শিশু

7-9 মাস বয়সী শিশুর ঘুম

এক বছরের কম বয়সী শিশুদের অনেক কিছু করার আছে! প্রথমবারের জন্য সব কিছুতেই উদ্ভাসিত হয় যেগুলি ভীষণ উত্তেজনা পূর্ন হতে পারে কিন্তু একই সঙ্গে সেগুলি করারো চেষ্টা করেএই কারণের জন্যই বাচ্চাদের বড়োদের থেকেও বেশী ঘুমের প্রয়োজন হয় যাতে তারা তাদের পারিপার্শ্বিক অসংখ্য বিষয়ে কিছুটা ধারণা প্রস্তুত করতে পারে এই গুরুত্বপূর্ণ কয়েক মাসে

আমার বাচ্চার ঘুমের ভঙ্গীমা কেমন হবে?

প্রতিটা শিশু যেমন পৃথক ও অনন্য হয় সেইরকমই তাদের ঘুমের ভঙ্গীমাগুলি ও পৃথক হয় সাধারণত,6 মাসের সীমা অতিক্রম করার পরেই আপনার বাচ্চা রাতের বেলা ঘুমাতে পারবে আরো দীর্ঘ সময় ধরে এবং হয়ত কদাচিৎ জেগে উঠবে খাওয়ার জন্যকিন্তু বাচ্চার ঘুমের ভঙ্গীমা কেমন হবে সেটি মূলত নির্ভরকরে বাচ্চার মেজাজ এবং ঘুমের রুটিনের উপরএটি একটি প্রতিষ্ঠিত দৃষ্টান্ত যে সকল বাচ্চার ঘুম এবং খাওয়ার রুটিনের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে তাদের মধ্যে ভালো ঘুমের প্রবণতা দেখা যায়একটি 7-9 মাসের শিশুর ঘুমের ভঙ্গীমাকে ভাগ করা হয় দীর্ঘ রাত্রিকালীন ঘুম এবং দিনের বেলার কিছু ছোট ঘুমে

বাচ্চার কতটা ঘুমের প্রয়োজন(7-9মাসে)

আপনার বাচ্চা 7 মাসের সীমায় পৌঁছোলে আপনার বাচ্চার ঘুমের ধরণ একজন বড় ব্যাক্তির থেকে বেশী হবে, যার অর্থ হল রাতের বেলায় কম জেগে উঠবে8-9 মাসের মধ্যে বেশীর ভাগ বাচ্চা নিজেদেরকে অভ্যস্থ করে তোলে রাতের বেলা জেগে উঠলে পুনরায় ঘুমে ফিরে যেতেযাইহোক, কিছু বাচ্চার আবার প্রয়োজন হয় বুকের দুধ অথবা বোতলের দুধ খাওয়ানোর পুনরায় তাদের ঘুম পাড়াবার জন্য

দিনের বেলায়

6 মাস পরেও বাচ্চার ঘুমের ধরণের খুব একটা পরিবর্তন হয় না7-9 মাসের মধ্যে বাচ্চারা দিনের বেলায় 3-4 বার ঘুমোতে পারেএই ঘুমগুলিকে এইভাবে শ্রেণীকরণ করা যেতে পারেভোরের, দুপুরের এবং বিকেলের ঘুমেআপনার শিশু ঘুমোতে পারে তিন থেকে চার ঘন্টা যা তিন থেকে চারটি ঘুমের মধ্যে বিস্তৃত থাকবে

রাতের বেলায়

7 মাস বয়স থেকে শিশুদের রাতের বেলায় দীর্ঘ ঘুমের প্রবণতা দেখা যায়তারা রাতের বেলায় দীর্ঘ 11-14 ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমোতে পারেকিছু বাচ্চা কোনরকম ব্যাঘাত ছাড়াই রাত্রিকালীন দীর্ঘ ঘুম দেয় যখন কিছু বাচ্চার খাওয়ার প্রয়োজনে ঘুম থেকে জেগে ওঠে

কীভাবে বাচ্চাদের ভালো ঘুমের অভ্যেস প্রতিষ্ঠিত হয়?

আপনি আপনার বাচ্চার ভালো ঘুমের অভ্যেস তৈরি করতে পারেন নিম্নলিখিত পদ্ধতি গুলি অনুসরণের মাধ্যমে

  • ঘুমের রুটিন তৈরি করে-7-9 মাসের মধ্যে বাচ্চারা ঘুমের একটা রুটিনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকেএটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনি এই রুটিনটির সাথে আটকে থাকবেন যাতে আপনার বাচ্চাও এটির সাথে নিজেকে আটকে রাখে স্নান,মালিশ,খেলারসময়,ঘুম পাড়ানির গান শোনানো অথবা ঘুমের সময়ে পোশাক পরিবর্তন সব কিছুই হওয়া উচিত প্রতিরাত্রে একই সময়ে একই ভাবে,যাতে বাচ্চা ঘুমের সময় সম্পর্কে একটা ধারণা পায়
  • রূটিন মেনে চলুনএকবার ঘুমের রুটিন তৈরি হয়ে গেলে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটা সঠিক ভাবে মেনে চলাতার অর্থ এটা নয় যে,ঘড়ি ধরে খুব কঠোর ভাবে সেটি মেনে চলতে হবে,কিন্তু সাধারণত তা হওয়া উচিত ঘুমের আসল সময়ের কাছাকাছি সেটি মেনে চলা
  • বাচ্চাকে নিজেকে এটির সাথে মানিয়ে নিতে দিনএকবার আপনি ঘুমের রুটিন মেনে চলা শুরু করার পর, যদি দেখেন যে আপনার বাচ্চা কোনরকম কারণ ছাড়াই মাঝে মধ্যে ঘুম থেকে উঠে পড়ছে, তবে তাদেরকে নিজের মত করে সেটি মানিয়ে নেওয়ার সম্মতি দিনবাচ্চা নিজে থেকেই শিখে যাবে জেগে ওঠার কিছু সময় পরে পুনরায় ঘুমিয়ে পড়তে

এই বয়সে কী কোনো ঘুমের সমস্যা হয় ?

7 থেকে 9 মাস বয়সীদের নিম্ন লিখিত সমস্যাগুলো হতে পারে।

Related Post
  • শারীরিক এবং বিকাশের পরিবর্তন হামাগুড়ি দেওয়া বসা দাঁড়ানো, গড়ানো প্রভৃতি মাইলস্টোন গুলো শিশু এই সময়ে অতিক্রম করে। এই নতুন শেখা দক্ষতাগুলি প্রকাশের জন্য সে মঝে মধ্যে রাত্রে জেগে উঠতে পারে।
  • দাঁত ওঠা এই বয়সে দাঁত উঠতে শুরউ করে একারণেও অনেক সময় আপনার বাচ্চার রাত্রে ঘুম ভেঙে যেতে পারে।
  • আলাদা হবার ভয় আপনার শিশুটি আপনার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার ভয় থেকে রাত্রে মাঝে মধ্যে জেগে ওঠে আপনার মনোযোগ আকর্ষণের ও সঙ্গ লাভের জন্যে।

শিশুর ঘুম ও বিকাশ

একটি শিশুর একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের থেকে দ্বিগুন ঘুমের প্রয়োজন হয়।শিশুদের জন্য ঘুম নতুন উদ্যম সৃষ্টি করে।ভাল ঘুম একটি সুখী শিশুর বৈশিষ্ট্য, সুখী শিশু হল স্বাস্থবান শিশু। শিশুর ঘুমকে দুইম ভাগে ভাগ করা যায় সক্রিয় এবং গভীর ঘুম।সক্রিয় ঘুমে শিশুর বিকাশ ঘটতে থকে কিন্তু গভীর ঘুমে তার মস্তিষ্কের গভীরতম অংশের বিকাশ ঘটে।তাই একটি নিরবচ্ছিন্ন গভীর ঘুম হল একটি শিশুর বিকাশের সর্বোচ্চ শর্ত।

আপনার শিশু কী ঘুমের প্রকৌশল গ্রহণের জন্য তৈরী

চার থেকে ছয় মাস বয়সের মধ্যে আপনার বাচ্চাটির একটা নির্দিষ্ট খাবার সময় এবং দিবা নিদ্রার প্যার্টান তৈরী হয়ে যায়। যখন আপনার বাচ্চার ঘুমাতে যাওয়ার এবং ঘুম থেকে ওঠার আর খাবার সময়ের রুটিন ঠিক হয়ে যায় তখন সে ঘুমের প্রকৌশঅল শেখার উপযোগী হয়ে ওঠে।সাধারণত বেশিরভাগ শিশু ই চার মাস বয়স থেকেই ঘুমের রুটিন তৈরী করে ফেলে তবে যেহেতু প্রতিটি শিশুই আলাদা তাই কারও কারও আর একটু বেশী সময় লাগতে পারে।

আপনার সন্তানের ঘুমের সহায়তা

একজন মা হিসাবে আপনি অবশ্যই চাইবেন যেন আপনার শিশুটি সারা রাত নিশ্চিন্তে ঘুমায়। এখানে তার জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হল যাতে আপনার বাচ্চাটি ভাল করে ঘুমায়।

  • শিশুটির ঘুমানোর একটা সময়তালিকা তৈরী করুন এবং কঠোরভাবে সেটা মেনে চলুন।
  • ঘুমানোর রুটিনের পরিবর্তন করবেন না।
  • বাচ্চাকে রাত্রে তারাতারি ঘুম পাড়িয়ে দিন এবং তারপর তদের জাগানো থেকে বিরত থাকুন।
  • বাচ্চাটিকে তখন ঘুমাতে দিন যখন সে নিজে থেকে ঘুমিয়ে পড়বে।

ক্লান্তি হল বাচ্চার ঘুমানোর লক্ষন

কখনো কখনো বাচ্চারা এট ক্লান্ত হয়ে পড়ে যে তারা ঘুমিয়ে পড়তে চায়।এই সময় তারা অশান্ত হয়ে ওঠে,বদমেজাজী, খেতে অনীহা প্রকাশ করে,আটকে রাখতে চায়,অদ্ভূত আচরণ করতে থাকে।

আপনি এই লক্ষণ গুলোভাল ভাবে খেয়াল রাখবেন এবং তাকে ঘুমাবার পরিস্থিতি তৈরী করে দেবেন। ঘুম পাড়াবার আগে আপনার বাচ্চাটিকে শান্ত করবেন। কিন্তু কি হবে যদি আপনার সন্তান মাঝরাত্রে ঘুম থেকে উঠে পড়ে।তখন আপনি গাকন গেয়ে বা নাচিয়ে কিমবা খাইয়ে ঘুম পাড়াবার চেষ্টা করবেন।তবে আপনাকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে আপনি ডাক্তারবাবুর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে নেবেন।

আপনার বাচ্চাটির গুরুত্বপূর্ণ সময়তালিকাটিতে যেন কোনপ্রকার চাপ না থাকে।তারা বাইরের জগত সম্বন্ধে অনবহিত থাকে তাই তাদের সঠিক সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করানোর জন্য যথেষ্ট পরিমান প্রশিক্ষ্ণ প্রয়োজন। উপরে উল্লেখিত কৌশলগুলি আপনাকে আপনার বাচ্চার ঘুমের ব্যাপারে সাহায্য করবে।

 

Share
Published by
দেবশ্রী ব্যানার্জী