গর্ভাবস্থা হল নানা ধরণের শারীরিক পরিবর্তন হওয়ার একটা সময়।আপনাকে অবশ্যই এই সময় হয়ে থাকা মর্নিং সিকনেশ বা প্রাতঃকালীন অসুস্থতা, অবসাদ, শারীরিক ব্যথা–বেদনা এবং অন্যান্য আরও অনেক পরিবর্তনগুলির ব্যাপারে অবগত হতে হবে। তবে গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে হরমোনীয় ওঠা–নামার কারণে আপনি হয়ত এমন একটি পরিবর্তন হতে অনুভব করবেন যেটির জন্য আপনি প্রস্তুত নাও থাকতে পারেন– আর সেটি হল যোনির শুষ্কতা।এর ফলে যোনি অঞ্চলটি শুষ্ক হয়ে ওঠে এবং ত্বকে চুলকানি সৃষ্টি হয় আর সঙ্গমের সময় যন্ত্রণা ও অস্বস্তি হয়ে থাকে।গর্ভাবস্থায় যোনি শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণ এবং প্রতিকারগুলি সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুন।
সাধারণত, যোনি নালীতে উপস্থিত শ্লেষ্মা ঝিল্লির কারণে যোনিটি আর্দ্র এবং প্রসারণশীল হয়ে থাকে।এই সকল ঝিল্লি স্বচ্ছ তরলের একটি পাতলা স্তর দ্বারা যোনিটিকে আবৃত করে রাখে। গর্ভাবস্থায় সমানে ওঠা নামা করা হরমোনগুলি শ্লেষ্মা ঝিল্লির ক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে, ফলে যোনি শুকনো হয়ে যায়, যেখানে যোনিটি পরে শুষ্ক এবং চুলকানিযুক্ত হয়ে ওঠে। যোনিতে আর্দ্রতার অনুপস্থিতি যৌনতার সময় ব্যথার কারণ হয়ে ওঠে এবং আপনার যৌনজীবনেও তা প্রভাব ফেলতে পারে।
যদিও শুষ্ক যোনি, একটা ছোটখাটো সামান্য সমস্যা বলে মনে হতে পারে, কিন্তু এটা ভীষণ অস্বস্তি এবং যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠতে পারে।যোনির শুষ্কতা অ্যালার্জি, ঠান্ডা লাগার ওষুধ, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস, অটোইমিউন ব্যাধি, মূত্রনালীর সংক্রমণ বা অ্যান্টি–ইস্ট্রোজেন ওষুধগুলির কারণে হতে পারে।সুতরাং, আপনার যদি যোনি শুষ্ক হতে দেখেন তবে সে ব্যাপারে আপনার চিন্তিত হওয়া উচিত এবং আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে সে ব্যাপারে আলোচনা করে তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।যোনিতে কোনওরকম অস্বস্তি, জ্বলন এবং চুলকানি অনুভূত হলে তা আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে জানাতে হবে।যোনি শুষ্ক হয়ে যাওয়ার অন্যান্য কারণগুলি নির্ধারণ করার পরে, তিনি একটি উপযুক্ত চিকিৎসার পরামর্শ আপনাকে দেবেন।
যোনিতে, যোনি ঝিল্লি দ্বারা নিঃসৃত শ্লেষ্মার একটি পাতলা স্তর থাকে।যোনিপথের এই এপিথেলিয়াম স্তরটি ইস্ট্রোজেন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা যোনিকে পিচ্ছিল রাখে।গর্ভাবস্থায় ইস্ট্রোজেন মাত্রার একটা ভারসাম্যহীনতা তরল হ্রাসের একটা কারণ হয়ে ওঠে, আর তার ফলে যোনি শুষ্ক হয়ে যায়। প্রারম্ভিক গর্ভাবস্থায় যোনি শুষ্ক হয়ে যাওয়া বেশ সাধারণ একটা ব্যাপার কারণ প্রথম ত্রৈমাসিকেই ইস্ট্রোজেনের মাত্রা তীব্র হ্রাস পায়। ইস্ট্রোজেনের ভারসাম্যহীনতা যোনির এপিথেলিয়াম স্তরে এবং জরায়ুতে শ্লেষ্মা উৎপাদন হ্রাস করে আর তার ফলে যোনি শুষ্ক ও চুলকানিযুক্ত হয়ে ওঠে।
গর্ভাবস্থাকালে যদি আপনার যোনি শুষ্ক ও চুলকানিযুক্ত হয়ে থাকে, সে ব্যাপারে প্রথমেই আপনার ডাক্তারবাবুকে অবগত করান।আপনার ডাক্তারবাবু হয়ত, এই শুষ্ক হয়ে ওঠার পিছনে আরও অন্য কি কি কারণ আছে তা অনুসন্ধান করবেন এবং তারপর তিনি একটি সঠিক চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেবেন।শুষ্কতার প্রতিকার হিসেবে আপনি গ্রহণ করতে পারেন এমন কিছু পদক্ষেপের ব্যাপারে এখানে আলোচনা করা হলঃ
যোনির শুষ্কতা হল, গর্ভাবস্থায় আপনি লক্ষ্য করতে পারেন এমন বেশ কিছু জরায়ুর পরিবর্তনের মধ্যে কেবল একটি।এখানে আরও কিছু জরায়ুর পরিবর্তন উল্লেখ করা হল যেগুলি গর্ভাবস্থায় দেখা দিতে পারেঃ
গর্ভাবস্থায় ph স্তরের ভারসাম্যহীনতা এবং হরমোনীয় পরিবর্তনগুলি যোনি লালচে হয়ে যাওয়া এবং সেখানে চুলকানি সৃষ্টি হওয়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে।আবার আপনি যদি তার সাথে সেখানে জ্বলন অনুভব করেন, সাথে সাথে ডাক্তারবাবুর শরণাপন্ন হয়ে সে ব্যাপারে তাঁর সাথে আলোচনা করুন।
ভেরিকোজ শিরাগুলি সাধারণত পায়ে দেখা দেয়, তবে অবাক হবেন না যদি গর্ভাবস্থায় আপনি তা আপনার যোনি অঞ্চলেও লক্ষ্য করে থাকেন।এটা সাধারণত হয়ে থাকে সার্ভিক্সের ওপর আপনার বর্ধিত ওজন এবং চাপ পড়ার কারণে।যোনি অঞ্চলে দেখা দেওয়া ভেরিকোজ শিরাগুলি সাধারণত প্রসবের পর উধাও হয়ে যায়।