In this Article
- প্রসবোত্তর রক্ত ক্ষরণ কি স্বাভাবিক?
- লোচিয়া কি?
- লোচিয়ার প্রকারভেদ
- কারণ সমূহ
- উপসর্গগুলি
- লোচিয়া কত দিন স্থায়ী হয়?
- প্রসবের পরে রক্ত ক্ষরণ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
- আপনার রক্তপাত হতে থাকলে কীভাবে বলবেন?
- সি–সেকশন বা সিজারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসব করে থাকা মহিলাদের ক্ষেত্রে কি প্রসবোত্তর রক্তপাতটি পৃথক হয়ে থাকে?
- কখন একজন ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন?
আপনি গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি উদ্ঘাটিত হওয়ার পরে সবার প্রথম যে বিষয়টি মাথায় আসে তা হল-“পরবর্তী 9 মাসের জন্য– মাসিক বা পিরিয়ডের কোনও ঝুট–ঝামেলা নেই!”গর্ভদশার ক্রম–অগ্রগতির সাথে সাথে আপনার দেহের মধ্যেও সমানে নানা ধরনের ক্রিয়া হতে থাকে, আর এই সমস্ত ধরণের পরিবর্তনগুলি পরবর্তী 37-42 সপ্তাহের মধ্যে হয়ে থাকে।দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে এই পৃথিবীতে সন্তানের আবির্ভাব ঘটে কিন্তু আপনার শরীরের মধ্যে নানা ধরনের পরিবর্তনগুলি অব্যাহত থেকে যায়।এই সকল পরিবর্তনগুলির মধ্যেই একটি হল আপনার বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে একটি প্রলম্বিত প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ হতে থাকবে– যা লোচিয়া নামে পরিচিত।
প্রসবোত্তর রক্ত ক্ষরণ কি স্বাভাবিক?
প্রসবোত্তর রক্তপাত বা লোচিয়া হল এমন একটি প্রয়োজনীয় নিরাময় প্রক্রিয়া যা প্রসব পরবর্তীতে আপনার শরীরে হওয়া ধকল নিরাময়ে সাহায্য করে।গর্ভের মধ্যে আপনার সন্তানের পরিচর্যা করে থাকা, তাকে পুষ্টি দেওয়া অমরাটি আপনার শিশুর জন্মের পরপরই সাধারণত বেরিয়ে যাবে এবং জরায়ুর আস্তরণ থেকে পৃথক হয়ে যাবে।জরায়ুর সাথে অমরা যুক্ত থাকার জায়গায় কিছু রক্তবাহ খোলা থাকবে।আর জরায়ুর অভ্যন্তরের এই রক্তনালীগুলি থেকে রক্তপাত হতে শুরু হবে।এই রক্তই জন্ম নালিকা দিয়ে যোনিতে যাবে।আর এর সাথে থাকে জরায়ুর আস্তরণের টিস্যু বা কলাগুলি ।
লোচিয়া কি?
লোচিয়া ডিসচার্য বা স্রাব হল ঠিক মাসিকের মতই, এর একমাত্র পার্থক্য হল এই যে, এটি কিছুটা দীর্ঘতর এবং মারাত্মক প্রকৃতির বা তীব্র হয়ে থাকে।প্রসবের পরে প্রথম 2-3 দিনের জন্য ভারী রক্তপাত হবে এবং এর মধ্যে জমাট বাধা রক্তের ডেলাও থাকতে পারে।এর কয়েকদিন পর থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে প্রবাহটি ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে।প্রবাহের রঙ গাঢ় লাল থেকে বাদামি এবং অবশেষে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জরায়ু নিরাময়ের পরে হলদেটে–সাদা হয়ে যাবে।
লোচিয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে গঠিত হয়ঃ
- আলগা হয়ে যাওয়া এন্ডোমেট্রিয়াম (জরায়ুর অভ্যন্তরে শ্লেষ্মা ঝিল্লী আস্তরণ)যা গর্ভাবস্থায় তুলনামূলক যথেষ্ট পুরূ থাকে।
- জরায়ুর প্রাচীরে অমরা যেখানে সংলগ্ন ছিল, সেখানের রক্ত এবং স্রাব
- মৃত এবং নেক্রোটিক কলা সমূহ
- নিরাময়কারী সার্ভিক্স থেকে শ্লেষ্মা এবং রক্ত
- ভ্রূণের ঝিল্লি এবং এপিথেলিয়াল কোষ
যদি আপনার যোনি পথের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসব হয়ে থাকে, তবে জন্ম নালিকা মারফৎ আপনার দেহ থেকে লোচিয়া নির্গমন হবে।বেশ কয়েকটি সংকোচন হবে এবং যোনিপথের মধ্য দিয়ে এটি বাইরে বেরিয়া আসবে।আর আপনার যদি সিজারিয়ান বা অস্ত্রপচারের পর্বটি হয়ে থাকে তবে অমরা অস্ত্রপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে। যে কোনও ক্ষেত্রেই, প্রসবের পরবর্তীতে আপনি রক্তপাতের অভিজ্ঞতা পাবেন।
দয়া করে নোট করবেন যে লোচিয়া কিন্তু কোনও পিরিয়ড বা মাসিক নয়।প্রসবের পর আপনার মাসিক বা ঋতুস্রাব ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে। স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে তাদের প্রথম মাসিক শুরু হতে পারে প্রসব পরবর্তী প্রায় 6 মাসে, আর আপনি যদি ফরমূলা খাইয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনি প্রসবের 6 সপ্তাহ পরেই তা দেখতে পাবেন।
লোচিয়ার প্রকারভেদ
স্রাবের বর্ণের ওপর নির্ভর করে লোচিয়াকে তিনটি ধরণ বা পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারে।যেখানে প্রতিটি পর্যায়ের সময়ের দৈর্ঘ্য পৃথক পৃথক হবে।
-
লোচিয়া রুব্রা
এটি ভারী রক্ত প্রবাহের সাথে হয়ে থাকা একটি পর্যায় যা প্রসবের পরে প্রায় 3-4 দিন চলবে। এ সময় রক্ত স্রাবটি গাঢ় লালচে বর্ণের হয়ে থাকে।এটি প্রধাণত গড়ে ওঠে ঘন রক্তের বড় আকারে জমাট বাঁধা অংশ, ভ্রূণের ঝিল্লি, মেকোনিয়াম (নবজাতকের কালো রঙের প্রথম মল), ডেসিডুয়া এবং জরায়ুর স্রাবের সাথে।যেহেতু এই সময় জমাট বাঁধা রক্তের ড্যালাগুলি দেহ থেকে নির্গত করার জন্য জরায়ুটি ব্যাপক সঙ্কুচিত হবে তাই আপনি হয়ত মাসিক ক্র্যাম্পের মতই বেদনাদায়ক খিঁচুনিগুলি অনুভব করতে পারেন।যদি ভারী স্রাব 7 দিনের বেশি স্থায়ী হয় বা আপনার অস্বাভাবিক ভারী রক্তপাত হয় বা বড় আকারের জমাট বাঁধা রক্তের ড্যালা বেরোতে থাকে তবে সেক্ষেত্রে এটি জরায়ুর অভ্যন্তরে অমরার কিছু অংশ থেকে যাওয়ার একটা চিহ্ন হয়ে থাকতে পারে।এর ফলস্বরূপ একটি সংক্রমণ বা রক্তক্ষরণ হয়ে থাকতে পারে এবং সেক্ষেত্রে আপনার অবিলম্বে চিকিৎসা জনিত মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
-
লোচিয়া সেরোসা
রক্তের ঘনত্ব ক্রমশ পাতলা হতে শুরু করবে এবং রক্ত স্রাবের রঙ গাঢ় লাল থেকে বাদামীতে পরিবর্তিত হবে এবং প্রসবের পরে প্রায় 7-10 দিনের মধ্যে তা ধীরে ধীরে হলদেটে হয়ে যাবে।স্রাবটিতে খুব কম সংখ্যক লোহিত রক্ত কণিকা এবং অধিকাংশ শ্বেত রক্তকণিকা, জরায়ুর শ্লেষ্মা এবং প্ল্যাসেন্টা বা অমরা থেকে কিছু তরল থাকবে।এই পর্যায়টি প্রায় তিন থেকে চার সপ্তাহ ধরে চলবে।যদি ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এটি অব্যাহত থাকে, সম্ভাব্য জটিলতাগুলি নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি মূল্যায়নের জন্য আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
-
লোচিয়া আলবা
আরও এক সপ্তাহ বা তারও কিছু পরে, আপনি লক্ষ্য করবেন যে স্রাবটি ক্রমশ সাদাটে হয়ে যাবে এবং স্রাবে রক্তের দাগের পরিমাণ কমে যাবে।এটি প্রায় পনেরো দিন মত চলবে।এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শ্লেষ্মা, শ্বেত রক্তকণিকা, ডেসিডুয়া এবং এপিথেলিয়াল কোষগুলি নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে।এটি লচিয়ার শেষ পর্যায় এবং জরায়ুর সম্পূর্ণ নিরাময়ের প্রতিনিধিত্ব করে ।এই সর্বশেষ পর্যায়টির পরে লোচিয়ায় হয়ে থাকা রক্ত স্রাবের দাগটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।
কারণ সমূহ
লোচিয়া হল প্রসবের পরবর্তীতে প্রতিটি মহিলার মধ্যে হয়ে থাকা একটি স্বাভাবিক ঘটনা।এটি কোনও রোগ বা গর্ভাবস্থার জটিলতা নয়। যেমনটি আগে আলোচনা করা হয়েছিল, ডেলিভারি বা প্রসবের পরে জরায়ু আস্তরণের স্খলনের কারণে এটি ঘটে।প্রসবের পরে দেহের নিরাময় হওয়া প্রয়োজন, এবং জরায়ুটিও তার গর্ভাবস্থার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়া দরকার।
- লোচিয়ার দীর্ঘতা এবং পরিমাণ প্রতিটি মহিলার ক্ষেত্রে পৃথক হবে।
- কিছু মহিলা প্রসবের পরেও যন্ত্রণাদায়ক সঙ্কোচনের অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। এক্ষেত্রে জমাট বাঁধা রক্তের বড় বড় ড্যালারর সাথে ভারী রক্তপাত হতে পারে এবং তারপরে প্রবাহটি আপনা থেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে হ্রাস পাবে।
- যদি কোনওক্ষেত্রে অকাল প্রসব হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে লোচিয়া সংক্ষিপ্ত হতে পারে, আর যদি যমজ সন্তান হয়ে থাকে তবে তা মারাত্মক হতে পারে।
যাইহোক, তবে আপনি যদি অস্বাভাবিক পরিমাণে কিম্বা দীর্ঘমেয়াদে লোচিয়ার অভিজ্ঞতাটি পেয়ে থাকেন, তবে সেক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
উপসর্গগুলি
লোচিয়া চলাকালীন নিম্নোলিখিত উপসর্গগুলি আপনার দেখা দিতে পারেঃ
- উঠে দাঁড়ানো কিম্বা বসার সময় অথবা আপনার পাগুলিকে প্রসারিত করার সময় কখনও কখনও যোনিতে পুঞ্জীভূত রক্ত তীব্র প্রবাহে বেরিয়ে আসতে পারে।এটি স্বাভাবিক এবং উদ্বেগের কারণ নেই।
- লোচিয়া জীবাণুমুক্ত হলেও, ঐ অঞ্চলে ব্যাকটেরিয়ার বসতি গড়ে উঠলে সেটিতে মাসিকের রক্তের ন্যায় গন্ধের সৃষ্টি করবে।যদি তার মধ্যে কোনও বাজে বা দুর্গন্ধ থাকে, তবে সেটি সংক্রমণের একটা লক্ষণ হতে পারে।
- স্তন্যপান করানো গর্ভে সংকোচনের কারণ হয়ে থাকে এবং তার ফলে তা ‘পরবর্তীকালীন–যন্ত্রণা সমূহ’ নামক ক্র্যাম্প বা খিঁচুনির একটি পর্বের দিকে পরিচালিত করে।বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় রক্তপাত ভারী হতে পারে।
- আপনি কোনও শারীরিক ক্রিয়া–কর্ম বা যোগ–ব্যায়াম করার পরে ভারী রক্তপাতের অভিজ্ঞতা পেতে পারেন।এ সময় আপনার পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার প্রয়োজন হবে।
লোচিয়া কত দিন স্থায়ী হয়?
গড়ে, লোচিয়া প্রসবের পর থেকে প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে থাকে।প্রাথমিক পর্যায়ে গাঢ় ও ভারী প্রবাহ থেকে নিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার মত হয় যা দাগ দেখা দেওয়ার 1 সপ্তাহ পর থেকে 15 দিন পরে ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে।যাই হোক না কেন, প্রসবের ছয় সপ্তাহ পরে এটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত।
প্রসবের পরে রক্ত ক্ষরণ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
প্রসবের পর লোচিয়া হওয়াটা পুরোপুরি স্বাভাবিক এবং নিরাময় বা আরোগ্যলাভের জন্য এটা হওয়াটাও জরুরী।আপনার কেবল প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখাকে নিশ্চিত করতে হবে এবং এই সময়টি অতিক্রম করার জন্য প্রয়োজনীয় যত্ন নেওয়া উচিত।
- স্যানিটারি ন্যাপকিনগুলি স্টক করুন এবং নিয়মিত বিরতিতে সেগুলি বদলে ফেলুন।প্রথম কয়েকদিন ভারী রক্তপাত শোষণ ক্ষমতা যুক্ত বড় প্যাডগুলি আপনার প্রয়োজন হবে।
- কোনও রকম সংক্রমণ হওয়াকে দূরে রাখতে ট্যাম্পুন বা ন্যাকড়া অথবা মেন্সট্রুয়াল কাপগুলি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়াকে বাধা দিতে এই সময় যৌন মিলন এড়িয়ে চলুন।
- খুব বেশী কঠোর ও পরিশ্রমকারী অনুশীলনগুলি করা এড়িয়ে চলুন।পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
- জনসাধারণের পুকুর, ডোবাগুলিতে সাঁতার কাটা থেকে বিরত থাকুন।
- আপনার ব্যক্তিগত অংশ পরিষ্কার রাখুন।
- বারে বারে আপনার মুত্রাশয়টি খালি করুন।আপনি মুত্র ত্যাগের প্রয়োজন বোধ না করলেও বারেবারে আপনি মুত্র ত্যাগ করুন।
- ইপসম লবণের সাথে ভেষজ স্নান নিরাময় প্রক্রিয়াটিকে ত্বরাণ্বিত করতে পারে।
- অ্যাসপিরিন এবং আইবুপ্রুফেনের মত রক্ত তরলীকরণের ওষুধগুলিকে এড়িয়ে চলুন।
- আপনার ডায়েটে আয়রণ গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি করুন।
আপনার রক্তপাত হতে থাকলে কীভাবে বলবেন?
লোচিয়া গাঢ় লাল হবে এবং পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে ক্রমশ তা বাদামি এবং হলদেটে বর্ণ ধারণ করবে।আপনি আপনার স্যানিটারি ন্যাপকিনের উপরেই লোচিয়া দেখতে সক্ষম হবেন।সময়ের সাথে এর প্রবাহটি হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে এর দাগগুলিও হ্রাস পেতে থাকবে।আপনি শেষ কয়েকদিন প্যান্টি লাইনারগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
সি–সেকশন বা সিজারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসব করে থাকা মহিলাদের ক্ষেত্রে কি প্রসবোত্তর রক্তপাতটি পৃথক হয়ে থাকে?
আপনি যোনি পথে সাধারণ প্রসব বা অস্ত্রপচারের মাধ্যমে যেভাবেই শিশুর জন্ম দিন না কেন আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত এবং কলাগুলিকে মুক্ত হবে।অস্ত্রপচারের মাধ্যমে প্রসবের পরে হয়ে থাকা রক্তপাতটিও স্বাভাবিক প্রসবের পরে হয়ে থাকা রক্তপাতের মতই একই সময় ধরে এবং পরিমাণেও প্রায় একই হবে।
কখন একজন ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন?
যদি আপনি নিম্নলিখিত লক্ষণগুলির কিছু অনুভব করেন তবে আপনাকে অবিলম্বে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।এক্ষেত্রে সম্ভবত আপনি জরায়ুর কোনও সংক্রমণে ভুগতে পারেন, প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ হয়ে থাকতে পারে অথবা অমরার কোনও টুকরো থেকে যেতে পারে যেটি আবার জরায়ুর প্রাচীরের সাথে এখনও সংযুক্ত রয়ে যেতে পারে।
- প্রসবের 1 সপ্তাহ পরেও যদি গাঢ় রক্ত স্রাব হয়ে থাকে।
- সময়ের সাথে কমার পরিবর্তে যদি লোচিয়া স্রাবটি বেড়ে যেতে থাকে।
- আপনি যদি বড় বড় রক্তের ড্যালার সাথে ভারী ও অস্বাভাবিক রক্তপাতের অভিজ্ঞতা পান সেটি প্রসবোত্তর হ্যামারেজের একটি লক্ষণ হতে পারে এবং অবিলম্বে তার জন্য চিকিৎসা জনিত মনোনিবেশ করানো প্রয়োজন।
- দুর্গন্ধের সাথে লোচিয়া হল ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণের লক্ষণ।
- জ্বর হওয়ার সাথে আপনার ঠান্ডা লাগা জড়িত হলে
- অনেকদিন ধরে তলপেটের ব্যথা সমানে বাড়তে থাকলে।
- ভীষণভাবে ক্লান্তিবোধ, মাথা ঘোরা এবং শ্রান্তি বা অবসন্ন বোধ করলে
- উদরভাগের কোমলতা বা তা শিথিল হয়ে গেলে
- মূর্ছা গেলে বা অজ্ঞান হয়ে গেলে
প্রসবোত্তর পর্যায়ে লোচিয়া স্বাভাবিক।এটা এমন কোনও রোগ নয় যার জন্য নজর রাখা উচিত, তবে এটি একটি প্রাকৃতিক স্খলন প্রক্রিয়া যা প্রতি গর্ভদশার পরবর্তীতেই হয়ে থাকে।এক্ষেত্রে কয়েকটি করণীয় এবং অকরণীয় বিষয় রয়েছে যেগুলি প্রসবোত্তর নিরাময় প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে পারে।এই প্রক্রিয়াটি একবার সমাপ্ত হয়ে গেলে সেটা পুনরায় কেবলমাত্র তখনই হবে যদি আপনি আবার অন্য আরেকটি প্রসবক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকেন।তাই অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, আপনার জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ বজায় রাখুন।