কীভাবে স্তনের আকার স্বাভাবিক ভাবে হ্রাস করা যায়-আপনার জন্য 10 টি সহজ প্রতিকার

কীভাবে স্তনের আকার স্বাভাবিক ভাবে হ্রাস করা যায়

কিছু মহিলার বৃহৎ বক্ষদেশ থাকায় কোনও আপত্তি থাকে না কিন্তু কিছু জনের কাছে তা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।বৃহৎ স্তনযুক্ত মহিলারা মানসিক দিক দিয়ের পাশাপাশি শারীরিক সমস্যাতেও ভুগতে পারেন।বড় স্তনের কারণে স্তনে,কাঁধে,পিঠে এবং ঘাড়ে যন্ত্রণা হতে পারে।বৃহৎ বক্ষদেশের অধিকারিনী মহিলাদের মধ্যে আবার ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও বেশী থাকে বলে বিশ্বাস করা করা হয়।বৃহৎ বক্ষদেশের অধিকারিনী মহিলারা মানসিকভাবে হয়ত নানা জটিলতা ভোগ করতে পারেন যার ফলস্বরূপ তারা লজ্জাবোধ করতে পারেন এবং অন্তর্মুখী হয়ে থাকতে পারেন,আশেপাশের লোকেদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন এবং এছাড়াও আবার তারা হয়ত সব ধরনের জামা কাপড় পরিধান করতেও অস্বস্তিবোধ করতে পারেন।তারা আবার হাঁটা ,দৌড়ানো ইত্যাদির মত নানা ধরনের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ করার সময়েও বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়তে পারেন।তবে স্তনের আকার যথেষ্ট পরিমাণেই কমানো যেতে পারে প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলির দ্বারা।

যে কারণগুলি আপনার স্তনের আকার পরিবর্তন করতে পারে

নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে অনেক মহিলাই তাদের স্তনের আকার বৃদ্ধি করার জন্য ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি করিয়ে থাকেন।তবে,এমনও বহু মহিলা আছেন যা্রা প্রাকৃতিক ভাবেই বৃহৎ স্তনের অধিকারিণী হয়ে থাকেন।এটি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকতে পারে অথবা কয়েকটি ক্ষেত্রে, এর অর্থ আবার হতে পারে কিছু অন্তর্নিহিত চিকিৎসাজনিত শর্ত যা চিকিৎসাগতভাবে অন্বেষণ করা উচিত।যে কারণগুলি স্তনের আকারে পরিবর্তন আনতে পারে নিম্নে তালিকাবদ্ধ করা হলঃ

1. হরমোনের পরিবর্তন

হরমোনের পরিবর্তন হল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ,যার ফলে স্তনের আকার বেড়ে ওঠে।এটি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে যখন ডিম্বাশয় পরিণত হয়ে ওঠে এবং ইস্ট্রোজেনের ক্ষরণ শুরু হয়।হরমোনের উত্থান পতনের কারণে,মাসিক চক্রের সময়,গর্ভাবস্থায় এবং রজোবন্ধের সময় অথবা আপনি যদি PCOS ইত্যাদির মতো স্ত্রীরোগজনিত সমস্যায় ভোগেন তখন আপনার স্তনের আকার বৃদ্ধি পেতে পারে।নিয়মিত ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ বা গর্ভনিরোধক গ্রহণের ফলেও তা বর্ধিত স্তনের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

2. ওজন বৃদ্ধি

ওজন বৃদ্ধিও আবার বৃহদাকার স্তনের কারণ হয়ে ওঠে কারণ স্তনগুলি কেবল মেদ-কলার দ্বারাই গঠিত হয়ে থাকে।তবে,ওজন বৃদ্ধির কারণে স্তনের আকারের বৃদ্ধি পাওয়া ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পৃথক হয়ে থাকে।স্তনের আকার বৃদ্ধির বিপরীতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত যোগব্যায়ামের অনুশীলন কঠোরভাবে করা উচিত।

3. বংশগত কারণসমূহ

বৃহৎ বক্ষদেশের পারিবারিক ইতিহাস সম্বন্ধীয় মহিলারাও বৃহৎ স্তনের অধিকারিণী হয়ে উঠতে পারেন কারণ এ ব্যাপারে জিনগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এক্ষেত্রে স্তনের আকার পরিবারের উভয় দিক থেকেই উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হতে পারে।

4. লাম্প বা পিণ্ড

দেহে লাম্পগুলি গঠিত হলে স্বাভাবিকের তুলনায় স্তনের আকার বেড়ে উঠতে পারে।এই লাম্প বা পিণ্ডগুলি কখনও হতে পারে মারাত্মক অথবা মারাত্মক নয়।তবে প্রয়োজনে এগুলি ডাক্তারের অনুসন্ধানে আনা প্রয়োজন।

প্রাকৃতিকভাবে আপনার স্তনের আকার পরিবর্তন করতে সাধারণ কয়েকটি প্রতিকার

অনেক মহিলাই বৃহৎ স্তনের অধিকারিণী হতে পছন্দ করেন কিন্তু আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন না হয়ে থাকেন,আপনি অবশ্যই আপনার স্তনের আকার প্রাকৃতিকভাবে কমাবার উপায়ের খোঁজ করতে চাইবেন,ঠিক?এমন অনেক বড়ি আছে যেগুলি স্তনের আকার হ্রাসের দাবীদার।তবে আপনাকে এটি অবশ্যই বুঝতে হবে যে,বড়ি সেবন অথবা স্তনের আকার হ্রাসের ক্রীম ব্যবহারই শুধু এক্ষেত্রে সাহায্য করবে না।এর জন্য একটি সুষম ডায়েটের সাথে শারীরিক সক্রিয়তাও বজায় রাখতে হবে।

নিম্নে কিছু প্রাকৃতিক এবং সাধারণ প্রতিকার তালিকাবদ্ধ করা হল যেগুলি আপনাকে আপনার প্রত্যাশিত স্তনের আকার অর্জনে সাহায্য করতে পারে।

1. আদা চা

আদা চা সর্দি কাশি নিরাময়ের জন্য ভাল কিন্তু এটি যে আবার শরীরে বিপাকীয় হারকেও দ্রুত সম্পন্ন করে থাকে সেটা জানেন কি?এটি স্তনের আকার হ্রাস করতে সাহায্য করে।

আদা চা

আপনার যা প্রয়োজন

  • আদা
  • জল
  • মধু

প্রণালী

  • ছোট এক কুঁচি আদাকে থেঁতো নিন।
  • এরপর সেটি এক কাপ জলের মধ্যে ফুটিয়ে নিন।
  • এবার এটিকে ছেঁকে নেওয়ার পর এর সাথে বড় এক চামচ মত মধু মিশ্রিত করুন।
  • গরম গরম পান করুন।

কত বার এটি পান করা উচিত?

এটিকে চায়ের মত করে দিনে দুই থেকে তিন বার পান করুন।

কেন এটি করা হয়

আদা আপনার বিপাকের হারকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে যা ফলস্বরূপ ফ্যাট দহন করতে সহায়তা করে।কারণ স্তনগুলি মূলত গঠিত হয় মেদবহুল কলার সমন্বয়ে,সেই কারণে ফ্যাটের সামগ্রিক জ্বলন স্তনের আকার হ্রাস করে।

2. গ্রীন টি

গ্রীন টি’তে রয়েছে ওষধি গুণাবলী এবং এছাড়াও এটি ওজন হ্রাসে সহায়তা করে।

আপনার যা প্রয়োজন

  • গ্রীন টি
  • জল

প্রণালী

  • এক কাপ জল নিয়ে ফুটিয়ে নিন।
  • এরপর গ্যাস নিভিয়ে দিয়ে ঐ জলের মধ্যে এক চা চামচ গ্রীন টি যোগ করুন।
  • একটি ঢাকনা সহযোগে সেটিকে 2-3 মিনিটের জন্য চাপা দিয়ে রাখুন।
  • এরপর সেটি ছেঁকে নিয়ে তার সাথে এক চা-চামচ মধু যোগ করুন।
  • গরম অবস্থাতেই পান করুন।

কত বার এটি পান করা উচিত?

এক অথবা দুই মাসের জন্য আপনি এটি দিনে 3-4 বার করে পান করুন।এর পরেও আপনি এটি চালিয়ে যেতে পারেন।

কেন এটি করা হয়

গ্রিন টি’তে ক্যাটচিন রয়েছে যা ক্যালোরি দহন করে ওজন হ্রাসে সহায়তা করে যার ফলস্বরূপ শরীরের ফ্যাট এবং স্তনের আকারও হ্রাস পায়।

3. শণ বীজ

স্তনের আকার হ্রাসে শণ বীজও ব্যাপক সাহায্য করে থাকে।এটি দেহকে ডিটক্সিফাই বা বিষমুক্ত করে ওজন হ্রাসকে সহজতর করে তুলতে সাহায্য করে।

শণ বীজ

আপনার যা প্রয়োজন

  • শণ বীজ বা শণ বীজের তেল
  • জল

প্রণালী

  • বড় এক চামচ শণ বীজ নিয়ে চূর্ণ করে নিন।
  • এক গ্লাস জল ফুটিয়ে নিন।
  • এর সাথে গুঁড়ো করা শণ বীজ যোগ করুন।
  • এবার সেটি পান করুন।
  • আপনি যদি পছন্দ করেন তবে আবার আপনি জলের মধ্যে বড় 1-2 চামচ শণ বীজের তেল মিশিয়ে নিয়েও পান করতে পারেন।

কত বার এটি নেওয়া উচিত?

প্রতিদিন ভোরবেলায় খালি পেটে শণ বীজ অথব শণ বীজের তেল গ্রহণ করা যেতে পারে।

কেন এটি করা হয়

দেহে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া হল স্তনের আকার বৃদ্ধি পাওয়ার একটি অন্যতম কারণ।শণ বীজে বর্তমান ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড এই ইস্ট্রোজেনের মাত্রাকে হ্রাস করে,যার পরিণামে স্তনের আকার হ্রাস পায়।

4. নিম এবং হলুদের মিশ্রণ

ভারতীয় পরিবারগুলিতে,যেকোনও সংবেদনশীল ত্বকের এবং যেকোনও ধরনের সংক্রমণের জন্য নিম এবং হলুদকে একটি দুর্দান্ত প্রতিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।এটি আবার আপনাকে আপনার বৃহৎ স্তনের আকার হ্রাসেও সাহায্য করতে পারে।

আপনার যা প্রয়োজন

  • নিম পাতা
  • হলুদ
  • জল
  • মধু

প্রণালী

  • নিম পাতাগুলিকে ভালভাবে ধুয়ে নিন এবং এবার সেগুলিকে 4-5 কাপ জলের মধ্যে দিয়ে ফুটাতে থাকুন যতক্ষণ না সেই জল শুকিয়ে অর্ধেক হয়ে যায়।
  • এবার এটিকে ছেঁকে নিয়ে তার সাথে 2 চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং 1 চা-চামচ মধু যোগ করে সেটিকে পান করুন।

কত বার এটি পান করা উচিত?

কোনওরকম বাদ না দিয়ে টানা 2-3 মাস ধরে প্রতিদিন এই পাচনটি পান করুন।

কেন এটি করা হয়

পরিচর্যার সময় আপনার স্তনে প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে যা আপনার স্তন ফুলে ওঠার কারণ হয়ে ওঠে।আপনি যদি এই ক্ষেত্রে নিম এবং হলুদের পাচনটিকে গ্রহণ করেন এটি প্রদাহের সাথে স্তনের আকারও হ্রাস করবে।

5. মেথি বীজ

ওষধি গুণাবলী ছাড়াও,মেথি দানা আবার আপনার ত্বককে দৃঢ় করে তুলতেও সাহায্য করে।

মেথি বীজ

আপনার যা প্রয়োজন

  • মেথি বীজ
  • জল

প্রণালী

  • 5-6 ঘন্টার জন্য মেথি বীজগুলিকে জলে ভিজিয়ে রাখুন,এরপর সেগুলিকে সামান্য জল সহযোগে চূর্ণ করে একটি পেস্ট আকারে গড়ে তুলুন।
  • এবার এই পেস্টটিকে আপনার সমগ্র স্তনের উপর প্রলেপ আকারে প্রয়োগ করুন এবং এটিকে শুকোতে দিন।
  • কিছু পরে এটিকে জল দিয়ে ধুয়ে তুলে ফেলুন।

ক ভাবে হ্রাস করা যায়-আপনার জন্য 10 টি সহজ প্রতিকারকত বার এটি করা উচিত?

মেথি বীজের এই পেস্টটিকে সপ্তাহে 3-4 বার স্তনের উপর প্রয়োগ কর উচিত।

কেন এটি করা হয়

মেথি বীজে ত্বককে দৃঢ় করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে,যা স্তনকে দৃঢ় করে তুলতে এবং আকার হ্রাস করতে সাহায্য করে থাকে।এই পেস্টের প্রয়োগ আবার ত্বকের কুঞ্চনকেও প্রতিরোধ করে।

6. গার্সিনিয়া কম্বোগিয়া বা মালাবার তেঁতুল বা কুদম পুলি

এটি এক ধরনের ফল,যা ভারতে সহজলভ্য নয়।সুতরাং এটি আমরা ব্যবহার করতে পারি এটির সম্পূরকের সাথে যেটি বাজারে সহজেই পাওয়া যায়।

আপনার যা প্রয়োজন

  • গার্সিনিয়া কম্বোগিয়া সম্পূরকগুলি

প্রণালী

এটি প্রস্তুত করার কোনও প্রণালী নেই কারণ আপনি বাজারে এই সম্পূরকটিকে রেডিমেড হিসেবেই কিনতে পাবেন।

কত বার এটি নেওয়া উচিত?

এই সম্পূরকটিকে দিনে তিন বার করে গ্রহণ করা উচিত কিন্তু সেটি কেবলমাত্র আপনার ডাক্তারবাবুর পরামর্শের পরেই।

কেন এটি করা হয়

এটি আমাদের দেহের বিপাকীয় হারের মাত্রা বাড়ায় এবং দেহস্থ ফ্যাট দহনে সাহায্য করে,অতএব এর ফলস্বরূপ বক্ষদেশের আকার হ্রাস পায়।

7. মাছের তেলের সম্পূরক(কর্ড লিভার অয়েল)

মাছের তেলের সম্পূরকগুলি বাজারে সহজলভ্য এবং খুব সাধারণ একটা জিনিস,এটি বলা হয়ে থাকে যে,আপনার ত্বক এবং লিভারের জন্য এগুলি অত্যন্ত উপকারী।

মাছের তেলের সম্পূরক(কর্ড লিভার অয়েল)

আপনার যা প্রয়োজন

  • আপনার কেবল এই সম্পূরকটিকে বাজার থেকে কেনা প্রয়োজন যা ক্যাপসুল অথবা তেল রূপে বাজারে সহজলভ্য।

প্রণালীক ভাবে হ্রাস করা যায়-আপনার জন্য 10 টি সহজ প্রতিকার

  • একটি ক্যাপসুল অথবা এই সম্পূরকটির এক চা-চামচ তেল গ্রহণ করুন।

কত বার এটি করা উচিত?

  • আপনি প্রতিদিন একবার করে এটি গ্রহণ করতে পারেন এবং কত দীর্ঘদিন ধরে সেটি চালিয়ে যাওয়া উচিত সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে আপনি আপনার ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন।

কেন এটি করা হয়

  • মাছের তেলে বা কর্ড লিভার অয়েলে উপস্থিত ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড দেহে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা হ্রাস করে যা সার্বিক ভাবে ওজন হ্রাসে সাহায্য করে থাকে।

8. যোগ-ব্যায়াম

শরীরের ফিটনেস বজায় রাখার মত ভাল আর কোনও কিছুই হতে পারে না।এটি আপনার স্তন সহ সম্পূর্ণ দেহকেই টোনিং করতে সাহায্য করে থাকে।

পুশ-আপস

আপনার স্তনের আকার হ্রাস করার এটি সব থেকে ভাল একটি ব্যায়াম।এটি স্তন অঞ্চলের সমস্ত ফ্যাটের দহনে সাহায্য করে সেগুলিকে দৃঢ় এবং উন্নত করে তোলে।

জগিং

প্রতিদিন 30 মিনিট করে জগিং করা কেবল বক্ষদেশের আকার হ্রাস করতে সাহায্যের জন্যই ভাল নয় এটি আবার আপনার সম্পূর্ণ দেহকেই দৃঢ় করে তোলে ও দেহের ফিটনেস বজায় রাখে।এটি আবার আপনাকে সমগ্র দিন জুড়ে তরতাজা এবং প্রাণচঞ্চল করে রাখবে।

সাঁতার

এটিকে সকল যোগ-ব্যায়ামের অন্যতম একটি সেরা ব্যায়াম হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।এটি সমগ্র শরীরের একটি অনুশীলন এবং প্রত্যহ সাঁতার কাটার ফলে সেটি সম্পূর্ণ দেহকে আরও বেশী টানটান করে তুলতে পারে,কারণ এটি করার জন্য আপনার হাতগুলিকে বক্ষ অঞ্চলের দুপাশ দিয়ে পুরোপুরিভাবে ঘোরানোর প্রয়োজন হয়।এর ফলে এটি বক্ষদেশ অঞ্চলের ফ্যাটের দহনে সাহায্য করে থাকে,সুতরাং স্তনের আকার হ্রাস পায়।

যোগা

সেই সুপ্রাচীন কাল থেকে অনুশীলন করে আসা ব্যায়ামগুলির মধ্যে অন্ত্যতম একটি সেরা রূপ হল যোগা।এটি কেবল আপনার শারীরিক নয় মানসিক নিরাময়ও করে।কিছু যোগার অঙ্গবিন্যাস স্তনের আকৃতি হ্রাসে সহায়তা করতে পারে,সেগুলির মধ্যে পড়ে অর্ধ চক্রাসন,সূর্য নমস্কার,তদাসন,পশ্চিমত্তাসন,মন্দুকাসন এবং ভৈ্রভদ্রাসন। তবে,ভাল ফল পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই এই অঙ্গবিন্যাসগুলি সঠিক উপায়েই অনুশীলন করতে হবে।

9. মালিশ

এটি বক্ষ অঞ্চলের ভালভাবে রক্ত সঞ্চালনে এবং ফ্যাটের দহনে সাহায্য করে থাকে। উপরন্তু,এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এবং যেকোনও বয়সের মহিলাদের জন্যই নিরাপদ।তবে,এই পদ্ধতিতে বক্ষদেশের আকার কখনই এক রাত্রে বা মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই হ্রাস পায় না।

মালিশক ভাবে হ্রাস করা যায়-আপনার জন্য 10 টি সহজ প্রতিকার

আপনার যা প্রয়োজন

  • জলপাই তেল,নারকেল তেল,আমন্ড তেল অথবা স্তনের আকার হ্রাস করার উপযোগী একটি ক্রীম।

প্রণালী

  • তেল অথবা ক্রীমের সহিত বৃত্তীয় গতিতে আঙুলের সাহায্যে একবার করে এক-একটা করে স্তন মালিশ করা শুরু করুন এবং তারপর সেটিকে উপরের দিকে সঞ্চালনা করতে থাকুন।
  • এটা করা হয়ে গেলে,ক্রীম অথবা তেলে সিক্ত না হওয়া পর্যন্ত সেটি এই অবস্থায় রেখে দিন।

কত বার এটি করা উচিত?

দিনে দু’বার করে আপনার এই মালিশটি করা উচিত কমপক্ষে তিন মাসের জন্য অথবা আপনার প্রত্যাশিত ফল লাভ না করা পর্যন্ত।

কেন এটি করা হয়

যখন দৃঢ় হাতে এই মালিশটিকে সঠিক ভাবে করা হয়ে থাকে,এটি মেদ কলাগুলিকে টেনে রাখে যার ফলে স্তনগুলিকে আকারে ছোট দেখতে লাগে।এটি আবার শুশ্রুষারত মায়েদের স্তন উন্নত করে তুলতেও সাহায্য করে থাকে।

10. ডায়েট

দিনে 7-8 বার করে অল্প অল্প পরিমাণে সুষম আহার গ্রহণ আপনার দেহের বিপাকীয় হারের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।এর ফলে ওজন হ্রাস পায় এবং বক্ষদেশের আকারে টান সৃষ্টি করে।বক্ষদেশের আকার হ্রাস করার জন্য যে কয়েকটি খাবার অবশ্যই খেতে হবে এবং এড়াতে হবে সেগুলির কয়েকটি নীচে তালিকাভুক্ত করা হলঃ

  • আপনি অবশ্যই প্রতিদিন অন্ততপক্ষে 2-3 ধরনের ফল খাওয়া নিশ্চিত করুন।এগুলিতে ক্যালোরির তুলনায় জলীয় উপাদান বেশী থাকার কারণে সেগুলি আপনার পেট ভরাতে সাহায্য করবে।
  • বেশী পরিমাণে মাছ খান কারণ এতে অল্প পরিমাণে ক্যালোরি থাকে এবং এছাড়াও মাছ হল ওমেগা-3 সমৃদ্ধ যা ওজন হ্রাসে সাহায্য করে।
  • খুব বেশী পরিমাণে লবণ গ্রহণ এড়িয়ে চলুন বিশেষত,আপনার মাসিক চক্র চলাকালীন সময়ে।এই সময় দেহে ইস্ট্রোজেন হরমোন উচ্চ মাত্রায় থাকে সেই কারণে কিছু জন এমনকি জল ধারণ সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন,যার ফলে স্তন সহ দেহ ফুলে ওঠে।
  • প্রক্রিয়াজাত খাদ্যগুলি অথবা শ্বেতসার বহুল খাদ্যগুলিকে এড়িয়ে চলুন।

স্তনের আকার হ্রাস করার অতিরিক্ত পরামর্শ

স্তনের আকার কীভাবে কমানো যায় সে সম্পর্কে আপনার এখন একটা পরিষ্কার ধারণা রয়েছে।তবে এগুলি ছাড়াও,এক্ষেত্রে আরও কিছু অন্যান্য টিপসও রয়েছে যেগুলি অবশ্যই অনুসরণ করুন একটি সুঠাম বক্ষদেশ পেতে।

  • অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে সংযত হন,কারণ অ্যালকোহল শরীরে জল ধারণে সাহায্য করে যা আপনার স্তন সহ সামগ্রিক দেহের ওজন বৃদ্ধি করে।
  • সঠিক সাইজের এবং ভাল মানের ব্রা এর জন্য বিনিয়োগ করুন কারণ এটি আপনার স্তনের অবনমিত হয়ে যাওয়া থেকে প্রতিরোধ করবে।
  • যদি আপনার স্তনে প্রদাহ থাকে,সেখানে ঠাণ্ডা কমপ্রেস করুন এবং অবিলম্বে আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে দেখা করুন।

এখন যেহেতু আপনি একজন অনেকগুলি বিকল্পের অধিকর্তা,আপনার পক্ষে সবচেয়ে উপযুক্ত এমন যেকোনও একটিকে বেছে নিন এবং নিষ্ঠা ভরে সেটিকে সযত্নে অনুসরণ করুন।আপনার দিক থেকে সামান্য কষ্ট এবং প্রতিশ্রুতি খারাপের তুলনায় আপনার কেবল ভালই করবে।