গর্ভাবস্থা

গর্ভাবস্থাকালে হাইপোগ্লাইসেমিয়া(নিম্ন রক্ত শর্করা)

আমরা যে সকল খদ্য গ্রহণ করি তা শর্করায় ভেঙ্গে যায়,আর সেটিই হল গ্লুকোজ। এরপর সেই গ্লুকোজ দেহের বিভিন্ন কোষের মধ্যে প্রবেশ করে এবং বিপাক ক্রিয়ার জন্য শক্তি সরবরাহ করে,যা দেহকে সচল রাখে।যদি রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্লুকোজ না থাকে,তবে সেটি যে অবস্থাটির সৃষ্টি করে তা “হাইপোগ্লাইসেমিয়া” অথবা নিম্ন রক্ত শর্করা বা লো ব্লাড সুগার নামে পরিচিত,যার মানে হল দেহে দ্রবীভূত শর্করার ঘনত্ব প্রয়োজনীয় পরিমাণের নীচে থাকা।হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ব্যপ্তির উপর নির্ভর করে এটি হালকা থেকে গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।সাধারণ ক্ষেত্রে,এটির ফলে দেহে ক্লান্তি ও অবসাদ আসে,তবে এটি যদি খুব চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় তা থেকে মূর্ছা যাওয়া বা কোমায় চলে যাওয়ার মত ঘটনাও ঘটতে পারে।হাইপোগ্লাইসেমেটিক হয়ে ওঠা,ব্যাপারটি নিজেই বেশ সমস্যাজনক,আবার সেটি যদি গর্ভাবস্থায় হয়ে থাকে,সেটি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনার অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ব্যাপারটি আসলে কি?

গর্ভাবস্থায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকে যখন স্বাভাবিক রক্ত শর্করা্র পরিধি প্রতি মিলিলিটারে 700 মাইক্রোগ্রামের নিচে নেমে যায়।বিপরীতক্রমে,রক্ত শর্করার স্বাভাবিক পরিসর প্রতি মিলিলিটারে 700-1000 মাইক্রোগ্রাম হওয়া উচিত।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ধরণগুলি

আপনি যদি হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কোনওরকম লক্ষণ লক্ষ্য করে থাকেন,দয়া করে যতটা শীঘ্র সম্ভব আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে কথা বলুন যাতে সময় মত আপনার রোগ নির্ধারণ করে তার চিকিৎসা শুরু করা যেতে পারে।এক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় দুটি সাধারণ ধরণের হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকে,সেগুলি নিম্নরূপঃ

1. রিঅ্যাকটিভ হাইপোগ্লাইসেমিয়া

গর্ভাবস্থাকালে রিঅ্যাকটিভ হাইপোগ্লাইসেমিয়ায়,আপনি খাবার খাওয়ার প্রথম কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আপনার রক্ত শর্করার মাত্রা দ্রুত হারে নেমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে।মধুমেহ রোগীদের মধ্যে এই ধরণের হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়াটা ভীষণ স্বাভাবিক ব্যাপার,তবে এটি এই শর্ত ব্যাতীত মানুষদের মধ্যেও দেখতে পাওয়া যায়।

2. ফাস্টিং হাইপোগ্লাইসেমিয়া

ফাস্টিং হাইপোগ্লাইসেমিয়ায়,আপনার খাওয়ার মাঝের ব্যবধানের মধ্যেই রক্ত শর্করা মারাত্মক মাত্রায় নেমে যায়।এই ধরণটি আবার মধুমেহ রোগ নেই এমন মানুষদের মধ্যে দেখা দেওয়াটা আরও বেশি সাধারণ ঘটনা।

কারা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকিতে বেশি থাকেন?

নিম্নলিখিত পরিস্থিতিগুলির ক্ষেত্রে,গর্ভবতী মহিলারা এই হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকিতে বেশি থাকেনঃ

  • একজন গর্ভবতী মহিলার মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে তার গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে,বিশেষ করে গর্ভাবস্থার 8-16 সপ্তাহের মধ্যে।
  • গর্ভাবস্থায় আপনি যদি প্রায়ই বার বার অসুস্থ হয়ে পড়েন,সেক্ষেত্রে আপনার মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে।
  • নিম্ন রক্ত শর্করা অথবা হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কোনও পূর্ব ইতিহাস থাকলে সেটিও হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় নিম্ন রক্ত শর্করার কারণগুলি কি?

গর্ভাবস্থায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার সম্ভাব্য অনেকগুলি কারণ আছে।সেগুলির মধ্যে কয়েকটি হলঃ

1. প্রাতঃকালীন অসুস্থতা

গর্ভাবস্থাকালে মর্নিং সিকনেস বা প্রাতঃকালীন অসুস্থতা,গা গুলানো বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার কারণে রক্ত শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে।এর কারণ হতে পারে খাবার খাওয়ার তুলনায় বেশি পরিমাণ খাবার প্রত্যাখ্যান করার জন্য,যার ফলে আপনার নিয়মিত ডায়েটে ক্যালোরির অভাব ঘটে থাকে।ঘন ঘন বমি করা,ওজন হারানো এবং মূর্ছা যাওয়া অথবা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ার মত কোনওকিছু যদি আপনি লক্ষ্য করে থাকেন,দয়া করে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন।

2. জীবনযাত্রা

জীবনযাত্রার এমন অনেকগুলি বিষয় আছে,যেগুলি শরীরের রক্ত শর্করার মাত্রায় প্রভাব ফেলে।যেমন,যোগ-ব্যায়ামের মত অনুশীলনগুলি বেশি মাত্রায় করলে প্রয়োজনীয় শক্তি যোগানের জন্য দেহস্থ অতিরিক্ত গ্লুকোজ ভেঙ্গে যায়।অন্য আরেকটি কারণ হল পর্যাপ্ত খাবার না খাওয়া,যা হল প্রথম,দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকে যথাক্রমে 1800,2200 এবং 2400 ক্যালোরির কম।অ্যালকোহল সেবনও হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার কারণ হতে পারে,কারণ এটি লিভার থেকে রক্ত শর্করা নিঃসরণকে ব্যাহত করে।

3. ডায়াবেটিস বা মধুমেহ

গর্ভাবস্থাকালে,হাইপারগ্লাইসেমিয়া বা রক্ত শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া হল সাধারণ ব্যাপার।এটি ডায়াবেটিস বা মধুমেহ হওয়ার ফলে হয়ে থাকে,যেখানে ইনসুলিন হরমোন কোষগুলিতে দক্ষতার সাথে রক্ত শর্করা বহন করে না এবং পরিণতিতে রক্ত প্রবাহে অতিরিক্ত মাত্রায় শর্করা দেখা দেয়।তবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া আবার ডায়াবেটিসের ওষুধ থেকেও হয়ে থাকে,যেমন ইনসুলিন ইঞ্জেকশনগুলি।এই সকল ইনসুলিন ইঞ্জেকশনগুলি শরীরে রক্ত শর্করার মাত্রা প্রয়োজনের তুলনাতেও অতিরিক্ত পরিমাণে কমিয়ে দেয়,যা হাইপোগ্লাইসেমিয়াকে প্ররোচিত করে।অন্য ক্ষেত্রে,গর্ভাবস্থায় হয়ে থাকা হরমোনের পরিবর্তনগুলির কারণে ডায়াবেটিস থাকা গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকতে পারে এমনকি যদি তারা ইনসুলিন ওষুধ গ্রহণ নাও করেন সেক্ষেত্রেও। আপনি যদি গর্ভবতী এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন,দয়া করে সুষম আহারটি গ্রহণ করার পাশাপাশি নিয়মিত ভিত্তিতে রক্ত শর্করার মাত্রাটিও পরীক্ষা করানোর ব্যাপারটি নিশ্চিত করুন।

4. গর্ভাবস্থাকালীন ডায়াবেটিস

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হল গর্ভাবস্থাকালীন এমন একটি অবস্থা,যেটি হয়ে থাকে হরমোনের প্রভাব,গর্ভাবস্থাকালীন মানসিক চাপ এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ করার কারণে।এটির কারণে আপনার আপনার রক্ত শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে,যা হাইপোগ্লাইসেমিয়াকে প্ররোচিত করে।এটি বিশেষত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করা মহিলাদের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।আনুমানিক প্রায় 9% মহিলা তাদের গর্ভাবস্থায় গর্ভাবস্থাকালীন ডায়াবেটিসে ভুগে থাকেন,তবে প্রসবের পর এই অবস্থাটির সমাধান নিজে থেকেই হয়ে যায়।

Related Post

5. চিকিৎসাজনিত অবস্থাগুলি

ডায়াবেটিস ছাড়াও চিকিৎসাজনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণেও গর্ভাবস্থায় বহু মহিলার মধ্যেই হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকতে পারে।সেগুলির মধ্যে কিছু হয়ত আপনার গর্ভাবস্থায় এবং ভ্রূণের বিকাশে জটিলতাও সৃষ্টি করতে পারে।তাই যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এই ব্যাধিগুলির মধ্যে রয়েছে গ্লুকাগন এবং কর্টিসল হরমোন ভারসাম্যহীনতা, তীব্র হেপাটাইটিস,অঙ্গ ক্ষয়,উৎসেচকের ঘাটতি,অগ্ন্যাশয়ের টিউমার ইত্যাদি।

6. ওষুধ

ইনসুলিন ছাড়াও অন্যান্য ডায়াবেটিসের ওষুধ রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।সালফোনাইলিউরিয়াস এবং ম্যাগলিটিনাইডের মতো মুখে খাওয়ার ওষুধগুলি ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়,যেগুলি আবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ারও কারণ হতে পারে।সালফোনামাইডস, পেন্টামিডাইন, কুইনাইন এবং স্যালিসাইলেটের মত বেশ কয়েকটি ওষুধও রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

গর্ভাবস্থায় নিম্ন রক্ত শর্করার লক্ষণ এবং চিহ্নগুলি

শর্করা দেহের অনেকগুলি বিপাকীয় প্রক্রিয়ার জন্য শক্তির উৎস হওয়ার কারণে,নিম্ন রক্ত শর্করা শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ করার কারণ হয়ে উঠবে।তার মধ্যে কয়েকটি হলঃ

  • দুর্বলতা,ক্লান্তিবোধ এবং অবসাদ আপনাকে পরিশ্রান্ত এবং বিরক্ত করে তুলতে পারে।
  • স্পষ্টতার সহিত কোনওকিছু চিন্তা করাই কঠিণ হয়ে ওঠে।
  • সারা শরীর ঘেমে যায় এবং প্রায়শই অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাঁপতে থাকে।
  • আপনি হয়ত আবার দ্রুত অথবা অনিয়মিত হৃদস্পন্দনও অনুভব করতে পারেন।
  • আপনার দৃষ্টি ঝাপসা কিম্বা অস্পষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • আপনার মধ্যে মেজাজ এবং উদ্বেগের মাত্রার ওঠানামা হতে পারে।
  • যদি আপনার হাইপোগ্লাইসেমিয়া তীব্র হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনি হয়ত খিঁচুনি,হৃদরোগ এবং এমনকি সংজ্ঞা হারাতেও পারেন।
  • হাইপোগ্লাইসেমিয়া্র লক্ষণগুলি আবার ঘুমের মধ্যেও দেখা দিতে পারে,যেমন-
    1. শীতের রাত্রে ঘেমে যাওয়া
    2. প্রায়শই দুঃস্বপ্ন দেখা
    3. রাত্রে ভাল ঘুমের পরেও ক্লান্ত
    4. সকালে ওঠার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেওয়া

কীভাবে গর্ভবতী মহিলাদের নিম্ন রক্ত শর্করা নির্ণয় করা হয়?

সাধারণত গর্ভকালীন ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে পরীক্ষা করানো হয়,তবে মহিলার দেহে যদি ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলি দেখা দেয় তবে সেক্ষেত্রে আরও পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন হতে পারে।আর আপনার মধ্যে যদি ডায়াবেটিস বা মধুমেহ রোগটি না থেকে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণটি সনাক্ত করার জন্য আরও কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।এ সবকিছু ছাড়াও আবার চিকিৎসকদের আপনার চিকিৎসাজনিত ইতিহাস,ডায়েট,রুটিন মাফিক যোগ-ব্যায়াম ইত্যাদি বিষয়গুলির বিশদ বিবরণ সরবরাহ করা প্রয়োজন হতে পারে।

গর্ভাবস্থার উপর হাইপোগ্লাইসেমিয়ার প্রভাবগুলি

গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশু উভয়ের উপরেই হাইপোগ্লাসেমিয়া একটা প্রভাব ফেলতে পারে।

1. মায়ের উপর প্রভাব

হাইপোগ্লাসেমিয়ার গুরুতর ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে।তা ছাড়াও গর্ভাবস্থাকালীন ডায়াবেটিস আবার জটিল প্রসবের কারণ হিসেবেও পরিচিত,যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় সম্ভাব্য অনিষ্টগুলি ঘটিয়ে থাকতে পারে।প্রারম্ভিক গর্ভাবস্থায় হাইপোগ্লাইসেমিয়ে রাতের বেলায় চড়াও হতে পারে,যেখানে প্রতি মিলিলিটারে রক্ত শর্করার মাত্রা এক লাফে 300 মাইক্রোগ্রামেরও নীচে নেমে যেতে পারে,যার পরিণতিতে হৃদরোগ দেখা দিতে পারে এবং মারাত্মক ক্ষেত্রে এটি আবার কোমাতেও চলে যেতে পারে।

2. বাচ্চার উপর প্রভাব

গর্ভাবস্থায় নিম্ন রক্ত শর্করা আবার শিশুর স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে।ভ্রূণের বিকাশের ক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে,যেমন শারীরিক এবং মানসিক অস্বাভাবিকতগুলি,কম ওজনের বাচ্চার জন্ম ইত্যাদি।গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সহ একজন গর্ভবতী মহিলার মধ্যে জন্ডিস সহ সন্তান প্রসবের ঝুঁকির সম্ভাবনা বেশি থাকে।এই সকল শিশুদের রক্তে প্রায়শই শর্করার মাত্রা মারাত্মকভাবে কম থাকে এবং যত্ন সহকারে তাদের নিরীক্ষণ করা প্রয়োজন।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার তীব্রতা হ্রাসের জন্য চিকিৎসা

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার তীব্রতার ক্ষেত্রে কয়েকটি চিকিৎসা পদ্ধতি আছে যেগুলি চিকিৎসার জন্য নিযুক্ত করা যেতে পারেঃ

  • ফলের রস,চিনির জল,গ্লুকোজ ট্যাবলেটের মত উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবারগুলি রোগীকে খাওয়ানো,এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে।তার খাবারের মধ্যে সর্বসাকুল্যে প্রায় 15 গ্রাম মত কার্বোহাইড্রেট থাকবে।কার্বোহাইড্রেটগুলি খাওয়ার 15 মিনিটের মধ্যেই রক্ত শর্করা স্বাভাবিক হয়ে যাওয়া উচিত।
  • যদি কোনও ক্ষেত্রে রোগী কিছুই না খায় বা পান না করে,যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তার দেখান।
  • প্রসব যন্ত্রণা সময় এবং প্রসব করার সময় রোগীর রক্ত শর্করার মাত্রা নিরীক্ষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • কিছু বিরল ক্ষেত্রে,টিউমারের কারণে হরমোন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ায় সেগুলি অপসারণ করার প্রয়োজন হবে।

গর্ভাবস্থায় হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় ভোগার সময় যে সাবধানতাগুলি অবলম্বন করতে হবে

হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় ভোগা মহিলাদের অবস্থাটি নিয়ন্ত্রণের জন্য কয়েকটি সাবধানতা গ্রহণ করতে হয়ঃ

  • যে কোনও মূল্যে অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
  • একটি বহনযোগ্য গ্লুকোমিটার দিয়ে আপনার রক্ত শর্করা মাত্রা পরীক্ষা করুন।
  • সব সময় হাতের নাগালে মিষ্টি জাতীয় টুকিটাকি খাবার রাখুন।
  • দিনে তিনটি বড় খাবারের পরিবর্তে সেটিকে ভেঙে অল্প অল্প করে কিন্তু বারে বারে খান।
  • আপনি যদি কোনও একটি নির্দিষ্ট দিনে বেশি কাজ করে থাকেন,তবে সেই দিনে বেশি খাবার খান।
  • যদি আপনাকে ইনসুলিন নেওয়ার প্রেসক্রিপশন করা হয় তবে সঠিক সময়ে সঠিক ডোজ নেওয়ার কথা মনে রাখুন।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া আপনার গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে ঘটতে পারে, যদি আপনি মাত্র একটা মিল বাদ দেন তাহলেও।এই নিবন্ধে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার যে লক্ষণগুলির কথা আলোচনা করা হল তার একটিও যদি আপনি নিজের মধ্যে লক্ষ্য করেন তাহলে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে কথা বলে তাঁকে অবশ্যই সব কিছুই বিস্তারিতভাবে জানাবেন,তার ফলে তিনি সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করতে পারবেন এবং তার উপযুক্ত ওষুধ বিবেচন করে তিনি তা আপনার জন্য প্রেসক্তিপশনে লিখে দেবেন, যার দ্বারা আপনি এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবেন।আপনার যদি হাইপারগ্লাইসেমিয়া থেকে থাকে,সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় কীভাবে রক্ত শর্করা হ্রাস করা যায় তা জানার জন্য আপনি আবার আপনার ডাক্তারবাবুকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে তাঁর থেকে তা জেনে নিতেও পারেন।

Share
Published by
দেবশ্রী ব্যানার্জী