দেখতে দেখতে যেহেতু আপনার সন্তান 43 সপ্তাহ বয়সী হয়ে ওঠে,সেক্ষেত্রে এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো তাকে ব্যস্ত রাখে।প্রথমত,সে চেষ্টা করে পরবর্তী মাইলস্টোনটি অর্জন করতে যেখানে সে ধারণা করতে শিখতে পারে যে সে কি কি করতে পারে এবং আপনি তাকে কি কি করার অনুমতি দেবেন। সে বিভিন্ন খাবারের বিভিন্ন স্বাদগুলোর মধ্যে যেগুলি সে পছন্দ করে এবং যেগুলি পছন্দ করে না সেটা বুঝতে শেখে, সে বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগ করতে শেখে,শব্দ প্রয়োগ করে ও শব্দ প্রয়োগ না করেও উভয় ভাবেই।আপনার সন্তান সংবেদনশীল বিকাশের একটা পর্যায়ে থাকবে, যেখানে মাথার ভিতরে তার ব্রেনের প্রসেসিং, ডাউনলোড এবং সমস্ত আপডেটগুলো ইনস্টল হবে বলতে পারার জন্য।
এই বয়সে,আপনি লক্ষ্য করতে পারেন যে,আপনি যা কিছুই করেন তার সমস্তটাই আপনার সন্তান নকল করতে চায়।যখন আপনি তাকে খাইয়ে দেন তখন সেও আপনাকে চামচে করে খাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে অথবা কম্পিউটারের কিবোর্ডে খট খট করে শব্দ করতে পারে যখন আপনি কোনো ই–মেইলে লিখতে থাকেন অথবা হয়ত বা সে আপনার হাতে এমনই ঘষে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে সাবান দিয়ে ঘষার পরিবর্তে,যখন আপনি তাকে স্নান করিয়ে পরিষ্কার করান।শিশুরা আপনাকে দেখে অনেক কিছু করতে শেখে, তাই কোনোরকম নেতিবাচক আচরণ তাকে প্রদর্শন করাবেন না যেমন তার সামনে কখনো চিৎকার করে কথা বলবেন না যেহেতু তারা সেটিকেও সহজেই রপ্ত করে নিতে পারে।আপনার বাচ্চার কাছে এখন তার যে জিনিস গুলো রয়েছে সেগুলির উপর তার অনুভূতির একটা ধারণা সে শুরু করতে পারবে এবং তার খেলনাগুলোকেও সে চিহ্ণিত করা শুরু করবে।এই পর্যায়ে যদি আপনি আপনার সন্তানের শরীরের অঙ্গ–প্রত্যঙ্গ গুলির নাম মুখে বলে বলে সেগুলিকে চিহ্ণিত করে তাকে দেখাতে থাকেন তবে শেষ পর্যন্ত আপনিও দেখতে পাবেন যে যখন আপনি তাকে তার হাত,পা,চোখ,নাক,মুখ দেখাতে বলবেন সে সেগুলোকে সঠিকভাবেই চিহ্ণিত করতে পারবে।সে সামাজিক ভাবেও যোগাযোগ করতে চাইবে।কিছু শিশু আবার তাদের 43 সপ্তাহ বয়সে ইতিমধ্যেই হাটতে পারে এবং সম্ভবত তারা বালিশ ও মানুষের পায়ের উপরে হামা দিতে থাকে।সুতরাং শিশুর নিরাপত্তার জন্য আপনার ঘর–বাড়ি শিশু সুরক্ষিত রাখা নিশ্চিত করুন।
এই পর্যায়ে আপনি নিম্নোলিখিত মাইলস্টোনগুলি আশা করতে পারেন আপনার শিশুর 43 সপ্তাহ বয়সে।
এই সময়ের মধ্যেই আপনার সন্তান ইতিমধ্যেই শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে ফেলে এবং তার কাপ থেকে জল–ও পান করতে পারে।আপনি যদি একজন ব্যস্ত মা হয়ে থাকেন, প্রতিবার আপনার সন্তানের জন্য বুকের দুধ পাম্প করে রাখে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই যখন আপনি অল্প সময়ের জন্য কোথাও বেড়োন।কিন্তু আপনাকে এটা ভয়ার্ত করে তুলতে পারে যখন দিনের বেলায় আপনি তার থেকে দূরে আপনার কর্মস্থানে থাকেন সেই সময়ের জন্য আপনার সন্তানের প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত বুকের দুধ মজুত করার ক্ষেত্রে অসমর্থ হলে।আপনি যদি আপনার বাচ্চার জন্য একজন তত্ত্বাবধায়কের ব্যবস্থা করতে পারেন, তবে ভয়ের নেই,তারা তাদের পদ্ধতির দ্বারাই আপনার সন্তানকে আরামে রাখবে।প্রতি 3-4 ঘন্টা অন্তর আপনার বুকের দুধ পাম্প করে বের করে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ এমনকি যখন আপনি বাচ্চার থেকে দূরে বাইরেও থাকেন, যেহেতু এই পদ্ধতিটি আপনার স্তনপূর্ণ হয়ে যন্ত্রণা হওয়াকে প্রতিরোধ করে এবং তা থেকে আপনাকে মুক্ত করে।আপনি এই দুধ আপনার বাচ্চার তত্ত্বাবধায়ককে দিতে পারেন বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য যখন আপনি বাইরে বেড়োবেন।আপনার বাচ্চার প্রয়োজন অনুযায়ী দুধের পরিমাণ হিসাব করুন।আশা করা যায় সে গড়ে 70-80 মিলিলিটার খাবে। আপনার সন্তানের তত্ত্ববধায়কটি যদি আপনার বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর আগে তাকে পিঠে চাপড় দেওয়া,দোলা দেওয়া অথবা তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করার কৌশলগুলো ব্যবহার করেন তবে তখন আপনার বাচ্চাকে একটা কাপে করে আপনার বুকের দুধটি খাওয়াতে বলুন,যখন আপনি বাইরে থাকবেন।
43 সপ্তাহ বয়সে তার শারীরিক এবং মানসিক উন্নয়ন প্রস্তুতির সময় থেকে সে রাতের বেলায় কম ঘুমাতে পছন্দ করবে।তার ঘুমে ভীষণ ভাবে ব্যাঘাত ঘটবে এবং অভিভাবক হিসেবে আপনি পুনরায় বাচ্চাকে ঘুম পাড়াবার উপায় খুঁজে পেতে মুশকিলে পড়তে পারেন।এই পর্বের মধ্যে চলার সময় আপনি কো–স্লিপিং এর অভ্যাস শুরু করতে পারেন।যার অর্থ হল আপনি আপনার সন্তানের সঙ্গে একই বিছানায় একই সঙ্গে তার নিকটে শোওয়ার অভ্যাস করবেন যাতে সে জেগে উঠলেই আপনি অবিলম্বে আপনার সাহায্যের হাত তার দিকে বাড়িয়ে দিতে পারেন তাকে পুনরায় ঘুম পাড়াবার জন্য।রাত্রিকালীন অভিভাবকত্ব পালনের এটা আরেকটা ভাল উপায় কিন্তু আপনার শিশুর একটা নিরাপদ ঘুম পথ নির্দেশিকা নিশ্চিত করার দিকে লক্ষ্য রাখবেন।
আপনার 43 সপ্তাহ বয়সী শিশুর যত্ন নেওয়ার কয়েকটি পরামর্শ এখানে দেওয়া রইল।
ডাক্তার সাধারণত আপনার সন্তানের নির্দিষ্ট 10 মাস বয়সের জন্য ডাক্তারী চেক–আপের কোনও নির্দিষ্ট সময়সূচি নির্ধারণ করবেন না।
যদি আপনার সন্তানের অ্যানিমিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় তবে ডাক্তারবাবু আপনার বাচ্চার রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেবেন তার রক্তে হিমোগ্লোবিন,আয়রণ এবং সীসার মাত্রা চেক করার জন্য।
এই বয়সে আপনার বাচ্চাকে IPV(পোলিও)ভ্যাক্সিনের তৃতীয় ডোজ এবং তার সাথে হেপাটাইটিস B ভ্যাক্সিনের (এই দুই ধরণের টিকাই বাচ্চাকে দিতে হবে তার 6-18 মাস বয়সের মধ্যে)চূড়ান্ত ডোজটি দেওয়ানো প্রয়োজন।আপনার ডাক্তারের সুপারিশের উপর ভিত্তি করে আপনার সন্তানকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাক্সিনের শট–টি–ও দেওয়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।
এখানে কিছু খেলার উল্লেখ করা হল যেগুলি আপনি আপনার 43 সপ্তাহের সন্তানের সাথে খেলতে পারেন।
শব্দের সঠিক উচ্চারণ ও অঙ্গভঙ্গীর পাশাপাশি আপনি আপনার বাচ্চাকে তাই তাই খেলাটি শেখাতে পারেন যাতে সে তার হাতের সঞ্চালন অনুশীলন করতে পারে।
আপনি এই খেলাটি আপনার বাচ্চার সাথে খেলতে পারেন যখন তাকে জামাকাপড় পড়ানো হবে,আপনি তাকে বলবেন তার হাত গুলোকে উপরে তুলতে তার মাথা দিয়ে জামাটিকে টেনে নেওয়ার জন্য।
আপনি বাড়ির মধ্যে আপনার বাচ্চার সাথে লুকোচুরি খেলতে পারেন।তবে নিশ্চিত করুন খুব বেশীক্ষণের জন্য না লুকানো এবং এই খেলাটি খেলার জন্য আপনার বাড়িটিকে শিশু সুরক্ষিত রাখার।
আপনি আপনার বাচ্চার সাথে দৌড়ানোর খেলাটি খেলতে পারেন এইভাবে যে কে কত দ্রুত ঘরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে হামা দিয়ে যেতে পারে এবং পুনরায় ফিরে আসতে পারে।এটা তার দূরত্ব ও গতির সম্পর্কে ধারণা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
এখানে কিছু সময়ের উল্লেখ করা হল যখন আপনার 43 সপ্তাহ বয়সী শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শের প্রয়োজন হবে।
43 সপ্তাহ ব্য়সে শিশুরা খেলার মুডে থাকে এবং অণ্বেষণ করতে ভালোবাসে। কিন্তু সেই সঙ্গে তার অনেক বিষয়েই ভয়–ও বৃদ্ধি পেতে থাকে যেমন – ডিশের শব্দে অথবা ভ্যাকিউম ক্লিনারের শব্দে।এটি হয় কারণ যেহেতু শিশুরা বড় হতে থাকে,তারা আমাদের পৃথিবীর ভয়ঙ্কর বস্তু গুলো সম্পর্কে আরো বেশী সচেতন হয়ে ওঠে।আপনার সন্তানের এই ভয়গুলো কাটাতে তাকে সাহায্য করার জন্য এমন কিছু ধরণের কাজ করুন যাতে ঐ ধরণের শব্দ উৎপন্ন হয় যখন সে জেগে থাকবে।অথবা অন্য উপায় হল আপনি তাকে একটা খেলনা ভ্যাকিউম ক্লিনার কিনে দিন এবং আপনার সাথে সেটিকে ব্যবহার করতে বলুন পরিষ্কার করার কাজে।এটা দেখতে ভারী মিষ্টি লাগে যখন সে আপনাকে অনুকরণ করে আপনার পাশাপাশি ঐ কাজটি করতে থাকে।এটা তার ভয় কাটাতে সাহায্য করার পাশাপাশি তার অঙ্গ সঞ্চালনার দক্ষতার বিকাশে এবং তার গতিশীলতার বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।