যদিও আপনি এগুলিকে সুপার মার্কেটের উৎপাদন বিভাগে সবজি এবং ফলগুলির মাঝে কোথাও মিলিয়ে মিশিয়ে থাকতে দেখতে পেতে পারেন,মাশরুমগুলি কিন্তু তাই বলে সেগুলির কোনওটির মধ্যেই পড়ে না!এগুলি হল এক ধরনের ছত্রাক।এগুলি কোনও উদ্ভিদ অথবা প্রাণী জগতের অন্তর্ভূক্ত নয়।
শিশুদের মাশরুম খাওয়ানো উচিত কি উচিত নয় এ বিষয়ে কোনও বাধা ধরা রীতিনীতির অস্তিত্ব বা নির্দেশিকা নেই।
যদিও এ সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে,তবে এ বিষয়ে চিন্তাধারার দু’টি বিস্তৃত ধারা রয়েছে।এক পক্ষের মতে,শিশুদের মাশরুম দেওয়া শুরু করা স্থগিত রাখা উচিত যতদিন না তারা কমপক্ষে 10 মাস বা তার বেশি বয়্সী হয়ে থাকে।আবার অন্য শিবিরটি বিশ্বাস করেন যে,মাশরুম খাওয়ানো শুরু করার জন্য ছয় মাস বয়সই যথেষ্ট।
উভয় ক্ষেত্রেই,প্রত্যেকেই একমত যে মাশরুমগুলি রান্না হওয়া উচিত এবং বাচ্চাদের সেগুলি পরিবেশন করার পূর্বে খুব ভালভাবে রান্না করে নেওয়া দরকার কারণ এগুলির মধ্যে ব্যাকটেরিয়া থাকে যেগুলি রান্না প্রক্রিয়াটি চলাকালীন ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে যাবে।
পুষ্টিকর উপাদান | পরিমাণ(প্রতি 1 কাপে অথবা 78 গ্রামে) |
ক্যালোরি | 15.4 |
প্রোটিন | 2.2 গ্রাম |
খাদ্যগত তন্তু | .7 গ্রাম |
পটাসিয়াম | 223 মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | 60.2 মিলিগ্রাম |
ওমেগা-6 ফ্যাটি অ্যাসিড | 97.3 মিলিগ্রাম |
শর্করা | 1.2 গ্রাম |
মাশরুম খাওয়ার স্বাস্থ্যকর উপকারিতাগুলি হল এই খাদ্যটির নিজস্ব প্রকৃতির কারণে এটির বৈচিত্র্যের মতই অনন্য।
মাশরুম হল সেই সকল বিরল খাদ্যগুলির মধ্যে একটি যেটি লিভারকে বিষমুক্ত হতে সহায়তা করে।এগুলি লিভারকে ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে।এগুলি বিশেষ করে ছোট শিশু এবং অল্প বয়সী বাচ্চাদের জন্য ভীষণ ভাবে সহায়ককারী কারণ এগুলি হেপাটাইটিস B এবং জন্ডিসের মত রোগগুলি যেগুলি লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে থাকে সেগুলির ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর হয়।
বেশিরভাগ শাকাহারীদের খাদ্যেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন D থাকে না,ভিটামিন D দুগ্ধজাত পণ্য এবং সূর্যালোক থেকে পাওয়া যেতে পারে।তবে ভারতীয়রা গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে বসবাসকারী বলে অধিকাংশ পিতা-মাতাই শীতকাল ব্যতীত তাদের সন্তানকে সরাসরি সূর্যালোকে প্রকাশ করাকে এড়িয়ে চলেন।
যদিও অ-নিরামিষাশীদের খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ থাকে,তবে নিরামিষাশীদের ডায়েটে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবুজ শাক-সবজি এবং বাদাম অন্তর্ভূক্ত থাকে যেগুলি তাদের আয়রণ সরবরাহ করে থাকে।আয়রণ হল হিমোগ্লোবিনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যেটি লোহিত রক্ত কণিকায় পাওয়া যায় এবং নতুন রক্ত কোষগুলি গঠণের জন্য প্রয়োজন হয়।
মাশরুমে রয়েছে জৈব রাসায়নিক পদার্থ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে।তিন মাস বয়সের পর শিশুর স্বাস্থ্যের অনাক্রম্যতা হ্রাস পাওয়ার কারণে(মায়ের দ্বারা প্রতিস্থাপিত রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাটি তিন মাসের জন্য স্থায়ী হয়ে থাকে)রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাটি নিয়ন্ত্রিত হলে তা বাচ্চাকে সুস্থ থাকতে এবং বিভিন্ন রোগ ব্যাধি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধার হতে সহায়তা করে থাকে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলি স্বাভাবিক বিপাক প্রক্রিয়াটি চলাকালীন সময়ে উপজাত দ্রব্য হিসেবে গঠিত হওয়া “ফ্রী র্যাডিক্যাল” বা “মুক্ত মৌলগুলি” থেকে দেহকে মুক্ত করতে সহায়তা করে থাকে।এই মুক্ত মৌলগুলি দেহস্থ কোষগুলির এবং DNA এর ক্ষতির কারণ হতে পারে।অন্য কারণটি হল এই যে পরিপূরক হিসাবে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলি গ্রহণ শরীরের দ্বারা যতটা এটি হতে পারত ঠিক ততটা দক্ষতার সাথে ব্যবহৃত হতে পারে না,অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলি সাধারণত খাবারের মধ্যে থেকেই গৃহীত হয়ে থাকে।
একটি রেফ্রিজেরাটরের মধ্যে মাশরুমগুলিকে নিরাপদ ভাবেই এক সপ্তাহের জন্য সংরক্ষণ করে রেখে দেওয়া যেতে পারে।
এগুলিকে একটি কাগজের ব্যাগের মধ্যে করে অথবা একটি ট্রের উপরে রেখে তার উপর একটি কাগজের তোয়ালে ঢাকা দিয়ে ফ্রীজের ভিতরে সংরক্ষণ করুন।তবে সেগুলিকে কোনও বায়ু নিরুদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যাগের ভিতরে রাখবেন না।
মাশরুমগুলিকে যখন প্রস্তুত করবেন,সেগুলিকে জলের মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন না,কারণ এর ফলে এগুলি তার নিজস্ব স্বাদ ও গন্ধ হারাবে।সাধারণভাবে দ্রুততার সহিত সেগুলিকে জল দিয়ে ধুয়ে তুলে নিন অথবা এমনকি আবার আপনি সেগুলিকে একটি ভিজে কাপড় দিয়ে ভালভাবে মুছেও নিতে পারেন।
অধিকাংশ খাবারগুলির মতই মাশরুমেও খুব সামাণ্যই অ্যালার্জির সম্ভাবনা রয়েছে। মাশরুমের প্রতি অ্যালার্জির পরিসংখ্যান যদিও পরিষ্কারভাবে জানা যায় না তবে অনুমান করা হয় এটি মোটামুটি প্রায় 1% এর মত।
যাইহোক,তবে কাঁচা মাশরুমগুলি বীজগুটিকাগুলিকে মুক্ত করতে পারে,এবং পরাগ রেণুর অ্যালার্জিকে বৃদ্ধি করে যা শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর প্রভাব ফেলে।এই ধরনের অ্যালার্জিগুলি খুব বেশি সাধারণ হয়ে থাকে।
মাশরুমগুলি সাধারণত একটি অতিরিক্ত পার্শ্ব খাদ্যপদ হওয়ার কারণে, যাতে সেটা বাদ না পরে তাই কীভাবে এটিকে একটি শিশুর খাদ্যতালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা যেতে সে সম্পর্কে আলচিত হল।
একটি শিশুর ডায়েটে মাশরুমের পরিচয় করানোর একটি চমৎকার উপায় হল শিশুদের জন্য মাশরুমের পিউরি প্রস্তুত করা।
আপনার কি কি প্রয়োজন হবে
প্রস্তুতির ধাপগুলি
আপনি আপনার সন্তানের প্যালেটের জন্য প্রয়োজনীয় রসুন,গোলমরিচ,ভেষজ এবং নুন এর পরিমাণ কমাতে পারবেন।
আপনার কি কি প্রয়োজন হবে
প্রস্তুতির ধাপগুলি
এই পদটি রুটি চাপাটি,সাদা ভাত ইত্যাদি দিয়ে খেতে পারেন।যদি আপনি সলটেড বা লবণযুক্ত মাখন দিয়ে এটি বানান তাহলে শেষ ধাপে নুন কম যোগ করবেন।
পোলাও হল আপনার বাচ্চার জন্য একটা দারুন চিত্তাকর্ষক খাবার যা আপনি মাশরুম দিয়ে বানাতে পারেন।
আপনার কি কি প্রয়োজন হবে
প্রস্তুতির ধাপগুলি
আপনার মাশরুম পোলাও তৈরী!আপনি ইচ্ছা করলে এটিকে ধনে পাতা দিয়ে গার্নিশ করে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে পারেন।