বাচ্চাদের জন্য কৃষ্ণের শৈশবের 15টি সর্বোত্তম গল্প

বাচ্চাদের জন্য কৃষ্ণের শৈশবের 15টি সর্বোত্তম গল্প

গল্প বলা শুধু বাবা-মা এবং সন্তানদের মধ্যে বন্ধন তৈরির এক উপায়ই নয়, সাথে সাথে নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা ও মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়ার একটি সহজ এবং মজার উপায়। ভগবান কৃষ্ণের শৈশবের গল্পগুলি জানতে পড়ুন যেগুলি শিশুরা নিশ্চিত করে ভালবাসবে।

শিশুদের জন্য নীতি সহ প্রভু কৃষ্ণের গল্প

প্রভু কৃষ্ণ হলেন শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে একইভাবে জনপ্রিয় হিন্দু দেবতাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর গল্পগুলি মজা, হাসি এবং ভালো আদর্শ দিয়ে ভরা আখ্যান। শিশুদের উপভোগ করার জন্য এখানে প্রভুর 15টি সর্বোত্তম গল্প রয়েছে:

1. কৃষ্ণের বাবা-মায়ের গল্প

অনেক আগে, উগ্রসেন নামে একজন রাজা ছিলেন, যার দুই সন্তান ছিল – কংস নামে একটি ছেলে এবং দেবকী নামে একটি মেয়ে। দেবকী একজন শিষ্ট মহিলা ছিলেন, কিন্তু কংস মন্দ ছিলেন। যখন তিনি বড় হয়ে উঠলেন, তখন তিনি তাঁর বাবাকে কারাগারে বন্দী করে রাখেন এবং রাজসিংহাসন দখল করেন, যখন তাঁর বোন বিয়ে করেন রাজা বাসুদেবকে।

এক সুন্দর দিনে, কংস আকাশ থেকে এক সতর্কবার্তা শুনলেন (আকাশবাণী) – “তোমার বোনের অষ্টম ছেলে বড় হয়ে একদিন তোমাকে মেরে ফেলবে।” এটি বদমাস কংসকে অন্তর থেকে কাঁপিয়ে দিল, এবং সে তার বোনকে হত্যা করতে চাইল। কিন্তু, বাসুদেব তার জীবনের জন্য ভিক্ষা চাইল এবং কংসকে তাদের অষ্টম সন্তানকে হত্যা করতে দিতে রাজি হল। কংস তার নিজের বোন ও তার স্বামীকে কারাগারে রাখল। দম্পতির অষ্টম সন্তানের নাম ছিল প্রভু কৃষ্ণ, যিনি কংসের তাঁকে হত্যা করার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে বেঁচেছিলেন এবং অবশেষে তার বদমাস মামাকে পরাজিত করেছিলেন।

নীতি – যদি আপনি খারাপ হন এবং আপনার খারাপ উদ্দেশ্য থাকে, তবে আপনি আপনার পাপের জন্য শাস্তি পাবেন। সবসময় ইতিবাচক হন এবং অন্যদের ভাল করার চিন্তা করুন।

2. প্রভু কৃষ্ণের জন্ম

দেবকী ও বাসুদেব তার ভাই কংসের দ্বারা কারাগারে ছিল। প্রতিবার যখন সে সন্তানের জন্ম দেয়, তখন কংস নিজে এসে শুধু নিজের হাতে করে বাচ্চাকে মেরে ফেলত। দেবকীর সপ্তম পুত্রের গর্ভপাত হয়, কিন্তু তিনি রহস্যময়ভাবে রাণী রোহিণীর গর্ভে স্থানান্তরিত হন, যিনি কৃষ্ণের দাদা বলরাম হিসাবে পৃথিবীতে এসেছিলেন।

মধ্যরাতে তাদের অষ্টম সন্তান পৃথিবীতে এসেছিল এবং কারাগারে জন্মগ্রহণ করেছিল। এটি ছিল প্রভু কৃষ্ণ এবং এই বিশেষ দিনটি জন্মাষ্টমী হিসাবে পালন করা হয়।

নীতি – যদি কিছু ভাল হওয়ার হয়, তা সবসময় হবে। ভালো সবসময় মন্দকে পরাজিত করবে।

3. কিভাবে বাসুদেব কৃষ্ণের জীবন রক্ষা করলেন

কৃষ্ণ বিষ্ণু রূপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এবং তার বাবা-মা প্রার্থনা করেছিলেন যে তিনি যেন একটি সাধারণ শিশুতে পরিণত হন যাতে তারা তাকে কংসের থেকে লুকিয়ে রাখতে পারেন। প্রভু তাঁর পিতাকে উপদেশ দেন তাঁকে বৃন্দবানে নিয়ে যেতে এবং তাকে একটি নবজাতক শিশুকন্যার সাথে বদলে নিতে। তারপর, জাদুর মতো, কারাগারের রক্ষীরা গভীরভাবে ঘুমিয়ে পড়েছিল এবং সকল তালা ও চেনগুলি নিজে নিজেই খুলে গিয়েছিল।

কিভাবে বাসুদেব কৃষ্ণের জীবন রক্ষা করলেন

বাসুদেব ছোট কৃষ্ণকে নিয়ে বৃন্দাবন চলে যান। যখন তিনি যমুনা নদীর কাছে আসেন, তখন এটিতে বন্যা হচ্ছিল। যেহেতু বাসুদেব তখনও নদী পেরোতে চেষ্টা করেছিলেন, কৃষ্ণকে তার মাথার উপর রাখেন, জল কৃষ্ণের পায়ের আঙ্গুল স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গেই রহস্যজনকভাবে হ্রাস পায়, যাতে তিনি তার যাত্রা চালু রাখতে পারেন। তারপর তিনি যশোদার বাড়ীতে পৌঁছালেন, বাচ্চাদের পরিবর্তন করলেন এবং বাচ্চা মেয়েটিকে কারাগারে ফিরিয়ে আনলেন। দেবকী ও বাসুদেব আশা করেছিলেন যে কংস মেয়েটিকে ছেড়ে দেবে কারণ ভবিষ্যদ্বাণী হয়েছিল যে একটি ছেলে কংসকে হত্যা করবে, কিন্তু সে কোনও কথা শুনল না। সে বাচ্চাকে হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মেরে ফেলার জন্য পাথরের উপর ছুঁড়ে ফেলল। কিন্তু মেয়েটি দেবী দুর্গাতে রূপান্তরিত হয়ে কংসকে বলল যে কৃষ্ণ জীবিত আছেন এবং তার খারাপ কাজের জন্য তাকে শাস্তি দেবেন।

নীতি – কখনও কখনও, আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরেও শক্তি থাকে। আপনার যদি শুধুমাত্র মন্দ উদ্দেশ্য থাকে, আপনি সফল হবেন না।

4. কৃষ্ণ এবং পুতানা রাক্ষসী

কৃষ্ণের মামা কংস তাকে মেরে ফেলার জন্য মরিয়া ছিলেন, তাই তিনি পুতানা নামে একটি রাক্ষসীকে এই কাজের ভার দিলেন। রাক্ষসীটি একটি সুন্দর নারীর বেশে কৃষ্ণের ঘরে উড়ে গেল।

সে তার স্তনবৃন্তে বিষ মাখিয়ে কৃষ্ণকে দুধ খাওয়াতে গেল। কৃষ্ণের মা তার প্রকৃত উদ্দেশ্য জানতেন না, এবং তিনি পুতানাকে তাকে খাওয়ানোর অনুমতি দিলেন। কিন্তু কৃষ্ণ চোখ বন্ধ করলো এবং তার থেকে জীবনটা টেনে বার করে দিল, এভাবে তাকে হত্যা করল। বিষ তাকে কিছুই করতে পারেনি, কিন্তু যেহেতু সে কৃষ্ণকে দুধ দিতে চেয়ে একটি ভালো কাজের ইঙ্গিত করেছিল, তাই তার আত্মাকে মুক্ত করা হয়েছিল।

নীতি – ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে আঘাত করবেন না, কারণ আপনাকে এটির জন্য ফল ভোগ করতে হবে।

5. প্রভু কৃষ্ণের মাখন খাওয়ার ইচ্ছা

ভগবান কৃষ্ণ মাখন খেতে পছন্দ করতেন। বৃন্দবান শহরে প্রত্যেকেই তাঁর দুর্বৃত্ততা এবং মাখন চুরি করার প্রচেষ্টার বিষয়ে সচেতন ছিল, তাই তাকে ‘মাখন চোর‘ বলা হয়। কৃষ্ণের মা যশোদা কৃষ্ণের থেকে লুকাতে মাটির অনেক উপরে মাখন বেঁধে রাখতেন!

প্রভু কৃষ্ণের মাখন খাওয়ার ইচ্ছা

একবার, যখন যশোদা চারপাশে ছিলেন না, তখন কৃষ্ণ তার বন্ধুদের ডাকল। তারা একে অপরের উপরে উঠল, এবং মাখনের পাত্রে পৌঁছেছিল! তারা সকলে মিলে এটিকে নীচে নিয়ে এল এবং উপভোগ করেছিল! কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তারা বুঝতে পারেনি যে যশোদা ফিরে এসেছেন! তার সব বন্ধুরা দৌড়ে নিজেদের ঘরে ফিরে গিয়েছিল, কিন্তু কৃষ্ণ দুষ্টু হওয়ার জন্য বকুনি খেল।

নীতি – সর্বদা বড়দের কথা শোনো এবং চুরি করো না।

6. প্রভু কৃষ্ণ ও যশোদা

প্রভু কৃষ্ণ একটি দুষ্ট ছেলে ছিল, এবং তার মা যশোদা সে জন্য ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলেন! একদিন, তিনি তার দুষ্টুমি বন্ধ করার জন্য তাকে বেঁধে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন। যশোদা তাকে বাঁধতে একটি দড়ি নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু বুঝতে পারলেন যে এটি খুব ছোট। তারপর তিনি একটি বড় দড়ি আনলেন, কিন্তু সেটিও খুব ছোট বলে দেখা গেল! তিনি তৃতীয় একটি আনলেন, কিন্তু সেটিও ছোট পড়ল! তখনই তিনি বুঝতে পারলেন যে তার ছেলের কিছু অলৌকিক ব্যাপার আছে। কিন্তু তারপরে, প্রভু কৃষ্ণ তাঁর মাকে তাকে বাঁধতে দিলেন যাতে তিনি খুশী হতে পারেন!

নীতি – অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করুন, সেগুলি ঘটতে পারে। সবসময় আপনার বাবা মাকে সুখী করতে কিছু করুন।

7. কৃষ্ণ কাদা খায়

একদিন কৃষ্ণ ও তার বড় ভাই বলরাম বাগানে ফল ও বেরি সংগ্রহ করছিলেন। যেহেতু কৃষ্ণ তখনও বাচ্চা ছিলেন, তাই তিনি গাছগুলিতে পৌঁছাতে পারলেন না, তাই তিনি মাটি থেকে কাদা তুলে নিয়ে তার মুখের মধ্যে পুরে ফেললেন। অন্যান্য শিশুরা দেখেছিল যে তিনি কী করেছিলেন এবং তার মায়ের কাছে অভিযোগ করল। যশোদা তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন তিনি কাদা খেয়েছেন কিনা। তিনি মাথা নাড়া দিলেন, যেন না বলতে চাইলেন! যশোদা কৃষ্ণকে মুখ খুলতে বললেন, কিন্তু তিনি এত ভয় পেয়ে গেলেন, তিনি অস্বীকার করলেন! কিন্তু যখন তাঁর মা তাঁর দিকে কঠোর দৃষ্টিতে তাকালেন, তিনি তাঁর মুখ খুললেন।

যখন যশোদা ভেতরের দিকে তাকালেন, কাদামাটির পরিবর্তে তিনি পুরো মহাবিশ্বকে তাঁর মুখের ভিতর দেখেছিলেন! তারা, আকাশ, পাহাড়, মহাসাগর – সবকিছু! তিনি বোবা হয়ে গিয়েছিলেন, এবং কৃষ্ণ তাঁকে একটি বোকার মতো হাসি দিলেন! তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে সে কোনো সাধারণ শিশু ছিলেন না, তিনি নিজেই প্রভু!

নীতি – সর্বদা তোমার মা-র কথা শোনো এবং মিথ্যা কথা বলবে না।

8. কৃষ্ণ ও কালিয়া

একদিন যখন কৃষ্ণ ও তার বন্ধুরা যমুনা নদীর তীরে খেলছিল, তখন তাদের বল নদীতে পড়ে গেল, যেখানে একশ-দশ-মাথাওয়ালা সর্প কালিয়া রাজত্ব করতেন এবং তাঁর পরিবারের সাথে থাকতেন।

কৃষ্ণ ও কালিয়া

কৃষ্ণ বলটি উদ্ধারের জন্য ডুব দিলেন, কিন্তু কালিয়া তাঁর বিষ দিয়ে জল বিষাক্ত করতে লাগলেন। কৃষ্ণ তার মুখোমুখি হলেন এবং জল বিষাক্ত করা বন্ধ করার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিন্তু কলিয়া প্রত্যাখ্যান করলেন। সেই সময় কৃষ্ণ সেই বড় সাপের সঙ্গে লড়াই করলেন এবং তাঁর মাথার উপর নেচে তাকে পরাজিত করলেন। তিনি সর্পকে নদী ত্যাগ করার এবং কখনও না ফেরার নির্দেশ দিলেন।

নীতি – শান্তি যুদ্ধের চেয়ে উত্তম সমাধান।

9. প্রভু কৃষ্ণ ও অরিষ্টাসুর

একদিন, একটি বিশাল ষাঁড় বৃন্দাবনে এল এবং জনগণকে আক্রমণ করতে শুরু করল। এটি কোথা থেকে এসেছে তা কেউ জানত না, এবং প্রত্যেকেই তাদের জীবন বাঁচানোর জন্য এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছিল। এরপর তারা কৃষ্ণের কাছে এসে সাহায্যের জন্য বলল।

যখন কৃষ্ণ ষাঁড়ের মুখোমুখি হন, তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে এটি আসলেই একটি দৈত্য ছিল! কিন্তু কৃষ্ণ ক্ষমতাশালী, তিনি ষাঁড়টির সাথে মোকাবেলা করলেন এবং তার শিং ভেঙ্গে দিলেন! যুদ্ধ শেষ হলে, দৈত্য ষাঁড়ের দেহ ত্যাগ করে প্রভুর সামনে নত হল। সে তাঁকে বলল যে সে ভগবান বৃহস্পতির শিষ্য ছিল এবং তাকে একজন দৈত্য ষাঁড় হতে অভিশাপ দেওয়া হয়েছিল কারণ সে তার শিক্ষককে সম্মান করত না।

নীতি – তোমার বড়দের এবং শিক্ষকদের অবাধ্য হবে না

10. কৃষ্ণ ও কেশী

কৃষ্ণ দানব ষাঁড় আরিষ্টাসুরকে পরাজিত করার পর, নারদ নামে একটি ঋষি কংসের কাছে গিয়ে বলেছিলেন যে কৃষ্ণ বাসুদেব এবং দেবকীর অষ্টম সন্তান, এবং তাঁর জীবন শেষ করবে বলে ঠিক করা আছে। এতে কংস এত রেগে গেলেন যে কৃষ্ণকে হত্যা করার জন্য তিনি দীর্ঘ কেশী ঘোড়া কেশীকে ডেকে পাঠালেন।

দানব ঘোড়া কৃষ্ণকে হত্যা করার আশা করে বৃন্দাবনে গিয়ে লোকেদের ভীত করে তুলতে লাগল। কিন্তু কৃষ্ণ ভীত ছিলেন না! তিনি কেশীকে লড়াইয়ে চ্যালেঞ্জ করলেন, এবং কনুই দিয়ে তার সব দাঁত ভেঙে দিলেন! তারপর কৃষ্ণ সেই দৈত্য ঘোড়াকে মেরে ফেললেন, এবং এরপরে তাঁকে একটি নতুন নাম দেওয়া হয়েছিল- কেশব, যিনি কেশীকে হত্যা করেছিলেন।

নীতি – ভয় পেয়ো না এবং নিজের জন্য উঠে দাঁড়াও।

11. প্রভু কৃষ্ণ ও প্রভু ব্রহ্মা

একবার ভগবান ব্রহ্মা কৃষ্ণের সাথে একটা ঠাট্টা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি কৃষ্ণের সব বন্ধুদের গরুদের নিয়ে একটি গুহার ভিতরে লুকাতে বললেন। যখন কৃষ্ণ কাউকে খুঁজে পেলেন না, তখন তিনি তাদের সবার রূপ গ্রহণ করেন এবং বৃন্দাবনে ফিরে যান। হতবুদ্ধি এবং বিভ্রান্ত হয়ে, ভগবান ব্রহ্মা বৃন্দাবনে এসে প্রত্যেকের রূপে কৃষ্ণকে দেখতে পেলেন, এবং উপলব্ধি করলেন যে তাঁকে পরীক্ষা করা উচিত হয়নি!

নীতি – আপনার সবসময় আপনার বন্ধুদের সাহায্য করা উচিত।

12. প্রভু কৃষ্ণ ও পাহাড়

প্রভু ইন্দ্র হলেন বৃষ্টির দেবতা, এবং এ কারণে সকলেই সময়মত বৃষ্টির জন্য তাঁর কাছে প্রার্থনা করেন। কিন্তু এক বছর, প্রভু কৃষ্ণ প্রস্তাব করেছিলেন যে গ্রামবাসীদের বরং গোবর্ধন পাহাড়কে পূজা করা উচিত। এর ফলে প্রভু ইন্দ্র রাগান্বিত হয়েছিলেন, তাই তিনি বৃন্দাবনের উপর ঝড় বইয়ে দিলেন।

তবে কৃষ্ণ একক আঙ্গুলে পুরো গোবর্ধন পাহাড় তুলে ধরে তাঁর লোকদের রক্ষা করলেন! এর ফলে ঈশ্বর ইন্দ্র তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন, এবং ঝড়ের জন্য কৃষ্ণের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন।

নীতি – কখনো ক্রোধে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে না, তারা কখনো ফলপ্রসূ হতে পারে না।

13. কৃষ্ণ ও কামধেনু

এক সুন্দর দিনে, কামধেনু নামে একটি গরু প্রভু কৃষ্ণের কাছে এসেছিল। কামধেনু কৃষ্ণকে বলল যে সে দেবলোক নামে একটি স্থান থেকে এসেছে, যা স্বর্গের রাজ্য। সে বলে, সে কৃষ্ণের মুকুট অনুষ্ঠান করতে চায়।

কৃষ্ণ ও কামধেনু

গরুটি স্বর্গ থেকে আনা পবিত্র জলে প্রভুকে স্নান করায় এবং সমস্ত প্রাণীর সুরক্ষার জন্য তাঁকে ধন্যবাদও জানায়। এর পর, প্রভু ইন্দ্র স্বয়ং ঐরাবত নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এবং ঘোষণা করেছিলেন যে কৃষ্ণ গোবিন্দ নামে পরিচিত হবেন, যার অর্থ সমগ্র বিশ্বের ইন্দ্র!

নীতি – প্রত্যেককে সম্মান করো- মানুষ এবং প্রাণী।

14. কৃষ্ণ ও আঘাসুর

একদিন যখন কৃষ্ণ তার বন্ধুদের সাথে খেলা করছিল, তারা পাহাড়ের গুহায় পৌঁছেছিল। তারা জানত না যে গুহায় পুতানার ভাই দৈত্য আঘাসুরের বাড়ি ছিল। কৃষ্ণ ও তার বন্ধুদের হত্যা করার জন্য আঘাসুর একটি দৈত্য সাপের রূপ নিয়েছিল। তারা বুঝতে পারল না যে আঘাসুর গুহা খোলার মতো তার মুখটি প্রশস্ত করে রেখেছিল যাতে তারা ভিতরে ঠিকভাবে হেঁটে যেতে পারে এবং তারপর সে তাদের খেয়ে ফেলতে পারে।

কৃষ্ণ কিন্তু বুঝতে পেরেছিলেন যে কিছু গরবর আছে এবং তিনি গুহায় নিজে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দেবতারা বিচলিত হলেন এবং দুষ্ট আত্মারা সুখী হয়ে উঠল, এই ভেবে যে কৃষ্ণ তাঁর শেষের পথে এগোলেন। কিন্তু উপদেবতারা যখন কৃষ্ণকে অনুরোধ করলেন, তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে কী ঘটছে। তিনি আকারে বড় এবং আরও বড় হতে থাকলেন যতক্ষণ না সাপের দৈত্যকে মৃত্যুমুখে পাঠাতে পারলেন। তিনি তেমনই ছিলেন, তিনি তখন দানবের আত্মাকে মুক্ত করলেন।

নীতি – কেউ আপনাকে ভালো উপদেশ দিলে সবসময় শুনুন।

15. কৃষ্ণ কংসকে হত্যা করলেন

যখন কৃষ্ণ কংসের দ্বারা প্রেরিত সকল দানব ও রাক্ষসীদের পরাজিত করলেন, কংস উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলেন। কৃষ্ণ ও তার দাদা বলরামকে মথুরাতে ফিরিয়ে আনতে তিনি তাঁর দাস অক্রুরকে পাঠালেন। তিনি তার দুই শক্তিশালী কুস্তিগীরের সাথে কুস্তি খেলতে ছেলেদুটিকে চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কৃষ্ণ ও বলরাম চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, এবং সহজেই তাদের বিরোধীদের পরাজিত করেছিলেন এবং তাদের হত্যা করেছিলেন।

কৃষ্ণ কংসকে হত্যা করলেন

কংস তার মেজাজ হারিয়ে ফেললেন এবং ছেলেদুটিকে বধ করতে এবং বাসুদব ও উগ্রসেনাকেও হত্যা করার জন্য তাঁর সৈন্যদের আদেশ দিলেন। এই কথা শুনে কৃষ্ণ উঠে দাঁড়ালেন, কংসের মুকুটটি টেনে খুলে দিলেন এবং চুল ধরে তাঁকে কুস্তির রিংয়ে টেনে আনলেন। নিজেকে একজন ভাল যোদ্ধা প্রমাণ করার জন্য মরিয়া হয়ে, কংস কৃষ্ণের সাথে যুদ্ধ প্রস্তাব গ্রহণ করলেন। কৃষ্ণ যদিও একটি মাত্র নিপুণ ঘা দিয়েই তাকে হত্যা করলেন! কংসের আট ভাই তাদের উপর হামলা করল, কিন্তু বলরাম একা হাতেই তাদের সবাইকে হত্যা করলেন। তখন কৃষ্ণ তার জন্মদাতা বাবা-মা, দেবকী ও বাসুদেবের সাথে মিলিত হলেন।

নীতি – সত্য এবং মঙ্গল সবসময় বিরাজ করবে।

এই গল্পগুলি এবং আরো অনেক গল্প শিশুদের জন্য একটি বিশাল জ্ঞান ভান্ডার গঠন করে যেখান থেকে তারা শিখতে পারে। আপনার ছোট্টদের সাথে গল্পভূমিতে আপনার যাত্রা শুরু করুন, এবং তাদের একটি ভাল জীবনযাত্রার পথ খুঁজে পেতে এবং সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করুন।