আপনার সন্তানের খাদ্যে দুধ হল একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ,তা সেটি বুকের দুধই হোক কিম্বা ফরমূলা।যাইহোক, যেহেতু আপনার শিশু ক্রমশ ধারাবাহিকভাবে বেড়ে ওঠে আপনি হয়ত চেষ্টা করতে পারেন তাকে গরুর দুধ,সয়ার দুধ অথবা আমণ্ড দুধের মত অন্য বিকল্পগুলিকে দেওয়ার।যদি আপনার বাচ্চাকে আপনি আমণ্ড দুধ দেওয়ার কথা বিবেচনা করে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে আপনি একদম সঠিক স্থানেই রয়েছেন।এখানে নিম্নলিখিত নিবন্ধে,আমরা শিশুদেরকে আমণ্ড দুধ দেওয়া এবং অন্যান্য আরও বিষয়ে আলোচনা করব।
নাম সুপারিশ অনুযায়ী আমণ্ড দুধ হল এমন এক দুধ যা আমণ্ড থেকেই পাওয়া যায়।আমণ্ডকে জল,চিনি এবং অন্য উপাদান সহযোগে পিঁষে নিয়ে তার থেকে এই দুধ লব্ধ হয়।সাম্প্রতিক অতীতে আমণ্ড দুধ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল এবং সেই কারণে অনেক বাবা–মা–ই তাদের সন্তানের জন্য আমণ্ড দুধকে নির্বাচন করেন।
আমণ্ড দুধ কি শিশুদের জন্য ভাল?উত্তর হল–হ্যাঁ,এটি শিশুদের জন্য ভাল।আপনি আপনার বাচ্চাকে আমণ্ড দুধ দিতে পারেন কিন্তু এক বছর বয়সের আগে না।যদি কিছু কারণের জন্য আপনি স্তন পান করাতে অসমর্থ হন তবে সেক্ষেত্রে একটা শিশুর জন্য ফরমূলা দুধ হল একটা সেরা পরিবর্ত বিকল্প যার বয়স এক বছরের কম তার জন্য।যাইহোক,যদি আপনার সন্তানের এক বছরের বেশী বয়স হয়ে থাকে তবে তাকে নিরাপদেই আমণ্ড দুধ দিতে পারেন।
আমণ্ড হল পুষ্টির শক্তিঘর এবং 100 গ্রাম আমণ্ড মোটামুটি প্রায় 570 ক্যালোরি প্রদান করতে পারে।এখানে দেওয়া হল 100 গ্রাম আমণ্ডের মধ্যে আপনি কি কি খুঁজে পেতে পারেন–
এছাড়াও আমণ্ড ভিটামিন E, ভিটামিন A,পটাসিয়াম,সোডিয়াম,ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ।
আপনি আপনার সন্তানকে আমণ্ড দুধ দেওয়া শুরু করতে পারেন তার এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরেই,তার আগে নয়।আমণ্ড দুধ হল ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন D এর মাহা উৎস,সুতরাং এটি আপনার বাড়ন্ত শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। যাইহোক, আমণ্ড দুধে প্রোটিনের অভাব রয়েছে,অতএব,যদি আপনার সন্তান অন্যান্য খাদ্য উপাদানগুলি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি এবং প্রোটিন পেয়ে যায় তবে আপনি আপনার বাচ্চার খাবারের সাথে আমণ্ড দুধ যোগ করতে পারেন।
এখানে ছোট শিশুদের জন্য আমণ্ড দুধের কিছু স্বাস্থ্যকর উপকারিতার উল্লেখ করা হল–
বারো মাস বয়সে আপনি আপনার সন্তানকে বাদাম দেওয়া শুরু করতে পারেন এবং আমণ্ড হল তার মধ্যে ভাল একটা বিকল্প।আপনি আবার তাকে আমণ্ডকে দিতে পারেন আমণ্ড দুধ হিসেবেও।আপনি আপনার ছোট্ট সোনাকে এটা দেওয়া শুরু করতে পারেন হয় খুব অল্প পরিমাণে অথবা একটা স্ন্যাক বা জলখাবার হিসেবে।আবার আপনি সবজি পিউরি যেমন আমণ্ড দুধের সাথে ফুলকপি বানাতে পারেন এবং এটি আপনার সোনাকে দিতে পারেন।আমণ্ড দুধকে বিভিন্ন সবজি,পুডিং এবং এমনকি মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলির সাথেও যোগ করা যেতে পারে।
আমণ্ড দুধ অথবা অন্য যেকোনও ধরণের দুধ কখনই একটি এক বছর বয়সী বাচ্চার প্রধান খাবারের বিকল্প হতে পারে না এবং সেই কারণেই এটাকে কেবলমাত্র একটা পরিপূরক হিসেবেই দেওয়া উচিত।আপনি যদি আমণ্ড দুধ অথবা অন্য যেকোনও ধরনের দুধকে আপনার বাচ্চাকে দেওয়ার জন্য বেছে নেন তবে সেক্ষেত্রে একদিনে দুই থেকে তিন বার দেওয়া অথবা 16-24 আউন্সকে অতিক্রম করা কখনই আপনার উচিত নয়।এর কারণ হল আপনার শিশুর খাদ্যে এর থেকে বেশী পরিমাণে দুধ যোগ করলে তা তাকে কম ক্ষুধার্ত করে তুলবে এবং সে কঠিন খাবার কম খাবে যার অর্থ হল আপনার বাচ্চা তার খাবার থেকে পর্যাপ্ত আয়রণ পাবে না।
বুকের দুধ হল আপনার বাচ্চার জন্য সব থেকে ভাল কারণ এর মধ্যে থাকে শিশুর ছয় মাস বয়স পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সকল অপরিহার্য পুষ্টিকর উপাদানগুলি এবং এছাড়াও এটি শিশুর এক বছর বয়স পর্যন্ত তাকে দূর্দান্তভাবে পুষ্টির উপকারিতাগুলিকে সরবরাহ করে।ছয় মাস বয়স না হওয়া পর্যন্ত একটি শিশুর কেবল বুকের দুধই খাওয়া উচিত এবং ধীরে ধীরে বুকের দুধের জায়গায় কঠিন খাবারকে প্রতিস্থাপন করতে পারেন। যাইহোক,আপনার সন্তানের কোনও ধরনেরই বাইরের দুধ খাওয়া উচিত নয় তার এক বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত।
আমন্ড দুধ হল ভিটামিন A এবং D এর মহা উৎস এবং সেই কারণে এটি শিশুদের জন্য খুব ভাল একটি বিকল্প বিশেষত যে সব শিশুরা ল্যকটোজ অসহিষ্ণু হয়ে থাকে।যাইহোক,গরুর দুধের তুলনায় আমণ্ড দুধে ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন কম থাকে।অতএব,আপনার বাচ্চার যদি দুধে এলার্জি থাকে তবে সেক্ষেত্রে আপনি তাকে আমণ্ড দুধ দেওয়ার কথা বিবেচনা করতে পারেন।
আপনি কি কীভাবে বাচ্চাদের জন্য আমণ্ড দুধ বানানো যায় সে বিষয়ে ভাবছেন?এখানে আমরা আপনার জন্য সেটির রন্ধন প্রণালীটি দিলাম–
আপনার কি কি প্রয়োজন হবে
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
এবার আপনি আপনার ছোট্ট সোনাকে আমণ্ড দুধটিকে দিতে পারেন।
এখানে দেওয়া হল 1 বছর বয়সী শিশুদের জন্য আমণ্ড দুধ সম্পর্কিত প্রায়শই জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নাবলীঃ
আমণ্ড দুধ একটা সম্পূরক হিসেবে শিশুদের দেওয়া যেতে পারে কিন্তু সেটা কখনই বুকের দুধ অথবা ফরমূলা দুধের জায়গায় প্রতিস্থাপন করে নয়।এর কারণ হল ফরমূলা দুধে আছে আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টিকর উপাদানগুলি এবং আমণ্ড দুধে এই সকল অপরিহার্য পুষ্টিকর উপাদানগুলির ঘাটতি থাকে।
কিছু বাচ্চার বাদামে এলার্জি থাকে এবং আমণ্ড দুধও তৈরী হয় আমণ্ড থেকেই,যা হল এক ধরনের বাদাম।সুতুরাং,যদি আপনার বাচ্চার বাদামে এলার্জি থাকে তবে সেক্ষেত্রে তাকে আমণ্ড দুধ দেওয়াটা খারাপ একটা ধারণা হবে।
আমণ্ড দুধ শিশুদের জন্য খুব ভাল একটা বিকল্প এবং ভিটামিন D ও ক্যালসিয়ামের এক মহা উৎস।যাইহোক,যদি আপনি আপনার সন্তানের জন্য ফ্যাটের একটা ভাল উৎসের খোঁজ করেন তবে সেখানে আমণ্ড দুধ একটা আদর্শ পছন্দ হয়ে উঠতে নাও পারে,কারণ আমণ্ড দুধে কেবলমাত্র ক্যালোরি এবং প্রোটিনেরই ঘাটতি থাকে না এর মধ্যে ভাল ফ্যাটেরও অভাব থাকে, যা শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য অপরিহার্য।
যদি আপনার সন্তান ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু অথবা দুগ্ধজাত পণ্যে এলার্জি প্রবণ হয়ে থাকে তবে আপনি তাকে আমন্ড দুধ দেওয়ার কথা বিবেচনা করতে পারেন।যাইহোক,আপনার শিশুর জন্য একটা মিষ্টি ছাড়া এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ দুধই আপনার পছন্দ করা উচিত।
এখানে অস্বীকার করার কোনও ব্যাপারই নেই যে,আমন্ড দুধ শিশুদের জন্য ভাল।যাইহোক,যদি আপনার বাচ্চার খাদ্যের সাথে এটিকে অন্তর্ভূক্ত করার ইচ্ছে আপনার থাকে তবে সেটা দেওয়ার আগে প্রথমে একবার আপনার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করে নেওয়া ভাল হবে।যাইহোক,বারো মাস বয়স হওয়ার আগে আপনার সন্তানকে আমণ্ড দুধ দেবেন না।