যোনিদ্বারের মাধ্যমে শিশুর প্রসব সবচেয়ে প্রচলিত উপায়। যাইহোক, কোন শারীরিক জটিলতার ক্ষেত্রে চিকিৎসক মা এবং সন্তানের নিরাপত্তার জন্য সিজার করার প্রস্তাবও দিতে পারেন। নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে সিজার করার প্রয়োজন হতে পারে:
এগুলি ছাড়াও, এমন আরও পরিস্থিতি রয়েছে যার জন্য সিজার করার প্রয়োজন হতে পারে, এবং তার প্রয়োজনীয়তা আপনার চিকিৎসকই বিচার করবেন।
এই অস্ত্রোপচারে, মায়ের পেটে ও জরায়ুতে একটি ছেদন করা হয়, এবং তার মাধ্যমে নবজাতকটিকে প্রসব করানো হয়। মাকে সচরাচর স্থানীয় অ্যানেস্থেশিয়া দেওয়া হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার সংজ্ঞা লুপ্ত করার প্রয়োজন হয় না।
সি-সেকশন, স্বাভাবিক প্রসবের মতোই, একটি জন্মদান প্রক্রিয়া যেখানে সন্তানধারণের সময় মায়েদের একই রকমের আনন্দ ও উচ্ছাস হয়ে থাকে।
তবে, প্রাকৃতিকভাবে প্রসব না করতে পারার জন্য কিছু মা হয়তো হতাশাগ্রস্ত হতে পারেন, বিশেষত যাদের অপরিকল্পিত সি-সেকশন জাতীয় অস্ত্রোপচার হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন কারণে।
সিজার বা অস্ত্রোপচার পদ্ধতি আপনার শারীরিক অবস্থাকেও প্রভাবিত করে। অস্ত্রোপচারের ঠিক পর কিছু মায়ের গা গুলানো বা বমিভাব হতে পারে এবং এই বমিভাব 48 ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। অনেক সময় মায়েদের একটা চুলকানির অনুভূতি হতে পারে যা অসাড় করার ওষুধের কারণে হয়ে থাকে।
অস্ত্রোপচারের পরে ব্যথা অনুভব করা খুবই স্বাভাবিক। ব্যথা অসহনীয় হলে, অ্যানেস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞরা মরফিন দেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন, বিশেষ করে যদি অস্ত্রোপচারের সময় অসাড় করার ওষুধ (এপিডুরাল বা স্পাইনাল) ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মরফিন 24 ঘন্টা পর্যন্ত প্রসব পরবর্তী ব্যথাকে দূর করে রাখে। তারপরে, আইব্রুপ্রুফেনের মতো ব্যথা নাশকারী ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
যদি সাধারণ অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে অবিলম্বে ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য তাকে সিস্টেমিক নারকোটিক (একপ্রকার বিশেষ বেদনানাশক ওষুধ যা দেহের ভিতরে ক্রমাগতভাবে সরবরাহ করা হয়) দেওয়া হয়। প্রতি তিন বা চার ঘন্টা অন্তর মাকে ব্যথার ঔষধ দেওয়া হয়।
কোনও অসুবিধার মুখোমুখি হলে মা যেন অবশ্যই নার্সের পরামর্শ নেন। দীর্ঘ সময় ব্যাথা সহ্য করলে শেষপর্যন্ত আরো বেশি ওষুধ প্রয়োগ করার প্রয়োজন হতে পারে।
সি-সেকশন অস্ত্রোপচারের পর কখন থেকে আপনি নবজাতকের পরিচর্যা শুরু করবেন তা বুঝতে গেলে আপনাকে জানতে হবে আপনার শরীর কিভাবে পরিচর্যার জন্য প্রস্তুত হয় সে বিষয়ে। প্লাসেন্টা জরায়ু থেকে আলাদা হলে শরীরের হরমোনগুলির পরিবর্তন ঘটে। এই পৃথকীকরণই স্তন্যদুগ্ধ উৎপাদনের সংকেত দেয়। এটি মনে রাখা দরকার যে এই সংকেত স্বাভাবিকভাবে প্রসব অথবা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসব, উভয়ক্ষেত্রেই দেখা যায়।
অন্য কথায়, নির্দিষ্টভাবে বললে, সিজার বা অস্ত্রোপচারের অব্যবহিত পরেই আপনি আপনার সন্তানকে খাওয়াতে পারেন। তবে, আপনার কিছু অসুবিধা হতে পারে, এবং শিশুকে খাওয়ানোর সময় ছেদনের স্থানে ব্যথা লাগতে পারে। দুধ খাওয়ানোর সঠিক ভঙ্গি সম্পর্কে নির্দেশনা পাওয়ার জন্য একজন নার্সের সাহায্য নেওয়া ভাল। নার্স আপনাকে পাশ ফিরে শোয়ার বা ফুটবল অবস্থানের পরামর্শ দিতে পারেন যার ফলে কাটা স্থানে কোনো চাপ পড়ে না ।
কিছু ক্ষেত্রে, মায়েদের স্তনবৃন্তে ক্ষতও হয়ে যায়। আপনি যদি এই সমস্যার মুখোমুখি হন তবে অবিলম্বে একজন ল্যাকটেশন (দুগ্ধ নিঃসরণ) উপদেষ্টার শরণাপন্ন হন।
মাকে তখন যথেষ্ট পরিমাণে বেদনা নাশক ওষুধ দেওয়া হয় যা তার দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে। এইসব ঔষধগুলি এমনভাবে দেওয়া হয় যাতে স্তন্যদুগ্ধের মানকে প্রভাবিত না করে। অতএব, এটাই সুপারিশ করা হয় যে আপনি চিকিৎসকের প্রস্তাবিত ওষুধই গ্রহণ করবেন এবং নির্ধারিত পরিমাণটিকে অবশ্যই মেনে চলবেন।
সাধারণত, প্রসবের 2 থেকে 6 দিনের মধ্যেই স্তন্যদুগ্ধের আসা শুরু হয়ে যায়। এতে যদি আরো সময় লাগে, তখন বিশেষজ্ঞরা মাকে স্তন্যদানের প্রচেষ্টায় অবিরত থাকার পরামর্শ দেন। এর কারণ হল, প্রাথমিক দিনগুলিতে, মায়ের স্তন্যে শিশুকে খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত কোলোস্ট্রাম (গর্ভাবস্থার শেষপর্যায়ে উৎপাদিত প্রথম স্তন্যদুগ্ধ) তৈরি হয়।
নিশ্চিত থাকুন যে, আপনি সিজারিয়ান সেকশনের পরে অনেক অস্ত্রোপচার-পরবর্তী যত্ন পাবেন। কোনো অস্বস্তি বা সমস্যার লক্ষণ আছে কিনা তা দেখতে এবং ক্ষত সঠিকভাবে নিরাময় করছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য আপনার ডাক্তার 24 ঘণ্টা ধরে আপনার উপর ভালো ভাবে নজর রাখবেন। আপনাকে কিছু ব্যথা মুক্তির ওষুধ দেওয়া হবে এবং অস্ত্রোপচারের 24 ঘণ্টার মধ্যে হাঁটা শুরু করার জন্য বলা হবে তাতে পেটের মধ্যে জমা গ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। হাঁটা প্রথমে একটু কঠিন, কিন্তু ব্যথা কয়েক দিনের মধ্যে ধীরে ধীরে কম হয়ে যায়। আপনি অস্ত্রোপচারের ছয় থেকে আট ঘন্টার মধ্যে তরল খাওয়া শুরু করতে পারেন এবং হালকা ডায়েট গ্রহণ করতে পারেন।
ডাক্তার তৃতীয় বা চতুর্থ দিনে স্টেপলগুলি সরিয়ে দেন। মনে রাখবেন যে এই প্রক্রিয়াটিতে ব্যথা লাগে না এবং শুধু একটি ছোট চিম্টির মতো মনে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, মাকে ছেড়ে দেওয়ার আগেই এটি করা হয়।
যোনি থেকে রক্তপাত এবং স্রাব ধীরে ধীরে কম হতে থাকে, তবে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। স্রাব উজ্জ্বল লাল থেকে গোলাপী হয় এবং তারপর হলুদ- সাদা হয়ে যায়।
সিজারিয়ান ডেলিভারির পরে মায়ের অনেক বেশি যত্ন নেওয়া দরকার। নতুন মাকে শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিকেই অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তাই দ্রুত নিরাময়ের জন্য যত্ন ও সহায়তা দরকার।
আপনাকে বার বার প্রস্রাব করার জন্য বলা হবে কারণ পূর্ণ মূত্রাশয় জরায়ুর সংকোচনকে কঠিন করে তোলে, যা ক্ষততে চাপ বাড়ায়।
এই ক্ষতস্থানটি শুকোতে সাধারণত 4 সপ্তাহ সময় লাগে। তবে, প্রসবের পর প্রথম বছরটিতে মাঝে মাঝে এই জায়গাটিতে ব্যথা হতে পারে। ক্ষতচিহ্নটিকে অবশ এবং কালশিটে যুক্ত মনে হতে পারে এবং এটি সামান্য ফুলে থাকতে পারে। এক্ষেত্রে আশেপাশের অংশের চামড়ার রঙের চেয়ে গাঢ় রঙের হবে। এমনকি হাঁচি ও কাশির সময়ও সামান্য ব্যথা লাগতে পারে।
মায়ের দ্রুত আরোগ্যলাভের জন্য সিজারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসবের পরে স্বাস্থ্যের যত্ন ও পরিচর্যা অপরিহার্য। সি-সেকশন একটি জটিল অস্ত্রোপচার, এবং তাই, স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন শুরু করার আগে মায়ের প্রচুর বিশ্রাম এবং যত্নের প্রয়োজন হয়।
হাসপাতালে যে যত্ন আপনি পান, তা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে যাবার পরও যেন চলতে থাকে:
নতুন মায়েরা যাদের সি-সেকশন জাতীয় অস্ত্রোপচার হয়েছে, তারা হয়তো মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যেতে পারেন। তারা অনেক কারণে হতাশ বোধ করতে পারেন। এই হতাশা কোনো প্রসবজনিত জটিলতার কারণে হতে পারে বা প্রাকৃতিকভাবে প্রসবে অক্ষম হওয়ার জন্য হতে পারে। মিশ্র আবেগ এবং দ্রুত মেজাজ পরিবর্তন তাদের পক্ষে খুবই স্বাভাবিক।
এটা জানা জরুরি যে জন্মোত্তর মানসিক অবসাদগুলি বেশিরভাগ নতুন মায়েদের প্রভাবিত করে, এবং তা স্বাভাবিকভাবে প্রসব বা অস্ত্রোপচার দ্বারা প্রসব উভয়ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে। এই ধরনের মেজাজ পরিবর্তন সাধারণত জন্মদানের কয়েক দিনের পর থেকে শুরু হয় এবং কিছু দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
প্রসব পরবর্তী দুঃখবোধ থাকা একটি স্বাভাবিক ঘটনা, তবে প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। কয়েক সপ্তাহ পরেও যদি মেজাজের ওঠানামা এবং দুঃখবোধ থাকে এবং অবস্থার অবনতি হতে থাকে তবে খুব সম্ভবত আপনি প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতা থেকে ভুগছেন। এসব ক্ষেত্রে একজন পেশাদারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
প্রসবের 24 ঘন্টা পর আপনাকে হাঁটা শুরু করতে বলা হবে, এবং সাধারণত আপনাকে 3 দিন পর হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে। অনেক সি-সেকশন মায়েরা কয়েকদিনের পরেই বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ান, তবে সি-সেকশনের পরে আপনার শরীরকে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করতে ছয় সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
চিকিৎসকরা আপনাকে সি-সেকশনের পরে অবশ্যই অনেক শারীরিক যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেবেন, এবং নার্স দ্রুত আরোগ্যের কৌশলগুলি বলবেন। বাড়িতে সিজার পরবর্তী যত্ন অপরিহার্য, কারণ এ ক্ষেত্রে মা তার নবজাতকের যত্নের জন্য তার শক্তি ব্যয় করতে পারেন।
সিজারিয়ান দাগ চিরতরে মার সঙ্গে থাকবে। এটা ধীরে ধীরে একটু হালকা হয়ে যাবে কিন্তু সম্পূর্ণরূপে চলে যাবে না।
ক্ষতচিহ্নগুলি সাধারণত উঁচু উঁচু ও ফোলা ধরনের, এবং ত্বকের বাকি অংশের চেয়ে গাঢ় রঙের হয়। যদিও, এগুলি সঙ্কুচিত হতে শুরু করে এবং ত্বকের রঙের সাথে ক্রমশ মিলে যায়। সেরে ওঠার সময় সাধারণত এগুলি চুলকাতে থাকে। দেহে অস্ত্রোপচারের স্থানটি তলপেটের নিচের দিকে – অন্তর্বাসের কোমরবন্ধনীর থেকেও নিচে থাকে – এবং স্থানটি যৌনাঙ্গকেশ দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে।
এটি লম্বায় মাত্র চার থেকে ছয় ইঞ্চি ও চওড়াতে এক ইঞ্চির আট ভাগের একভাগ হয়। সারতে শুরু হলেই, ক্ষতচিহ্নগুলি 1/16 ইঞ্চিতে সংকুচিত হয়।
সি-সেকশনের কাটাটি সাধারণত অনুভূমিকভাবে করা হয় তবে বিরল ক্ষেত্রে তা উল্লম্বভাবেও হতে পারে। এছাড়াও কাটা স্থানটিতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের প্রবণতা থাকে। সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণগুলি হল:
এই উপসর্গগুলির মধ্যে কোনো একটি দেখা দেওয়ামাত্র অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে ধীরে চলা ভালো এবং কোনো জটিলতা এড়াতে যত্ন নেওয়া সর্বোত্তম। সি-সেকশন ডেলিভারির পরে কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তা ডাক্তার আপনাকে উপদেশ দিতে পারেন। এখানে কিছু সতর্কতা দেওয়া হল যা আপনার মনে রাখা কর্তব্য:
ছয় থেকে আট সপ্তাহ পরে ব্যায়াম শুরু করতে পারেন, যদি আরোগ্যের পথে অন্য কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয়ে থাকে। মা যদি অসুবিধা বোধ না করেন এবং ডাক্তার পরীক্ষা করে আশ্বস্ত করেন তবে ছয় সপ্তাহ পর থেকে যৌনমিলন করা যেতে পারে। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির জন্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন। কারণ প্রসবের আগে ব্যবহার করা পদ্ধতি পরে যথেষ্ট কার্যকর নাও হতে পারে এবং অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ নিয়ন্ত্রণ করতে পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে।
আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে এই কৌশলগুলি অনুসরণ করতে পারেন:
সিজারিয়ান ডেলিভারি একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার, এবং দ্রুত স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য প্রচুর বিশ্রাম প্রয়োজন। সি-সেকশন হওয়ার পর শরীর সম্পূর্ণ ও নিশ্চিতভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে অন্তত ছয় সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। যথেষ্ট বিশ্রাম ও দ্রুত সেরে ওঠা সুনিশ্চিত করতে মাকে শিশুর ঘুমানোর সময় বিশ্রাম নিতে হবে এবং ডায়াপার পরিবর্তন এবং গৃহকর্মের জন্য অপরের সহায়তা নিতে হবে।
এসময় শরীরের অতিরিক্ত যত্ন প্রয়োজন এবং কাহিল হয়ে পড়ার মতো কিছু করা উচিত নয়। যতটা সম্ভব সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা এড়িয়ে চলুন এবং ভারী কিছু তুলবেন না। ডাক্তার অনুমতি দেওয়ার পরেই আপনি ব্যায়াম করা শুরু করতে পারেন। যাইহোক, হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করবেন এবং খুব বেশী চাপ দেবেন না।
ব্যথা কমাতে কিছু ব্যথা দূর করার ওষুধ গ্রহণ করা চলে। কিন্তু যে কোনো ঔষধ গ্রহণ করার আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় ওষুধগুলি খেতে পারেন কিনা তা জানতে হবে।
পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে এবং খাদ্যের তালিকায় প্রচুর তাজা ফল ও সবজি অবশ্যই থাকতে হবে। এইসমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলি শুধুমাত্র আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্যই নয়, শিশুকে স্তন্যপান করানোর মাধ্যমে তারও পুষ্টিসাধন করবে।
সি-সেকশনের পরে কোষ্ঠকাঠিন্য একটি বড় সমস্যা। এই পরিস্থিতি বেশ অস্বস্তিদায়ক এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেতে অনেক সময় লাগে। প্রচুর শাকসবজি, ওটস্, রাগী ইত্যাদি তন্তু বা আঁশবহুল খাবার খাওয়া, এবং প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
দৈনন্দিন ভিত্তিতে এই স্থানটির যত্ন নেওয়া উচিত। সাবান এবং জল দিয়ে এটি পরিষ্কার করা যেতে পারে, কিন্তু এখানে ঘষাঘষি করা উচিত নয়। কাটা স্থানটি সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যেই সেরে ওঠে এবং যদি সেখানে কোনরকম পুঁজ থাকে বা আশেপাশের ত্বক লাল হয়ে যায় তবে এটি একটি সংক্রমণ হতে পারে যা ডাক্তারকে দেখাতে হবে।
সি-সেকশন জাতীয় অস্ত্রোপচারের পরে অনেক মায়েরই দুঃখ ও হতাশাবোধ হওয়া খুবই সাধারণ। প্রসবের পরবর্তীকালীন বিষণ্ণতা একটি সাধারণ ঘটনা কিন্তু একে চুপচাপ সহ্য করা উচিত নয়। এই বিষণ্ণতা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য এবং সমর্থন লাভের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।
নতুন মা হওয়ার পর লজ্জা না করে সাহায্যের জন্য ডাকতে হবে, কারণ যদি মা ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তবে তার শরীর আরোগ্য হতে আরও বেশি সময় লাগবে।
যৌন সংসর্গ সি-সেকশন মায়ের জন্য খুবই বেদনাদায়ক হতে পারে এবং ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার পরেই তা করা যেতে পারে।
একটি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের পরে যতটা সম্ভব জনসাধারণের বাথরুম এবং টয়লেট ব্যাবহার করা এড়িয়ে চলা উচিত। এটি সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে যা ক্ষত নিরাময় করা কঠিন করে তুলতে পারে।
সি-সেকশন ডেলিভারির পর দ্রুত কীভাবে আরোগ্য লাভ করা যায় সেটি জানা সেই সমস্ত মায়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যাদের সি – সেকশন ডেলিভারি হয়েছে। সেই লক্ষণগুলির সম্পর্কে জানাও গুরুত্বপূর্ণ যেগুলির জন্য অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কয়েকটি সংকেত এরকম হতে পারে:
উপসংহার
সি-সেকশন প্রসবের অস্ত্রোপচার পদ্ধতিতে মায়ের তলপেট এবং জরায়ুতে ছেদন করা হয়ে থাকে। একটি সাধারণ সি-সেকশন অপারেশন তিন থেকে চার ঘন্টা ধরে চলে। সুতরাং, এটি থেকে আরোগ্যলাভ একটি যোনি প্রসবের চেয়ে কঠিন এবং ধীর।
সি-সেকশনের পরে, সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করার জন্য মাকে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকেই মাকে প্রচুর বিশ্রাম দেওয়া দরকার, যাতে তিনি শীঘ্রই অস্ত্রোপচারের পর আরোগ্য লাভ করতে পারেন।