাত সন্তান বা সন্তানদের যত্ন নেওয়ার জন্য তাদের শৈশবের প্রাথমিক পর্যায়ে।এটি গর্ভাবস্থার শেষ কয়েক সপ্তাহ থেকেও প্রযোজ্য হয়- যা জন্ম পূর্ববর্তীকালিন ছুটি নামেও পরিচিত।মাতৃত্বকালীন সময়ে বিরতির জন্য, কর্মচারী যে সংস্থার জন্য কাজ করে সেখান থেকে তিনি পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারিনী।
সকল ভারতীয় কোম্পানীগুলিকে মাতৃত্বকালীন ছুটির নীতিগুলি মাতৃত্বকালীন ছুটির আইন (২017 সংশোধিত) মেনে চলার জন্য খসড়া করা হয়েছে।
মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়কাল কি?
মাতৃত্বের বেনিফিট অ্যাক্ট আইন 2016 এর সংস্কারানুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় কাল আগের 12 সপ্তাহের পরিবর্তে এখন 26 সপ্তাহ করা হয়েছে।জন্ম পূর্ববর্তী প্রসব কালীন মাতৃত্বের ছুটির সময়সীমা 12 সপ্তাহ ধার্য করা হয়েছে।
দুই বা তার অধিক সন্তানের জন্মদানের ক্ষেত্রে এই মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় সীমা কম থাকে-এক্ষেত্রে মাতৃত্ব কালীন ছুটির সময়সীমা হয় 12 সপ্তাহ এবং জন্ম পূর্ববর্তী প্রসবকালীন ছুটির সময় সীমা হয় 6 সপ্তাহ।
মাতৃত্বের বেনিফিট আইনের যোগ্য হতে হলে একজন মহিলাকে গত 12 মাসের মধ্যে অন্তত কমপক্ষে 80 দিন ঐ সংস্থায় কর্মরত অবস্থায় নিযুক্ত থাকতে হবে।
দুর্ভাগ্যজনক গর্ভপাতের মত ঘটনার পরিস্থিতিতে কর্মচারীকে সেই ঘটনার তারিখ থেকে 6 সপ্তাহ পর্যন্ত ছুটিতে থাকতে দেওয়া হয়।
কখন থেকে আপনি মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়া শুরু করতে পারেন?
একজন গর্ভবতী কর্মচারী মাতৃত্বকালীন ছুটি নিতে শুরু করতে পারেন তার প্রসবের তারিখের 8 সপ্তাহ আগে থেকে।
কীভাবে মাতৃত্ব-কালীন ছুটির জন্য আবেদন করবেন?
বেশীর ভাগ সংস্থাগুলিরই ছুটির আবেদন করার জন্য তাদের নিজের নিজের আলাদা পদ্ধতি থাকে যার মধ্যে থাকে পারিবারিক কারণে ছুটি এবং মাতৃত্ব কালীন ছুটির আবেদন।মাতৃত্বকালীন ছুটি সাধারণত প্রসবের তারিখের কয়েক সপ্তাহ আগে প্রয়োগ করা হয়, মাতৃত্বকালীন ছুটির আইন এই ব্যাপারে 8 সপ্তাহের জন্য ছুটির অনুমতি দেয়।
বৈতনিক ও অবৈতনিক উভয় প্রকার ছুটিরই কি মত দেওয়া হয়?
মাতৃত্বকালীন ছুটির বর্ধিতবস্থাটি সাধারণত মা / অথবা সন্তানকে মুখোমুখি হতে হয় এমন পরিস্থির উপর নির্ভর করে।আইনানুযায়ী 26 সপ্তাহ বৈতনিক ছুটি হিসাবে ধার্য করা হয়।26 সপ্তাহের পরবর্তী যেকোন ছুটিই( যদি কর্মচারী নিয়ে থাকেন ) সাধারণত অবৈতনিক ছুটি হিসাবে ধার্য করা হয়।
মাতৃত্ব-কালীন ছুটি নেওয়ার সময় কোনওরকম ট্যাক্স দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি?
মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় একজন কর্মচারী যে বেতন পায় সেটি আয় করের জন্য বিবেচিত হবে, তিনি ট্যাক্স বন্ধনীর নিয়মের যে অবস্থানের অধীনে অবস্থান করেন তার উপরে সেটি নির্ভর করে।
আপনি 26 সপ্তাহ পরে আপনার গর্ভাবস্থাকালীন ছুটি-কে কি বাড়াতে পারেন?
যদি শারীরিক কারণে আরও অতিরিক্ত ছুটির প্রয়োজন হয়, তবে কর্মচারী তার প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র প্রদান করতে পারেন এই প্রয়োজনীয়তার জন্য,এক্ষেত্রে চিকিৎসকের থেকে একটি সার্টিফিকেট অথবা তার সমতুল্য কোনও প্রমাণপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে।আপনার কর্ম-সংস্থাটি আপনার কারণগুলিকে ভালো করে সণাক্ত করে আপনার ছুটিটিকে প্রয়োজানুযায়ী বাড়িয়ে দিতে পারেন।যাইহোক, মাতৃত্বকালীন ছুটির আইন শুধুমাত্র নির্ধারিত 26 সপ্তাহের জন্যই পূর্ণ বেতন জারি করে।
যদি আপনার মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায় কি হতে পারে?
মাতৃত্বকালীন ছুটির আইনের সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী এটিও বিধান দেওয়া হয় যে,কিছু ক্ষেত্রে কর্মচারী তার বাড়ি থেকেও কাজটি করতে পারেন ,কিন্তু এটা নির্ভর করে কাজের প্রকৃতির উপর।
আপনি গর্ভবতী হওয়ার কারণে কি আপনার বস আপনার উপরে রেগে যেতে পারেন?
উত্তর হল ‘না’।গর্ভধারণ কারুর রাগের কারণ হয়ে উঠতে পারে না।মহিলা কর্মীদের প্রতি আইন এবং কর্মক্ষেত্রে তাদের প্রতি মনোভবের অনেক অগ্রগতি হয়েছে এবং কর্মরত মহিলাদের সর্বদা বিচক্ষণতার সাথে বুঝে নিতে হবে তাদের অধিকার তাদের কর্মক্ষেত্রে তাদের গর্ভাবস্থার সময়ে।মাতৃত্বকালীন সুবিধা আইনের অধীনে,কোনও কর্মচারীকে তার গর্ভাবস্থার কারণে তার চুক্তি বন্ধ করে দেওয়া বা তাকে চাকরীচ্যুত করা বেআইনি হিসেবে বিবেচিত।
গর্ভাবস্থার জন্য ছুটি নেওয়ার সময় আপনি কি কি সুবিধা গুলি পেতে পারেন?
মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকার সময়ও, কর্মচারীদের বেতন প্রাপ্য। মাতৃত্বকালীন ক্ষতিপূরণ গণনা করা হয় তার ছুটির শুরু হওয়ার পূর্বেই তিন মাসের মেয়াদে তার গড় দৈনিক আয়ের হিসাব করে।
একটি সন্তান দত্তক নেওয়ার জন্য বা একটি পালিত শিশু গ্রহণের জন্য আপনি কি মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতে পারেন?
নবজাতককে (3 মাসের কম বয়সী শিশুকে) দত্তক নেওয়ার সময়েও মাতৃত্বকালীন ছুটির সুবিধা পাওয়া যায় তবে তার সময় সীমা হয় শিশুকে দত্তক নেওয়ার দিন থেকে 12 সপ্তাহ পর্যন্ত।তবে একটু বড় বাচ্চাদের দত্তক নেওয়ার সময় এই ছুটির কোনও বিধান নেই।
আপনার কি প্রসূতি বীমার প্রয়োজন আছে এবং কীভাবে আপনি পেতে পারেন?
সন্তানের জন্মদান একটি ব্যয়বহুল ব্যাপার হয়ে ওঠে যদি আপনি একটি প্রাইভেট বা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাকে নির্বাচন করেন।মাতৃত্বকালীন কভারেজের সাথে সংযুক্ত করা হয় সাধারণভাবে হাসপাতালে ভর্তির খরচ, প্রসবের সময় প্রাক এবং জন্মোত্তর খরচ, এবং নবজাতকের প্রথম 30 দিনের জন্য কভারেজও এর সাথে জুড়ে দেওয়া হয়। সর্বাধিক নীতি নিয়োগ-গুলি অনুযায়ী আপনার প্রসূতি বীমা দাবী করার আগে 2-4 বছর অপেক্ষার সময়সীমা ধার্য করা হয়,আবার কিছু নিয়োগ-নীতি অনুসারে এই অপেক্ষার সময়কাল 6 বছর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।গর্ভাবস্থাকে স্বাভাবিকভাবে পরিকল্পিত এবং নিয়ন্ত্রিত করার লক্ষ্যে ক্ষতিপূরণ হিসাবে উচ্চ প্রিয়ামগুলি ধার্য করা হয় সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে যায় যদি এর পরিবর্তে।বেশীরভাগ বীমা প্রদানকারী যারা মাতৃত্বের পরিকল্পনাগুলি সরোবরাহ করেন তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন নিয়মিত চ্যানেলের মাধ্যমে যেমন অনলাইনে সংযোগরক্ষাকারী হিসেবে এবং ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে।
মাতৃত্বকালীন ছুটির দিন শেষ হয়ে গেলে যদি আপনি কাজে ফিরে না যান তবে কি হতে পারে?
আপনি যদি আপনার নিয়োগকর্তার কাছে জমা দেওয়া নথির ন্যায্যতা ছাড়াই মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও পুনরায় কাজে হাজির না হন,আপনার সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার থাকবে না,যেহেতু আইনে কেবলমাত্র 26 সপ্তাহ ব্যাপী সময়কালীনের ক্ষতিপূরণ পাওয়ারই উল্লেখ রয়েছে।
গর্ভবতী মহিলার অধিকারের অন্যান্য সুবিধাগুলি কি কি?
মাতৃত্ব সুবিধা আইনে এটিও উল্লেখ করা হয় যে,মহিলাদের গর্ভাবস্থার 10 সপ্তাহ থেকে প্রসবের তারিখ পর্যন্ত তাদের কোনরকম ভারী কাজ করতে না দেওয়ার কথা যা মা এবং সন্তান উভয়ের স্বাস্থ্যের উপরেই প্রভাব ফেলে।
যদি সংশ্লিষ্ট কর্মচারীটি একই সংস্থায় 50 জনেরও বেশী কর্মচারীর সাথে কাজ করেন তবে সেক্ষেত্রে তার অধিকার আছে শিশুরক্ষা সংক্রান্ত সুবিধা-গুলি গ্রহণ করার যখন তিনি পুনরায় কাজে ফিরে যোগ দেবেন।
মাতৃত্বকালীন সুবিধা আইন 2017 কি?
যেকোন আইনি কাঠামোর ক্ষেত্রে কর্মচারীদের অধিকার রক্ষার জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটির আইনটি অপরিহার্য।মাতৃত্বের ছুটির অধিকারের সাথে সংযুক্ত রয়েছে তাদের বেতন,নিয়োগ কর্তার থেকে ক্ষতিপূরণ এবং নির্দিষ্ট কিছু বিশেষ অধিকার গর্ভবতী কর্মীর জন্য।ভারতবর্ষে, মাতৃত্বকালীন সুবিধা আইন 1961 একটি মহিলা কর্মচারীকে তার সন্তানের যত্ন নেওয়ার জন্য সময় প্রদান এবং অর্থ-সংস্থানের অধিকার প্রদান করে।আইনের সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী,মাতৃত্বকালীন সুবিধা আইন 2017,মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ 12 থেকে বেড়ে 26 সপ্তাহে দাঁড়িয়েছে,যা প্রসবের পূর্বে 8 সপ্তাহ থেকে সন্তান জন্মদানের পরবর্তী 18 সপ্তাহ পর্যন্ত ছুটির দিন ধার্য হয়েছে।
সংশোধনী আইনের ক্ষেত্রে সুযোগও বাড়িয়ে দিয়েছে।সন্তান দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং স্যারোগেটেড মায়েদেরকেও মাতৃত্বকালীন ছুটির আইনের আওতায় আত্ততাভুক্ত করা হয়েছে।50 বা তার বেশী জনগোষ্ঠীর সাথে কাজ করেন এমন মায়েদের জন্য ক্রেসে বা বাচ্চাদের যত্ন নেওয়ার ও রক্ষা করার ক্ষেত্রে সুবিধাগুলি প্রদান করাও মাতৃত্ব বেনিফিট অ্যাক্ট বামাতৃত্বকালীন সুবিধা আইন 2017 এর জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছে।
এই আইনের সংশোধনীতে মহিলা কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে তাদের মাতৃত্বের অধিকার এবং সুবিধাগুলির সাথে তাদের শিক্ষার ব্যাপারটিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতামূলক অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় যেখানে নারীরা প্রায়ই অনৈতিক কাজের অভ্যাসের শিকার হয়ে পড়েন, সেক্ষেত্রে অল্পবয়সী মায়েদের তাদের অধিকারগুলি সম্পর্কে ভালভাবে জানা অপরিহার্য যেহেতু তিনি তার সন্তানকে বড় করে তোলেন তার পেশাগত দায়বদ্ধতার সাথেই।আইনত বলতে গেলে, মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়কালের ক্ষেত্রে বিশ্বের বেশীরভাগ অংশগুলির তুলনায় ভারত অনুশীলনে বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে। যাইহোক,বিশেষকরে বেসরকারী এবং অসংগঠিত সংস্থা-গুলিতে এই নথিগুলির ক্ষেত্রে খুবই শোচনীয় অবস্থা।অতএব,সঠিক অভিমুখে মাতৃত্বকালীন ছুটির অধিকার সম্পর্কে আপনার বা আপনার প্রিয়জনের জানা সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।