প্রসবের পরে ত্বকের যত্ন

প্রসবের পরে ত্বকের যত্ন

পৃথিবীতে নতুন জীবন আনার প্রক্রিয়ায়, একজন মহিলা অনেক মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যান। বিশেষ করে, আপনার চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্য, গর্ভাবস্থার সময় এবং পরে অপরিমেয় পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়। স্বাভাবিকে ফিরে যাওয়া, মাঝে মাঝে একটি অনেক দূরের স্বপ্ন বলে মনে হয়।

কিন্তু ভাল খবর হল যে এই পরিবর্তনগুলির কোনোটিই স্থায়ী নয়। নিজের প্রতি সামান্য যত্ন নিলে, যথা সময়ে মহিলারা তার প্রাক-গর্ভাবস্থার সময়কার মতো দেখতে লাগতে পারেন।

এই নিবন্ধটির লক্ষ্য হল যে, মহিলারা গর্ভাবস্থা পরবর্তী সময়ে ত্বকে যে পরিবর্তনগুলি দেখেন তা তালিকাভুক্ত করা এবং কীভাবে নিজের প্রতি প্রাথমিক যত্ন নিয়ে সেগুলিকে মোকাবিলা করা যায়।

আপনার শিশুর জন্মের পরে আপনার ত্বকে যে পরিবর্তনগুলি দেখেন

একজন মহিলার ত্বক প্রসবের পর অনেক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়। কিছু মহিলার জন্য ত্বকের পরিবর্তনগুলি ভালো ধরণের হলেও, অন্যদের ক্ষেত্রে এটি খুব খুশি হওয়ার মতো নয়। যদিও কিছু মহিলারা এতটায় ভাগ্যবতী হন যে সারাজীবন ধরে প্রসবের সময়কার ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে পারেন, কিন্তু অন্যদের ব্রণ, ছোপ ছোপ দাগ, প্রসারণ চিহ্ন, চোখের নীচের ফোলাভাব এবং কালো গোল দাগ হতে পারে। কোনো যত্ন না নিলে এটি বাড়তে থাকে এবং শিশুর জন্মের পরে বিষণ্ণতার কারণ হতে পারে।

সন্তানের জন্মের পরে নবজাতকের বিশেষ যত্ন নেওয়ার জন্য সমস্ত মনোযোগ কেন্দ্রীভূত হওয়ার কারণে সাধারণত নিজের যত্ন নেওয়ার দিকে মনোযোগ থাকে না। যাইহোক, নিজের জন্য মাত্র 10 মিনিট সময় দিলে তা অলৌকিক কাজ করতে পারে এবং মাকে তার ঔজ্জ্বল্য এবং আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে সহায়তা করে।

প্রসবের পর ত্বকের সাধারণ সমস্যাসমূহ

প্রসবের পর কিছু সাধারণ ত্বকের সমস্যা হল:

প্রসারণ চিহ্ন:

প্রসারণ চিহ্ন

ওজন বৃদ্ধি এবং পরে ওজন হ্রাসের কারণে, মহিলারা প্রসবের পরে তাদের দেহের অনেক অংশে প্রসারণ চিহ্ন দেখেন। এই প্রসারণ চিহ্ন সম্পূর্ণ দূর হবে না, কিন্তু তারা সময়ের সাথে সাথে হালকা হয়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে, তারা গোলাপী, বেগুনী, বা লালচে বাদামী রঙের হবে। অবশেষে, রঙের ছোপ চলে গিয়ে সেগুলি হালকা হয়ে যাবে।

মুখের ত্বকের উপর দাগ:

মাতৃত্বের সাথে যে চাপ আসে তা আপনার মুখের ত্বকের উপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে। বাদামী দাগ তৈরি হওয়া হল সেগুলির মধ্যে একটি।

এই গাঢ় দাগগুলির বেড়ে যাওয়া বন্ধ করার জন্য আপনার ত্বকের প্রতি মৃদু হওয়া প্রয়োজন এবং একটি হালকা ক্লিনজার দিয়ে দিনে দুইবার পরিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ।

মেলাজমা:

কখনও কখনও, গর্ভাবস্থায়, মুখের উপর কালো দাগছোপ তৈরি হয়। এগুলিকে কোলাজমা বা মেলাজমা বলা হয়। শরীরে গর্ভাবস্থা হরমোনের উচ্চ মাত্রার কারণে ত্বকের রঙের গাঢ়ত্বের এই পরিবর্তন ঘটে। গর্ভাবস্থার পরে এই হরমোন ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। কিছু বাদামী ছোপ কম সুস্পষ্ট হয়ে যেতে পারে, অন্যরা থেকে যেতে পারে। এই অবস্থায়, সূর্যরশ্মিতে উন্মুক্ত হওয়া এড়াতে হবে।

গাঢ় গোল দাগ এবং চোখের নীচের ফোলাভাব:

শিশুর জন্মের পরে হরমোনের পরিবর্তন এবং ঘুমের অভাবের ফলে, গাঢ় গোলাকার দাগ এবং চোখের নীচের ফোলাভাব দেখা যায়। আপনার শরীর প্রসব পরবর্তী সময়ে যে ক্লান্তি অনুভব করে তা আপনার চোখ প্রকাশ করে। শিশুকে খাওয়ানোর জন্য বার বার জেগে ওঠার কারণে কালো গোলাকার দাগ দেখা দেয়।

ব্রণ:

গর্ভাবস্থার সময় বা পরে ব্রণ বেরোনো খুব সাধারণ। গর্ভাবস্থার পরে উচ্চ প্রোজেস্টেরনের মাত্রা ব্রণ তৈরি করতে পারে। গর্ভাবস্থায় আপনার ত্বক যদি পরিষ্কার থেকে থাকে, তবে এটি আপনার কাছে বিস্ময়কর হতে পারে।

অতিসংবেদনশীল ত্বক:

আপনাদের অনেকেরই গর্ভাবস্থার পরে সংবেদনশীল ত্বকের অভিজ্ঞতা হতে পারে। যে কোনো কিছুই আপনার ত্বকে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সামান্য সূর্যে উন্মুক্ত হলেই সামান্য চামড়া পুড়ে যেতে পারে। কখনও কখনও, আপনার ত্বক ক্লোরিন এবং ডিটারজেন্টের মতো জিনিসের স্পর্শে জ্বালা করতে পারে।

আগে যেমন বলা হয়েছে, উপরে উল্লিখিত কিছু ত্বকের সমস্যা সময়ের সাথে সাথে চলে যেতে পারে, যদিও কিছু কিছু অবস্থা যেমন ত্বকের এলার্জি, জন্ম দেওয়ার পরেও থাকতে পারে এবং চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

কেন একটি শিশু হওয়ার পরে ত্বকের গঠনের পরিবর্তন হয়েছে

শিশুর জন্মের পরেই ত্বকের অনেক পরিবর্তন হওয়াকে মেনে নেওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনার গর্ভাবস্থায় উজ্জ্বল ত্বক থাকে। কিন্তু গর্ভাবস্থার পরে চাপ, ক্লান্তি এবং সামগ্রিক হরমোন ভারসাম্যহীনতা আসে যা ত্বকের গঠন পরিবর্তন করতে পারে। প্রসবের পরে ব্রণ, প্রসারণ চিহ্ন, রঙিন দাগছোপ এবং ত্বকের বিবর্ণতা হল ত্বকের সবচেয়ে সাধারণ পরিবর্তন যা গর্ভাবস্থার পরে দেখা যায়।

আপনি যদি সামান্য যত্ন নেন এবং সন্তানের জন্মের পরে সঠিক ডায়েট অনুসরণ করেন তবে এ সবই অতীতে পরিণত হতে পারে।

কিভাবে ত্বকের সমস্যা হ্রাস করা যায়

গর্ভধারণের পরেই ঘটা ত্বকের সমস্যাগুলি কয়েকটি সুস্থ জীবনধারার পরামর্শ অনুসরণ করে মোকাবিলা বা হ্রাস করা যেতে পারে। তবে আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে ত্বক সম্পর্কিত সমস্যাগুলি ভোগ করে থাকেন, তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এখানে দ্রুত গর্ভাবস্থা পরবর্তী ত্বকের যত্নের জন্য কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হল।

  • সূর্য থেকে দূরে থাকলে চামড়ার আরও ক্ষতি প্রতিরোধ করতে পারবেন। আপনার যদি সূর্যের মধ্যে বেরোবার প্রয়োজন হয়, তাহলে একটি ভালো সানস্ক্রীন লোশন ব্যবহার করুন অথবা একটি স্কার্ফ দিয়ে নিজেকে আবৃত করুন।
  • প্রচুর পরিমাণে জল পান করলে ত্বক হাইড্রয়েড থাকবে এবং ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসবে। আপনি যদি দিনে 8 গ্লাস জল পান করতে পারেন, তবে এটি হরমোনগুলিকেও নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
  • প্রসব পরবর্তী ত্বকের যত্নের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলির মধ্যে একটি হল পরিষ্কার করা, টানটান করা এবং ময়শ্চারাইজ করা (সিটিএস)। অতিরিক্ত তেল থেকে মুক্তি পেতে আপনার মুখ কয়েক বার ধুয়ে নিন। প্রতিদিন দুইবার সিটিএস অনুসরণ করলে দুর্দান্ত ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।
  • সপ্তাহে তিনবার ত্বকের আঁশগুলি তুলে দিলে ত্বকের গঠন উন্নত করতে এবং দাগগুলি মুছে ফেলতে সাহায্য করতে পারে। অতএব, এটিও গর্ভাবস্থার পরে ত্বকের অবস্থার উন্নতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
  • ঘুমের অনিয়মিত সময় ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। 8 ঘণ্টার সঠিক ঘুম হওয়া শিশুর জন্মের পরে ত্বকের পরিবর্তনগুলিকে মকাবিলা করার জন্য জরুরি। যদি একটানা না হয়, আপনি সময় পেলেই ঘুমিয়ে নিন।
  • পাতাবিহীন সবজিতে থাকা লোহা চামড়ার জন্য খুব ভাল এবং গর্ভাবস্থার পরে চামড়ার সমস্যা কম করতে সাহায্য করতে পারে। এটি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য এবং কোমলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।
  • প্রসারণ চিহ্নগুলি মিলিয়ে যাওয়ার জন্য, ভিটামিন ই এবং কোকো মাখন সমৃদ্ধ তেল প্রয়োগ করা খুব উপযোগী হতে পারে। অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে প্রসারণ চিহ্নগুলি পুরোপুরি অদৃশ্য হবে না তবে তারা হালকা হয়ে যাবে।
  • ভিটামিনের অভাব প্রসবের পরে একটি সাধারণ ঘটনা। ডাক্তারের পরামর্শে বহু-ভিটামিন ট্যাবলেট গ্রহণ করলে ত্বক ও দেহেও প্রচুর পার্থক্য আনতে পারে।
  • স্বাস্থ্যকর এবং সময়মত খাওয়ার অভ্যাস গর্ভাবস্থার পরে নতুন মায়ের ত্বককে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে।
  • আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এবং আপনার দৈনিক জীবনযাত্রায় দ্রুত হাঁটা বা যোগব্যায়ামের মতো মৌলিক ব্যায়ামগুলি অন্তর্ভুক্ত করুন। এটি ত্বককে শ্বাস নিতে সাহায্য করে এবং ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে এনে দেয়।

ত্বকের চিকিৎসা

সমস্যাগুলি যদি অব্যাহত থাকে, তবেই গর্ভাবস্থা পরবর্তী সময়ে ত্বকের চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শের পরই যে কোনো চিকিৎসা শুরু করা উচিত। অন্যান্য উপসর্গগুলির সাথে শুষ্ক ত্বকের মতো সমস্যাগুলি একটি কম-সক্রিয় থাইরয়েডের সূচক হতে পারে। যদি আপনার ত্বকের পরিবর্তনগুলি আপনাকে জ্বালাতন করে এবং উপরের পরামর্শগুলি অনুসরণ করার পরেও উন্নতি না হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়।

আপনার ত্বকের যত্ন নেওয়ার সহজ উপায়

শিশু হওয়ার পর ত্বক কালো হয়ে যাওয়া বা প্রসবের পর ব্রণ বেরোনো একটি অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। আপনি কয়েকটি সহজ পদক্ষেপ নিয়ে আপনার গর্ভকালীন-ঔজ্জ্বল্য ফিরে পেতে পারেন।

ব্রণ

  • একটি ক্লিনজার ব্যবহার করুন এবং আপনার মুখ দিনে দুইবার পরিষ্কার করুন।
  • সকালে এবং রাতের ত্বকের যত্নের জন্য একটি তেল-মুক্ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • সপ্তাহে একবার একটি হালকা স্ক্রাব দিয়ে আপনার মুখ ঘষে পরিষ্কার করুন। আপনি যে স্ক্রাবটি ব্যবহার করবেন সেটির যেন ছোট দানা থাকে। অ্যালো ভেরা এবং ইউক্যালিপটাসের মতো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি ত্বক পণ্যগুলি বেছে নিতে চেষ্টা করুন।

ত্বকের স্বাভাবিক রং

  • আপনার ত্বকের রঙ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, নিয়মিত সানস্ক্রীন ব্যবহার করুন এবং সূর্যের আলোয় সরাসরি উন্মুক্ত হওয়া এড়িয়ে যান।
  • আপনি বাড়ির ভিতরে বা বাইরে থাকুন, সানস্ক্রীন ব্যবহার করা প্রয়োজন। আপনি যদি ভিতরে থাকেন, তবে এসপিএফ 15 যুক্ত একটি সানস্ক্রীন ব্যবহার করুন। আপনি যদি অল্প সময়ের জন্য বাইরে বেরোন, তবে এসপিএফ 30 যুক্ত একটি সানস্ক্রীন লোশন সাহায্য করবে। কিন্তু আপনি যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য বাইরে যান, তবে এসপিএফ 50 যুক্ত একটি সানস্ক্রীন ব্যবহার করা উচিত।
  • সর্বদা এমন একটি ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন যা গাঢ় রঙের ত্বকের জন্য তৈরি হয়।

কালো গোলাকার দাগ এবং চোখের নীচের ফোলাভাব

  • প্রচুর পরিমাণে জল এবং সুষম খাদ্য হল কালো গোলাকার দাগ এবং চোখের নীচের ফোলাভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার চাবিকাঠি।
  • শিশুর সাথে সাথে ছোট ছোট ঘুম নিন। এটিই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় বিশ্রাম হবে।
  • কালো গোলাকার দাগ এবং চোখের নীচের ফোলাভাবের জন্য ঘুমানোর আগে একটি ভাল আন্ডার-আই ক্রিম ব্যবহার করুন।

প্রসারণ চিহ্ন

  • গর্ভাবস্থার পরে প্রসারণ চিহ্ন বেশিরভাগ গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যেই দেখা দেয়। অতএব, আপনার প্রসব হয়ে যাওয়া মাত্রই, প্রসারণ চিহ্ন প্রবণ অঞ্চলে প্রসারণ চিহ্নগুলিতে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ তেল এবং দাগ-প্রতিরোধী ক্রিম ব্যবহার করুন। পেট এবং বুকের চারপাশের ত্বককে প্রসারণ চিহ্ন মুক্ত রাখতে গর্ভধারণের সময় এবং পরে নিয়মিত এটি ব্যবহার করুন।
  • জন্মের পরে, আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এবং প্রভাবিত এলাকায় একটি ভালো প্রসারণ চিহ্ন ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • প্রসবের পরে, স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং ব্যায়াম হল প্রসারণ চিহ্নগুলির দৃশ্যমানতা হ্রাস করার চাবিকাঠি। আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এবং দ্রুত হাঁটা বা মৌলিক যোগব্যায়ামের মতো হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন।

ত্বকের যত্নের জন্য ঘরোয়া প্রতিকার

সন্তানের জন্মের পরে ত্বকের পরিবর্তন মেনে নেওয়া কঠিন হতে পারে। যাইহোক, রাসায়নিকের ব্যবহার আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে। এখানে নতুন মায়েদের জন্য ঘরোয়া প্রতিকার বা ত্বকের যত্ন-আরোগ্যের উপায়গুলির একটি তালিকা দেওয়া হল। এগুলি রাসায়নিক-মুক্ত, নিরাপদ এবং সস্তা।

  • গাঢ় হয়ে যাওয়া ত্বকে প্রতিদিন অ্যালো ভেরা জেল প্রয়োগ করলে ধীরে ধীরে কালো দাগগুলি হালকা হয়ে যায়। প্রয়োগ করুন এবং 15 থেকে 20 মিনিটের জন্য ছেড়ে দিন এবং তারপর উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনার ত্বকে বিস্ময়কর কাজ করবে।
  • শশা এবং টমেটোর রস, যখন দুধের সাথে মিশ্রিত হয় এবং গাঢ় দাগ বা ছোপে প্রয়োগ করা হয়, এটি ভাল ফলাফল দিতে পারে। এটি আপনার ত্বককে ঠাণ্ডা করে এবং এটিকে নরম করে তোলে।
  • কাজুবাদাম এবং মধুর একটি সূক্ষ্ম পেস্ট তৈরি করুন এবং ত্বকে এটি প্রয়োগ করুন। 15 মিনিটের জন্য রাখুন এবং তারপর এটি ধুয়ে ফেলুন।
  • ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ খাদ্য খাওয়া খুব কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়াও, ভিটামিন ই সমৃদ্ধ তেল প্রয়োগ ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  • পেঁপে, মধু এবং অ্যালো শাঁস একটি বাটিতে নিন এবং এটি ভালভাবে মিশ্রিত করে একটি মুখের প্যাক বানান। এটি ছোপযুক্ত ত্বকে প্রয়োগ করুন এবং 30 মিনিটের পরে এটি ধুয়ে ফেলুন। পেঁপে মৃত কোষ ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে এবং রঙিন ছোপ নিরাময় করে।
  • পেঁপে দইয়ের সাথে মেশালে একটি দারুণ মুখের প্যাক করে তোলে। কিছু পেঁপে, মধু, দই এবং লেবুর রস একটি বাটিতে চটকান এবং মুখের প্যাক হিসাবে ব্যবহার করুন। 30 মিনিট পরে এটি উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • আলুর একটি টুকরা ত্বকের উপর ঘষলে বা ত্বকের উপর এটির রস প্রয়োগ করলেও রঙিন ছোপ কমাতে সাহায্য করে।
  • আপনি যদি গাঢ় দাগগুলিতে সপ্তাহে দুবার বা তিনবার পুদিনা পাতার পেস্ট প্রয়োগ করেন তবে আপনার ত্বকে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
  • চন্দনকাঠ বহু শতাব্দী ধরে এবং বহু প্রজন্ম ধরে ত্বকের যত্নের জন্য রঙিন ছোপ এবং গাঢ় দাগ কমাতে ব্যবহৃত হয়েছে। চন্দনকাঠের গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া এবং দুধ একসঙ্গে মিশ্রিত করে মসৃণ পেস্ট বানান। তারপর প্রভাবিত এলাকায় এটি প্রয়োগ করুন, এটি 15 মিনিটের জন্য ছেড়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • অ্যাভোকাডো রস সপ্তাহে একবার প্রয়োগ করলে রঙিন ছোপকে হালকা করতে সহায়তা করতে পারে।
  • কমলালেবুর খোসা পিষে গুঁড়া করে এবং কাঁচা দুধের সাথে মিশিয়ে একটি মুখের প্যাক বানান। ত্বকে এটি প্রয়োগ করুন এবং 15 মিনিটের জন্য এটিকে ছেড়ে রাখুন। তারপর সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • আপনি লেবুর রসে অ্যালার্জিক না হলে, আপনি এটি সরাসরি রঙিন ছোপযুক্ত ত্বকে প্রয়োগ করতে পারেন এবং চোখে পড়ার মতো ফলাফল পেতে পারেন।
  • পেঁপের শাঁস ত্বকে সরাসরি প্রয়োগ করলে দারুণ ফলাফল নিয়ে আসে।
  • আপনি অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জল পান করবেন এবং মৃত কোষগুলি অপসারণ করতে নিয়মিতভাবে আপনার ত্বককে আঁশমুক্ত করবেন।
  • এছাড়াও আপনি স্বাস্থকর খাবার খেতে ভুলবেন না যাতে ত্বকের আরোগ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলি পূরণ হয়।

উপসংহার

উপরে উল্লিখিত ত্বকের যত্নের প্রতিকারগুলি আপনাকে তাৎক্ষণিক ফলাফল দিতে না পারে, তবে সময়ের সাথে সাথে কার্যকর হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই প্রতিকারগুলির সাথে ভালো খাদ্য খেলে এবং প্রচুর বিশ্রাম নিলে, আপনাকে কোনও ঝামেলা ছাড়াই গর্ভাবস্থা পরবর্তী ত্বকের অসুস্থতাগুলি অতিক্রম করতে সহায়তা করবে। মা হিসাবে আপনার নতুন ভূমিকা উপভোগ করুন, কিন্তু নিজেকে ভালবাসতেও ভুলবেন না।