গর্ভাবস্থায় হয়ে থাকা বহু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হল পাইলস বা অর্শ।পাইলস হল পায়ুপথের এবং তার চারপাশের অঞ্চলের উদ্দীপ্ত অথবা ফুলে থাকা শিরার সমন্বয়।এই উদ্দীপ্ত শিরাগুলি আভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উভয় প্রকারেই উপস্থিত থাকতে পারে।গর্ভাবস্থায় পাইলস বা অর্শ অত্যধিক যন্ত্রণা এবং অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে,তবে সুসংবাদ হল এই যে,বহু ক্ষেত্রে পাইলস বা অর্শের চিকিৎসা ঘরেই করা যেতে পারে কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার ব্যবহারের মাধ্যমে।
গর্ভাবস্থায় পাইলস(অর্শ)-এর জন্য 21 টি কার্যকর প্রাকৃতিক প্রতিকার
গর্ভাবস্থার যেকোনও সময়েই পাইলস হতে পারে,তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই হবু মায়েদের মধ্যে তাদের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে এটি হতে দেখা যায়।এখানে গর্ভাবস্থায় অর্শের জন্য কিছু ঘরোয়া প্রতিকার দেওয়া হল যেগুলি স্বস্তি আনতে সাহায্য করতে পারে।
১.আপেল খান
আপেল হল ফাইবার বা তন্তুর একটি ভাল উৎস,এবং আপেলে দ্রবণীয় ফাইবার বা তন্তু কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। খোসা সহ আপেল খাওয়া পাইলসের জন্য দুর্দান্ত উপকারীতা আনে।গর্ভাবস্থায় পাইলস বা অর্শকে দূরে সরিয়ে রাখতে নিয়মিত ভাবে আপেল বা আপেলের রস খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
২.নিয়মিত ভিত্তিতে কলা খান
গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে কলা দুর্দান্ত উপকারীতা প্রদান করে।এই বিস্ময়কর খাদ্যটি কেবলমাত্র ফোলিক অ্যাসিড,পটাসিয়াম এবং ভিটামিন B-6 সমৃদ্ধই নয়,এটি আবার ভ্রূণের স্নায়ু তন্ত্রের বিকাশের জন্যও বেশ উপকারী।গর্ভাবস্থায় পাইলস প্রতিরোধ করতে কলা-যা হল ফাইবার বা তন্তু সমৃদ্ধ এবং পেকটিন-এক প্রকার ফাইবার বা তন্তু যা পরিপাক নালীর মধ্যে খাদ্যকে কার্যকরভাবে পরিচালনা করে-এর ভাল উৎস,নিয়মিত ভিত্তিতে খাওয়া উচিত।
৩.ব্রকোলি খান
ব্রকোলি হ’ল ভিটামিন C এবং ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ও বিটা ক্যারোটিনের মতো ভিটামিন এবং খনিজগুলির সাথে ভরপুর শক্তির আধার। ব্রকোলি ভিটামিনগুলিতে সমৃদ্ধ এবং ফাইবার বা তন্তু এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির একটি সমৃদ্ধ উৎস। গর্ভাবস্থায় স্যুপ রূপে, অন্যান্য সবজির সাথে নেড়েচেড়ে ভেজে নিয়ে অথবা ভাপিয়ে নিয়ে ব্রকোলি খেলে তা পাইলসকে দূরে ঠেলে রাখার একটি দুর্দান্ত উপায় হয়ে ওঠে।ব্রোকলি আপনার পাচন তন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখে এবং তার সাথে একটি উপকারী গর্ভাবস্থার ডায়েটের ন্যায্যতা প্রতিপন্ন করে।
৪.কমলালাবু খান
এই সাইট্রাস ফ্রুটগুলি বা আম্লিক ফলগুলি হল ভিটামিন C, ভিটামিন A, ক্যালসিয়াম এবং ভাল পরিমাণে ফাইবারে সমৃদ্ধ পুষ্টির শক্তিঘর।এই পুষ্টিকর পণ্যগুলি এই সুস্বাদু ফলটিকে গর্ভবতী মহিলাদের হয়ে থাকা পাইলসের প্রাকৃতিক উপায়ে চিকিৎসার জন্য আদর্শ করে তোলে। কমলালেবুগুলি আবার রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করতেও সহায়ক, বিশেষত যদি আপনি গর্ভাবস্থাকালীন ডায়াবেটিসে ভুগে থাকেন।
৫.নারকেল তেলের প্রয়োগ
নারকেল তেলে আছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বা প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলি যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিশেষ করে যারা পাইলসে ভুগছেন তাদের জন্য যথেষ্ট স্বস্তি নিয়ে আসে।একটি নরম তুলোর বলকে নারকেল তেলের মধ্যে ভিজিয়ে নিয়ে সেটিকে প্রভাবিত এলাকার উপর অকুণ্ঠচিত্তে প্রয়োগ করুন।মল ত্যাগের ঠিক পরক্ষণেই নারকেল তেল প্রয়োগ করা সবচেয়ে ভাল।প্রভাবিত এলাকায় দিনে দুই থেকে তিন বার নিয়মিতভাবে আপনি নারকেল তেল প্রয়োগ করতে পারেন।
৬.বাথ টাবে উষ্ণ জলের স্নান
উষ্ণ জলে স্নান, বা বাথ টাবে বসে স্নান করার ফলে তা পাইলসের সময় জ্বলন, চুলকানি এবং যন্ত্রণার বিরুদ্ধে বেশ কিছুটা স্বস্তি আনে।দিনে দু’বার করে নিজেকে বাথটাবের মধ্যে সিক্ত রাখুন অথবা প্রতিদিন দুই বার করে 15-20 মিনিটের জন্য প্লাস্টিকের গামলায় ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলি নিমজ্জিত করুন।এই অনুশীলনটি আবার পায়ুপথকে পরিষ্কার রাখতেও সহায়তা করবে।সিক্ত করার পরে একটি নরম ওয়াশক্লথ বা তোয়ালে দিয়ে আলতো ভাবে শুকনো করে মুছে নিন যেহেতু কোনও আর্দ্রতা বা স্যাঁতসেঁতে জ্বলন বা চুলকানি্র কারণ হতে পারে।আপনি আবার পাইলসের জন্য একটি হালকা অ্যান্টিসেপটিক ক্রীমও প্রয়োগ করতে পারেন যা আপনাকে আরও স্বস্তি এনে দেবে।
৭.আপনার খাদ্য তালিকায় কুমড়োকে অন্তর্ভূক্ত করুন
বিটা ক্যারোটিন,ফোলেট,ম্যাগনেসিয়াম,আয়রণ,ভিটামিন B-6 এবং ভিটামিন E এর মত বহু অপরিহার্য পুষ্টিকর উপাদানের এক দুর্দান্ত উৎস হল কুমড়ো,যা গর্ভাবস্থায় পাইলস বা অর্শের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে প্রভূত সাহায্যকারী।একটি বহুমুখী সবজি-কুমড়ো নানা উপায়ে খাওয়া যেতে পারে,আপনি যেভাবে খেতে সবচেয়ে বেশী পছন্দ করেন সেটিকেই বেছে নিন।
৮.ন্যাশপাতি খান
একজন গর্ভবতী মহিলা ন্যাশপাতি খাওয়ার মাধ্যমে ভাল পরিমাণে ফাইবার,ফোলেট, ভিটামিন C এবং পটাসিয়াম পেতে পারেন।গর্ভাবস্থায় ন্যাশপাতি খেলে তা কেবল পাইলস বা অর্শের উপসর্গগুলিকেই সহজ করে তুলবে না,তার সাথে এটি আবার উচ্চ রক্ত-চাপ,দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি ফুলে যাওয়া এবং মুখের ফোলাভাব-এ ধরণের যে সমস্যাগুলির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা গর্ভাবস্থায় থেকে থাকে সেগুলিকেও পরিচালনা করতে সাহায্য করবে।ন্যাশপাতিগুলি দুর্দান্ত জলখাবার হিসেবেও কাজে আসে।
৯.আপনার খাদ্য তালিকায় বিনস বা মটরশুটির সংযোগ করুন
আপনার ডায়েটে মটরশুটি অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে গর্ভাবস্থার পাইলস বা অর্শকে প্রতিহত করুন।সব ধরণের মটরশুটি গর্ভাবস্থায় পাইলস মোকাবিলায় কার্যকর।বিনস বা মটরশুটি হল প্রাকৃতিক দ্রবণীয় ফাইবারে সমৃদ্ধ যা গর্ভাবস্থায় পাইলসের মোকাবিলার জন্য সেগুলিকে অন্যতম সেরা ভেষজ প্রতিকার করে তুলেছে।বিনসের দ্রবণীয় প্রাকৃতিক তন্তু আবার রক্তে শর্করার মাত্রা পরিচালনা করতে সহায়তা করে এবং গর্ভাবস্থাকালীন ডায়াবেটিসের জন্যও বেশ ভাল।
১০.আপনার খাদু তালিকায় মিষ্টি বা রাঙা আলু যোগ করুন
মিষ্টিআলুতাররেচকবৈশিষ্ট্যেরজন্যপরিচিত।এটিফাইবার বা তন্তু সমৃদ্ধএবংফ্যাট বা চর্বিএবংকোলেস্টেরলকম মাত্রায় থাকে-যাগর্ভবতীমহিলাদেরপাইলসপ্রতিরোধেরউপায়গুলিরজন্যআদর্শ.. আপনিযদিডায়াবেটিসে আক্রান্ত না হয়ে থাকেনতবেভিটামিন C এবংঅ্যামিনোঅ্যাসিডের(উভয়েই হজমে সাহায্য করতে পারে)একটিভালডোজপেতেপ্রতিদিনকিছুমিষ্টিআলুখান।তবেমনেরাখবেনযে, দিনেএটি 100 গ্রামেরবেশিখাওয়ারফলেশরীরেরফোলাভাব, স্থূলতাএবংশর্করারমাত্রাবেড়েযায়।
১১.আপনার ডায়েটে বায়োফ্ল্যাভোনয়েডস সমৃদ্ধ খাবার সংযুক্ত করুন
গর্ভাবস্থায় আপনার খাদ্য তালিকায় সেই সকল খাবার অর্ন্তভূক্ত করুন যেগুলো বায়োফ্ল্যাভোনয়েডস সমৃদ্ধ এবং আপনাকে অর্শ থেকে মুক্তি দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় অর্শ থেকে নিস্কৃতি পাবার জন্য লেবু,কমলা লেবু,পাকা পেঁপে,ব্রকোলি,এবং স্ট্রবেরী হল কয়েকটি উপযোগী খাদ্য যেগুলি বায়োফ্ল্যাভোনয়েডস সমৃদ্ধ।যদিও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ অর্শের প্রতিকারের জন্য ব্যবহার করা হয় তবুও গর্ভাবস্থায় আপনার এবং আপনার শিশুর সুরক্ষার সার্থে প্রাকৃতিক পদ্ধতির ব্যবহার সবসময়ই শ্রেষ্ট পন্থা বলে বিবেচিত হয়।
১২. বরফের প্যাক ব্যবহার করুন
অর্শ নিবারণের অন্যতম সবথেকে সহজ এবং সস্তার উপায় হল বরফের প্যাক ব্যবহার করা।একটি নরম পরিষ্কার কাপড়ের টুকরো নিন এবং তাতে কয়েকটি বরফের টুকরো নিয়ে আলতো করে আক্রান্ত অংশের উপর রাখুন।চুলকানি,জ্বালা,যন্ত্রণা,এবং প্রদাহ নিবারণের ক্ষেত্রে বরফ খুবই উপযোগী।এই সাধারণ পদ্ধতিটি দিনে দুইবার বা তিনবার প্রয়োগ করুন যার ফলে আপনি খুব দ্রুত অর্শের অস্বস্তি থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারেন।
১৩. সক্রিয় হন এবং নিয়মিত যোগ-ব্যায়াম করুন
ভাল স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি হল সক্রিয় হয়ে ওঠা এবং নিয়মিত ভিত্তিতে যোগ-ব্যায়াম অনুশীলন করা।অনুরূপ প্রয়োগ গর্ভাবস্থাতেও করা প্রয়োজন।গর্ভাবস্থায় পাইলস বা অর্শ থেকে স্বস্তি আনতে কেগেল ব্যায়াম এবং পেশী গঠণের অনুশীলনগুলি অত্যন্ত কার্যকর। তবে,গর্ভাবস্থায় যেকোনও ধরনের শারীরিক ব্যায়াম অনুশীলন শুরু করার পূর্বে দয়া করে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
১৪. তাজা অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী ব্যবহার করুন
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীতে আছে নিরাময় গুণাবলী,এবং আপনি যদি গর্ভাবস্থাকালে পাইলসে ভুগে থাকেন তবে তা থেকে মুক্তি আনার ক্ষেত্রে এটি প্রকৃতই খুব ভালভাবে কাজ করে।আদর্শগতভাবে, বেশীরভাগ সুপারমার্কেটগুলিতে উপলব্ধ তাজা অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন কিম্বা আরও ভাল হয়, আপনার নিজের বাগানের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অ্যালো ভেরার পাতা ব্যবহার করা।একটি অ্যালোভেরার পাতার ত্বকের ছালটিকে চিঁড়ে নিন। এবার সাবধানে জেলটি বের করে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে প্রতিদিন দু’বার করে প্রয়োগ করুন।বাজারে সহজলভ্য সুগন্ধযুক্ত অ্যালোভেরার জেল এবং ক্রীমগুলি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
১৫. আলুর প্যাক ব্যবহার করুন
পাইলসের কারণে হয়ে থাকা যেকোনও রকমের অস্বস্তি বা প্রদাহ হ্রাস করার ক্ষেত্রে আলু অদ্ভুতভাবে ভীষণ ভাল কাজ করে থাকে।ব্যবহারের জন্য,একটা আলুকে ভালভাবে ধুয়ে তার খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে সেটিকে সামান্য জল অথবা লেবুর রসের সাথে একটি মিক্সচার গ্রাইন্ডারে পিষে নিন।এবার আলুর মিশ্রণটি থেকে এর রসটিক চিপে নিয়ে তার মধ্যে একটি তুলোর বলকে ভিজিয়ে নিন।এবার সেই রসটিকে আক্রান্ত স্থানে দিনে দু থেকে তিনবার করে প্রয়োগ করুন।আপনার খাদ্য তালিকায় আলুর সংযোজনও আবার কোষ্ঠকাঠিন্যকে এবং হজমের অন্যান্য সমস্যাকে সহজ করে তুলবে।
১৬. আপনার খাদ্য তালিকায় রসুন যোগ করুন
রসুনে বহু ওষধি এবং নিরাময় গুণাগুণ রয়েছে।রসুনে উপস্থিত অ্যালিসিন, মাইক্রোঅর্গানিজিম বা অণুজীবগুলির কারণে হয়ে থাকা যেকোনও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লাড়াইয়ে ভীষণভাবে কার্যকর।গর্ভাবস্থায় অর্শের প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে,8-10 কোয়া রসুনের খোসা ছাড়িয়ে সেগুলিকে থেঁতো করে নিন,এরপর সেই থেঁতো করা রসুনগুলিকে 4-5 কাপ জলের মধ্যে দিয়ে সেটিকে দু মিনিটের জন্য ফুটিয়ে নিন।যখন ঠাণ্ডা হয়ে যাবে ছেঁকে নিন এবং তরলটিকে প্রভাবিত অঞ্চলে ব্যবহার করুন।প্রতিবার প্রতিলেপনের পরে স্থানটিকে চাপড় মেরে শুকিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটিকে নিশ্চিত করুন।
১৭.মূলো খান
মূলো জীবাণুগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক।অল্প দুধের সাথে মূলোকে পিষে নিয়ে মূলোর একটি পেস্ট তৈরী করুন।এবার এই পেস্টটিকে আক্রান্ত স্থানে দিনে দুই থেকে তিনবার প্রয়োগ করুন।আপনি আবার আপনার খাদ্য তালিকায় মূলো সংযোগ করতে পারেন কারণ এটি ডায়েটরি ফাইবার বা খাদ্যগত তন্তুর সমৃদ্ধ উৎস এবং অন্ত্র অন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করতে সহায়তা করে।
১৮.কালো জিরে ব্যবহার করুন
গর্ভাবস্থায় পাইলস বা অর্শের সাথে সম্পর্কযুক্ত উপসর্গগুলিকে হ্রাস করার ক্ষেত্রে কালো জিরে ভীষণভাবে কার্যকর।কালো জিরের থাইমোকুইননে রয়েছে প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য।কয়েক চা চামচ বা এক মুঠো কালোজিরা নিন এবং জল মিশিয়ে সেটির একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন।এবার এই পেস্টটি মলদ্বার অঞ্চলে প্রয়োগ করুন এবং সেটিকে 15 মিনিটের জন্য ঐ অবস্থাতেই রেখে দিন।এবার ঈষদুষ্ণ জল সহযোগে ঐ অঞ্চলটি ধুয়ে ফেলে চাপড় মেরে শুকিয়ে নিন।পাইলস বা অর্শের লক্ষণ থেকে মুক্তি পেতে দিনে দুবার করে আক্রান্ত স্থানে পেস্টটি প্রয়োগ করুন।
১৯.তাজা ফল এবং শাক-সবজি
গর্ভাবস্থায় পাইলস থেকে স্বস্তি পাওয়ার সর্বোত্তম উপায় হল ভাল খাদ্য গ্রহণ করা যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল এবং সবুজ শাক-সবজি।তাজা ফল এবং শাক-সবজি শুধুমাত্র আপনাকেই নয় আপনার সাথে আপনার গর্ভস্থ শিশুকেও যথেষ্ট পুষ্টি সরবরাহ করে।এছাড়াও এগুলি আবার গর্ভাবস্থায় অর্শের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আপনাকে সাহায্য করে।অর্শ থেকে মুক্তি পেতে কিছু ফল এবং সবজিকে আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকার সাথে যুক্ত করা উচিত,সেগুলির মধ্যে মোসাম্বি লেবু,কমলা লেবু,পাতি লেবু,ক্র্যানবেরি এবং শতমূলী উল্লেখযোগ্য।
২০.আপনার দৈনিক খাদ্য তালিকায় আরও বেশী করে প্রবায়োটিক খাবারগুলিকে যোগ করুন
গর্ভাবস্থায় অর্শের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার দুর্দান্ত একটি উপায় হল প্রবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারগুলি গ্রহণ করা।এই প্রোবায়োটিক খাবারগুলি দেহে আরও ভাল ব্যাকটিরিয়া পেতে সহায়তা করে,একটি স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের উন্নতি সাধনেও দুর্দান্ত।কিমচি(এটি একটি কোরিয়ান খাদ্যপদ,যা সাধারণত মূলা এবং বাঁধা কপির মত সবজিগুলিকে সন্ধান প্রক্রিয়ার দ্বারা প্রস্তুত করা হয়ে থাকে),দই,সন্ধান প্রক্রিয়াজাত চীজ এবং কম্বুচা চা হল এমন ধরনের কিছু খাদ্য উপকরণ যেগুলির মধ্যে রয়েছে খুব ভাল পরিমাণে প্রোবায়োটিক।
২১. নিরাপদ রেচক বা ল্যাক্সেটিভ ব্যবহার করুন
কোষ্ঠকাঠিন্য হল অর্শের পূর্বাভাস যা অর্শকে অগ্রমুখী করে তোলে,সুতরাং খাবারে সমৃদ্ধ ফাইবারের অনুপস্থিতি পাইলস বা অর্শ বিকাশের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।সর্বোপরি গর্ভাবস্থায় পাইলস প্রতিরোধ করতে,আপনি নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি অথবা ল্যাকটুলোজ সিরাপ খেতে পারেন,যা আপনার পেট পরিষ্কার করবে এবং আপনার পাচন তন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখে।
উপরে উল্লিখিত প্রতিকারগুলি হল সহজ ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবস্থা যা গর্ভাবস্থায় পাইলস থেকে মুক্তি দিতে পারে।এছাড়াও অর্শ থেকে স্বস্তি পেতে আরামদায়ক সুতির পোশাক পরিধান,প্রচুর পরিমাণে জল পান এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে তা এক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে ওঠে।
পাইলস অথবা অর্শ(হেমোরয়েডস)কার্যকরভাবে ঘরেতেই পরিচালনা করা যেতে পারে কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতির সাহায্যে।তবে এটি দৃঢ় ভাবে সুপারিশ করা হয়ে থাকে যে, পাইলস অথবা অর্শের সাথে হতে পারে এমন কোনও ধরনের লক্ষণ আপনি চিহ্নিত করতে পারার সাথে সাথেই অবিলম্বে আপনার ডাক্তারী সহায়তা গ্রহণ করা প্রয়োজন। সময়মত ডাক্তারী হস্তক্ষেপ আপনাকে আপনার অবস্থার সামাল দিতে সাহায্য করতে পারে এবং আরও যেকোনও ধরনের বড় জটিলতা থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।