In this Article
গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার দেহে আভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক– উভয় ভাবেই ব্যাপক পরিবর্তন হতে থাকে।আর অন্তঃসত্ত্বাকালে, যদি আপনার বগলের মধ্যে যন্ত্রণাহীন কোনও একটি লাম্প হতে সনাক্ত করে থাকেন, তবে এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে সেটি আপনাকে চিন্তান্বিত করে তুলবে।এই লাম্পটিকে দেখে অদ্ভুত লাগতে পারে কিন্তু এটিই আবার এমন একটি সমস্যাকে চিহ্নিত করতে পারে যা পরবর্তীতে একটি ক্রমশ সুস্পষ্ট ও প্রকট সমস্যা হয়ে উঠবে।এটি যে আসলে কি তা জানা থাকলে, আপনার স্বস্তিতে শান্ত থাকার পক্ষে তা সহায়তা করতে পারে।
গর্ভাবস্থার সময় কি কারণে বগলের মধ্যে কোনও লাম্প হয়ে থাকে?
গর্ভাবস্থায় আপনার বগলের মধ্যে একটা মটর দানার আকারে ছোট্ট লাম্প হলেও তা আপনাকে ভীষণ মাত্রায় চিন্তান্বিত এবং উদ্বিগ্ন করে তোলে।কিন্তু নিজেকে এভাবে মারাত্মক চিন্তায় ফেলারও কোনও কারণ নেই।গর্ভাবস্থায় আপনার দেহে হয়ে চলা অন্যান্য বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তনগুলির মতই এটিও হল সেগুলির মধ্যে অন্যতম একটি।
এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই লাম্পটিও হল স্তনেরই একটি অংশ।হ্যাঁ, এটি শুনে অদ্ভুত লাগতে পারে, কারণ আমরা এটাই সাধারণত জানি যে, স্তন হল স্বভাবত এমন একটি দেহাংশ যা আমাদের বক্ষাঞ্চলে উপস্থিত থাকে।তবে বাস্তবে, এর আসল অংশটি বগল পর্যন্তও প্রসারিত হতে পারে এবং বেশ সহজভাবেই বিভাজনের বিন্দু পর্যন্তও পৌঁছে যেতে পারে।যখন এটি হয়, রেখাগুলি দৃষ্ট হয় এবং তা হরেক রকম উপত্যকা সদৃশ হয়ে ওঠে আর দুগ্ধ শৈলশিরা বা মিল্ক রিজ হিসেবে অভিহিত হয়।গর্ভাবস্থায় এবং এমনকি আবার সন্তান প্রসবের পরেও বাচ্চাকে স্তন্যদানের পর্যায়েও স্তনের সম্প্রসারণ হতে থাকে।আর এটিও একটি কারণ হয়ে উঠতে পারে স্তনের টিস্যু বা কলাটি বগল অঞ্চল পর্যন্ত প্রসারিত হওয়ার।
স্তনের যে কোনও অংশের মত এগুলিও প্রসারিত হয় এবং এমনকি আবার এর ফলে সেগুলির মধ্যে দুগ্ধ গ্রন্থি গঠন হয় যার ফলে সেগুলি সুস্পষ্ট রূপে বেড়ে ওঠে।আর এর ফলেই আপনি যখন বগল অঞ্চলটিতে চাপ দিয়ে টিপতে থাকেন তখন এই লাম্প আকারের গ্রন্থিগুলি অনুভব করতে পারেন।
এই ধরণের লাম্প টিস্যু বা কলাটি যে ক্যান্সার জনিত নয় তা কীভাবে নিশ্চিত হবেন?
গর্ভাবস্থায় বগলের মধ্যে একটা যন্ত্রণাদায়ক লাম্পের উপস্থিতি বেশ অদ্ভুত একটা ব্যাপার আর এই উদ্ভট টিস্যু বা কলাটি আবার ক্যান্সারের কোনও লক্ষণ কিনা সেটাও আপনাকে চিন্তান্বিত করে তুলবে।পূর্বের উল্লেখ অনুযায়ী আবারও বলে রাখি, এটি কিন্তু স্তনেরই একটি অংশ এবং ক্যান্সার জনিত কিছু নয়।যাইহোক, এই সকল সন্দেহগুলিও দূর করার কিছু উপায় আছে।
স্তনাঞ্চলের বৃদ্ধি এবং বগলের মধ্যে লাম্পগুলিকে গড়ে উঠতে আপনি যে মুহূর্তে লক্ষ্য করবেন, আপনার ডাক্তারবাবু কিম্বা প্রসূতি যত্ন পরিষেবাকারীকে তা অবগত করিয়ে তাঁদের থেকে এটি সম্পর্কে জেনে নিন।তাঁরা ভালভাবে সেই অঞ্চলটিকে পরীক্ষা করবেন এবং নির্ধারণ করবেন যে সেটি অক্ষতিকারক নাকি তার জন্য পুনরায় কোনও আরও চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন আছে।বেশিরভাগ সময়েই, এই লাম্পের মত অনুভূতিটি হয়ে থাকে দুগ্ধ নালিকাগুলির উপস্থিতির কারণে।এগুলি সাধারণত নমনীয় প্রকৃতির হয় এবং নালিকাগুলি প্রসারিত হওয়ার সময় দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।আপনার যদি উভয় পার্শ্বেই নমনীয় লাম্পগুলি গড়ে ওঠে, তবে সেক্ষেত্রে এগুলি সাধারণত ক্যান্সার জনিত হয় না এবং স্তনের প্রসারণের কেবল একটি ফল মাত্র।যাইহোক, তবে এই লাম্প যদি কেবল এক পার্শ্বেই উপস্থিত থাকে আর সেটি বেশ শক্ত এবং দৃঢ়ভাবে এক স্থানেই অবস্থিত হয় এবং তা এদিক–ওদিক আন্দোলিত হওয়ার বা নাড়াতে পারারও কোনওরকম সম্ভাবনা না থাকে, তবে সেক্ষেত্রে সেটি কিন্তু ক্যান্সার জনিত হতে পারে।সুতরাং, এরকম কিছু হলেই তা একজন পেশাদারী চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই হল সবচেয়ে ভাল।
কখন একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে?
যদিও বগলের মধ্যে দুগ্ধনালীগুলির সহ লাম্পগুলি বিকশিত হতে পারে, তবে বেশিরভাগ সময়েই স্তন্যপান করানো এবং শিশুর যত্ন নেওয়ার কাজটি অবিচ্ছিন্নভাবে অবিরত চলে থাকতে পারে।খুব বিরল ক্ষেত্রেই, কোনও একটি স্তনবৃন্ত সেই নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে বিকাশ হতে পারে এবং দুগ্ধ ক্ষরণ শুরু হতে পারে।আর যদি তা নাও হয়, দুগ্ধ উৎপাদনটি এর মধ্যেই হতে পারে, আর যেহেতু এটি বেরোনোর আর কোনও জায়গা থাকে না, গজিয়ে ওঠা এই ল্যাম্পগুলি যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে শুরু করে কিম্বা অনেক সময় তা সংক্রামিতও হয়ে উঠতে পারে।।এই ক্ষেত্রে অবিলম্বে একজন ডাক্তারবাবুর শরণাপন্ন হয়ে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় বগলের মধ্যে নরম কোনও লাম্প বেরিয়ে আসাকে সহজেই উপেক্ষা করতে পারেন এমন কিছু গর্ভবতী মহিলা যারা গর্ভাবস্থার এমন ধরণের নানা অদ্ভুত ঘটনার সাথে স্বভাবত অভ্যস্থ।আবার অন্যদিকে, কিছুজন আবার এই লাম্পগুলি হওয়ার কারণের ব্যাপারে ভয়ার্ত এবং চিন্তান্বিতও হয়ে উঠতে পারেন।সে যাই হোক, এ ব্যাপারে একজন পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে তা আপনাকে এ ধরণের কোনও পরিস্থিতি সময়ের মধ্যে নির্ধারণ করতে সহায়তা করতে পারে এবং সময় মত তা সংশোধনের দ্বারা সঠিক পদক্ষেপ অবলম্বন করার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।