শিশু এবং মায়েদের জন্য স্তন পান করানোর উপকারিতাগুলি

শিশু এবং মায়েদের জন্য স্তন পান করানোর উপকারিতাগুলি

যদিও ফরমূলা দুধ খাওয়ানোর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে এবং এই সংমিশ্রণের গঠনপ্রণালীটির বুকের দুধের সাথে বেশ কাছাকাছি মিল থাকলেও এটি কখনই আসল বা প্রকৃত জিনিসটির সাথে প্রতিস্থাপিত করা যেতে পারে না।স্তন পান করানোর উদ্দেশ্যটি শুধুমাত্র শিশুটির ক্ষুধা নিবৃত্তিই করে না,সেটিকেও ছাড়িয়ে গিয়ে এটি মা এবং সন্তানের মধ্যে একটা দৃঢ় বন্ধন এবং সংযুক্তি স্থাপনেও সহায়তা করে।যে সকল মায়েরা কোনও বৈধ কারণ ছাড়া তাদের সন্তানকে স্তন পান করানোর ধারণাটির প্রতি খুব বেশি উৎসাহী হন না তারা এ সম্পর্কে আরও পড়ার মাধ্যমে এবং কেন ফরমূলা খাওয়ানোর তুলনায় স্তন পান করানো অনেক বেশি ভাল একটি বিকল্প সেটি ভালভাবে বুঝতে পারার মাধ্যমে যে উপকার পাবেন তা মায়েদের জন্য একটি দুর্দান্ত বিষয় হয়ে উঠবে।

কোলোস্ট্রামের(মায়ের বুকের প্রথম হলদেটে দুধ) সুবিধাগুলি

কোলোস্ট্রাম হল গর্ভাবস্থায় মায়ের দেহে প্রস্তুত তার প্রথম হলদেটে বুকের দুধ।যা আবার কিছু বিশেষজ্ঞের দ্বারা “উচ্চ অক্টেন দুধ” হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে,এটি অত্যন্ত গাঢ় এবং কার্বোহাইড্রেট,প্রোটিন এবং অ্যান্টিবডিগুলির দ্বারা সমৃদ্ধ।এটির আয়তন কম হওয়ার কারণে শিশুর জন্য একদম আদর্শ প্রথম খাদ্য হিসেবে বিবেচিত।স্তন পানের মাধ্যমে যখন শিশু প্রথম কোলেস্ট্রাম পান করে,এটি তার প্রথম টিকা গ্রহণেরই সমতুল্য হয় কারণ কোলোস্ট্রাম অ্যান্টিবডি এবং ইমিউনোগ্লোবুলিন দ্বারা পূর্ণ থাকে।এটি আবার একটি প্রাকৃতিক রেচক বা জোলাপ হিসেবেও কাজ করে এবং শিশুকে তার প্রথম মল অপসারণে সহায়তা করে যা দেহ থেকে বিলিরুবিন নির্গমনে সহায়তা করে এবং জন্ডিস প্রতিরোধ করে।

কোলোস্ট্রামে অনাক্রম্যতার গুণকগুলি উচ্চ মাত্রায় কেন্দ্রীভূত থাকার কারণে শিশুকে সংক্রমণগুলির বিরুদ্ধে রক্ষা করে,ফলে এটি একটি প্রাকৃতিক ভ্যাকসিন বা টিকা হিসেবে কাজ করে থাকে।জরায়ুতে থাকাকালীন, প্লাসেন্টা বা অমরা শিশুর সংবহনতন্ত্রকে ইমিউনোগ্লোবুলিন G (IgG) নামে একটি অ্যান্টিবডি সরবরাহ করে যা রোগ-ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই করে। জন্মগ্রহণের পরে কোলোস্ট্রাম শিশুকে ইমিউনোগ্লোবুলিন A (IgA) নামে অপর আরেকটি অ্যান্টিবডি দেয় যা গলা, ফুসফুস এবং অন্ত্রের শ্লেষ্মা ঝিল্লির মতো অঞ্চলে শিশুকে সুরক্ষা দেয়।

নবজাতকের অন্ত্রটি প্রবেশযোগ্য হওয়ার কারণে এটিতে বাহ্যিক পদার্থগুলি গভীরভাবে প্রবেশ করা থেকে শিশুকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে কোলোস্ট্রাম একটি মূখ্য ভূমিকা পালন করে।এটি এই ক্রিয়াটি সম্পন্ন করে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের গহ্বরগুলিকে প্রলেপনের দ্বারা।এছাড়াও কোলোস্ট্রামে আবার লিউকোসাইট নামে প্রতিরক্ষামূলক শ্বেত কোষগুলি থাকে যা জীবাণুগুলির বিরুদ্ধে শিশুকে রক্ষা করে।

ফরমূলার থেকে স্তন দুধ কতটা ভাল?

মায়ের স্তন বা বুকের দুধ হল শিশুর প্রাকৃতিক খাদ্য উৎস।শিশুর প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টিকর উপাদান যেমন কার্বোহাইড্রেট,প্রোটিন,ভিটামিন এবং খনিজতে স্তন দুধ পরিপূর্ণ হয়ে থাকে,এবং এছাড়াও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রয়োজনীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবডিগুলিও এই স্তন দুধেই উপস্থিত থাকে।বুকের দুধে আবার ফ্যাট কম মাত্রায় থাকে এবং ফরমূলা খাওয়ানো শিশুদের বিপরীতে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা কম থাকে।এছাড়াও আবার বুকের দুধ শিশুকে বিভিন্ন স্বাদের জন্য প্রস্তুত করে।মায়ের খাদ্য গ্রহণ বুকের দুধের স্বাদে প্রভাব ফেলার কারণে শিশু খাওয়ার সময় কম অনীহা প্রকাশের মধ্য দিয়ে বড় হতে থাকে।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতাটি হল বুকের দুধ শিশুকে সবচেয়ে বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সরবরাহ করে থাকে।বাচ্চা যখনই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সংক্রমণটি তার মায়ের কাছে যায়,শিশুর এই সংক্রমণগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মায়ের দেহ অ্যান্টিবডিগুলি প্রস্তুত করতে পারে যা তার স্তন দুধের মাধ্যমে শিশুর কাছে সরবরাহ হয়ে থাকে।

ফরমূলার থেকে স্তন দুধ কতটা ভাল

শিশুর স্তন পানের উপকারিতাগুলি

স্তন পান করানো হল শিশুদের খাওয়ানোর সবচেয়ে ভাল প্রাকৃতিক পদ্ধতি এবং শিশুর প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুই সঠিক পরিমাণে থাকার কারণে শিশুদের জন্য বুকের দুধে সবচেয়ে বেশি উপকারিতাও আছে।সেগুলির মধ্যে কিছু সুপরিচিত উপকারিতাগুলি হলঃ

1.পুষ্টির সম্পূর্ণ উৎস

বুকের দুধে সঠিক ভারসাম্যে কার্বোহাইড্রেট,প্রোটিন,ফ্যাট,ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে যা শিশুর জন্য হজম এবং শোষণ করা সহজ।সময়ের সাথে সাথে বেড়ে ওঠা শিশুর পুষ্টির চাহিদা মেটাতেও আবার বুকের দুধ পরিবর্তিত হতে থাকে।

2.অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে

জন্মের ঠিক পর মুহূর্তেই শিশুকে খাওয়ানো মায়ের বুকের দুধ যা কোলোস্ট্রাম নামে পরিচিত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবডিগুলির দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে যা বিভিন্ন রোগ ব্যাধিকে সমূলে উৎপাটন করে।এছাড়াও আবার মায়ের বুকের দুধ বিভিন্ন সংক্রমণ,অ্যালার্জির বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবডিগুলি দ্বারা সমৃদ্ধ হয়,যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।এছাড়াও এটি আবার শিশুদের কানের সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করে যা সাধারণত ফরমূলা দুধ খাওয়ানো শিশুদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়।যেকোনও ফরমূলা দুধ খাওয়ানো শিশুর তুলনায় একটি স্তন পান করানো শিশুর মধ্যে শ্বাস কষ্টের সমস্যা কম হয়ে থাকে।

3.মায়ের সাথে একটা দৃঢ় বন্ধন গড়ে ওঠে

স্তন পান করানো মা এবং সন্তানের মধ্যে বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।এটিঘনিষ্ঠতাএবংআরামকে আরওবাড়িয়েতুলে বাচ্চাকেমায়েরবাহুতেনিরাপদবোধকরানোর দ্বারা তাকে মায়ের আরও কাছাকাছি নিয়ে এসে তাদের মধ্যে একটি অটুট বন্ধন গড়ে তোলে।

4.ডায়রিয়ার প্রকোপ কমায়

বোতল অথবা ফরমূলা খাওয়ানো শিশুদের তুলনায় বুকের দুধ পান করানো বাচ্চাদের মধ্যে ডায়রিয়া সাধারণত কম হয়ে থাকে।বোতলগুলি ময়লা হয়ে দূষিত হয়ে যাওয়ার কারণে সেগুলিতে করে বাচ্চাদের খাওয়ালে তা থেকে তাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।এর বিপরীতে,বুকের দুধ পান করানো অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর এবং এটি সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে।

5.SIDS এর ঝুঁকি হ্রাস করে

গবেষণা অনুযায়ী,বুকের দুধ খাওয়া শিশুদের মধ্যে হঠাৎ শিশু মৃত্যু সিন্ড্রোমের সম্ভাবনা হ্রাস পায়।স্তন পান করা শিশুদের সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা উচ্চ মাত্রায় থাকে যা মারাত্মক হয়ে উঠে SIDS এর সম্ভাবনাকে নির্মূল করতে পারে।

6.মস্তিষ্কের বিকাশ উন্নততর হয়

বেশ কয়েকটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে,স্তন দুধ পান করা বাচ্চারা সাধারণত অন্যদের তুলনায় বুদ্ধিমান হয়ে থাকে এবং তাদের IQ উচ্চ মাত্রায় হয়ে থাকে।ফরমূলা দুধ খাওয়ানো শিশুদের বিপরীতে স্তন পান করা শিশুরা আবার তুলনামূলকভাবে কিছুটা আগেই উন্নয়নমূলক মাইলস্টোনগুলিতে পৌঁছে যায় এবং ভাষা বেছে নিতে পারে ও অনেকটা শীঘ্রই ধাঁধার সমাধান করে ফেলতে পারে।তারা বেড়ে ওঠার সাথে সাথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর সুবিধাগুলিও অবিরত হতে দেখা যায়,যার ফলে তাদের কোনও কিছু শিখনের এবং আচার আচরণের ক্ষেত্রেও সমস্যা কম থাকে।বুকের দুধ পান করা শিশুদের আবার ফরমূলা দুধ খাওয়া শিশুদের তুলনায় জ্ঞানীয় দক্ষতাও বেশি হয়ে থাকে।

7.স্থূলতা এবং ডায়বেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়

বোতলে খাওয়ানো শিশুদের সাধারণত বেশি দুধ খেয়ে ফেলার প্রবণতা থাকে তার ফলে তাদের মধ্যে স্থূলতা 20-30% বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।বুকের দুধ খাওয়ানো বাচ্চাদের বিপরীতে এদের মধ্যে পরবর্তী জীবনে স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ে।বুকের দুধে উপস্থিত সুষম পুষ্টি আবার বাচ্চাদের মধ্যে ডায়বেটিস হওয়ার সম্ভাবনা 35% এরও কম হওয়াকে নিশ্চিত করে।

8.শিশুদের মধ্যে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে

গবেষণায় দেখা যায় যে,15 বছর বয়সের আগে বাচ্চাদের মধ্যে যে সকল শৈশবস্থার ক্যান্সার হয়ে থাকে সেগুলি বুকের দুধ পান করা শিশুদের ক্ষেত্রে হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।অন্যদিকে বোতলের দুধ খাওয়া বাচ্চাদের মধ্যে এই শৈশবস্থাকালীন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা 8 গুণ বেশি থাকে।

9.হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সম্ভবত বুকের দুধ পানকারী শিশুদের মধ্যে কম হয়ে থাকে।যে সকল শিশুরা তাদের জন্মের প্রথম ছয় মাস স্তন পান করে থাকে তাদের জীবনের পরবর্তী পর্যায়েও সম্ভবত হৃদরোগ বিকাশের সম্ভাবনা কম থাকে।

হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে

স্তন পান করানোর ক্ষেত্রে মায়েদের জন্য সুবিধাগুলি

মা এবং সন্তান উভয়ের ক্ষেত্রেই বেশ কয়েকটি সুবিধার জন্য স্তন দুধ পান করানোর উচ্চ মাত্রায় সুপারিশ করা হয়ে থাকে।এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াটি হতে দেওয়া মায়ের দেহের জন্য প্রচুর উপকারী,যেমন-

1.আবেগপ্রবণতার পরিপূর্ণতা এবং বন্ধন

বেশিরভাগ মায়েরাই তাদের সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর ফলে তাদের মধ্যে যে একটা আবেগপূর্ণ বন্ধন আসে তা থেকে তারা আনন্দ এবং সন্তুষ্টিবোধ করেন।বাচ্চাকে স্তন দানের সময় উৎপন্ন হওয়া একটি হরমোন অক্সিটোসিন শিশুর সাথে মায়ের ভালোবাসা এবং সংযুক্তিকরণের একটি অনুভূতি উন্নীত করতে সহায়তা করে।অনুরূপভাবে প্রোল্যাকটিন হরমোনটি মায়ের আবেগ-অনুভূতিগুলিকে বৃদ্ধি করে এবং শিশুর পরিচর্যার প্রয়োজনীয়তাকে তৈরী করে।

2.ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে

গবেষণায় দেখা গেছে যে যে সকল মহিলা ত্যাদের সন্তানদের বুকের দুধ পান করান তাদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়র ঝুঁকি 25% এরও কম থাকে।আর এই ঝুঁকি হ্রাস পাওয়াটা, মহিলাটি তার সমগ্র জীবনে স্তন পান করানোর জন্য ব্যয় করা মোট সময়সীমার অনুপাতে হয়ে থাকে।যার অর্থ হল যে সকল মহিলা স্তন পান করানোর জন্য সর্বাধিক মাসগুলি ব্যয় করেছেন তার মধ্যে স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে কম।

3.প্রসবের পরবর্তী সমস্যাগুলি হ্রাস পায়

বুকের দুধ পান করানো মহিলাদের প্রসব করার পর থেকে দ্রুত এবং সহজে নিরাময় হয়ে উঠতে দেখা যায় কারণ অক্সিটোসিনের মতো হরমোনগুলি জরায়ুটিকে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এবং প্রসবোত্তর রক্তপাত কমাতে সহায়তা করে।আবার স্তন পান করানোর উপকারিতাগুলি প্রসবোত্তর সমস্যাগুলি হ্রাস করার ক্ষেত্রে এবং গর্ভাবস্থায় অর্জিত বর্ধিত ওজন অনায়াসেই হ্রাস করার ক্ষেত্রে প্রসারিত।

4.ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়

স্তন পান করানো ডিম্বস্ফোটনকে বিলম্বিত করার কারণে, এটি ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। গবেষকদের মতে, ডিম্বস্ফোটন ঘন ঘন হওয়ার সময় কোষের পরিবর্তনের ঝুঁকি (যা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তলে) বেশি থাকে।

5.প্রাকৃতিক এবং সুবিধাজনক

স্তন পান করানোর মাধ্যমে বাচ্চাকে সর্বদা তাজা দুধ দেওয়া হয়ে থাকে যা বাচ্চার জন্য নিরাপদ এবং একদম সঠিক তাপমাত্রাতেও থাকে।এক্ষেত্রে দুধ গরম করা,ফোটানো অথবা বোতল জীবণুমুক্ত করার মত ঝামেলা ঝঞ্ঝাটের প্রক্রিয়া নেই,যা দিনের যেকোনও সময়েই করা যেতে পারে,বিশেষ করে রাত্রে যখন আপনাকে বাচ্চার জন্য ফরমূলা প্রস্তুত করার জন্য উঠতেও লাগে না।বুকের দুধ খাওয়ানোর আবার আরেকটি বিশেষ সুবিধা হল আপনি আপনার বাচ্চাকে সাথে নিয়ে সহজেই কোথাও যেতে পারেন যেখানে তার খাদ্য উপকরণগুলি সংগ্রহে রাখার জন্য ব্যাগ বোঝাই করে বইতে হয় না।

6.সাশ্রয়ী

ফরমূলা দুধগুলি খরচ বিহীন নয় এবং ব্র্যান্ডের দামের উপর নির্ভর করে এগুলির অত্যধিক দাম হতে পারে।অন্যদিকে,বুকের দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে একজন মাকে তার বাচ্চাকে খাওয়াতে সমর্থ হওয়ার জন্য প্রতিদিন কেবল 500 ক্যালোরি করে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।বোতলে করে অথবা ফরমূলা খাওয়ানোর ফলে আবার শিশুদের মধ্যে আরও বেশি সংক্রমণ হয়ে থাকে যা মেডিক্যাল বিলের জন্য খরচ বাড়িয়ে তোলে।

7.কর্মরত মহিলাদের জন্য সুবিধাজনক

যে সকল কর্মজীবি মহিলারা তাদের সন্তানকে একটি ডে কেয়ারে রাখেন তারা ফরমূলা নিয়ে ঝামেলার পরিবর্তে বিরতিতে তাদের খাওয়াতে পারবেন।যদি একজন ত্তত্বাবধায়ক পাওয়া গিয়ে থাকে তবে শিশুকে দেওয়ার জন্য স্তন দুধ মজুত করে রাখার ক্ষেত্রে একটা ব্রেস্ট পাম্প ব্যবহার করা যেতে পারে।

8.পরিবেশগতভাবে বন্ধুসুলভ

ফরমূলা দুধের জন্য সেগুলি মজুত রাখার ক্যান এবং পাত্রের প্রয়োজন হয় যেগুলি প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে শক্তি ক্ষয় হয়,আর অবশেষে সেগুলি ফেলে দেওয়া বোতল এবং প্যাকেট আকারে বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন করে জমা হতে থাকে যা পরিবেশের জন্য প্রতিকূলতার সৃষ্টি করে।আর অপরদিকে,স্তন পান সরাসরি করানো হয় এবং তা থেকে পরিবেশ কোনওভাবে দূষিত হয় না।

স্তন পান করানো মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিক থেকেই উপকারী।কোনওরকম চিকিৎসাগত কারণ ছাড়া এটি যদি মাকে বন্ধ না করতে হয় তবে শিশুকে খাওয়ানোর জন্য বুকের দুধই হল সবচেয়ে সেরা পছন্দ।