আপনার গর্ভাবস্থা আবশ্যিক ভাবে নানা দ্বিধা–দ্বন্ধে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে যেহেতু আপনি এই সময়ে নির্দিষ্ট কিছু ধরণের খাদ্যই গ্রহণ করতে পারেন এবং প্রসবের দিনের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতে পারেন শুধুমাত্র আপনি যেসকল খাবার খেতে পছন্দ করেন সেগুলি পুনরায় ফিরে পাওয়ার আশায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত,এমন কিছু ধরণের খাবার আছে যেগুলি মায়েদের খাওয়া উচিত নয় এমন কি যখন তারা তাদের বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ান সেই সময়েও।
এ বিষয়ে গর্ভাবস্থায় মায়েদের কাছে মাছ খাওয়া–এক বিরাট বিভ্রান্তিকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুরূপভাবে,মাছ রান্না করার আগে অথবা আপনার বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়কালে আপনার খাদ্যতালিকায় মাছের সংযোজন করার আগে এ বিষয়ে আপনার দীর্ঘ ও কঠিন চিন্তাভাবনা করার প্রয়োজন আছে। কিছু ধরণের মাছ বিপজ্জনক যখন আবার অন্য কিছু ধরণের মাছ পুষ্টিকর, সুতরাং এটি বিজ্ঞতার সঙ্গে নির্বাচন করুন। চলুন এই প্রবন্ধে দৃষ্টিপাত করা যাক কোন ধরণের মাছগুলি ক্ষতিকারক নয়, এবং সেগুলি আপনার খাদ্য পরিকল্পনার সাথে কতটা সম্পর্কিত তা নির্ভর করে কিছু দৃষ্টিভঙ্গীর উপর।
প্রকৃতপক্ষে,ব্যাপক গবেষণার দ্বারা জানা গেছে যে,বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের মাছ গ্রহণ করা মূলত বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্যই বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। এর অর্থ হল আপনি আপনার মাছ খাওয়ার খরচ বাড়াতে পারেন যাতে আপনার বাচ্চা বেড়ে ওঠে আরো স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে।যাইহোক,আপনার মনে রাখা প্রয়োজন যে মাছগুলিতে যেন কোন রকম কড়া রাসায়নিক যেমন –মারকারি না থাকে,তাই সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।
মাছে আছে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও পুষ্টির পরিসর, যেমন-EPA,DHA এবং ভিটামিন D। এছাড়াও মাছ আয়োডিন, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রণ এবং কপারে সমৃদ্ধ হয় যা আপনার বাচ্চার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতএব,আপনি অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকার পরিকল্পনায় এটিকে সংযোজন করুন আপনার বাচ্চাকে আরো বেশি স্বাস্থ্যকর করে তুলতে।
প্রকৃতপক্ষে এটি জানা গেছে, যে সকল মায়েরা তাদের বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মাছ খান তাদের সন্তানরা অনেক বেশি স্বাস্থ্যবান হয় যে সকল মায়েরা গর্ভাবস্থায় এবং তাদের বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় কখনই মাছের সংস্পর্শে আসেন নি তাদের সন্তানের তুলনায়। সুতরাং,এই পর্যায়ে মাছ খাওয়া–অবশ্যই হ্যাঁ।
যখন আপনি আপনার সন্তানকে স্তনদুগ্ধ সেবন করান সেই সময়ে মাছ খাওয়ার অনেক উপকারীতা আছে। তার কিছু নিচে আলোচনা করা হল।
যখন আপনার বাচ্চার উপকারের জন্য মাছ খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ, তখন মাছ খাওয়ার আগে সেটি খাওয়া কতটা নিরাপদ সেটিও চেক করে নেওয়া ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। মাছ খাওয়ার কতকগুলি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখানে আলোচনা করা হল।
মাছটি তাজা কিনা তা আপনি চেক করে নিতে পারবেন মাছটির বহিরাকৃতির গঠন সাধারণভাবে দেখেই। যদি মাছের আঁশগুলি চকচকে এবং দৃঢ় হয়, তার অর্থ আপনি যেই মাছটি নিয়েছেন সেটি তাজা। অন্যদিকে,যদি সেগুলি নিস্তেজ দেখতে লাগে এবং নজর না কাড়ে তবে আপনার সেই মাছগুলি কেনা মোটেই উচিত নয়।
বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের জন্য অনেক ধরণের মাছ রয়েছে যেগুলি নিরাপদ, এবং যেগুলি আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের প্রতি কার্যকরী প্রভাব ফেলে।সেগুলি হল—
অনুরূপভাবে, এমন কতক গুলি মাছ আছে যেগুলি মায়েদের তাদের বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না। এই সকল মাছ গুলিতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক যেমন মারকারি(পারদ) থাকে, যা শিশুদের স্বাস্থ্যে খারাপ প্রভাব ফেলে।এগুলি হল—
খাদ্য তালিকায় এমন কিছু খাবার আছে যেমন ডিম, দুধ এবং দইয়ে এখন ওমেগা-3 সুরক্ষিত থাকে,কিন্তু সেগুলি কেবলমাত্র ALA- সমৃদ্ধ হয়, যদিও এগুলির কিছু সুবিধা আছে, কিন্তু আপনি এই খাদ্য তালিকার খাবার গুলি থেকে EPA এবং DHA পাবেন না।তিসি দানা হল অন্য একটি খাদ্য উপাদান যা ALA সমৃদ্ধ।অতএব, পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণের জন্য আপনি ওমেগা-3 সম্পূরক নির্বাচন করতে পারেন।
যদিও মাছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ বজায় থাকে এবং আপনার শিশুর স্বাস্থ্য বিকাশের সহায়ক হয়, তাই আপনি যদি আপনার শিশুকে স্তনপান করান তবে সেক্ষেত্রে মাছ গ্রহণ করার পূর্বে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে সেইগুলিতে কোন রকম ক্ষতিকারক পদার্থ আছে কিনা সে বিষয়ে। ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি এর উপকারিতার গুরুত্বকেও অতিক্রম করে যায় অনেকগুণ বেশি, সুতরাং মাছ খাওয়ার আগে আপনি ভালোভাবে সব কিছু পরীক্ষা করে নিন আর সঠিক সম্পূরক গুলি নির্বাচন করুন।