গর্ভাবস্থা হল একটি বিচিত্র পর্যায় এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রায় সকল মহিলাই মাতৃত্বকে আলিঙ্গন করে নিতে চান।কিন্তু গর্ভাবস্থার এই যাত্রাপথ সকল মহিলার ক্ষেত্রেই খুব একটা সহজ নাও হয়ে উঠতে পারে।গর্ভাবস্থা এটির সাথে নির্দিষ্ট কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে এবং এ জাতীয় একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে দাঁতে ব্যথা।আপনি যদি জানতে চান গর্ভাবস্থায় কেন আপনার দাঁতে ব্যথা হতে পারে তবে নিম্নলিখিত নিবন্ধটিকে সম্পূর্ণ রূপে ঘেঁটে মগজে অভ্যন্তরস্থ করুন।গর্ভাবস্থায় দাঁত ব্যথার বিভিন্ন কারণগুলি এবং আপনার দাঁতের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনি কীভাবে সেগুলির সাথে মানিয়ে নিতে পারেন তা জানুন।
গর্ভাবস্থার কারণে কোনও রকম দাঁতের সমস্যা হতে পারে কিনা এ ব্যাপারে আপনি যদি চিন্তা করতে থাকেন,তবে এই প্রশ্নটির সহজ উত্তরটি হল হ্যাঁ,গর্ভাবস্থার ফলে দাঁত এবং মাড়ির সমস্যা হতে পারে।গর্ভাবস্থায় দাঁতের সমস্যাটি বাড়তে পারে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা,আপনার গর্ভস্থ সন্তানের ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা এবং এই ধরনের অন্যান্য কারণগুলির জন্য।তবে আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করেন,দাঁতের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখেন এবং নিয়মিত আপনার দন্ত চিকিৎসকের পরিদর্শনের মধ্যে থাকেন,আপনি গর্ভাবস্থায় দাঁতের যেকোনও ধরনের সমস্যা থেকেই দূরে থাকতে পারবেন।
একটি গবেষণায় এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে,সেক্ষেত্রে একজন গর্ভবতী মহিলার মাড়ির মারাত্মক অসুস্থতার সহিত সরাসরি যোগসূত্র ছিল,যিনি পরবর্তীতে অকাল প্রসব বা নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই অপরিণত শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন।আরেকটি গবেষণা করা হয়েছিল 100 জন গর্ভবতী মহিলার উপর,যারা দীর্ঘমেয়াদী দাঁতের রোগে ভুগছিলেন,তাদের মধ্যে 18 জন মহিলার অপরিণত বা অকাল শিশুর জন্ম দেওয়ার নথি পাওয়া গেছে।তবে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং অনতিবিলম্বে দাঁতের চিকিৎসা অপরিণত বা অকাল শিশু প্রসবের ঝুঁকি বহুলাংশে হ্রাস করে।
নিম্নে কয়েকটি কারণ উল্লিখিত হল যেগুলি গর্ভাবস্থায় দাঁত ব্যথার কারণ হতে পারেঃ
যেখানে কিছু মহিলা তাদের সন্তান প্রসব না করা পর্যন্ত তাদের দাঁতের চিকিৎসা হয়ত স্থগিত রাখতে পছন্দ করতে পারেন,অন্যরা তখন আরও জটিলতা বেড়ে ওঠাকে এড়ানোর জন্য এর চিকিৎসা করাতে চাইতে পারেন।এখানে কিছু চিকিৎসার উল্লেখ করা হল যেগুলি আপনার ডাক্তারবাবু হয়ত আপনার জন্য সুপারিশ করতে পারেনঃ
কখনও কখনও আপনার ডাক্তারবাবুকে দাঁতের ক্ষতের ব্যপ্তিটি নির্ধারণ করতে এক্স-রে ব্যবহার করতে হতে পারে। অনেক মহিলা আশঙ্কা করেন যে এক্স-রে নেওয়া হয়ত তাদের অনাগত সন্তানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আপনার চিকিৎসার জন্য একান্তই প্রয়োজনীয় না হওয়া অবধি আপনার দন্ত চিকিৎসক কোনও এক্স-রে করানোর সুপারিশ হয়ত করবেন না,তবে তিনি যদি তা করে থাকেন তবে আপনাকে হয়ত বলা হবে এমন একটি লেড অ্যাপ্রোন পরার কথা যা আপনার বাচ্চাকে এক্স-রে এর খারাপ প্রভাব থেকে বাঁচাতে পারে।
যখন আপনি আপনার দাঁতের সমস্যার সমাধান করতে আপনার দন্ত চিকিৎসকের কাছে যান তখন তার নজরে এটি নিয়ে আসুন যে আপনি গর্ভবতী,যেহেতু দাঁত ব্যথার জন্য এমন কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলি গর্ভাবস্থায় গ্রহণের ফলে হয়ত শিশুর জন্মগত ত্রুটি এবং আপনার সন্তানের আরও অন্যান্য জটিলতাগুলি সৃষ্টি হতে পারে।যদি আপনার দাঁত এবং মাড়ির কোনওরকম সংক্রমণ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের একটি সম্পূর্ণ কোর্স আপনার সম্পন্ন করা প্রয়োজন হতে পারে।
গর্ভাবস্থা হয়ত আপনাকে আপনার স্বাস্থ্যের বিষয়ে অতিরিক্ত সতর্ক করে তুলতে পারে আর যখন দাঁতের সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার বিষয়টি আসে তখন আপনি প্রথমে কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার চেষ্টা করতে চাইতে পারেন।বেশ, সুসংবাদটি হল এখানে আমাদের এমন কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার রইল যা আপনি গর্ভাবস্থায় দাঁতের ব্যথার জন্য কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারেন:
গর্ভাবস্থায় বার বার বমি করার প্রবণতা অথবা অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স আপনার দাঁতের উপর হয়ত পেটের অ্যাসিডের একটি আবরণ সৃষ্টি করতে পারে।এই অ্যাসিড দাঁতের এনামেলকে ক্ষতিগ্রস্থ করে তোলে যার ফলে দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং গর্ভাবস্থায় বমি হলে তা হয়ত আপনার দাঁতগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে তুলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম শুধুমাত্র আপনার হাড়ের ভরকেই রক্ষা করে না এটি আবার তার সাথে ভ্রূণের হাড় এবং দাঁত গঠণেও সহায়তা করে।সুতরাং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলিকে আপনার ডায়েটে অন্তর্ভূক্ত করা উচিতঃ
ক্যালসিয়াম আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ কিন্তু দেহে ভিটামিন D এর অভাবে এটি সঠিকভাবে আপনার শরীরের মধ্যে শোষিত হতে পারে না।অতএব ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি আপনার শরীরে যথেষ্ট ভিটামিন D -ও থাকা উচিত।আর সেটি পাওয়ার জন্য আপনি এই খাদ্যগুলিকে আপনার ডায়েটের মধ্যে রাখতে পারেনঃ
গর্ভাবস্থায় কোনও রকম দাঁতের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাকে হ্রাস করতে আপনার দাঁত ব্রাশ করার সময় যে কয়েকটি বিষয় আপনার মনে রাখা উচিত সেগুলি হলঃ
যদি আপনি গর্ভবতী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে থাকেন,অন্যান্য সাবধানতাগুলি গ্রহণ করা ছাড়াও,আপনার দাঁতের স্বাস্থ্যের প্রতিও আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করা উচিত যাতে গর্ভাবস্থায় আপনার কোনও রকম দাঁতের সমস্যা না হয়ে থাকে।এখানে কিছু প্রাক-গর্ভাবস্থায় দন্ত স্বাস্থ্য যত্নের পরামর্শ রইল যা হয়ত আপনাকে সাহায্য করতে পারে আপনার মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যবিধির যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রেঃ
প্রতিরোধ নিরাময়ের চেয়ে সর্বদা ভাল;অতএব,গর্ভাবস্থায়কোনওপ্রকারদাঁতেরসমস্যানাহওয়ারদিকেআপনার প্রচেষ্টাকে সংহত করা উচিত।তবে আপনার মধ্যে যদি কোনও প্রকার দাঁতের সমস্যা বিকাশ পেয়ে থাকে তবে দেরী না করে দ্রুত আপনার দন্ত চিকিৎসকের কাছে যান।