শিশু

একটি শিশুর কতক্ষণ ঘুমের প্রয়োজন (সদ্যজাত থেকে 12 মাস বয়সের বাচ্চার)

শিশুর জীবনে ঘুম হল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান বিশেষত প্রারম্ভিক কয়েক মাসেজন্মের পর প্রথম তিন মাস শিশুরা দিনের বেলায় 70% এর কাছাকাছি সময় ঘুমিয়ে কাটায়সকল শিশুই অনন্য অনুরূপ তাদের ঘুমের ভঙ্গীমার ক্ষেত্রেওসুতরাং সেক্ষেত্রে কত সময় জুড়ে সদ্যজাত শিশুরা ঘুমায়এই প্রশ্নের কোনও নির্দিষ্ট উত্তর নেইআপনার শিশুর ঘুমের ভঙ্গীমা লক্ষ্য করা এবং সেটিকে বুঝতে পারাটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং তারপর দেখবেন তাদের পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে কিনা

একটি শিশুর প্রকৃতপক্ষে কত ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন?

বেশীর ভাগ শিশুই জন্মের পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ সারা দিন ধরেই ঘুমিয়ে কাটায় এবং জেগে ওঠে শুধুমাত্র সামান্য কিছু সময়ের জন্যই,বেশীরভাগ ক্ষেত্রে যখন তাদের খিদে পায়বিভিন্ন শিশুর ঘুমের এবং খাওয়ার অভ্যেস বিভিন্ন ধরণের হয় এবং এটি খুব সম্ভবত সবকিছুই আপনি আপনার নজরের মধ্যে রাখবেন এমনকি রাতের বেলাতেও

নিচে একটি সারণী দেওয়া হল যেখানে দেখানো হল সদ্যজাত শিশুদের জন্মের প্রথম বারো মাসে গড় ঘুমের সময়

শিশুর বয়স

দিনের বেলায় ঘুমের সময় (ঘন্টা)

রাতের বেলায় ঘুমের সময় (ঘন্টা)

মোট ঘুমের সময় (ঘন্টা)

সদ্যজাত

8

8 থেকে 9

16 থেকে 17

এক মাস বয়সী

6 থেকে 7

8 থেকে 9

14 থেকে 16

তিন মাস বয়সী

4 থেকে 5

10 থেকে 11

14 থেকে 16

ছয় মাস বয়সী

Related Post

3

11

14

নয় মাস বয়সী

2 থেকে 3

11

13 থেকে 14

বারো মাস বয়সী

2 থেকে 3

11

13 থেকে 14

প্রথম তিন মাসে যথেষ্ট খিদে পাওয়ার কারণে শিশুদের মাঝেমধ্যেই জেগে ওঠা সম্ভব,এবং তিন ঘন্টার বেশী সময় একটানা ঘুমাতে পারবে নাএটি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে থাকবে এবং যত তারা বেড়ে উঠতে থাকবে দীর্ঘ ঘুমের সাথে অভ্যস্থ হতে শুরু করবেযখন শিশুর তিন মাস বয়সে পড়বে তখন আপনি তাদের ঘুমের একটি ভঙ্গীমা লক্ষ্য করতে সমর্থ হবেন এবং আপনি একটি রুটিন তৈরি করতে পারেন যা আপনার শিশুকে সাহায্য করবে রাতের বেলায় তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে এবং দীর্ঘ সময় ধরে সেটি বজায় রাখতে

ঘুমের পরামর্শ

এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হল সেগুলি আপনার বাচ্চাকে সাহায্য করতে পারে সহজে ঘুমানোর ক্ষেত্রে,তাদের বয়স বন্ধনীর উপর নির্ভর করে

1) সদ্যজাত থেকে দুমাস বয়সে শিশুর ঘুম

প্রাথমিক মাস গুলিতে, শিশুরা তাদের হাত ও পা গুলিকে আকস্মিক ভাবে টান করে, মৃদু ভাবে হাসে অথবা ভ্রূকুটি করে এবং চুষবার মত শব্দ সৃষ্টি করেএগুলি হয় প্রতিবর্তক্রিয়ার কারণে যেগুলি তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাসদ্যজাতরা জানে না কীভাবে নিজেদের প্রশমিত করতে হয় এবং তাদের এগুলি করানোর জন্য মাবাবার প্রয়োজন হবেতাদের শান্ত করার উপায় বের করা, দোলা দেওয়া,জড়িয়ে ধরে আদর করা এবং বুকের দুধ খাওয়ানো হল এমন কিছু উপায় যেগুলির সাহায্যে বাচ্চা ঘুমিয়ে পড়তে পারবে

2) 2-4 মাস বয়সে শিশুর ঘুম

এটি হল সেই সময়পর্ব যখন থেকে শিশুরা একটি নির্দিষ্ট ঘুমের রুটিন স্থির করা শুরু করেশিশুকে সকালের আলোক রশ্মির সামনে প্রকাশ করুন এবং দিনের বেলায় তাদের খেলার অনুমতি দিনএকটি প্রাক বিছানাসময়ের রুটিন শুরু করুন যেমন,ঘুম পাড়ানোর আগে আপনার শিশুকে স্নান করানো,গল্প বলা অথবা খাওয়ানোএটি আপনার বাচ্চার ঘুমের একটি ভঙ্গীমা তৈরী করবে এবং এটিই যে তাদের ঘুমের সময় সেই সংকেত নির্দেশ দেবে

3) 4-6 মাস বয়সে শিশুর ঘুম

এই সময়পর্বে শিশুরা খুব কম বার রাত্রিকালীন খাওয়া শুরু করবে এবং একটানা সারা রাত ঘুমাবেএই পর্বে, বেশীরভাগ শিশুই রাতের বেলায় জেগে ওঠে না, আর যদি বা জেগে ওঠে তবে তারা পুনরায় নিজেদের ঘুমে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সমর্থ হবেসামান্য দোলা দেওয়া বা পিঠ চাপড়ানো এক্ষেত্রে কিছুটা সাহায্য করতে পারে

4) 6-12 মাস বয়সে শিশুর ঘুম

যেহেতু এই সময় থেকে শিশুরা মানুষদেরকে চিনতে শুরু করে এবং সবকিছু বুঝতে চেষ্টা করে, তাদের মধ্যে বিকাশ পায় বিচ্ছিন্নতার উদ্বেগসে বুঝতে পারবে কখন আপনি তার কাছাকাছি নেই, এটিই তার রাত্রে জেগে ওঠার কারণ হতে পারে এবং সে কেঁদে ওঠেসামান্য স্বান্তনা বাচ্চাকে শান্ত করার ক্ষেত্রে সাহায্য হতে পারেতারা আবার ঘুমিয়ে পড়বে যখন বুঝতে পারবে যে আপনি তার আশে পাশেই আছেন

ঘুমানোর পদ্ধতি সকল শিশুর ক্ষেত্রেই পৃথক ধরণের হয় এবং সেক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট উত্তর হয় না ‘সদ্যজাত বাচ্চা কত ঘন্টা ঘুমায়’এই প্রশ্নের,যেহেতু এটি নির্ভর করবে একটি শিশুর থেকে অন্য শিশুর উপরেযাইহোক, এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ যে, ঘুমের সময়সীমা যা শিশুরা সাধারণত ঘুমায় এবং তাদের ঘুমের ভঙ্গীমা পর্যবেক্ষণ করাএটি আপনাকে সঠিক পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে যদি আপনি তাদের ঘুমের ভঙ্গীমায় কোনও রকম অসামঞ্জস্যতা দেখতে পান

Share
Published by
দেবশ্রী ব্যানার্জী