অভিনন্দন! আপনার ছোট্ট সোনা এখন 44 সপ্তাহে পরিণত হয়েছে।সময় খুব দ্রুত চলে যায়,ঠিক? 44 সপ্তাহে,আপনার ছোট্ট বাচ্চা এখন কিছু স্বতন্ত্র শব্দ বলতেও সক্ষম হয়ে উঠবে,সাধারণত সে সেগুলিকে তার প্রিয় খেলনাটিকে চিহ্ণিত করার জন্য ব্যবহার করবে।এমনকি আপনি তার মুখে প্রায়শই ‘দাদা‘, ‘ মামা‘- এর মত শব্দগুলোও শুনতে পেতে পারেন।এই বয়সে আপনার সন্তান স্বাধীনভাবে দাঁড়াতে ও হাঁটতে পারার ঠিক এক ধাপ আগে থাকে।যাইহোক, সে আত্মবিশ্বাসের সাথে ঘরের আসবাব পত্র ধরে ধরে সেগুলির পাশাপাশি ঘষে ঘষে ক্রুজের ন্যায় চলতে পারবে,হামাগুড়ি দিতে পারবে এবং সোজা হয়ে উঠে বসতে পারবে, এবং এগুলির সবগুলিই সে করতে পারবে নিজে নিজে।শুধুমাত্র আরো আটটা সপ্তাহ অপেক্ষা,তার প্রথম জন্মদিন পর্যন্ত!
44 সপ্তাহে,আপনার সন্তানের শব্দ ভাণ্ডার এক উন্নয়নশীল পর্যায়ে পৌঁছোবে।সে প্রায়ই আরো বেশী করে বিড়বিড় করে বকবক করতে থাকবে এবং তার প্রিয় মানুষ বা জিনিসটিকে নির্দেশ করে প্রায়ই মুখে নানারকম আওয়াজ করতে থাকবে।আপনার বাচ্চার কাছে কথা বলতে ও বই পড়তে থাকুন যাতে আপনি তার জন্য ভাষা ভিত্তিক ব্লক–গুলি তৈরি করতে পারেন।যদিও আপনার 44 সপ্তাহ বয়সী শিশুর সাথে সঠিকভাবে কথোপকথন করাটা আপনার কাছে অর্থহীন মনে হতে পারে কিন্তু আমাদের বিশ্বাস করুন,সে মন দিয়েই শুনবে এবং তার ছোট্ট মস্তিষ্কে সেই তথ্যগুলিকে মজুত করবে।যদি আপনার শিশুকে বোতলে করে খাইয়ে থাকেন,তবে এটা বোতল ব্যবহার বন্ধ করার জন্যও সঠিক সময়।আপনি তাকে স্তনদুগ্ধ পান করাতে পারেন সর্বনিম্ন 12 মাসের জন্য, কিন্তু বোতলে করে খাওয়ানোর সুপারিশ করা হয় শুধুমাত্র 12 মাসের জন্য,সুতরাং আপনার সন্তানের খাওয়ার সময়সীমা এবং আচরণের ভিত্তিতে তার এই পান করা ছাড়ানোর পদ্ধতিটি শুরু করতে পারেন।
নিচে 44 সপ্তাহ বয়সী শিশুর কিছু মাইলস্টোন উল্লেখ করা হল যেগুলি আপনি লক্ষ্য করতে পারবেন।
আপনার 44 সপ্তাহ বয়সী শিশু এই সময়ে তার বোতল থেকে কাপে এবং ফরমূলা দুধ থেকে গরুর দুধে রূপান্তরের পথে অবস্থান করবে।আপনার বাচ্চা হয়ত ফরমূলা দুধ খেতে পারে সকালে জল খাবারের সময়,মধ্য সকালে,দুপুরে মধ্যাহ্ণ ভোজে,সন্ধ্যের সময়, রাত্রে নৈশভোজের সময় এবং মধ্যরাত্রে যখন সে জেগে উঠবে সেই সময়েও।খাওয়ার সময় আপনি তাকে ফরমূলা দুধ খাওয়ানোর এবং বোতলে করে খাওয়ানোর পদ্ধতিটির পরিবর্তন করতে পারেন,যেহেতু আপনার শিশুটিকে একটি কাপ ব্যবহার করানোর জন্য একটা সহজ উপায় হিসাবে আপনি তাকে খাবার সময় নিজেই একটা কাপ দিতে পারেন।আপনার বাচ্চা বোতলের তুলনায় কাপ থেকে কম দুধ খেতে পারে,কিন্তু সেটা ঠিকই আছে।আপনার লক্ষ্য হবে পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে তাকে দুধ খাওয়ানো কমানো।খাওয়ার সময় আপনি তাকে দুধের পরিবর্তে কাপে করে জল দিতে পারেন।যদি সে মাঝরাত্রে পান করতে চায়, তবে সেক্ষেত্রে তাকে পান করানো কঠিন হয়ে উঠবে,কিন্তু আপনি চেষ্টা করতে পারেন এবং তার ঘুমের রুটিনটির পরিবর্তন করতে পারেন তার সাথে অন্য কোনো আরামদায়ক এমন অভ্যাসের পরিচয় ঘটিয়ে যেটি তাকে তার পুরানো অভ্যাস থেকে বিচ্ছিন্ন হতে সাহায্য করবে,এভাবেই ধীরে ধীরে আপনার বাচ্চার ঘুম ও বোতলের মধ্যে যোগসূত্রটি কমতে থাকবে।1 বছরে, আপনার সন্তানের শক্ত খাবার খাওয়া উচিত,তার সাথে তাকে নিয়মিতভাবে প্রতিদিন 4-6 বার দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্যদ্রব্য খাওয়ানো দরকার।যখন আপনার সন্তান 12 মাসে রূপান্তরিত হয় তাকে ফরমূলা দুধের পরিবর্তে ফুল ক্রিম দুধ দেওয়া শুরু করুন।কম ফ্যাট যুক্ত দুধে অন্যান্য জিনিসের অভাব পূরণের জন্য চিনির পরিমাণ বেশী থাকে তাই সেটা এড়িয়ে চলাই উচিত।
যদি আপনি আপনার বাচ্চাকে তার ঘুমের সময় বোতলে না খাওয়াতে চান,তবে তার সাথে এমন এক উপকরণের পরিচয় করান যা তাকে একই রকম আরামবোধ করায় যেমন একটা চূষি–কাঠি।যদি আপনার বাচ্চার ঘুমে সাহায্যের জন্য তাকে একটি চূষি–কাঠি প্রদান করেন,তবে সেটিকে তার মুখের ভিতরে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়াটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে যখন মাঝরাতে ঘুমের মধ্যে তার মুখ থেকে সেটা পড়ে যায়।ভাল খবর হল এটাই যে, 8 মাস পর থেকে আপনার বাচ্চা এটা নিজেই শিখে যাবে।আপনি পুতুলটিকে তার হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আপনার বাচ্চার মুখটিকে সেই পুতুলের মুখের দিকে পরিচালিত করে তাকে দেখাতে পারেন। এটি মাঝেমধ্যেই করুন, এবং সেও নিজে থেকেই এটা করতে শিখে যাবে।যেহেতু আপনার সন্তান এই বয়সে প্রায়ই থেকে থেকে আরো বেশী কথা বলতে পারবে ও নানারকম আওয়াজ সৃষ্টি করতে পারবে, তাই শুধুমাত্র ঘুমানোর সময়েই তাকে তার পুতুলটি দেওয়া স্থির করুন,বাকি অন্য সময়ে এটি তাকে দিলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে তার মুখ দিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে এবং তাকে বাধা দিতে থাকে তার নতুন শব্দ তালিকা খোঁজার চেষ্টা থেকে।এছাড়াও আপনার সন্তান তার দু–বছর বয়সের কাছাকাছি সময় থেকে চূষি–কাঠি ব্যবহার করা বন্ধ করবে সেটা নিশ্চিত করুন যেহেতু এই সময় থেকে সেটির ব্যবহার তার দাঁতের সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এখানে 44 সপ্তাহ বয়সী শিশুর যত্নের জন্য কিছু উপায় বর্ণিত হল যা আপনি আপনার সন্তানের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারেন।
সাধারণত ডাক্তারবাবু আপনার বাচ্চার এই পর্যায়ে তার ডাক্তারী চেক–আপের নির্দিষ্ট কোন সময়সূচি নির্ধারণ করেন না। যাইহোক, এই সময়ে তার কয়েকটি পরীক্ষা পরিচালিত হতে পারে।
যদি আপনার বাচ্চার দেহে অ্যানিমিয়া বা অন্য কোন সমস্যার লক্ষণ প্রকাশ পায় তবে তার রক্তে হিমোগ্লোবিন/আয়রণ/সীসার মাত্রা নিরূপণের জন্য ডাক্তারবাবু আপনার সন্তানের রক্ত পরীক্ষা করাতে পারেন।
6-18 মাসের মধ্যে,আপনার বাচ্চার প্রয়োজন হবে IPV(পোলিও) ভ্যাক্সিনের তৃতীয় ডোজ এবং হেপাটাইটিস B ভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত ডোজটি দেওয়ানোর।
আপনি আপনার বাচ্চার সাথে নিম্নোলিখিত খেলাগুলো খেলতে পারেন তার 44 সপ্তাহ বয়সে।এই সকল খেলা ও ক্রিয়াকলাপগুলো তার সার্বিক বিকাশে উন্নতি ঘটায়।
এই খেলাটা আপনার সন্তানকে তার বিচ্ছিন্ন–উদ্বিগ্নতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে যেহেতু সে দেখবে যে,আপনি তার কাছে–পিঠেই আছেন যখন সে আপনাকে দেখতে পায়না তখনও।যাইহোক, আপনার সন্তানকে কখনই একা ফেলে রেখে চলে যাবেন না খুব বেশী সময়ের জন্য।
আপনার শিশুর মুখোমুখি বসুন এবং একটা বল নিয়ে আপনাদের দু–জনের মাঝে গড়িয়ে গড়িয়ে খলুন।আপনি তাকে বলটাকে পুনরায় গড়িয়ে ফিরিয়ে নিতেও শেখাতে পারেন,এইভাবে সে খেলাটিকে উপভোগ করবে এবং তার সঞ্চালন দক্ষতার–ও বিকাশ ঘটবে।
একটি ছবির বই থেকে কিছু বস্তুকে চিহ্ণিত করে এবং তাদের নাম বলার মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানের সাথে এই অভিনব খেলাটি খেলুন।এভাবে আপনি আপনার বাচ্চাকে কষ্ট করে নাম গুলো শেখাতে পারেন।
এই তাই–তাই খেলার মাধ্যমে আপনি আপনার শিশুকে তার হাত সঞ্চালনা করতে এবং অঙ্গভঙ্গী–গুলি শেখাতে পারেন।এটি তার হাতের সমন্বয় দক্ষতার বিকাশে সাহায্য করবে।
আপনার বাচ্চার পিছনে ছুটুন ও তাকে ধরার চেষ্টা করুন অথবা তাকে চেষ্টা করান আপনাকে ধরার জন্য।এটি তার সঞ্চালন দক্ষতার বিকাশ ঘটাবে।যাইহোক,খুব জোরে ছোটার চেষ্টা করবেন না।
নিম্নলিখিত অবস্থায় আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করা উচিত।
সাধারণত ছোট বাচ্চাদের মাথা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় পুরু হয় সুতরাং যদি আপনার 44 সপ্তাহ বয়সী শিশুটি পড়ে যায় এবং খুব সাংঘাতিক ধরণের ব্যথা না লাগে, তবে সেটা এমন কিছুই নয় যা বুকের দুধ খাওয়ানো বা আলিঙ্গন করার মাধ্যমেই তার যত্ন কী নেওয়া যায় না!