সাধারণ প্রসবের জন্য গর্ভাবস্থার নবম মাসের শারীরিক অনুশীলন

সাধারণ প্রসবের জন্য গর্ভাবস্থার নবম মাসের শারীরিক অনুশীলন

শারীরিক অনুশীলন আপনার গর্ভাবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, সে আপনি প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় যে ত্রৈমাসিকেই থাকুন না কেন। প্রকৃতপক্ষে, সমস্ত ডাক্তাররাই দৃঢ়ভাবে এটির সুপারিশ করেন, কোন স্পষ্ট সমস্যা নির্দিষ্ট না করা পর্যন্ত। গর্ভবতী মায়েদের শারীরিক অনুশীলন করতে ভয় পাওয়া সাধারণ, বিশেষত চূড়ান্ত ত্রৈমাসিকে, ভ্রূণের অকাল প্রসব বা আঘাতের ভয়ে। যাইহোক, গবেষণা স্পষ্টভাবেই দেখায় যে ব্যায়াম প্রসবের জন্য আসলে উপকারী, কোনো সম্ভাব্য জটিলতা হ্রাস করে আরামদায়ক এবং কম কঠিন করে তোলে। গর্ভাবস্থার নবম মাসে ব্যায়াম করা আপনার শারীরিক কাঠামোর পরিবর্তনের পাশাপাশি ভ্রূণের প্রয়োজনীয়তার পরিবর্তনের জন্য স্টাইল এবং শরীরের অবস্থানের দিক দিয়ে কিছুটা ছোটখাটো পরিবর্তন অবশ্যই সম্ভব।

গর্ভাবস্থার ৯ম মাসে শারীরিক অনুশীলন করা কি নিরাপদ?

উত্তরটি হল হ্যাঁ। হ্যাঁ, গর্ভাবস্থার নবম মাসে শারীরিক অনুশীলন করা সম্পূর্ণ নিরাপদ। তবে এই বিবৃতিটির সাথে কয়েকটি প্রয়োজনীয় সতর্কতা রয়েছে। এই সময় পর্যন্ত আপনি যে উচ্চমানের যত্ন নিয়ে এসেছেন তা বজায় রাখা আপনার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ, যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান করা, বিভিন্ন পুষ্টিসমৃদ্ধ ভারসাম্যযুক্ত খাবার খাওয়া, দিনে কমপক্ষে আট থেকে দশ ঘন্টা ঘুমানো এবং আপনার দেহের কোনো পরিবর্তন বা আবেগের দিকে মনোযোগ দেওয়া। তাছাড়া, নিজকে ব্যায়ামের প্রাথমিক ধরণগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ করার প্রয়োজন হতে পারে, যেগুলি আপনার জয়েন্ট এবং পেশীগুলিতে কোনো চাপ সৃষ্টি করে না।

গর্ভাবস্থার নবম মাসে শারীরিক অনুশীলন করার উপকারিতা

গর্ভাবস্থার চূড়ান্ত মাসে কাজ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু হল:

  • শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি: নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন ওজন বৃদ্ধি কমাতে সাধারণ ফিটনেস বজায় রাখতে সহায়তা করে, যা গর্ভাবস্থার পরবর্তী পর্যায়ে একটি সাধারণ প্রভাব হয়ে থাকে। এটি স্থূলত্ব সম্পর্কিত জটিলতার সম্ভাবনা হ্রাস করে যা ক্রমবর্ধমান ভ্রূণের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
  • গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস: অতিরিক্ত ওজনযুক্ত বা স্থূলকায় গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে, প্রাইমারি কার্ডিওভাসকুলার ওয়ার্কআউট গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়, কারণ এটি আপনার স্বাস্থ্যের পাশাপাশি আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
  • দ্রুত পুনরুদ্ধারের সময়কাল: আপনার শ্রোণীর মেঝের পেশী বা পেলভিক ফ্লোর মাসল শক্তিশালী করার জন্য কেগেলের মত ব্যায়াম অনুশীলন করার সাথে সাথে প্রসবের পর পুনরুদ্ধারের হার উন্নত হয়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য হ্রাস: ব্যায়াম কোষ্ঠকাঠিন্য সহজ করতে সাহায্য করতে পারে, কিছু অতি প্রয়োজনীয় আরাম ও স্বস্তি সরবরাহ করে।
  • প্রসবের সময় হ্রাস: ব্যায়াম করা প্রসব শ্রমের সময় হ্রাস করতে পারে, এবং ব্যথা হ্রাস করতে পারে, বিশেষত যোনিগত প্রসবের ক্ষেত্রে।
  • পিঠে ব্যথা হ্রাস করা: গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই সাধারণ জটিলতা অনেক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তবে শারীরিক অনুশীলন এথেকে কিছুটা আরাম পাওয়ার জন্য সহায়ক হয়।

গর্ভাবস্থার নবম মাসে ওয়ার্ক আউট করার আগে সাবধানতা অবলম্বন

গর্ভাবস্থার এই শেষ পর্যায়ে ব্যায়ামগুলি যেমন সহায়ক তেমনি জটিলতায় ভরা হতে পারে। কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

  • আপনার জন্য প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হল তৃতীয় ত্রৈমাসিকে কোনো ব্যায়াম অনুশীলন পদ্ধতি শুরুর আগে আপনার প্রসূতি / স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আপনার ডাক্তার আপনাকে সঠিক অনুশীলনগুলি বেছে নিতে এবং সেগুলি নিরাপদে অনুশীলন করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে সহায়তা করবেন।
  • কেবলমাত্র এমন অনুশীলনগুলি করুন যার কম প্রভাব রয়েছে। অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় আপনার লিগামেন্টগুলি এবং জয়েন্টগুলিতে অযৌক্তিক চাপ তৈরি করে এমন কোনো ব্যায়াম এড়ানো উচিত। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গর্ভাবস্থার হরমোন তৈরির কারণে দেহের এই অঙ্গগুলি দুর্বল হতে থাকে।
  • এমন জটিল অনুশীলনগুলি এড়িয়ে চলুন যাতে দেহের অনেক বেশি নড়াচড়া জড়িত। একটি মাঝারি গতি সেট করুন, যাতে আপনি অতিরিক্ত পরিশ্রম না করেন।
  • দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম না করার চেষ্টা করুন এবং ব্যায়ামের সময় ঢিলেঢালা হাওয়া চলাচল করে এমন পোশাক পরার কথা মনে রাখবেন। প্রয়োজন হলে জুতোগুলি ভাল আরামদায়ক হওয়া অপরিহার্য, কারণ এগুলি আপনার ভঙ্গিমা বজায় রাখতে সাহায্য করে, শারীরিক কষ্টের কোনো সম্ভাবনা হ্রাস করে। গর্ভাবস্থায় আপনার স্তন বৃদ্ধি পায়, তাই ভাল ব্রাও আবশ্যক।

আপনি কীভাবে আপনার ব্যায়ামের প্রোগ্রাম শুরু করতে পারেন

নিয়মটি হল হালকা মৃদু অনুশীলন দিয়ে শুরু করা যার ফলে ব্যথা হয় না, শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় না বা ক্লান্তি আসে না। তারপরে, নীচের টিপসগুলি অনুসরণ করুন:

  • আপনি ধীরে ধীরে ব্যায়মের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারেন, কারণ আপনার দেহ অতিরিক্ত চাপ নিতে পারে কিনা তা নিশ্চিত করার এটি সর্বোত্তম উপায়।
  • প্রয়োজনে আপনি নিজের অনুশীলনগুলিকে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করতে পারেন, যেমন একবারে ত্রিশ মিনিট দৌড়ানো বা হাঁটার চেয়ে দিনে তিন বার দশ মিনিট করে দৌড়ানো বা হাঁটা।
  • আগে যেমনটা বলা হয়েছে, জল পান করা, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ঘুমের চক্র যথেষ্ট কঠিনভাবে বজায় রাখতে হবে।
  • কিছু সহজ স্ট্রেচিং করে আগে শরীরকে ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত করার কথা মনে রাখবেন, কারণ এটি পোস্ট-ওয়ার্কআউট পেশীর ব্যথা হ্রাস করে।
  • দয়া করে এমন কোনো অনুশীলন করবেন না যা শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়, কারণ এটি শিশুর বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে। এর অর্থ গরম বা আর্দ্র অঞ্চলে কোনো ব্যায়াম করবেন না।

কখন আপনার অনুশীলন বন্ধ করা উচিত

অনুশীলন করার সময় যদি আপনি নিম্নলিখিত লক্ষণগুলির কোনোটি অনুভব করেন তবে অবিলম্বে বন্ধ করুন এবং আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন:

  • তীব্র পেটে ব্যথা যা হঠাৎ দেখা দেয়
  • মাথা ব্যাথা
  • মাথা ঘোরার অনুভূতি
  • অ্যামনিয়োটিক তরল যোনি থেকে লিক করা
  • বুকে ব্যথা
  • শ্বাসকষ্ট
  • যোনি থেকে রক্তক্ষরণ
  • শরীরের ভারসাম্য হ্রাস
  • পায়ের নিচের দিকে এবং গোড়ালিতে ব্যথা।

গর্ভাবস্থার শেষ মাসের জন্য নিরাপদ অনুশীলন

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নীচে ৯ম মাসের কিছু নিরাপদ এবং সর্বোত্তম ব্যায়াম দেওয়া হয়েছে:

১. যোগ ব্যায়াম

গর্ভাবস্থায় যোগব্যায়াম করা একটি আশ্চর্যজনক উপকারী অনুশীলন। এটি পুরোপুরি সুরক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি এটি আপনার দেহের নমনীয়তা এবং শক্তিও উন্নত করে। আপনার ঘুমকে আরো উন্নত করার পাশাপাশি এটি উদ্বেগ এবং স্ট্রেসের লক্ষণগুলিকে হ্রাস করে বলেও পরিচিত। যোগব্যায়াম শ্বাস প্রশ্বাসের হার বাড়ানোর পাশাপাশি রক্ত ​​সঞ্চালনের সময় শরীরের ব্যথা আরো কমিয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা যায় যে যোগব্যায়াম বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা ইত্যাদির মতো গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত লক্ষণগুলির সাথে লড়াই করতে পারে। তবে, যদি আপনি মনে করেন যে আপনার যোগব্যায়ামের অবস্থানগুলি কোনো সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তবে দয়া করে অবিলম্বে বন্ধ করুণ এবং আপনার শারীরিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য এগুলিকে সংশোধন করুন।

২. এক্সারসাইজ বল

আপনার পেটের পেশী আরও শক্ত করতে, আপনার মূল শক্তি উন্নত করার জন্য ব্যায়ামের বল বা এক্সারসাইজ বল ব্যবহার করা বেশ নিরাপদ, পাশাপাশি কার্যকরও। সঠিক ধরণের ব্যায়াম বল বেছে নিতে ভুলবেন না এবং আপনার উচ্চতা অনুসারে আপনি এটি ফোলানো নিশ্চিত করুন।

৩. শ্রোণী শক্তিশালীকরণ বা পেলভিস স্ট্রেন্থনিং

গর্ভাবস্থা পেলভিক ফ্লোরের পেশীগুলিতে প্রচুর চাপ পড়ে, তাই শ্রোণীকে শক্তিশালী করার জন্য অনুশীলন করা বেশ সহায়ক হয়। নিচে নয় মাসের গর্ভাবস্থার জন্য সেরা অনুশীলনগুলির কয়েকটি দেওয়া হল।

  • শ্রোণী প্রসারিত করা বা পেলভিক স্ট্রেচগুলি আপনার পা দৃঢ়ভাবে মেঝেতে রাখার সাথে জড়িত থাকে এবং আপনার ভঙ্গিটি বজায় রেখে আপনার পা একে অপরের থেকে দূরে রাখতে হয়। এটি আপনার শ্রোণী মেঝের পেশী নমনীয় রাখতে এবং প্রসব শ্রমের সময় কম করতে, পাশাপাশি প্রসবের সময় ব্যথা কমাতে কাজে লাগে।
  • পেলভিক টিল্টস আরও একটি উপকারী ব্যায়াম যা একটি শিশুকে ব্রিচ পজিশনে নিচের দিকে নামার জন্য উল্টাতে সহায়তা করে এবং শ্রমের অসুবিধা হ্রাস করে। এটি করার জন্য, মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসুন এবং হাতের উপর ভর দিয়ে আপনার বুকটি প্রায় মাটির সাথে সমতল না হওয়া পর্যন্ত সামনের দিকে ঝুঁকুন। এটি কোমরের পেশির পাশাপাশি পেলভিক পেশির শক্তি বাড়িয়ে তুলবে।
  • কোবলার পোজ হল আরও একটি অনুশীলন যা শরীরের তলপেটের পেশীগুলির মধ্যে চাপকে শিথিল করে। আপনার পায়ের পাতা দুটি একে অপরের দিকে মুখোমুখি করে মেঝেতে বসে এটি করা যেতে পারে। এরপরে, ধীরে ধীরে তবে দৃঢ়ভাবে আপনার হাঁটু দুটিকে মাটির দিকে নামিয়ে নিন যতক্ষণ না আপনি নিজের অভ্যন্তরের উরুর পেশীগুলিতে টান অনুভব করেন। ২০ সেকেন্ডের জন্য এই অবস্থানে থাকুন, এক মিনিটের জন্য পা শিথিল করুন এবং প্রায় পাঁচবার পুনরাবৃত্তি করুন।

  • গর্ভাবস্থায় কেগেল ব্যায়ামগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যদি আপনার প্রসব শ্রমের অতিরিক্ত পরিমাণ হয়ে থাকে এবং প্রসব প্ররোচিত করা দরকার হয়। তাছাড়া, এগুলি যোনির পেশী দৃঢ় রাখার মাধ্যমে মূত্রতন্ত্রের সমস্যা, অসাড়তা এবং সংক্রমণ পরিচালিত করতে সহায়তা করে। এটি করা বেশ সহজ এবং এক এক বারে দশ থেকে কুড়ি সেকেন্ডের জন্য শ্রোণীর পেশী আঁটসাঁট করা ও মুক্ত করার মাধ্যমে করা যায়। দিনে অন্তত দশ থেকে কুড়ি বার এই অনুশীলনটি করুন।

৪. শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন

গর্ভাবস্থায় নিজেকে ফিট রাখার অন্যতম সেরা ও তুলনামূলক সহজ উপায় হল শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন। কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি করার সময় আপনি নমনীয়তার জন্য দিনে প্রায় ১০ থেকে ২০ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করতে পারেন। গর্ভাবস্থার নবম মাসের জন্য সাঁতার কাটারও সুপারিশ করা হয়, কারণ এটি পেশী টানটান করার এবং আপনার হার্টবিটের হারকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি দুর্দান্ত উপায়।

৫. পাইলেটস

গর্ভাবস্থায় পাইলেটস একটি জনপ্রিয় ব্যায়াম পদ্ধতি, কারণ এটি আভ্যন্তরীণ শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতাকে ব্যাপকভাবে উন্নত করে। এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ক্রমবর্ধমান শিশু পেটের পেশীগুলিকে দুর্বল করে, যা পাঁজর এবং পিঠে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। পাইলেটগুলি বেশ আদর্শ ব্যায়াম, কারণ এগুলি হাত এবং হাঁটু দিয়ে সম্পন্ন হয়, যা পেটে এবং পিঠে চাপ হ্রাস করে। দয়া করে নিশ্চিত করুন যে আপনি কেবল অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের নির্দেশে পাইলেটস অনুশীলন করছেন। দুর্ঘটনাক্রমে আপনার শ্রোণী এবং পিছনের পেশীগুলিতে টান বা চাপ এড়ানোর জন্য এটি দরকার, যা আঘাতের কারণ হতে পারে। তাছাড়া, ভুল পাইলেট পজিশনের ফলে ভ্রূণের সমস্যা হতে পারে।

৬. স্কোয়াট এবং লাঞ্জেস

এই ব্যায়াম আপনার শরীরের নিচের অংশের জন্য। নিয়মিত স্কোয়াটিং প্রসব শ্রমের সময় হ্রাস করে বলে পরিচিত, কারণ এটি শ্রোণীকে আরও প্রশস্ত করে তোলে, অনেক বেশি প্রচেষ্টা ছাড়াই শিশুকে বের হতে দেয়। স্কোয়াটগুলি করার জন্য ন্যূনতম সরঞ্জামের প্রয়োজন। আপনার পা দুটি কাঁধ বরাবর প্রসারিত করে দাঁড়ান এবং আপনার পাছা আপনার হাঁটুর সমান্তরাল না হওয়া পর্যন্ত নীচের দিকে নামুন। প্রতিদিন প্রায় ২০ বার এটি পুনরাবৃত্তি করুন।

এরপরে, লাঞ্জেসগুলি পাছার পেশীর গতির পরিধি উন্নত করে, যা ভ্রূণকে নামার সময় ঘুরে সঠিক অবস্থান নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত স্থান দেয়। একসাথে উভয় পা এক জায়গায় রেখে দাঁড়িয়ে শুরু করুন, তারপরে একটি পা সাম্নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান যতক্ষণ না হাঁটু বাঁকানোর প্রয়োজন হয়। এই ব্যায়ামগুলি করার সময় দয়া করে আপনার সঙ্গী, পরিবারের সদস্য বা বন্ধুর সমর্থন নিন, কারণ এগুলি করার জন্য যথাযথ ভারসাম্য দরকার হয়।

গর্ভাবস্থায় কখন ব্যায়াম করা এড়ানো উচিত

গর্ভাবস্থার নবম মাসে শারীরিক অনুশীলন নিরাপদ, তবে এমন অনেক সময় থাকে যখন আপনাকে ব্যায়াম করা এড়াতে হবে:

  • এটি নতুন কোনো ক্রিয়াকলাপ চেষ্টা করার সময় নয়। মানসিক চাপের কারণ হতে পারে এমন কোনো ব্যায়াম এড়িয়ে কেবলমাত্র প্রাথমিক অনুশীলনগুলি করা গুরুত্বপূর্ণ।
  • ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে, যদি আপনি মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব ইত্যাদির মতো কোনো অপ্রত্যাশিত লক্ষণগুলি ভোগ করেন তবে ব্যায়াম করবেন না।
  • নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার ওয়ার্কআউট যেন আপনার প্রতিদিনের কাজগুলিতে প্রভাব না ফেলে, যেমন খাওয়া এবং ভাল ঘুমানো।
  • আপনার রক্তনালীগুলির উপর চাপ রোধ করতে এবং শরীর নড়াচড়ার হারকে কম করার জন্য, আপনার পিঠে ভর দিয়ে শুয়ে থাকা ব্যায়ামগুলি করা থেকে প্রথম ত্রৈমাসিকের পর থেকে বিরত থাকতে হবে, তা মনে রাখবেন।
  • স্কিইং, হাইকিং বা উঁচু জায়গায় আরোহণের মতো উচ্চতার পরিবর্তনের সাথে জড়িত এমন অনুশীলনগুলি এড়িয়ে চলুন। একইভাবে, স্কুবা ডাইভিংয়ের মতো খেলাগুলি এই সীমার বাইরে, কারণ এগুলি আপনার এবং আপনার বাচ্চার উভয়েরই অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে।

যদিও গর্ভাবস্থা একটি দুর্দান্ত সময়, নবম মাসের মধ্যে, বেশিরভাগ মহিলা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। শরীর খুব মারাত্মকভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়, এমনকি সাধারণ কাজগুলিও কঠিন করে তোলে। তবে এটি মনে রাখা জরুরী যে শারীরিক অনুশীলন এবং ডায়েট তখনও গর্ভাবস্থার অপরিহার্য অঙ্গ। নিয়মিত ওয়ার্কআউটগুলি মানসিক ও শারীরিক চাপ কমাতে এবং প্রসব শ্রমের অসুবিধা রোধ করতে পারে, প্রক্রিয়াটি সহজ করে তোলে। কাউকে আপনার অনুশীলনের তদারকি করতে ভুলবেন না, কারণ আপনার সংকোচন যে কোনো সময় ঘটতে পারে।