আপনার সন্তান ইতিমধ্যেই 45 সপ্তাহ বয়সী হয়ে উঠেছে,যার অর্থ 11 মাস 2 সপ্তাহ! সে এখন বড় ছেলে এবং আরো বেশী আগ্রহী হয়ে ওঠে তার চারপাশের মানুষের তার প্রতি প্রতিক্রিয়াগুলিকে টেনে বের করে আনার ক্ষেত্রে–সে তার কাপটিকে ঠুং করে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারে অথবা আপনার চুল ধরে জোরে টেনে দিতে পারে শুধুমাত্র জোর গলায় তাকে বলা হবে– ‘না‘-এই শব্দটুকু শোনার জন্য।এছাড়াও এই বয়সে অন্য যে বৈশিষ্ট্যগুলি তাদের মধ্যে দেখতে পারেন সেগুলি হল–যখন তখন কেঁদে ওঠা,কোনো কিছুর জন্য নাছোড়বান্দা হয়ে ওঠা এবং খামখেয়ালীপনা,কিন্তু এগুলি ছাড়াও আপনার সন্তান এই সময় পর্বে আরো অতিরিক্ত মাত্রায় সুনিশ্চিত এবং যথেষ্ট স্বাধীন হয়ে ওঠে হামাগুড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে,নিজেকে টেনে উপরে তোলার ক্ষেত্রে,দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে এবং এমনকি সম্ভবত হাঁটা শুরু করার ক্ষেত্রেও।আপনার 45 সপ্তাহ বয়সী এখন থেকে হাততালি ও উড়ন্ত চুম্বন দেওয়ার একজন মাস্টার হয়ে ওঠে।সে তার মুখটিকে আপনার গালের কাছে নিয়ে যেতে পারে আপনাকে একটি চুম্বন করার জন্য,কিন্তু খুব সাবধান! এটি কিন্তু অবশেষে একটি কামড়েও পরিণত হতে পারে! সে এরকমই অদ্ভুত আচরণকারী হয়ে উঠবে এই বয়সে।
আপনার 45 সপ্তাহ বয়সী শিশু আপনার উপর নজর রাখবে, প্রায়শই তার দুটো প্রয়োজনের মধ্যে বিভ্রান্ত হয়ে উঠবে–বিচ্ছেদ উদ্বেগ এবং দৃঢ় দ্বন্দ্বপূর্ণ তার চারিপাশে ঘুরে বেড়ানো পরিবেশ অণ্বেষণের মধ্যে।সে প্রথমের মত আপনাকে মানা বন্ধ করবে–সে সব জায়গায় ঘুরে বেড়াবে তবুও ফিরে আসবে দেখার জন্য যে আপনি তখনও সেখানে রয়েছেন কিনা।সে এইভাবে আত্মবিশ্বাস অর্জন করবে কিন্তু কোথায় সে আপনাকে ছেড়ে এসেছে এবং যখন আর আপনাকে খুঁজে পায় না সে সতর্ক হয়ে উঠতে পারে।যদি আপনি মাঝে মধ্যেই তার কাছে বই পড়েন তবে সেও ভালোবাসে আপনার সাথে রঙীন বইগুলি পড়তে এবং বই থেকে কতগুলি ছবিকে চিহ্ণিত করতে পারে এবং সেগুলির নাম উচ্চারণ করার চেষ্টা করতে থাকে।বেশীরভাগ শিশুর এই বয়সটায় গোল–গাল হাত,পা,ঘটের মত পেট এর ট্রেডমার্ক হয়ে উঠতে পারে কিন্তু এর পরবর্তী কয়েক মাস থেকেই তারা রোগা হতে শুরু করে।সুতরাং আপনি যত চান এখনই তাকে আদর করে চটকে নিন।
নীচে 45 সপ্তাহ বয়সী শিশুর কিছু মাইলস্টোন উল্লেখ করা হল যেগুলি আপনি চিহ্ণিত করতে,শিখতে ও আপনার বাচ্চার উপর আশা করতে পারেন।
আপনার 45 সপ্তাহ বয়সের শিশু এখন তার একবছর সম্পন্ন করার ঠিক মাথায় অবস্থান করে , সুতরাং আপনার স্তন থেকে তাকে দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা বিবেচনা করুন।যদি আপনার কোনো তাড়াহুড়ো না থাকে এবং বুকের দুধ খাওয়ানো উপভোগ করেন, তবে যত দীর্ঘদিন আপনি চান এটি চালিয়ে যেতে পারেন।বুকের দুধ থেকেই ছোট শিশুরা প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি ও রোগ প্রতিরোধের সমর্থন লাভ করে।কিন্তু যদি আপনি একবছর বয়সে বুকের দুধ পান করানো ছাড়াতে চান, আপনার স্তন ও শরীরকে সময় দিন এই পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে।প্রতি সপ্তাহে একটি করে বুকের দুধ পান বন্ধ করানো হল তার পদ্ধতি।এখানে আপনার সন্তানকে বুকের দুধ পান করানোর কিছু পরিকল্পনা দেওয়া হল।
আপনার সন্তানকে স্তনদুগ্ধ পান ছাড়ানোর সময়, আপনি বুকের দুধের জায়গায় খাদ্য উৎস পালটে দিতে পারেন স্বস্তির জন্য।বারংবার খাওয়ার সময় বুকের দুধ পান করানোর সংখ্যা কমান আপনার স্তনের সাথে মানিয়ে নেবার জন্যে।উদাহরণ হিসেবে, আপনি এক সপ্তাহ দুপুরে খাওয়ার সময় পান করাতে পারেন আর পরের সপ্তাহে রাত্রে খাবার সময়ে পান করান,আপনি এই সময়ে তাকে একটি কাপ থেকে অন্য খাবার ও জলে পরিবর্তন করে দিতে পারেন।এছাড়াও আপনি আপনার বুকের দুধকে পরিবর্তন করে দিতে পারেন ফরমূলা দুধের সাথে।যদি আপনি এই রূপান্তরটি ভালোভাবে না করতে পারেন,তবে আপনাকে কিছুটা ঘুমের সময় ছেঁটে নিয়ে সেই সময়ে খাওয়ানোর জন্য বাচ্চাকে স্তনপান করানোর পর্যায়ে পৌঁছাতে হতে পারে।
45 সপ্তাহে শিশুদের ঘুমের ব্যাঘাত শীর্ষে পৌঁছায়।এর অর্থ হল যে আপনার সন্তান সারা রাত কাটাবে হয়ত আপনার স্তনপান করে,ঘন ঘন খাওয়াতে হবে,এটিকে ‘স্তনঘুম‘ বলা যায় না কি? এক্ষেত্রে দুটোরই সম্ভাবনা প্রবল যা মায়েদের কাছে একটা ভীষণ বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে,যতক্ষণ না বাচ্চা পুনরায় ভালোভাবে ঘুমিয়ে পড়ে আত্মসমর্পণ করাই হল সবচেয়ে ভাল উপায়।যদি আপনি এই পরিস্থিতিতে থাকেন,তবে নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে নিজেকে সমর্থন করেও যেকোনো পরিস্থিতিকে আলিঙ্গন করে সহজ করে তোলা নিশ্চিত করুন।কখনও কখনও মাঝরাতে আপনার বাচ্চাকে আপনার অন্যপাশে শুইয়ে দিন, এটি সহজ করে তোলে আপনার ভালো ঘুমের জন্য যা আপনাকে ভালোভাবে শুতে সাহায্য করে।।যদিও এই সময় পর্বটি মারাত্মক,কিন্তু এটি ক্ষণস্থায়ী।একবার আপনার সন্তান বিকাশের এই পর্যায়ের মধ্য দিয়ে গেলে,আপনি তাকে পুনরায় তার ছোটোদের খাটে শুতে ফিরিয়ে দিন অথবা পুনরায় আগের মত বিছানা ভাগ করে শোওয়া শুরু করুন।
আপনার 45 সপ্তাহ বয়সী শিশুর যত্ন নেওয়ার কিছু উপায় নিম্নে বর্ণিত হল
একজন ডাক্তার সাধারণত আপনার বাচ্চার জন্য কোনো নিয়মিত ডাক্তারী চেক–আপের সময় সূচী নির্ধারণ করেন না তার নির্দিষ্ট 10-11 মাস বয়সের জন্য।
যদি আপনার সন্তানের শরীরে অ্যানিমিয়ার উপসর্গ লক্ষ্য করা যায় তবে ডাক্তারবাবু আপনার বাচ্চার শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিন,আয়রণ এবং সীসার মাত্রা নির্ণয়ের জন্য তার রক্ত পরীক্ষা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন।এছাড়াও ডাক্তারবাবু আপনার বাচ্চার বিকাশ ট্র্যাক করার জন্য তার উচ্চতা এবং ওজন পরিমাপ করবেন।
6-18 মাসের মধ্যে আপনার বাচ্চাকে দেওয়ানোর প্রয়োজন হেপাটাইটিস B ভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত ডোজটি এবং IPV (পোলিও) ভ্যাক্সিনের তৃতীয় ডোজ–টি।পরিবেশ এবং আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে,ডাক্তারের সুপারিশ অনুযায়ী তার প্রয়োজন হতে পারে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাক্সিনের শট–টি নেওয়ার।
নীচে কিছু খেলাধূলা ও ক্রিয়াকলাপের উল্লেখ করা হল যেগুলি আপনি আপনার বাচ্চার সাথে খেলতে পারেন।
এখানে উল্লেখ করা হল কখন আপনার 45 সপ্তাহ বয়সী শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করা উচিৎ।
ঘুমের ভীষণ ভাবে ব্যাঘাত ঘটার কারণে এবং আপনার বাচ্চার দুর্বার ক্রোধের কারণে তার 45 সপ্তাহ বয়সে তাকে সামলানো খুবই কঠিন কাজ হয়ে দাড়ায়।আপনার সন্তানকে সামলানোর জন্য আপনি উপরের পরামর্শগুলো অনুসরণ করতে পারেন যতদিন না সে বিকাশের এই পর্যায় অতিক্রম করে।