In this Article
- ভারতের অনিচ্ছাকৃত গর্ভাবস্থাগুলি
- অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার কারণ সমূহ
- অপরিকল্পিত গর্ভধারণের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক প্রভাবগুলি কি?
- অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণের অবসান
- গর্ভপাত করানো এবং এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি
- গর্ভপাত করানোর ঝুঁকিসমূহ
- অযাচিত গর্ভাবস্থায় কীভাবে গর্ভপাত করানো হয়?
- অনিচ্ছাকৃত গর্ভাবস্থা বহন
- প্রাক প্রসবকালীন চেক আপ
- কীভাবে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এড়িয়ে চলবেন?
- অপ্রত্যাশিত গর্ভাধারণের মোকাবিলা
কিছুজনের ক্ষেত্রে যারা সন্তান ধারণের জন্য নিদারুণ ভাবে চেষ্টা করেন এবং একজন গর্বিত মা হয়ে উঠতে চান,তাদের কাছে এটি চরম মুহূর্ত হয়ে উঠবে যখন তিনি জানতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী হয়েছেন।যাইহোক, যদি এই গর্ভাবস্থাটি অপরিকল্পিত ভাবে হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে এই মানসিকতাটি কিছুটা অন্যরকমের হয়।এই অপ্রত্যাশিত গর্ভাবস্থাটির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে প্রয়োজন হয় অসম্ভব মানসিক শক্তির এবং অবিলম্বে পরিবার গড়ে তোলার জন্য সঙ্গীর যথার্থ সমর্থনের।
ভারতের অনিচ্ছাকৃত গর্ভাবস্থাগুলি
বিশ্ব স্বাস্থ্য শল্য চিকিৎসকদের গবেষণার দ্বারা প্রকাশিত ভারতবর্ষে 2015 সালের মধ্যে প্রায় 48.1 মিলিয়ন মহিলা গর্ভবতী হয়েছেন।যার অর্ধেক গর্ভাবস্থাই ঘটেছে অনিচ্ছাকৃত ভাবে।এবং এটিও গবেষিত যে সেই সকল মহিলাদের বয়সসীমা 15 – 49 বছরের মধ্যে।এই চিত্র বিবেচনা করে দেখা গেছে প্রতি 1000 জন গর্ভবতী মহিলার মধ্যে 47 জন মহিলা গর্ভপাত করাতে গিয়েছেন, যারা অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার শিকার।
অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার কারণ সমূহ
অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থায়, দম্পতিরা স্বভাবতই প্রস্তুত থাকেন না তাদের পরিবার পরিকল্পনা বিকাশের ক্ষেত্রে,তাই এই ধরণের খবরে তারা বেশিরভাগ সময়েই আঘাত পান।অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা ‘উদ্দীপনার মুহূর্ত‘- এর ফল হতে পারে, গর্ভনিরোধকের ভুল ব্যবহারের জন্য অথবা ধর্ষণের ন্যায় কোন আঘাত–জনিত কারণে হয়ে থাকতে পারে।চলুন এরকমই কিছু কারণ এর বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার প্রাথমিক একটি কারণ হল গর্ভনিরোধক ব্যবহারের ব্যার্থতা।পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় যে,প্রায় 53% মহিলার অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা ঘটে যারা গর্ভনিরোধক ব্যবহার করেন।তরুণী কিম্বা বয়স্ক যেকোন বয়সের মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি একটি সাধারণ কারণ।
- গর্ভনিরোধকের ভুল ব্যবহার—আপনি যদি নির্দিষ্ট গর্ভনিরোধকের উল্লিখিত নির্দেশাবলী গুলি যথাযথ ভাবে না মানেন, এটা প্রমাণ করতে পারে একটা বড় ধরণের ভুলের।আপনি যদি আপনার পছন্দের গর্ভনিরোধক বড়ি গ্রহণ করেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটি প্রতিদিন একই সময়ে সেবন করা।এটি নূন্যতম গর্ভাবস্থার সম্ভাবনা কমায়।অনুরূপ ভাবে, যৌন মিলন ঘটার আগে একটি সার্ভিক্যাল ক্যাপ বা টুপি অথবা মধ্যচ্ছদা ব্যবহার সার্ভিক্স অঞ্চলকে পুরোপুরি ঢেকে রাখতে নিশ্চিত করে।সেক্ষেত্রে গর্ভনিরোধক পদ্ধতিতে কন্ডোম কিছুটা বিশ্বাসযোগ্য।যাইহোক, আপনার সঙ্গীকে সেটিকে অবশ্যই সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানতে হবে।
- নিরাপদ দিনের ভুল গণনা—একটি অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থা হতে পারে যদি আপনার সম্ভাবনাময় সময়ের হিসেব ভুল করেন।আপনাকে দ্বিগুণ নিশ্চিত হতে হবে মাসের নিরাপদ সময়কাল সম্পর্কে,যার উপর এই পদ্ধতিটি নির্ভর করে পুরোপুরি ভাবে।
- গর্ভনিরোধকের অনিয়মিত ব্যবহার—গর্ভনিরোধক পদ্ধতি যেমন–মধ্যচ্ছদা,কন্ডোম এবং সার্ভিক্যাল ক্যাপ বা টুপি প্রতিবার সঙ্গমের সময় ব্যবহার করা উচিত।যদি আপনি গর্ভনিরোধক বড়ি খেতে ভুলে যান বা মর্নিং আফটার পিল নিয়ম মেনে না নেন, তবে আপনি আপনার আশার বিরুদ্ধেই গর্ভবতী হয়ে যেতে পারেন।
- জরুরী গর্ভনিরোধক বড়ির অপর্যাপ্ততা —মহিলাদের গর্ভনিরোধের ক্ষেত্রে জরুরী গর্ভনিরোধক বড়ি একটি অন্যন্ত জনপ্রিয় পদ্ধতি।যাইহোক, এটা প্রায়ই ঘটে যে,বড়িগুলি সবসময়ে দোকানে পাওয়া না যেতে পারে অথবা কোন সময়ে এটির জন্য প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন হতে পারে।এই সবের কারণে বড়ি গ্রহণের ক্ষেত্রে দেরী হতে পারে যার পরিণতি গর্ভবস্থা।
- জ্ঞানের অভাব—মহিলারা প্রায়ই অসচেতন থাকেন তাদের নিজেদের শরীর সম্পর্কে এবং জানেন না কোন সময়ের কোন ধরণের সঙ্গমের ফলে গর্ভধারণ ঘটে থাকে।যদি সে ক্ষেত্রে যৌন–সঙ্গম এবং এর ফলাফল সম্পর্কে অপর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে, তবে এটি গর্ভধারণের বড় একটি কারণ হয়ে উঠতে পারে, বিশেষত তরুণীদের ক্ষেত্রে।
অপরিকল্পিত গর্ভধারণের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক প্রভাবগুলি কি?
অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থার সম্মুখীন হলে সেক্ষেত্রে অসংখ্য শারীরিক এবং মানসিক প্রভাব পড়ে।এগুলি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব হতে পারে যা মহিলাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বিপরীত প্রভাব ফেলে।বেশীরভাগ দম্পতিই এই ধরণের জরুরী অবস্থার ক্ষেত্রে অপ্রস্তুত থাকেন এবং তারা তাদের স্থায়ী জীবনে বড় ধরণের সমস্যার মুখে পড়েন।বেশীরভাগ মহিলাই এই বিস্ময়ের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকেন না,এটি তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে,যুক্তির দিক থেকে এবং মানসিক ভাবে তারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।দুঃখের ছায়া তাদের গ্রাস করে এবং নানা ধরণের গভীর সমস্যা যেমন হতাশা,অবসাদ– এর সম্ভাবনা প্রকট হয়ে ওঠে। গর্ভধারণের ক্ষেত্রে যদি নেতিবাচক অনুভূতি সৃষ্টি হয়,এটি বাচ্চার সাথে সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে এবং বাচ্চা ও মায়ের বন্ধনের ক্ষেত্রেও খারাপ প্রভাব পড়ে।
অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণের অবসান
যদি আপনি ও আপনার সঙ্গী এই ধরণের গর্ভাবস্থাকে এগিয়ে না নিয়ে যাওয়া স্থির করেন,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কোন রকম জোর প্রয়োগ না করে মীমাংসার সাথে সিদ্ধান্তটি নিশ্চিত করুন। এই ধরণের বিষয়ে কোনরকম সন্দেহ বা দ্বিধা দ্বন্ধ আপনাদের সম্পর্কের মধ্যে প্রভাব ফেলতে পারে।যদি আপনি এটি বন্ধ করতে চান,আপনাকে জানতে হবে কীভাবে অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।যাইহোক,এক্ষেত্রে যে সকল শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনে ভুগতে পারেন সেগুলির বিষয়ে প্রস্তুত হতে হবে।উদ্বিগ্নতা এবং শারীরিক অস্বস্তি গুলি ছাড়াও দোষারোপ করার অনুভূতি,দুঃখপ্রকাশ– এগুলি খুব সাধারণ, এবং অনেক মহিলাই এই ব্যাপারের সাথে নিজেকে একদম মানিয়ে নিতেই পারেন না।এক্ষেত্রে আপনার ভয়ের গভীরতা গুলি আপনার সঙ্গীর সাথে অথবা বন্ধুদের সাথে আলোচনা করুন এবং প্রয়োজনবোধে একজন পরামর্শদাতার সাহায্য নিন।
গর্ভপাত করানো এবং এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি
গর্ভপাত, যেটি ডাক্তারি কারণে কিম্বা বাহ্যিক হস্তক্ষেপের কারণে হয়ে থাকে,তা গর্ভপাত করানো বা ঘটানো নামে পরিচিত।যদি আপনি অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থায় ভোগেন তবে আপনি এই ব্যবস্থার শরণাপন্ন হতে পারেন।এক্ষেত্রে জরায়ুর গহ্বর থেকে ভ্রূণটিকে বহিস্কৃত করা হয় সালাইন বা ডাইজক্সিন অথবা পটাসিয়াম ক্লোরাইড ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে।এই ইঞ্জেকশনটি দেওয়া হয় অ্যাম্নিওটিক স্যাক বা থলি–তে, যেটি গর্ভস্থ ভ্রূণকে আবৃত করে রাখে।প্রোস্টাগ্লান্ডিন যেমন– মিসাপ্রস্টোল সার্ভিক্স–কে নরম করতে ব্যবহার করা হয় এবং জরায়ুর সংকোচ ঘটায়।যোনিতে ওষুধ প্রবেশ করানো হয়।সংকোচন ঘটানোর জন্য, শিরার মধ্যে পিটোসিন অথবা অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।
গর্ভপাত করানোর ঝুঁকিসমূহ
গর্ভপাত করানোর সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলি সম্পর্কে আপনাকে সচেতন হয়ে উঠতে হবে,যখন অ্যাম্নিওটিক স্যাক বা থলিতে বিভিন্ন ধরণের ওষুধ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়।
- অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
- ইঞ্জেকশন পদ্ধতির জন্য জরায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে
- আভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিতে সংক্রমণ হতে পারে
- প্রচন্ড যন্ত্রণা এবং পরবর্তীকালে কালশিটে পড়ে যেতে পারে
- অস্বাভাবিক জরায়ুর সংকোচন
- স্যালাইন মায়ের রক্ত–ধারার মধ্যে প্রবেশ করতে পারে, যা ভয়ানক ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে
অযাচিত গর্ভাবস্থায় কীভাবে গর্ভপাত করানো হয়?
অযাচিত গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে গর্ভপাত করানোর পদ্ধতির ধরণ নির্ভর করে মহিলাটি তার গর্ভাবস্থার কত দূরে আছেন তার উপর।গর্ভপাত করানোর দুটি পদ্ধতি আছে,ওষুধের দ্বারা গর্ভপাত এবং অস্ত্রপচারের মাধ্যমে গর্ভপাত। প্রাথমিকভাবে ওষুধের মাধ্যমে গর্ভপাত করানো হয় যদি 9 সপ্তাহ বা তার কম সময়ের গর্ভাবস্থা থাকে,যেখানে 9 সপ্তাহের পরে অন্য পদ্ধতিতে ওষুধের মাধ্যমে গর্ভপাত করানো হয়।অস্ত্রপচারের মাধ্যমে গর্ভপাত ভ্যাকিউম অ্যাসপিরেশন (গর্ভাবস্থার 7-15 সপ্তাহের মধ্যে) করানো হয় এবং সার্জিক্যাল ডিলেশন এবং ইভাকুয়েশন (অপসারণ) করানো হয় (গর্ভাবস্থার 15 সপ্তাহে বা তার পরে)। 21 সপ্তাহের পরে গর্ভপাত করানো সাধারণ ব্যাপার নয়।এক্ষেত্রে অস্ত্রপচারের D এবং E এর সঙ্গে ওষুধের দ্বারা গর্ভপাত সংযুক্ত করানো হয়।অন্য কিছু ক্ষেত্রে গর্ভস্থ ভ্রূণের হৃদস্পন্দন থেমে গেলেও বাচ্চাটির জন্ম হয়।
অনিচ্ছাকৃত গর্ভাবস্থা বহন
যদি আপনি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন যে এই অযাচিত গর্ভাবস্থা বহন করবেন এবং সন্তানের জন্ম দেবেন তাহলে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।সন্তানের জন্ম দেওয়া এবং তাকে এই পৃথিবীতে নতুন জীবনের সূচনা করা বেশিরভাগ মহিলার কাছে খুবই কঠিন কাজ বলে অনুভব করেন। যে বিপুল দায়িত্ব আপনার ওপর চাপতে চলেছে তাতে আপনি বিচলিত হয়ে পড়তে পারেন।প্রচন্ড চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পরলে বা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিলে আপনার কোন সুরাহা হবে না। এটা আপনার এবং আপনার শিশুর উপর বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।গর্ভাবস্থার অগ্রগতির সাথে সাথে আপনার হাতে প্রচুর সময় থাকবে অভিভাবকত্বের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করার জন্য। ডাক্তারবাবুর সাথে পরামর্শ করে আপনার গর্ভাবস্থার খুঁটিনাটি গুলো জেনে নিন। আপনার ভয় আর হতাশা নিয়ে আপনার সঙ্গীর সাথে আলোচনা করুন কারণ এই সময়ে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।আপনার অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করুন এবং এই গর্ভসঞ্চার আপনার ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অবস্থার উপর কি প্রভাব ফেলবে ও অর্থনৈতিক লক্ষ্য কিভাবে পূরণ করবেন তা ভেবে রাখুন।
প্রাক প্রসবকালীন চেক আপ
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কিছু কুসংস্কার আপনার অযাচিত গর্ভধারণের প্রাথমিক খামতি হিসাবে বলা যায়।এই সময়ে হবু মায়েদের স্বাস্থ্যের চেক আপ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।সেই জন্য আপনার শিশুর সাথে সাথে আপনার স্বাস্থ্যের অতিরিক্ত যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।এটা সরাসরি আপনার গর্ভধারণের সাথে সম্পর্কযুক্ত।প্রাক প্রসবকালীন চেক আপ এর সাথে সাথে নজর রাখতে হবে সঠিক সামজ্ঞস্যপূর্ণ পুষ্টি গ্রহণ, নানা ধরনের ড্রাগ, তামাক,মদ ইত্যাদি না খাওয়া,নিয়ম মত বিভিন্ন ভিটামিন খাওয়া, এবং প্রতিদিন ব্যায়াম করা ইত্যাদির উপর।আপনি সতর্ক থাকবেন যেন কোনোরকম যৌন–সংক্রামক ব্যাধি আক্রমণ না করে এবং ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, ও স্থূলতা থেকে দূরে থাকতে হবে।
কীভাবে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এড়িয়ে চলবেন?
আমরা প্রত্যকেই অপ্রীতিকর চমকগুলি যা আমাদের স্বভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায় সেটাকে ঘৃণা করি। অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এই তালিকার সবথেকে উপরের দিকে স্থান পাবে তা বলাই বাহুল্য। আপনি যদি এই অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে নিচের সতর্কতাগুলো মেনে চলুন।
- যদি আপনার কৈশরকাল উত্তীর্ণ না হয়ে থাকে তাহলে অন্তঃপ্রবেশকারী সঙ্গম (পেনিট্রেশন সেক্স) এড়িয়ে চলুন যতদিন না যথেষ্ট পরিণত এবং দায়িত্ববান হয়ে উঠছেন।
- যদি আপনি যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হবার পরিকল্পনা করেন তাহলে সহজলভ্য গর্ভনিরোধকের ব্যবস্থা রাখুন।আপনার সঙ্গীকে প্রতিবার সঙ্গমের সময় কনডোম ব্যবহার করতে বলুন,প্রয়োজনে গর্ভনিরোধক বড়ি খান।
- আপনি যদি গর্ভনিরোধক ব্যবহার হয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত না হন তাহলে আপৎকালীণ গর্ভনিরোধক ব্যবহার করুন।
- আপৎকালীন অবস্থায় আপনি মর্নিং–আফটার পিল খেতে পারেন । তবে এটাকে কখনই আপনার অভ্যাসে পরিণত করবেন না যেহেতু এটা আপনার শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
অপ্রত্যাশিত গর্ভাধারণের মোকাবিলা
অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ আপনার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। তার মানে এই নয় যে আপনার যাত্রা শেষ হয়ে গেল। আপনি এর মোকাবিলা করতে পারেন যদি আপনি এর প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সময় দেন।এই ধরনের পরিস্থিতি সামলাবার জন্য কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করা হল।
- আতঙ্কগ্রস্থ হবেন না – মনে রাখবেন এটা জীবনহানিকর মুহুর্ত নয়।এটা একটা আপৎকালীন অবস্থা,যদি আপনি আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন তাহলে বিপদ বাড়বে।
- যুক্তি দিয়ে চিন্তা করুন – অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ দম্পতিদের প্রথমিক ভাবে লজ্জা এবং অপরাধ বোধে ভোগায়।আপনি নিজেকে প্রতারিত মনে করবেন যখন আপনার সঙ্গী তার দায়িত্ব সঠিককভাবে পালন করবেন না।এই সময় আপনাকে যুক্তি দিয়ে ভাবতে হবে এবং সবার প্রথমে অপরাধ বোধ থেকে মুক্ত হতে হবে।
- এটার থেকে শিক্ষা নিন – আপনি যখন এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হবেন তখন নিশ্চিত করবেন যাতে দ্বিতীয়বার এই ধরনের পরিস্থিতি সম্মুখীন হতে না হয়।প্রতি বার সঙ্গম করার আগে সঠিক গর্ভনিরোধক ব্যবহার করবেন আর যে কোনরকম আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
- দায়িত্ব নিন – এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য প্রতারণার খেলা খেলবেন না। দায়িত্ব সহকারে পরবর্তী কাজ গুলো করুন তাহলে দেখবেন যে পরিস্থিতি আপনার নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে।
অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ দুজনকেই সময়সাধ্য বিরক্তিকর আবেগের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যায়।যদি এটাকে পরিণত এবং বিচক্ষণতার সাথে পদক্ষেপ করা হয় তাহলে তা আপনাদের দাম্পত্যের সম্পর্কের ভিতকে আর ও মজবুত করবে।