In this Article
ঈশপের গল্পগুচ্ছের অন্তর্গত “নেকড়ে নেকড়ে বলে চেঁচিয়ে ওঠা রাখাল বালক” এর গল্পটি শিশুদের এবং গল্পকথকদের কাছে একটি অন্যতম জনপ্রিয় কল্পকাহিনী।গল্পটির মূল বিষয় এবং নীতিবোধটিকে অটুট রেখে বহু প্রজন্মের দ্বারা এটির পুনর্গঠিত হয়েছে এবং তা বিভিন্ন ভাবে অসংখ্য উপায়ে বার বার বলা হয়ে এসেছে।এখানে নেকড়ে নেকড়ে বলে চেঁচানো রাখাল বালকের গল্পটিকে সহজ ভাষায় বলা হলঃ
বাংলায় নেকড়ে নেকড়ে বলে চেঁচিয়ে ওঠা রাখাল বালকের গল্পটি
একদা এক রাখাল বালক, তার ভেড়ার পালকে প্রতিদিন পাহাড়ের উপর চড়াতে নিয়ে যেত সেখানকার তাজা সবুজ কচি ঘাস খাওয়ানোর জন্য। সেখানে বসে বসে তার সারাদিন কিছুই কাজ করার ছিল না।একদিন তার মাথায় একটি বুদ্ধি এল।সে তার একঘেয়ে্মিকে কাটাতে, “নেকড়ে! নেকড়ে!” বলে চেঁচিয়ে উঠল।।সেই সময় আশেপাশের সকল লোকজনেরা তাদের হাতে লাঠি লক্কড় নিয়ে আতঙ্কে সেই রাখাল বালকটির কাছে ছুটে এলো তার বিপদ হয়েছে ভেবে এবং এসে তারা সেখানে শুধুই রাখাল বালকটি হাসতে দেখা ছাড়া আর কোনও বাঘেরই সন্ধান পেল না!
এর কিছুদিন পর সে আবার “নেকড়ে! নেকড়ে!” বলে চেঁচিয়ে উঠলো এবং গ্রামবাসীরা পুনরায় সেই পাহাড়ের উপরে ছুটে আসল এবং এসে তারা বুঝল যে রাখাল বালকটি কেবল তাদের বোকা বানানো ছাড়া আর কিছুই করে নি। রাখাল বালকটি তখন শুধুই হাসতে লাগলো তার হাসি আর থামে না এই দেখে যে, সে আরও একবার গ্রামবাসীদের বোকা বানাতে সফল হয়েছে।যাইহোক, কিন্তু এইবার গ্রামবাসীরা সকলেই ভীষণ রেগে গেল এবং তাকে বলে গেল যে, এর পরের বার থেকে যদি সে আর কখনও সাহায্যের জন্য চেঁচিয়েও থাকে তারা আর কোনওমতেই আসবে না।
তারপরের দিন যখন রাখাল বালকের ভেড়ার পালটি মাঠে চরে বেড়াচ্ছিল হঠাৎই সে একটি নেকড়েকে সেখানে দেখতে পেল।তখন সে প্রাণপণে চিৎকার করে উঠল “নেকড়ে! নেকড়ে!” বলে– কিন্তু হায় রে! তার ভেড়ার পালকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে সত্যিই কেউই আর এলো না। রাখাল বালকটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে গেল শুধুমাত্র তার অবশিষ্ট কয়েকটি ভেড়াকে নিয়েই। নেকড়েটি তার ভেড়ার পালের থেকে একটি কে ধরে নিয়ে গিয়েছিল এবং কয়েকটি ভয়ে অন্যত্র ছুটে পালিয়ে গিয়েছিল।সেইদিন থেকে রাখাল বালকটি প্রতিজ্ঞা করল যে সে আর কখনো মিথ্যা কথা বলবে না।
নেকড়ে নেকড়ে বলে চেঁচিয়ে ওঠা রাখাল বালকের গল্পটির নীতিকথাটি কি ?
এই ছোট গল্পটি আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে সাধারণ মানুষ একজন মিথ্যাবাদীকে বিশ্বাস করতে নারাজ হন এমনকি যখন সে সত্যি কথা বলে থাকে তখনও।
শিশুদের জন্য রচিত “নেকড়ে নেকড়ে বলে চেঁচিয়ে ওঠা রাখাল বালক” এর গল্পটি হল এমন একটি গল্প যেটি প্রতিটি শিশুর পড়া উচিত এবং তা থেকে এর অন্তর্নিহিত শিক্ষাটিকে প্রত্যেকেরই গ্রহণ করা আবশ্যক।এটি এমনই এক কাহিনী যা প্রতিটি পাঠকের মনে গভীর ছাপ ফেলে দেয়।