আপনার 47 সপ্তাহ বয়সী শিশু অনেক বেশী বেশী শব্দ মনে রাখতে পারবে এবং ‘তোমার নাক কোথায়?’ অথবা ‘তোমার চোখ কোথায়?’—এই ধরণের প্রশ্নগুলো শুনতে ভালোবাসবে। সে হয়ত সগুলি সঠিক ভাবে সনাক্ত করতে পারবে না, কিন্তু সেগুলি প্রকাশ করার ক্রিয়াকলাপ সে পছন্দ করবে।এই পর্যায়ে, তার ব্রেনও পরিস্থিতি ও খেলাগুলোকে চিনতে শুরু করবে এবং সে তার চারপাশে আরো বেশী বেশী করে অণ্বেষণ করবে।এটা আবার ভীষণ দুর্ঘটনাপ্রবণ বয়স যেহেতু আপনার সন্তান এই সময়ে তার সর্বোচ্চ গতিবিধি অনুশীলন করবে।আপনি বেশীর ভাগ বস্তুগুলিকে বাছাই করবেন এবং আপনার উত্তেজিত টলমলমান শিশুর নাগালের বাইরে সেগুলিকে সরিয়ে দেওয়ার মত কাজে জড়িত হবেন।সে তখনও সেগুলিকে টানাটানি করার চেষ্টা করে এবং সেগুলির উপর আরোহণের দ্বারা পুনরায় ফিরে পাওয়ার পথ খুঁজে চলবে,সুতরাং একটা বিস্তৃত চোখ খোলা রাখুন।
আপনার বাচ্চাকে তার নিজের চেষ্টায় হামাগুড়ি দেওয়া থেকে ক্রুজের ন্যায় ঠেলে ঠেলে এগোনো এবং তার থেকে আবার হাঁটতে শুরু করা দেখতে পাওয়াটা সত্যই সুখকর,যেটি বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই শুরু হয় বয়সের এই পর্যায়ে।যখন সে হাঁটতে শুরু করে,উলটে যাবে এবং প্রায়ই পড়ে যাবে এবং হতে পারে সে টলমলও করতে পারে, কিন্তু সে অনবরতই তার অঙ্গবিন্যাস, তার ভারসাম্য এবং তার পেশীর শক্তির পরিবর্তনের জন্য উদ্যম হয়ে উঠবে।47 সপ্তাহ বয়সে আপনার বাচ্চার নিজের খেলনার চেয়ে বরং বড় খেলনার জন্য ঝোঁক আসবে, যেমন আপনার মোবাইল ফোন,রিমোট কন্ট্রোল অথবা ছুরি, কাঁচি।এটা হবে কারণ সে আপনাকে এই উপকরণগুলো ব্যবহার করতে দেখেছে তাই সে চাইবে আপনাকে অনুকরণ করতে।যেহেতু আপনার শিশু তার প্রথম বছরের কাছাকাছি এসে পৌঁছায়, তার ওজন কিছুটা কমে যেতে শুরু করবে,ধন্যবাদ তার দ্রুত খাওয়াকে এবং খাওয়ার সময়ে খেলে বেড়ানোকে।যদি তারা ঘুমের সময় কিম্বা প্রায় মাঝেমধ্যেই চুষি–কাঠি অথবা পুতুল ব্যবহার করে তবে সেগুলিকে ছাড়ানোর অভ্যাস শুরু করার এটাই সময়।আপনি এগুলির পরিবর্তে তাকে কিনে দিতে পারেন একটি আরামদায়ক নতুন খেলনা অথবা কম্বল,সেগুলিকে ঘুমের সময় জড়িয়ে ধরার জন্য।
নীচে 47 সপ্তাহ বয়সের কিছু মাইলস্টোন উল্লেখ করা হল যেগুলি আপনি দেখার জন্য আশা করতে পারেন।
এই সময়ে আপনার শিশুর খাদ্যে শক্ত খাবার বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে,কিন্তু সে তার প্রয়োজন অনুযায়ী বুকের দুধও পান করে চলবে অবিরত।একে বলা হয় শিশুর নেতৃত্বে স্তনদুগ্ধ পান।এমনকি আপনি যদি দ্বিতীয় বছরেও স্তনপান করানোর পরিকল্পনা করে থাকেন,আপনাকে আপনার সন্তানের খাওয়ার ধরণের কোনো পরিবর্তন করতে হবে না।প্রথম বছরে, স্তনদুগ্ধ হল আপনার সন্তানের পুষ্টির প্রধান উৎস কিন্তু যেহেতু সে তার খাবারকে শক্ত খাবারে রূপান্তর করতে শুরু করে,স্তনদুধ তার জন্য স্বান্তনা হয়ে ওঠে।খাদ্যের উৎস,হাইড্রেশন,আরামবোধ এবং অনাক্রম্যতা সমর্থনে সাহায্যকারী হিসাবে বুকের দুধ খাওয়া চলিয়ে যাওয়া আপনার সন্তানের জন্য উপকারী।পরবর্তী কালে যেহেতু আপনার বাচ্চা বেড়ে উঠতে থাকে টলমলমানকারী একজন ছোট শিশু হিসেবে তাই তার সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ,যেহেতু তার বৃহত্তর পরিবেশে পরিণত হয়ে উঠা প্রকাশ পাবে।বুকের দুধ পানকারী শিশু এবং টলমলমানকারী অপেক্ষাকৃত ছোট শিশুদের এই কারণের জন্যই অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম থাকে।এছাড়াও তারা তাদের মায়ের বুকের দুধ থেকেই প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির বেশীর ভাগটাই পেয়ে যায়।সুতরাং আপনার ও আপনার 47 সপ্তাহ বয়সী শিশুর যদি বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করার কোনো তাড়াহুড়ো না থাকে তবে যত দিন ইচ্ছে সেটি বজায় রাখতে পারেন।
অবশেষে,এই পর্যায়ে, আপনি আশা করতে পারেন আপনার সন্তানের ঘুমে কম ব্যাঘাত ঘটার এবং আরো প্রত্যাশিত ঘুমের ধরণ শুরু হওয়ার।এটি খুব দ্রুত ঘটবে না,আপনার সন্তানের ঘুমের ধরণে প্রথমের দিকে কিছুটা পরিবর্তন ঘটবে।কিন্তু সে খুব সহজেই ঘুমিয়ে পড়তে পারবে এবং পুনরায় জেগে ওঠার আগে সে দীর্ঘ সময় ধরে একটানা ঘুমাবে।আপনার শিশুর ঘুমের এই নতুন পদ্ধতির সাথে মানিয়ে নিয়ে সেই অনুযায়ী দিনের মধ্যে আপনি আপনার কাজের সামঞ্জস্য করতে পারেন।যদি আপনার সন্তান এখনো কীভাবে হাঁটতে হয় তা শেখা শুরু করে তবে আরো কিছুদিন তার ঘুমের ব্যাঘাত আপনাকে পরিদর্শন করে যেতে হবে।ঠিক এই কারণের জন্যই আপনার শিশু যখন হামাগুড়ি দিতে শুরু করে তার একমাস আগে থেকে শুরু করে তিনমাস পর পর্যন্ত আপনি তার ঘুমে বিঘ্ন ঘটতে দেখতে পারেন।যখন সে হাঁটতে শুরু করে,তার সেটি করার চাহিদা আরো বেড়ে উঠবে এবং এটি করার জন্য সে রাত্রিবেলাতেও আরো বেশী বার উঠে পড়তে পারে।এইসব ক্ষেত্রে, আপনার ধৈর্যের প্রয়োজন যত দিন না সে এই পর্যায় কাটিয়ে উঠে আরো বেশি শান্তিপূর্ণ ঘুমের পর্যায়ে ফিরে যায়।
আপনি আপনার 47 সপ্তাহ বয়সের শিশুর যত্ন নিম্নলিখিত উপায়ে নিতে পারেন।
সাধারণত ডাক্তাররা বাচ্চাদের এই বয়সে তাদের নিয়মিত ডাক্তারী চেক–আপের সময়সূচী নির্ধারণ করেন না।
ডাক্তারবাবু আপনার সন্তানের রক্ত পরীক্ষা করাতে পারেন যদি তার অ্যানিমিয়ার লক্ষণ অথবা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে তিনি রোগ নির্ণয়ের জন্য আপনার বাচ্চার রক্তে হিমোগ্লোবিন, আয়রণ, সীসার মাত্রা ঠিক আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে দেখবেন।
6-18 মাসের মধ্যে শিশুদের দেওয়ানো প্রয়োজন IPV (পোলিও) ভ্যাক্সিনের তৃতীয় ডোজ এবং হেপাটাইটিস B ভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত ডোজটি।ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাক্সিনটিকেও দেওয়ানো হতে পারে ডাক্তারের সুপারিশ অনুযায়ী।
আপনি নিম্নলিখিত খেলা ও ক্রিয়াকলাপগুলো আপনার 47 সপ্তাহ বয়সী শিশুর সাথে খেলতে পারেন।
আপনার 47 সপ্তাহ বয়সী শিশুর বিকাশের যেসব ক্ষেত্রে ডাক্তারের সাথে আলোচনার প্রয়োজন সেগুলি নিম্নরূপ।
চিন্তা করবেন না,আপনি 47 সপ্তাহ বয়সের মধ্যেই এটি তৈরী করে ফেলেছেন।এই সময়ে আপনার বাচ্চা এমন এক পর্যায়ে থাকে যেখানে তার সব কিছুই হয় উত্তেজনাপূর্নময়।এখন থেকে আপনার ও আপনার আদরের ছোট্টসোনার জীবন আরো বেশী আনন্দময় হয়ে উঠবে।