প্রথমবার মা হিসাবে, আপনি হয়তো দেখবেন যে আপনার সন্তানের যত্ন নেওয়ার অভিজ্ঞতাটি অভিভূত করেন, বিশেষ করে যখন তারা প্রবলভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং নড়াচড়া করতে শুরু করে, যা তারা সাধারণত দুই-মাস বয়সে করে। এখানে কয়েকটি কৌশল, ডায়েটের পরামর্শ, এবং শিশুর যত্নের বিষয়ে বলা হল যা থেকে আপনি নিশ্চয়ই সহায়তা পাবেন।
আপনার বাচ্চা যদি বেশি কিছু না করে তবে আপনি চিন্তিত হবেন না। মনে রাখবেন, তাদের এখনও বিকাশ ঘটছে ও পরিবেশের সাথে অভিযোজন হচ্ছে, এবং যে সময়ে তারা দুই মাস বয়সী হয়ে উঠবে, তখন তাদের ক্রিব অ্যাকটিভিটি শুরু করা উচিত। এখানে আপনার 2 মাস বয়সী শিশুর যত্ন নেওয়ার কয়েকটি কৌশল রয়েছে।
আপনার বাচ্চা যখন ক্ষুধার্ত হয় তখন তা বোঝানোর জন্য কাঁদবে, তাই নিশ্চিত থাকুন যে আপনি কাছাকাছি আছেন যাতে আপনি সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে চলে আসতে পারেন। আপনার বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে ক্ষুধার সময় পরিবর্তিত হতে পারে এবং তার সাথে তার ক্ষুধারও পরিবর্তন হবে। আপনি নিশ্চিত করুন যেন আপনার কাছে শিশুর দুধের গুঁড়ো মজুদ আছে বা আপনি যদি বুকের দুধ খাওয়ান তাহলে, আপনার ফ্রিজে পরে ব্যবহারের জন্য আপনার বুকের দুধ অতিরিক্ত বোতলে সঞ্চিত রাখা আছে তা নিশ্চিত করুন। এবং মনে রাখবেন যে, আপনার শিশুর দুই মাসের বেশী বয়স হলেই, তারা আরও সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করবে এবং আপনার সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য আপনাকে একাধিকবার উঠতে হবে।
আপনার শিশু যত বাড়তে থাকবে, এবং যত তার স্নায়ুতন্ত্র বিকশিত হতে থাকবে, সে তত বেশী কান্নাকাটি করবে। তাই যদি আপনার এমন ধারণা থাকে যে শিশুরা খাবার খাওয়ানোর ঠিক পরেই সাধারণত ঘুমিয়ে পড়ে, তাহলে আবার চিন্তা করুন। যত আপনার শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ঘটে, তত তার জ্ঞান আহরণের ক্ষমতাও পাশাপাশি উন্নতি লাভ করতে শুরু করে। সে আপনাকে দ্রুত শনাক্ত করতে পারে, এবং তার পাশাপাশি নিজের চারপাশের পরিবেশের প্রতিও ভালোভাবে সাড়া দেয়। তাই যখনই সে কান্নাকাটি করবে তখনই তাকে আদর করে বা গান শুনিয়ে অথবা কোলে নিয়ে ঘুরতে থাকুন, যাতে সে কান্না ভুলে থাকতে পারে।
এখানে কয়েকটি বিকাশমূলক মাইলফলক দেওয়া হলো যেগুলি আপনি বাচ্চার দ্বিতীয় মাসে দেখতে চাইতে পারেন। যখনই আপনার শিশুর স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় হতে শুরু করে, তখনই সে আপনাকে ভালোভাবে লক্ষ্য করতে থাকে এবং তার অনুভুতি শক্তি ক্রমাগত তীক্ষ্ণ হতে থাকার দরুন আপনাকে আপনার গন্ধের মাধ্যমেও শনাক্ত করতে পারে। মনে রাখা দরকার যে বাহ্যিক উদ্দীপনা, যেমন জোরদার আওয়াজ তাদের কাছে খুবই ভীতিকর হতে পারে, তাই ঘরের ভিতরে আওয়াজের মাত্রা যতটা সম্ভব কম রাখা দরকার। যত তার দৃষ্টিশক্তির উন্নতি হয় তত তার চারপাশের বস্তু ও ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ সাধনেরও উন্নতি হয়। একটা খেলনা দিয়ে তাকে সেটা তার পেটের উপর ঘোরাবার জন্য উৎসাহিত করার চেষ্টা করুন। এই বয়সে আপনি আপনার শিশুকে কিছু নরম তুলতুলে কাপড়ের পুতুল এবং ঝুমঝুমির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন।
যেহেতু আপনার সন্তানের ওজন এবং উচ্চতার প্রতি নজর রাখা একটি অন্যতম প্রধান বিষয়, তাই নিয়মিতভাবে তার ওজন ও উচ্চতার পরিমাপ করবেন এবং তা সঠিক ও স্বাভাবিক কিনা লক্ষ্য রাখবেন।
সর্বোত্তম বিকাশের জন্য শিশুর টিকাকরণ কর্মসূচি যথাযথভাবে বজায় রাখা অবশ্যই প্রয়োজন। আপনার শিশুকে একজন ভালো শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান এবং তার সমস্ত টিকাকরণ সঠিকভাবে সুনিশ্চিত করুন। টিকাকরণের পরে আপনার বাচ্চার উত্তেজিত হয়ে ওঠা বা কান্নাকাটি করাটাই স্বাভাবিক, তাই যতক্ষণ সে শান্ত না হয় ততক্ষণ তাকে আদর করতে থাকুন ও ভোলাতে থাকুন। কখনই সঠিক টিকাকরণের কর্মসূচিতে বিন্দুমাত্র দেরী করবেন না- কারণ সর্বোপরি আপনার শিশুর সুস্বাস্থ্য আপনার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাভাবিকভাবেই, আপনার শিশুর সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আপনি সমস্ত কিছুই করতে চাইবেন।
আপনার দুই মাস বয়সী শিশুর ঘুমের ধরনকে ভালোভাবে লক্ষ করুন ও লিপিবদ্ধ করুন; তার দিনে 9 থেকে 12 ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমানো উচিৎ এবং ঘুমের পরিমাণ তার থেকে কম হলে বাচ্চাটি খিটখিটে হয়ে পড়বে। তাই প্রতিবার আপনার শিশুর খাবার পরে তার আরামদায়ক বিশ্রামের বন্দোবস্ত নিশ্চিত করুন।
আপনার শিশুর ঘুমের ধরনকে ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করুন এবং শিশুর বিশ্রাম নেওয়ার সময় বিশ্রাম নিন, অন্যথায় আপনাকে আপনার শিশুর জন্য সময় অসময় জেগে উঠতে হবে একটি শিশু মনিটর ব্যবহার করুন যাতে আপনি আপনার শিশুর জেগে ওঠার সঠিক মুহূর্তটি জানেন।
এই পরামর্শগুলির মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন যে ঠিক কিভাবে একটা 2 মাস বয়সী বাচ্চার যত্ন নেওয়া উচিত এবং এভাবেই আপনার শিশুটিকে ভালোবাসা ও যত্নের সঙ্গে লালনপালন করতে পারবেন। মনে রাখবেন যে দুই মাস বয়সী বাচ্চার যত্ন নেওয়া প্রায় সারাদিনের ব্যাপার, কিন্তু সঠিক পরামর্শের মাধ্যমে, আপনি সহজেই আপনার ছোট্টটিকে ভালোভাবে সামলাতে পারবেন।