শিশুরা গল্প শুনতে ভালোবাসে।তারা বিশেষত তাদের মা কিম্বা বাবার মুখ থেকে ঘুমানোর ঠিক আগেই সেটি শুনতে বেশি ভালবাসে।ঘুম পাড়ানোর সময় শিশুদের কাছে গল্প পড়া হল তাদের সাথে একটি সুন্দর বন্ধন গড়ে তোলার এবং পড়ার প্রতি তাদের একটা ভালবাসা ও অনুরাগ গড়ে তুলতে তাদের উৎসাহিত করার একটি চমৎকার উপায়।শিশুদের সামনে বই পড়লে তা তাদের বইকে ভালবাসতে শেখায় এবং পরবর্তীতে একজন ভাল পাঠক হয়ে উঠতে সহায়তা করে।এছাড়াও এই সুঅভ্যাসটি আবার তাদের স্মৃতিশক্তিকে প্রখর ও তীক্ষ্ণ করে তোলে, ভাষার বিকাশ ঘটায় এবং তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।এখানে শিশুদের জন্য ঘুম পাড়ানোর সময় পড়ার জন্য একদম উপযুক্ত 15 টি সেরা গল্প সমগ্র দেওয়া হল।
বাচ্চারা সর্বদা কর্মচঞ্চল এবং সক্রিয় এবং সময় মত তাদের ঘুম পাড়ানোটা বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে।আর ঠিক এই সময়েই কিছু ভাল গল্প আপনার সাহায্যে আসতে পারে।এটি আপনাকে সাহায্য করতে পারে আপনার সন্তানকে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে, আবার তারাও এমনকি ভাল গল্পগুলি শুনতে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।নিম্নে এরকমই কয়েকটি গল্প দেওয়া হল যেগুলি আপনি তাদের সামনে পড়তে পারেন।
শিশুদের জন্য এটি একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঘুম পাড়ানির গল্প।গল্পটি শুরু হয় একটি খামারে, যেখানে একটি হাঁস ডিম ফুটে বাচ্চা বের করার জন্য ডিমের উপর তা দিয়ে বসে ছিল।একের পর এক ডিম ফুটতে থাকল এবং শীঘ্রই সেখানে ছয়টি হলুদ পালকযুক্ত হংস শাবক দেখা গেল যারা উত্তেজনায় প্যাক প্যক করে ডাকাডাকি করছিল।শেষ ডিমটি ফুটে তার থেকে বাচ্চাটি বের হতে কিছুটা বেশি সময় নিল এবং অবশেষে সেটি থেকে ধূসর বর্ণের এক অদ্ভূত দেখতে হংস শাবককে বের হতে দেখা গেল।প্রত্যেকেই দেখল যে সেই ধূসর বর্ণের হংসশাবকটি খুবই কুৎসিত দেখতে এমনকি তাদের তালিকার মধ্যে তার নিজের মা হাঁসটিও ছিল।বিমর্ষ হয়ে হংসশাবকটি তখন সেখান থেকে পালিয়ে যায় এবং শীত না আসা পর্যন্ত একাকি এক জলার মধ্যে বাস করতে শুরু করে।শীতের মধ্যে হংস শিশুটিকে অনাহারে থাকতে দেখে, এক কৃষকের তার উপর দয়া হয় এবং সে তখন সেই কুৎসিত দেখতে হাঁসের বাচ্চাটিকে তার গৃহে আশ্রয় ও খাবার দেয়।যাইহোক, তবে হংস শাবকটি কৃষকের সন্তানদের হৈ হট্টগোল এবং শোরগোলে ভয় পায় এবং সেখান থেকে সে হিমশীতল হ্রদের ধারে একটি গুহার দিকে পালিয়ে যায়।যখন বসন্ত এল এক ঝাঁক সুন্দর রাজহাঁস সেই হ্রদের জলে নেমে আসে, আর সেই হংস শাবকটি যে এখন পুরোপুরি বেড়ে উঠেছে কিন্তু একাকী, রাজ হাঁসেরদের দলের কাছে পৌঁছায়, সম্পূর্ণরূপে তাদের থেকে প্রত্যাখিত হওয়ার আশা নিয়েই সে সেখানে যায়।কিন্তু রীতিমত তাকে অবাক করেই রাজ হাঁসের ঝাঁকটি তাকে স্বাগত জানায়।সে জলের মধ্যে তার প্রতিচ্ছবি দেখে এবং বুঝতে পারে যে, সে এখন আর আগের মত কুৎসিত হংস শাবকটি নেই বরং একটি সুন্দর রাজ হাঁসে পরিণত হয়ে উঠেছে।এখন এই রাজহাঁসটি তার নতুন দলের সাথে যোগদান করে এবং তার নতুন পরিবারের সাথে উড়ে যায়।
মিদাসের গল্পটি হল শিশুদের জন্য অপর আরেকটি চমৎকার ঘুম পাড়ানির গল্প।গ্রীসের এই প্রাচীন গল্পটিতে রাজা মিদাসকে একজন লোভী এবং অসন্তুষ্ট ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি অন্য যেকোনও কিছুর থেকেই সোনাকেই বেশি ভালবাসতেন। একবার তিনি কারুর জন্য ভালো কিছু কাজ করেছিলেন এবং এক গ্রীক দেবতা তা দেখে তার সামনে এসে উপস্থিত হন এবং তাকে বলেন যে তিনি তার ভাল কর্মটির জন্য তার মনের আকাঙ্খা পূরণ করতে চান, তাই রাজা যেন গ্রীক দেবকে জানান যে তার মনের বাসনাটি কি।মিদাস তখন কামনা করেছিলেন যে তিনি যা কিছুই স্পর্শ করবেন তা যেন তৎক্ষণাৎ সোনায় রূপান্তরিত হয়ে ওঠে।ঈশ্বর তাঁর ইচ্ছে মঞ্জুর করলেন।আনন্দে আত্মহারা হয়ে মিদাস খুব উত্তেজিত হয়ে উঠলেন এবং যথেচ্ছভাবে এলোমেলো বস্তুগুলিকে তিনি সমানে স্পর্শ করেই চললেন এবং যা কিছুই তিনি স্পর্শ করলেন তাই সোনায় রূপান্তরিত হতে থাকল।এর কিছু সময় পর তিনি ক্ষুধার্থ হয়ে উঠলেন।যাইহোক ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য যখন তিনি তার খাবারে হাত দিলেন তৎক্ষণাৎ তাও সোনার পরিবর্তিত হয়ে গেল এবং সেটিকে তিনি আর খেতে পারলেন না আর এইভাবে তাকে অনাহারে ক্ষুধার্থই রয়ে যেতে হল এবং কোনওকিছুই না খেতে পারার আতঙ্ক তার মধ্যে পুঞ্জীভূত হতে থাকল।তাকে সমস্যার মুখে দেখে তার একমাত্র আদুরে কন্যা পিতাকে আস্বস্ত করতে তার হাতগুলিকে প্রসারিত করল আর অমনি তার সাথেও সেই একই জিনিস ঘটল, রাজকন্যা সোনায় পরিণত হল।আর তা দেখা মাত্র মিদাস অত্যন্ত আতঙ্কিত, ভীত ও ত্রস্ত হয়ে উঠলেন যে তার একমাত্র আদুরে কন্যা কিনা সোনার মূর্তিতে পর্যবসিত হয়ে গেছে! তিনি তখন ঈশ্বরের কাছে স্বর্ণ স্পর্শের বরটি চাওয়ার জন্য অনুতাপ করতে লাগলেন এবং উপলব্ধি করতে পারলেন যে তিনি অত্যন্ত লোভী হয়ে উঠেছেন আর তার সাথে এও বুঝলেন যে সোনা কখনই পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু হয়ে উঠতে পারে না।তিনি কাঁদতে কাঁদতে ঈশ্বরের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করলেন তার চাওয়া এই ইচ্ছেকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য।ঈশ্বর তার প্রতি সদয় হলেন এবং তাকে বললেন যে তার নিকটস্থ নদীতে ডুব দিতে এবং তারপরা এক ঘড়া জল সেই নদী থেকে তুলে এনে সেই সকল বস্তুগুলির উপর ছিঁটিয়ে দিতে যেগুলিকে তিনি পুনরায় আগের অবস্থাতেই ফিরে পেতে চান।রাজা মিদাস তখন ঈশ্বরের নির্দেশ অনুসরণ করে সবার প্রথমেই তার প্রিয় কন্যাটিকে পুনরায় স্বাভাবিকে ফিরিয়ে আনলেন।তিনি তার একমাত্র আদুরে কন্যাটিকে ফিরে পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়ে উঠলেন এবং সেই মুহূর্ত থেকে আর কখনও কোনওভাবেই লোভী না হয়ে ওঠার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন।
এই গল্পটি ঈশপের গল্প সমগ্র থেকে নেওয়া একটি ছোট গল্প, যেটিতে জীবনে সত্যবাদী হয়ে ওঠার গুরুত্বকে তুলে ধরা হয়েছে।এটি এমন এক রাখাল বালকের গল্প যে তার গ্রামের কাছাকাছিই এক পাল ভেড়াকে দেখাশুনা করত, তাদের মাঠে চরাতে নিয়ে যেত ঘাস খাওয়াতে।সেই অঞ্চলটিতে একটি নেকড়ের উপদ্রব ছিল, সে মাঝেমধ্যেই ভেড়ার পালের উপর আক্রমণ করে সেখান থেকে দু–একটি করে ভেড়া শিকার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য কুখ্যাত ছিল।প্রতিটি গ্রামবাসীই এই ভয়াবহ বিপদ সম্পর্কে অবগত ছিল এবং সর্বদাই তারা প্রস্তুত থাকত নেকড়েটির কবলে বিপদে পড়া থেকে যে কাউকে সাহায্য করার জন্য।কিন্তু রাখাল বালকটি সেই গ্রামবাসীদের সাহায্য করার মনোবৃত্তিটিকে উপেক্ষা করে এবং এমনকি সেটিকে একটি উপহাসের বিষয় করে তোলে।সে তার একঘেয়েমি কাটাতে এবং চিত্ত বিনোদনের জন্য “নেকড়ে! নেকড়ে!” বলে সাহায্য চেয়ে তিনবার গ্রামবাসীদের বাইরে বের করে এনেছিল।সদা জাগ্রত গ্রামবাসীরা তৎক্ষণাৎ তাকে সাহায্য করার জন্য সেখানে ছুটে এসে কেবল রাখাল বালকটিকে তাদের বিদ্রূপ করে অট্টহাসিই হাসতে দেখে।সে যখন নেকড়ের নামে গ্রামবাসীদের ডেকে এনে বোকা বানিয়ে অট্ট হাসি হাসতে থাকে তারা তখন স্বভাবতই মর্মাহত হয়।এরপর একদিন সত্যি সত্যিই একটি নেকড়ে আসে এবং রাখল বালকটির ভেড়ার পালে আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করে তার ভেড়া খেতে থাকে আর তা দেখে বেশ কিছু ভেড়া আবার সেখান থেকে এলোপাথারি ভাবে যে যেখানে পারে প্রাণ ভয়ে ছুটে পালায়।এরকম পরিস্থিতিতে রাখাল বালকটি এবার সত্যি সত্যিই “নেকড়ে! নেকড়ে!” বলে তারস্বরে চিৎকার করতে থাকে গ্রামবাসীদের প্রকৃত সাহায্যের জন্য, কিন্তু গ্রামবাসীরা এইবার তা শুনেও উপেক্ষা করে এই ভেবে যে রাখাল বালকটি নিশ্চই এইবারেও এই দুষ্টু বুদ্ধি পূর্ণ কৌশলটি করছে তাদের পুনরায় আরও একবার ঠকাবার জন্য, আর তাই কোনও একজন গ্রামবাসীও আর তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে গেল না।আর তারই পরিণতি হিসেবে নেকড়েটি রাখাল বালকটির সমগ্র ভেড়ার পালটিকে তছনছ করে দিল।এই গল্পের নীতি শিক্ষাটি হল যে একজন মিথ্যাবাদীকে কেউই বিশ্বাস করে না এমনকি যখন সে সত্যি বলে তখনও।
এটি ঈশপের গল্প সমগ্রের অন্তর্গত অন্য আরেকটি গল্প যেটিতে কঠিন পরিশ্রম করার এবং ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করার গুরুত্বের বিষয়টিকে আলোচনা করা হয়েছে। গল্পটিতে রয়েছে একটি গঙ্গা ফড়িং–এর কথা যে সারা গ্রীষ্মকাল জুড়ে বসে বসে গান গেয়ে অলসভাবে তার সময় কাটায়।আর এদিকে তার প্রতিবেশী এক দল পিঁপড়ে শীতের জন্য তাদের খাদ্য সঞ্চয়ের তাগিদে ঘুরে ঘুরে সারা গ্রীষ্মকাল জুড়ে তাদের খাদ্য সংগ্রহ করার জন্য কঠোর প্ররিশ্রম করে চলে।আর তা দেখে গঙ্গা ফড়িংটি পিঁপড়েরগুলির উপর হাসে এবং তাদের বলে যে এত পরিশ্রম না করে তাদের গ্রীষ্মটি উপভোগ করা উচিত।আর তা শুনে পিঁপড়েগুলি ফড়িংটিকে বলল যে সারা দিন ধরে বসে বসে গান না গেয়ে তার বরং উচিত আসন্ন শীতের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করে রাখা তা নাহলে যখন শীতে সব কিছুই ঠাণ্ডায় জমে যাবে তাকে অনাহারে কাটাতে হবে।এরপর ঋতুচক্রের ফলে যখন শীত ফিরে আসে পিঁপড়েগুলি তখন তাদের বাসায় থেকে বিশ্রাম নেয় এবং তাদের সঞ্চিত খাদ্যের উপর নির্ভর করে জীবন রক্ষা করে। এমন সময় গঙ্গা ফড়িংটি ক্ষুধার্ত হয়ে ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে পিঁপড়েগুলির দোরে এসে উপস্থিত হয়।সে পিঁপড়েগুলির কাছে খাদ্য প্রার্থনা করে এবং বলে যে সে তার পন্থার ভুলটিকে বুঝতে পেরেছে।তখন পিঁপড়েগুলি তার সাথে খাবার ভাগ করে নিয়ে সেইবারের মত তার প্রাণ রক্ষা করে এবং পরের গ্রীষ্মে সে কঠিন পরিশ্রম করে শীতের জন্য তার খাবার সংগ্রহ এবং সঞ্চয় করবে এই প্রতিজ্ঞা তাকে দিয়ে করায়।
শিশুদের ঘুম পাড়ানোর সময় বলা ছোট গল্পগুলির মধ্যে এটি হল এমন একটি গল্প, যাতে বলা হয়েছে লোভ মানুষকে কীভাবে কতটা খারাপ অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে।এক সময় একটি ইঁদুর ছিল যে বেশ কিছু দিন ধরে না খেতে পেয়ে অনাহারে দিন যাপন করছিল।সে সত্যই খুব রোগা হয়ে গিয়েছিল।অনেক খোঁজাখুজির পর শেষ পর্যন্ত সে এক বাক্স ভুট্টা খুঁজে পেল।সেই বাক্সটির মধ্যে একটি ছোট্ট গর্ত ছিল যেটি বাক্সটির ভিতরে ঢোকার ক্ষেত্রে তার জন্য একদম যথপোযুক্ত মাপের ছিল।সুতরাং সে কোনওমতে গর্তটির মধ্য দিয়ে বাক্সের ভিতরে প্রবেশ করল এবং পেট ভরে ভুট্টা খেল।কিন্তু তার পেট ভরে যাওয়া সত্ত্বেও সে তার খাওয়া বন্ধ করল না।ইঁদুরটি আরও খেতে থাকল তো খেতেই থাকল এমনকি সে যখন তার পেট ভরে আই ঢাই অবস্থা অনুভব করল তখনও খেয়েই চলল।এখন ইঁদুরটি সমস্ত খাবারের থেকেই আকারে ফুলে ফেঁপে বড় হয়ে উঠল এবং বাক্সটি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সে কোনও মতেই আর সেই ছোট্ট গর্তটিতে নিজেকে মানিয়ে ঠিক করতে পারল না।সে ভয় পেল এবং চিন্তা করতে থাকল যে কীভাবে সে সেখান থেকে পলায়ন করবে।অন্য আরেকটি ইঁদুর যে সেখান দিয়েই যাচ্ছিল সে এই বৃহৎ আকৃতির ইঁদুরটির কথা শুনতে পেল এবং তাকে বলল যে, সে যতদিন না পুনরায় রোগা পাতলা হয় ততদিন তাকে সেখানেই অপেক্ষা করতে হবে সেই ছোট্ট গর্তটি দিয়ে বেরিয়ে আসার জন্য। ইঁদুরটি তখন লোভী হয়ে উঠে মাত্রারিক্ত খেয়ে ফেলার জন্য অনুতপ্ত হল।
এটি শিশুদের জন্য আরেকটি শয়নকালীন ছোট গল্প।এটি এমন একটি ছোট্ট মেয়ের গল্প যে কিনা আলুর সাথে দেখা হওয়া না পর্যন্ত তার একঘেয়ে এবং বিরক্ত হয়ে ওঠার ব্যাপারে ঘ্যান ঘ্যান করছিল।আলু মেয়েটিকে বলে যে বাচ্চারা খুব বিরক্তকর এবং এক ঘেয়ে।তা শুনে ছোট্ট মেয়েটি অবাক হয়ে ওঠে এবং আলুকে বলে যে বাচ্চারা বিরিক্তকর নয় আবার এক ঘেয়েও নয়, আসলে তারা খুবই মজাদার।আলু তখন মেয়েটিকে তা প্রমাণ করতে বলে।ছোট্ট মেয়েটি তখন আলুকে বলতে থাকে বাচ্চারা মজা পাওয়ার জন্য যা কিছু করতে পারে, সে আলুকে বলতে থাকে যে বাচ্চারা খেলে, গাড়ির চাকা গড়ায়, লাফ দিতে পারে, তাদের হাতের উপর ভর করে হাঁটতে পারে, দৌড়াতে পারে এবং তারা দোলা খেতে পারে ও দুলতেও পারে।সে আলুকে আবার এটিও বলে যে বাচ্চারা তার চেয়েও বেশি ভাল যেটি করতে পারে তা হল তারা কল্পনা করতে পারে।শিশুরা যখন এক ঘেয়ে, বিরক্ত হয়ে ওঠে এই গল্পটি তখন তাদের এটি মনে করিয়ে দেওয়ার একটি দারুণ উপায় যে তারা কি কি মজাদার জিনিসগুলি করতে পারে।এই গল্পটি আবার আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে যদি আপনি আপনার বাচ্চাকে বলে বসেন যে সেই সকল মজাদার জিনিসগুলিকে তাকে পুনরায় করে দেখাতে যেগুলি সে করতে ভালোবাসে।
এটি শিশুদের জন্য একটি মজাদার ঘুম পাড়ানোর গল্প।গল্পটি একজন দাম্ভিক এবং অহংকারী সম্রাটকে নিয়ে রচিত, যার সমগ্র ভাবনা চিন্তা ছিল কেবল নিজেকে সুন্দর বস্ত্র এবং অলংকার দ্বারা সুজ্জতিত করে তোলার ব্যাপারে।তিনি তাঁর জন্য দুজন তাঁতিকে নিযুক্ত করেছিলেন এবং তাদের পুরষ্কার দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যদি তারা এমন এক কাপড়ের পোশাক রাজার জন্য তৈরী করে দিতে পারেন যা এর আগে কেউ কখনও বোনে নি।তাঁতি দুটি ছিল খুব ধূর্ত ও চতুর, তারা সম্রাটকে বলল যে তারা এমন একটি বিশেষ সুতো ব্যবহার করে সম্রাটের পোশাক প্রস্তুত করবে যেটি সেই সকল ব্যক্তিদের চোখে ধরাই পড়বে না যারা সেই বস্ত্রটি বর্ণনার জন্য অযোগ্য কিম্বা বোকা।তাঁতি দুটি আসলে পোশাক বানাবার মত অনুকরণ করে নকল সেলাই করার ভান করে সম্রাটের সাথে চতুরতা করেছিল।অতএব, যদিও সম্রাট এবং তাঁর মন্ত্রীরা কেউই আসলে পোশাক দেখতে পাচ্ছিলেন না, কিন্তু কেউই সেটি স্বীকার করতেও পারলেন না পাছে তাকে বোকা কিম্বা সেটি বলার জন্য অযোগ্য এই বলে অভিহিত করা হয় এই ভয়ে।তাঁতিরা তাদের পোশাকটি বানানো শেষ করার দাবী জানাল এবং বাদশাহকে সেই পোশাকটি পরিয়ে দেওয়ার মত করে অভিনয় করল।তারপরে তিনি তার নতুন পোশাক দেখানোর জন্য তার প্রজাদের সামনে শোভা যাত্রা বের করেন।শহরবাসীরা সেটিকে মেনে নিয়েই সম্রাটের সাথে এগিয়ে চলে, পাছে তাদের বোকা প্রতিপন্ন করা হয় সেই কারণে তারা সম্রাটকে উলঙ্গ বলে স্বীকার করে না।তখন সেই শোভাযাত্রাটি দেখতে থাকা একটি ছোট বালক হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে এই বলে যে -“এ বাবা সম্রাটের দেহে কোনও পোশাকই নেই“।রাজাকে সত্যি না বলার মত ভান করার কারণটি যে কি ছিল তা সেই বালকটি বুঝতে পারে নি। শিশুটিকে বলতে শুনে এইবার সেই শোভাযাত্রার ভিড় থেকে একে একে সকলেই সেই শিশুটির সাথে যোগ দিয়ে বলে উঠতে লাগল– “রাজা উলঙ্গ“।সম্রাট ভীষণ বিব্রতবোধ করলেন।তিনি উপলব্ধি করলেন যে তার দর্প, অহংকার এবং বোকামিই আজ তাকে এই পরিস্থিতিতে নিয়ে এসে দাঁড় করিয়েছে যেখানে তিনি একজন উপহাসের বিষয় হয়ে উঠেছেন।
এটি আরব্য রজনীর এক হাজার এক রাত্রি থেকে নেওয়া একটি ছোট গল্প।এটি ঐন্দ্রজালের রহস্যে পূর্ণ এক রোমাঞ্চকর গল্পকাহিনী।গল্পটিতে এক দরিদ্র দর্জি পুত্র আলাদিনের কথা বলা হয়েছে।তার বাবার মৃত্যুর পর আলাদিনের মা সুতা কেটে অর্থ উপার্জন করত।একদিন একটি দুষ্টু যাদুকর আলাদিনের কাছে এসে তাকে একটা ছোট্ট কাজ করে দিতে বলে বিনিময়ে অর্থ প্রদানের প্রস্তাব দিয়ে।এবং অগ্রিম হিসেবে সে আবার আলাদিনকে একটি আংটি দিয়ে যায়।এরপর সে আলাদিনকে নিয়ে যায় একটি গুপ্ত গুহার কাছে এবং তার ভিতরে প্রবেশ করে সেখান থেকে তার জন্য একটি প্রদীপকে নিয়ে এসে দিতে বলে আলাদিনকে।গুহাটি সোনা এবং নানা মূল্যবান ধন সম্পদে পরিপূর্ণ ছিল।আলাদিন গুহার ভিতরে ঢুকে সেই প্রদীপটিকে খুঁজে পেল এবং সেটিকে নিয়ে সে গুহার দ্বারের মুখে আসল।তখন যাদুকরটি আলাদিনকে সেই প্রদীপটিকে দিয়ে দিতে বলল কিন্তু আলাদিন যাদুকরকে আগে তাকে সেই গুহা থেকে উঠে বেরিয়ে আসার জন্য সাহায্য করতে বলল।দুষ্টু যাদুকরটি তখন রেগে গিয়ে আলাদিনকে সেই গুহার ভিতরেই বন্দী করে রাখার যাদু মন্ত্রটি উচ্চারণ করল।অসহায় আলাদিন তখন অন্যমনস্কভাবেই তার হাতের আংটিটিকে ঘষে ফেলল আর সেখান থেকে যাদু বলে একটি জিনি বেরিয়ে এল এবং আলাদিনের কোন ইচ্ছে সে পূরণ করতে পারে তা তাকে জিজ্ঞাসা করল।আলাদিন তখন জিনিটিকে সেখান থেকে তাকে মুক্ত করতে সহায়তা করতে বলল।জিনি তাই করল এরপর আলাদিন সেই প্রদীপটিকে হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল।আর বাড়ি ফিরে সে তার মাকে সব কথা বলল।পরের দিন তার মা যখন সেই প্রদীপ্টিকে পরিষ্কার করার জন্য প্রদীপটিকে ঘষে ফেলল অমনি সেখান থেকে আবার আরেক জিনি বেরিয়ে এল।আর সে আলাদিন এবং তার মায়ের সকল ইচ্ছেই পূরণ করল।তারা এখন বেশ ধনবান হয়ে উঠল এবং স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটাতে থাকল।আলাদিন আবার সেই দেশেরই রাজকন্যাকে বিয়ে করে এবং জিনির দ্বারা তাদের জন্য নির্মিত প্রাসাদে বিলাসবহুলভাবে জীবনযাপন করে।এর মধ্যেই সেই দুষ্টু যাদুকরটি একজন প্রদীপ বিক্রেতার ছদ্মবেশ ধারণ করে সেই প্রাসাদে আসে এবং পুরোনো প্রদীপের পরিবর্তে নতুন প্রদীপ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।রাজকন্যা তখন সেই পুরোনো প্রদীপটিকে ছদ্মবেশী যাদুকরটিকে দিয়ে দেয় সেটি আসলে কি ছিল তা না জেনেই।যাদুকরটি তখন প্রদীপের জিনিকে ব্যবহার করে আলাদিনের ধন সম্পত্তি, প্রাসাদ এবং এমনকি রাজকন্যাকেও ছিনিয়ে নেয়।আলাদিন হতাশ হয়ে পড়ে এবং কীভাবে সবকিছু পুনরায় ফিরে পাওয়া যায় তার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উপায় খুঁজতে থাকে।হঠাৎ তার সেই যাদু আংটিটির কথা মনে আসে এবং তার প্রাসাদ, প্রদীপ এবং রাজকন্যাকে ফিরিয়ে আনতে সে তখন আংটির জিনিকে ব্যবহার করে।এরপর আলাদিন প্রদীপ এবং আংটির জিনি দ্বয়কে মুক্ত করে দেয় এবং রাজকন্যার সাথে সারাজীবন সুখে ঘর সংসার করতে থাকে।
শোয়ানোর সময় শিশুদের জন্য নির্বাচন করা সুন্দর মনোরম রঙীন গল্পের বইগুলির মধ্যে এটি একটি অন্যতম।এই বইয়ে রঙীন চিত্র এবং বিভিন্ন আকারের পৃষ্ঠাগুলি সহজেই বাচ্চাদের আকর্ষণ করে, যার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের খাদ্যের মধ্য দিয়ে একটি শুঁয়োপোকার জীবনধারার গতিপথটিকে সুন্দরভাবে চিত্রিত করা হয়েছে।গল্পটিতে জানা যায় যে এক রবিবার সকালে একটি পাতায় একটি ডিম থেকে বেড়িয়েই একটি লাল মুখযুক্ত শুঁয়োপোকা খাবার সন্ধান করতে শুরু করে।প্রথমে সে একটি পাতা খায় কিন্তু সে প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত ছিল।এরপর সে পরের পাঁচদিন ধরে নানা ধরণের খাদ্য খেতে থাকে এবং বেশ ভাল পরিমাণেই তা বাড়িয়ে দেয়।শুঁয়োপোকাটি সোমবার একটি আপেল, মঙ্গলবার দুটি নাশপাতি, বুধবারে তিনটি প্লাম, বৃহস্পতিবার চারটি স্ট্রবেরি এবং শুক্রবার পাঁচটি কমলা খায়।এরপর শনি বারে, শুঁয়োপোকাটি এক টুকরো করে চকোলেট কেক, আইসক্রিম কোণ, আচার, সুইস পনির, সালামি(এক ধরণের ইটালিয়ান খাদ্য), ললিপপ, চেরি পাই, সসেজ, কাপকেক এবং তরমুজের এক মহা ভোজ সারে।এত বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে এর পর শুঁয়োপোকাটির খুব বাজে ধরণের পেটে ব্যথা হয়।শুঁয়োপোকাটি এরপর আবার একটা বড় সবুজ পাতার মত তার স্বাভাবিক ডায়েটে ফিরে গিয়ে রবিবার কিছুটা ভালো বোধ করে। শুঁইয়োপোকাটি এবার তার নিজের চারপাশে একটি গুঁটি তৈরী করে এবং তার মধ্যে সে দুই সপ্তাহ ধরে থাকে।দুই সপ্তাহ পরে সেই শুঁইয়োপোকাটিকে গুঁটির ভিতর থেকে থেকে তার রঙীন ডানা যোগে একটি সুন্দর প্রজাপতি হয়ে উড়ে যেতে দেখা গেল।এই বইটি ছোট শিশুদের সংখ্যা, বিভিন্ন খাদ্যের নাম, সপ্তাহের বারগুলি এবং একটি প্রজাপতির জীবন চক্রের বিস্তারিত বিষয়গুলিকে সম্পর্কে একটি সম্যক শিক্ষা দেয়।
এটি শিশুদের জন্য ভীষণ সুন্দর একটি ছবির বই।এই বইটিতে একটি খরগোশ ছানার তার আশেপাশের সমস্ত কিছুকে শুভরাত্রি বলার মত একটি বৈশিষ্ট্যকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।এর বাক্যগুলি একটি ছন্দময় কবিতার দ্বারা গঠিত হয়েছে এবং বর্ণনা করা হয়েছে সেই খরগোশ ছানাটি কীভাবে একটি লাল বেলুন, একটি পুতুল ঘর, দুটি বিড়াল ছানা, চাঁদ এবং আরও অন্যান্য অনেক কিছুর মত তার চারপাশের বিভিন্ন সজীব এবং নির্জীব বস্তুগুলিকে শুভরাত্রি বলে।তার বলা শুভ রাত্রি গুলির মধ্যে ছিল “শুভ রাত্রি ঘর“, “শুভ রাত্রি চাঁদ“, “চাঁদের উপর দিয়ে ঝাঁপ দেওয়া গরুকে শুভ রাত্রি “, “শুভ রাত্রি আলো“, এবং “শুভ রাত্রি লাল বেলুন“।ছোট শিশুরা এর ছন্দগুলিকে খুব পছন্দ করে এবং ভালোবাসে আর এই গল্পের ছন্দবদ্ধ সুরগুলি বাচ্চাদের প্রশমিত করে দ্রুত ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়তে সহায়তা করে।
এটি একটি লাল মুরগির গল্প, যে কোনও গল্পকে শেষ করার জন্য এতটাই উত্তেজিত থাকত যে, প্রতি সময়েই সেটি তার বাবাকে বলতে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাকে হতাশ করে সে তাতে ব্যাঘাত ঘটাত বা বলতে বাধা দিত।বাবা মুরগি ছোট্ট লাল মুরগিটিকে তার বিছানায় শুয়ে দেয়।বাবা মুরগি লাল মুরগির কাছে তাকে ঘুম পাড়ানোর সময় গল্পের বই পড়তে সম্মত হয় কিন্তু সে তার ছেলেকে তাতে আর কোনও বিঘ্ন ঘটাতে বারণ করে।লালা মুরগি তাতে সম্মত হওয়ার পর বাবা মুরগিটি হানসেল এবং গ্রেটেল পড়া শুরু করে।যেই গল্পটি শেষের দিকে চলে এল,অমনি ছোট্ট লাল মুরগিটি উত্তেজিত হয়ে উঠল এবং তার বাবার গল্প বলায় সে সেই ব্যাঘাত ঘটিয়ে নিজের মত করে সে সেটিকে বলা শেষ করল।এরপর আবার যখন তার বাবা তাকে লিটল রেড রাইডিং হুড এবং চিকেন লিটলের গল্পগুলি পড়ে শোনান তখন লাল মুরগিটি পুনরায় বাধা সৃষ্টি করে।শেষ পর্যন্ত বাবা মুরগিটি তার গল্প পড়া থামিয়ে দেয় এবং তার বদলে ছোট্ট মুরগি ছানাটিকে তার সামনে গল্পটি পড়তে বলে।ছোট্ট লাল মুরগিটি তখন একটি গল্প পড়া শুরু করে আর তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বাবা মুরগিটি ছোট্ট লাল মুরগিটির বিছানাতেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে এবং নাক ডাকতে থাকে।
এই গল্পটি একটি প্রশ্ন–উত্তর পদ্ধতিতে রচিত।যেখানে বর্ণনাকারী শূকর মশাইকে জিজ্ঞাসা করছে যে এর মধ্যে তার ঘুমের সময় হয়েছে কিনা এবং প্রতিবারই শূকর মশাই ঘুমাতে যাওয়া এড়াতে মজাদার অজুহাত তৈরী করে চলেছেন।যখন বর্ণনাকারী তাকে ঘুমের সময় হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করে তখন দুষ্টু শূকরটি স্নান করতে থাকে।যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে তার স্নান করা হয়ে গেছে কিনা, সে উত্তর দেয় সে তখনও তার পায়ের পাতা মুছছে।দুষ্টু শূকরটি তার ঘুমাতে যাওয়াকে এড়ানোর জন্য এভাবে একের পর এক বিভিন্ন মজাদার অজুহাত দিয়ে যেতে থাকে এবং এই ভাবেই গল্পটিও এগিয়ে চলে।আর গল্পটি শেষ হয় যখন অবশেষে দুষ্টু শূকরটি ঘুমিয়ে পড়ে তার প্রিয় খেলনা, টোল পড়া টেডি বিয়ার, সঞ্চয় করার ছোট্ট পিগি ব্যাংক,দোলনা এবং খরগোশ ছানাটিকে সাথে নিয়ে।
এটি ছন্দবদ্ধ পংক্তি এবং বর্ণিল চিত্রতে পরিপূর্ণ একটি উজ্জ্বল বই যা ছোট শিশুদের সহজেই আকর্ষণ করে।এই গল্পটির মধ্য দিয়ে শিশুদের বলা হয় যে জীবন হল ভাল এবং মন্দ এই দুইয়ের সমণ্বয়, কিন্তু সেটি মজাদার হয়ে উঠতে পারে যদি তুমি সেটিকে সেভাবে গ্রহণ করতে পার।এর প্রতিটি স্তবকে শিশুদের জন্য বলা হয়েছে জীবনের বিভিন্ন স্তরে তাদের মুখোমুখি হতে হবে এমন বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করার জন্য তারা যেগুলিকে–পছন্দ করে বেছে নিতে পারে এমন কিছু বিষয়।এবং সেগুলি সম্পর্কে গল্পটিতে তাদের অবহিত করা হয়েছে।এটি শিশুদের শিক্ষা দেয় যে তাদের জীবনে কি করতে হবে এবং কোথায় যেতে হবে তার সিদ্ধান্ত নিতে।এই গল্পের দ্বারা তাদের এও বোঝানো হয়েছে যে জীবন সবসময় কখনই সহজভাবে চলার কোনও মসৃণ পথ হয়ে ওঠে না, কিন্তু শিশুরা যেকোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারে এবং পরিস্থিতি কাটিয়ে সামনের পথে এগিয়ে যেতে পারে।
বই পড়ার প্রতি ভালোবাসা বাড়িতে শুরু হয়।এখানে রইল আপনার জন্য এমন কয়েকটি পরামর্শ যা আপনার সন্তানকে তার ছেলেবেলার গল্প শোনার দিনগুলিকে আরও সুন্দরভাবে কাটাতে সাহায্য করবে।
1.প্রতিটি চরিত্রের জন্য আলাদা আলাদা স্বরক্ষেপণ করুন এবং পড়ার সময় বিভিন্ন রকম টেম্পো এবং পিচ ব্যবহার করুন।এই বিষয়টি আপনার সন্তানকে গল্পের আকর্ষণ বৃদ্ধি করবে এবং তাকে ব্যস্ত রাখবে।
2.আপনি বইয়ের যে শব্দটি পড়বেন সেই শব্দটির নিচে আপনার শিশুকে অঙ্গুল রাখতে বলুন।এই বিষয়টি তাকে অক্ষর এবং শব্দগুলি চিনতে সাহায্য করবে এবং তার পড়ার প্রগতি ঘটাবে।
3.একটা গল্প পড়ার পর 5 থেকে 10 মিনিট সেই গল্পটা নিয়ে তার সাথে কথা বলুন।আপনি তাকে প্রশ্ন করুন যদি সে ওই গল্পের কোন একটি চরিত্রের মতো পরিস্থিতিতে পড়ে তাহলে সে কি করবে অথবা ওই গল্প থেকে কি করার শিক্ষা পেল তা জানতে চান।
4.তার কল্পনা শক্তি বাড়াবার আর একটা সুন্দর উপায় হলো আপনি তাকে ওই গল্পের মধ্যে নেই এমন একটি চরিত্র সংযোজন করতে বলুন অথবা খানিকটা বলার পর তাকে বাকিটা নিজেকে বানিয়ে বলতে বলুন।এটা দারুণ মজার ব্যাপার যেটা আপনাকে এবং আপনার শিশুকন্যা বা শিশুপুত্রকে আনন্দ দেবে।
5.একটা বড় গল্প কে কয়েকটি অংশে ভেঙে নিন এবং প্রতিদিন একটি করে অংশ পাঠ করুন।এই ব্যাপারটি আপনার শিশুর মনোযোগ কে ধরে রাখবে এবং তার মধ্যে সাসপেন্স জাগিয়ে তুলবে।
শোওয়ার সময় গল্প পড়া একটি ছোট শিশুর কাছে দারুণ চমকপ্রদ ব্যাপার যেটি তাদের ভালো আচরণের শিক্ষা দেয়, কোনটি ঠিক কোনটি ভুল বুঝতে সাহায্য করে এবং অন্যকে সম্মান দিতে শেখায়।তাদের মূল্যবোধ গড়ে তোলে এবং নাগরিক বোধ গড়ে তোলে।এছাড়াও তাদের জ্ঞানীয় বিকাশে এটি সাহায্য করে।এই রাত্রিকালীন গল্প বলার মধ্যে দিয়ে আপনি আপনার সন্তানের কোন বিষয়ের প্রতি সে কতটা ওয়াকিবহাল এবং তার চিন্তাশক্তির পরিচয় পাবেন।এই রাত্রিকালীন গল্প বলার মধ্যে দিয়ে আপনার সন্তানের শব্দ ভান্ডার গড়ে ওঠে এবং ভাষায় তার আয়ত্ত বৃদ্ধি পায়।আপনি তাকে উৎসাহিত করতে পারেন তার সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য এবং তার কল্পনাশক্তি বিকাশের জন্য এ ব্যাপারে আপনি একটি বাচ্চাদের অ্যাক্টিভিটি কিট কেনার কথা ভাবতে পারেন।এটি আপনার সন্তানকে তার কল্পনাশক্তি বিকশিত করতে সাহায্য করবে এবং তার লেখার হাত খুলে দেবে সাথে সাথে সে আরো বেশি পড়তে আগ্রহী হয়ে উঠবে।