In this Article
গর্ভাবস্থা হল প্রতিটি মহিলার জীবনের অত্যন্ত সুন্দর একটা পর্যায়, কিন্তু মাঝেমধ্যে এই সুন্দর স্বপ্নটি রূপান্তরিত হয়ে উঠতে পারে দুঃস্বপ্নে!এটা ঘটতে পারে যদি আপনি গর্ভধারণের জন্য কোনও সঠিক পরিকল্পনা না করে থাকেন।আপনি হয়ত আপনার কর্মজীবনের প্রথম দিকে থাকতে পারেন,একজন মা হয়ে ওঠার পক্ষে যথেষ্ট কম বয়সী হতে পারেন,শারীরিক কিছু অসুবিধা থাকতে পারে অথবা অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে যা আপনার গর্ভাবস্থাটিকে প্রতিহত করতে চায়।যদিও এটি অনৈতিক বলে মনে হতে পারে কিন্তু অযাচিত গর্ভধারণ আপনার কাছে হতাশা ছাড়া আর কিছুই আনতে পারে না।
আপনার এই অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ রোধ করার জন্য আপনি ডাক্তারী চিকিৎসা ব্যব্যস্থা অথবা অস্ত্রপচার পদ্ধতির দিকে যেতে পারেন কিন্তু এগুলিতে আপনার স্বস্থ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।যাইহোক,গর্ভপাত করানোর জন্য প্রাকৃতিক উপায়ের দিকে যাওয়া অথবা ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবহার করা শুধুমাত্র কেবল কার্যকরী এবং সুবাধাজনকই নয় আপনি এই সম্পূর্ন গর্ভপাত পদ্ধতিটিকে গোপনতাপূর্ণও রাখতে পারেন।এখানে আমরা আলোচনা করতে চলেছি একটি গর্ভপাত করানোর জন্য কীভাবে বিভিন্ন ঘরোয়া প্রতিকারগুলিকে কার্যকরভাবে অনুসরণ করা যায় সে সম্বন্ধে।
গর্ভপাত করানোর আগে নেওয়া সাবধানতাগুলি
যেকোনও চিকিৎসা অবস্থার জন্য ঘরোয়া প্রতিকারের ব্যাপ্তি সর্বদাই ভাল।যাইহোক, আপনার ভীষণ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত যখন আপনি গর্ভপাতের এই সকল প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করেন।এখানে এমন কিছু বিষয় দেওয়া হল যেগুলি আপনার মনে রাখা উচিত গর্ভপাতের জন্য যেকোনও ঘরোয়া প্রতিকারের ব্যাপ্তি গ্রহণ করার আগে।
- গর্ভধারণ রোধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার এ বিষয়ে চূড়ান্ত নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।যদিও এটি যেকোনও মায়ের জন্য আবেগগতভাবে ক্ষতিকারক হতে পারে তবে আপনি যদি আপনার গর্ভধারণ রোধ করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিশ্চিত হন তবেই এই গর্ভপাত প্রক্রিয়াটি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়।
- গর্ভপাতের যেকোনও ঘরোয়া প্রতিকার পদ্ধতি গ্রহণ করার পূর্বে আপনার সুস্থ থাকার বিষয়টি সুনিশ্চিত করুন।
- যদি আপনি আপনার গর্ভাবস্থার দশ সপ্তাহ অতিক্রম করে ফেলেন তবে সেক্ষেত্রে গর্ভপাতের জন্য কোনও ঘরোয়া প্রতিকার আপনার ব্যবহার করা উচিত নয়।আপনার গর্ভাবস্থার এই বিন্দু অতিক্রম করে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য ঘরোয়া প্রতিকারের ব্যাপ্তি ব্যবহার করা আরও গুরুতর জটিলতার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
- কিছু ঘরোয়া প্রতিকার পদ্ধতিও আবার জটিলতা ঘটাতে পারে।অতএব,এ বিষয়ে সবসময় কোনও অভিজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। গর্ভপাত করানোর বেঠিক পদ্ধতি গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।
- গর্ভপাত ঘটাতে ব্যবহৃত ঘরোয়া প্রতিকারগুলি অসফল হওয়ার ক্ষেত্রে,আপনার তাৎক্ষণিক ডাক্তারি চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন যেহেতু তা না হলে এটি চিকিৎসাগত সমস্যাগুলির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
- যখন গর্ভপাতের জন্য প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহার করেন তখন আপনাকে একটি বা তার বেশি পদ্ধতি প্রয়োগ করার চেষ্টা করতে হতে পারে।এর কারণ হল একটি মহিলার ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি কাজ করতে পারে সেটি অন্যদের ক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে।সেই কারণে একটির অধিক পদ্ধতি চেষ্টা করার জন্য সুপারিশ করা হয়।
একবার আপনি উপরে উল্লিখিত সাবধানতাগুলির প্রতি যত্নশীল হলে গর্ভপাতের জন্য নিম্নলিখিত যেকোনও ঘরোয়া প্রতিকার অনুসরণ করতে আপনি আপনার মনকে তৈরী করতে পারেন।এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি শুধু কেবলমাত্র অযাচিত গর্ভাবস্থা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে একটি নিরাপদ বিকল্পই নয়,এই পদ্ধতিগুলি আবার আর্থিক দিক থেকেও অত্যন্ত কার্যকরও বটে।যদি এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি সঠিক উপায়ে এবং সঠিক সময়ে অনুশীলন করা হয়,আপনি প্রত্যাশিত ফল পেতে পারেন।
প্রাকৃতিক উপায়ে গর্ভপাত করানোর জন্য ঘরোয়া প্রতিকার সমূহ
যদি আপনি বিস্মিত হয়ে থাকেন এই ভেবে যে কোনওরকম জটিল পদ্ধতি ছাড়াই কীভাবে আপনি বাড়িতে গর্ভপাত করাতে পারেন,নিম্নলিখিত ঘরোয়া প্রতিকারগুলি আপনার সমস্যার সমাধানে কার্যকরভাবে প্রমাণিত হবে।
১.গর্ভপাত করানোর জন্য পেঁপে
পেঁপের দুর্দান্ত পুষ্টি মানের জন্য এটি ভীষণভাবে পরিচিত।এই বিস্ময়কর ফলটি ভিটামিন A, ভিটামিন C,আয়রণ,ম্যাগনেসিয়াম,পটাসিয়াম,ক্যারোটিন,রাইবোফ্লাবিন, খাদ্যগত তন্তু এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজে সমৃদ্ধ।এটির অপরিমেয় স্বাস্থ্যকর উপকারিতার জন্য সারা বিশ্ব জুড়ে এটিকে খাওয়া হয়ে থাকে।যাইহোক,একবার আপনি গর্ভবতী হয়ে উঠলে,এটিও সেই সকল খাদ্য উপাদানগুলির মধ্যেই পড়ে যেগুলি থেকে আপনাকে এই সময় দূরে থাকার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়।পাকা এবং কাঁচা–পেঁপের এই উভয় অবস্থাতেই এর মধ্যে থাকে গর্ভপাত ঘটানোর বৈশিষ্ট্যগুলি।কাঁচা পেঁপের মধ্যে দুধের ন্যায় সাদা তরলটির মধ্যে উচ্চ মাত্রায় ল্যাটেক্স থাকে।এর মধ্যে উচ্চ মাত্রায় উপস্থিত থাকে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এবং অক্সিটসিন যেগুলি প্রসব সংকোচন বৃদ্ধিতে কার্যকর।।এগুলির পাশাপাশি পেঁপের মধ্যে উপস্থিত প্যাপাইন এনজাইম বা উৎসেচক দেহে প্রোজেস্টেরণ উৎপাদনকে ব্যাহত করে এবং ওস্ট্রোজেনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে।দেহে প্রজেস্টেরণের কমে যাওয়া স্তরগুলি গর্ভাবস্থার অগ্রগতিতে বাধা দেয় এবং তার ফলে গর্ভপাত ঘটে থাকে।অপ্রত্যাশিত গর্ভাবস্থা রোধ করার অথবা সেটিকে শেষ করার একটি কার্যকর উপায় হল প্রচুর পরিমাণে পেঁপে খাওয়া।
২.গর্ভপাত করানোর জন্য আনারস
আনারস সবচেয়ে ভাল পছন্দের মধ্যে একটি হয়ে থাকে এটির টক–মিষ্টি স্বাদের জন্য।এই মুখরোচক ফলটি প্রচুর স্বাস্থ্যকর উপকারিতায় পরিপূর্ন।আনারস হল ভিটামিন C,আয়রণ,ফোলেট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির সমৃদ্ধ উৎস।অযাচিত গর্ভাবস্থার জন্য এই ফলটি হল সবচেয়ে কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকারগুলির মধ্যে অন্যতম একটি।যদি গর্ভপাত করাতে এই ফলটি প্রয়োগ করার জন্য চেষ্টা করতে চান,তবে আপনাকে হলুদ পাকা আনারসের পরিবর্তে সবুজ কাঁচা আনারস নির্বাচন করার সুপারিশ করা হয়। সবুজ আনারসের মধ্যে উপস্থিত থাকে প্রোটিওলাইটিক এনজাইম বা ব্রোমেলাইন।এই এনজাইম বা উৎসেচকগুলি প্রোটিন ভেঙ্গে ফেলার জন্য দায়ী।গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে,ভ্রূণ মূলত গঠিত হয় প্রোটিনের দ্বারা।এই কারণে গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে(10 সপ্তাহ পর্যন্ত) পর্যাপ্ত পরিমণে আনারস খেলে তা সার্ভিক্সকে নরম করার মাধ্যমে রক্তক্ষরণ ঘটায় এবং এর ফলে গর্ভপাত ঘটে থাকে।আপনার দেহে ব্রোমেলাইন এবং ভিটামিন C এর মাত্রা বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন 2-3 টি করে সবুজ আনারস খাওয়ার সুপারিশ করা হয়,যা প্রাকৃতিক উপায়ে গর্ভস্রাব ঘটাবে।
৩.গর্ভপাত করানোর জন্য গোজি বেরি
গর্ভাবস্থা প্রতিরোধে গোজি বেরি হল একটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার।এই ছোট বেরিগুলি আবার উল্ফবেরি হিসাবেও পরিচিত এবং এগুলি দীর্ঘকাল ধরে চীনা ওষুধে জনপ্রিয়।বিভিন্ন ঔষধের উদ্দেশ্যে গোজি গাছের বিভিন্ন অংশ যেমন পাতা,ফল এবং এমনকি গাছের ছালও ব্যবহার করা হয়।গোজি বেরি বেশীরভাগ সময়েই শুকনো রূপে থাকে এবং এটি প্রোটিন,ওমেগা 3 এবং 6,ভিটামিন A,B-1,B-2,B-6 এবং C তে সমৃদ্ধ।এছাড়াও এই বেরিগুলির মধ্যে আছে উচ্চ মাত্রায় ক্যারটিনয়েডগুলি (লাইকোপেন জেক্সানথিন, লুটিন এবং বিটা ক্যারোটিন)এছাড়াও এটির মধ্যে 18 টি অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে।গোজি বেরি মধ্যস্থ উচ্চ মাত্রার ভিটামিন C কাঙ্ক্ষিত গর্ভপাতের ক্ষেত্রে সেটিকে কার্যকর করে তোলে।প্রাকৃতিক উপায়ে গর্ভপাত করানোর জন্য বেশি পরিমাণে(একদিনে 10 গ্রামের বেশি)গোজি বেরি খাওয়ার সুপারিশ করা হয়ে থাকে।
৪.গর্ভপাত করানোর জন্য পার্সলে
সারা বিশ্বের বেশীরভাগ রান্নায় পার্সলের অবদান রয়েছে,এমন সুগন্ধিযুক্ত স্বাদ সকলেই পছন্দ করেন।এই অসাধারণ ভেষজটি শুধু কেবল গার্নিশ বা খাদ্যপদকে সাজিয়ে তোলার মাধ্যম হিসেবেই বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পছন্দসই নয় এটি আবার উদ্বায়ী তেল এবং ভিটামিন C তেও পরিপূর্ণ।এর মধ্যস্থ প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন C পার্সলেকে করে তুলেছে গর্ভপাত করানোর জন্য অন্যতম এক কার্যকর প্রাকৃতিক প্রতিকার।পার্সলে মধ্যস্থ ভিটামিন C দেহে ওস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং এই বর্ধিত হরমোনগুলির ফলে প্রজনন অঙ্গগুলিতে রক্ত বৃদ্ধি পায়।এগুলি ছাড়াও ভোলাটাইল অয়েলগুলি জরায়ুর প্রাচীরকে পাতলা করে দেয় এবং সারভিক্সকে নরম করে দেয় এবং তার ফল হল জরায়ুর থেকে স্খলন।
৫.গর্ভপাত করানোর জন্য ভিটামিন C
গর্ভপাতের জন্য ঘরোয়া প্রতিকারগুলির প্রসঙ্গ যখন আসে,ভিটামিন C তে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর উপকারিতা আছে এবং এটি আবার বিকিল্পগুলির পরেও অন্যতম সর্বাধিক চাওয়া।ভিটামিন C বহু ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে(আনারস,পেঁপে এবং আরও অন্যান্য ফল)।যাইহোক,আপনি যদি সম্পূরক গ্রহণ করতে চান তবে তা করার আগে আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে আলোচনা করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন C গ্রহণ ক্ষতিকারক প্রমাণিত হতে পারে এবং সেটি কিডনি সমস্যারও কারণ হয়ে উঠতে পারে।ভিটামিন C খাওয়ার ফলে শরীরে ইস্ট্রোজেন বেড়ে যায় এবং প্রোজেস্টেরণের হ্রাস ঘটে।দেহের কম মাত্রার প্রোজেস্টেরণ রক্ত ক্ষরণ ঘটায় এবং এমনকি গর্ভপাতের কারণ হয়ে ওঠে।
৬.গর্ভপাত করানোর জন্য তিল বীজ
তিল বীজগুলি হল প্রোটিন,আয়রণ,অ্যামাইনো অ্যাসিড,ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন(B,C এবং E)তে ভরপুর শক্তি আঁধার।এই আণবীক্ষনিক বা মাইক্রোবিয়াল বীজগুলি জ্বর এবং সর্দি–কাশির চিকিৎসায় ভীষণ ভাবে কার্যকর।এই বীজ গুলী আবার কোষ্ঠকাঠিণ্যকে দূরে ঠেলে রাখতেও অত্যন্ত কার্যকরী।তিল বীজ খাওয়ার কারণে প্রাকৃতিক উপায়ে গর্ভপাত ঘটে থাকে।আপনি কিছু দিনের জন্য অথবা প্রত্যাশিত ফল অর্জন না করা পর্যন্ত এই বীজগুলিকে সারা রাত ধরে জলে ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভোরবেলায় সেগুলি খেতে পারেন।তিল বীজ খাওয়ার কোনও প্রস্তাবিত ডোজ না থাকলেও যেহেতু এই বীজগুলি আপনার স্বাস্থ্যে কোনও বিপত্তি সৃষ্টি করে না,প্রতিদিন এক মুঠো করে খাওয়া যথেষ্ট ভাল হওয়া উচিত।
৭.গর্ভপাত করানোর জন্য কোহশ
গর্ভপাতের জন্য এক অন্যতম কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে কোহশ ভেষজটি ব্যবহৃত হয়।এই ভেষজটি লাল,নীল এবং কালো বিভিন্ন রূপে সহজলভ্য এবং এই সকল ধরন গুলিই তাদের চিকিৎসাগত বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য পরিচিত।মহিলাদের মধ্যে হরমোন ভারসাম্যহীনতা নিয়ন্ত্রণে নীল কোহশ উপকারী এবং এটি মাসিক চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রেও কার্যকর।অনিদ্রা,গরমের আধিক্য,মেজাজের অস্থিরতা এবং বিরক্তি যা মাসিক পর্যায়ে বৃদ্ধি পেতে পারে সেগুলির নিরাময়ে কালো কোহশ সহায়ককারী।যাইহোক,এগুলি ছাড়াও কালো এবং নীল কোহশ যখন একসঙ্গে গ্রহণ করা হয় তখন সেগুলি গর্ভপাত ঘটানোর ক্ষেত্রে ভীষণ ভাবে কার্যকরী হয়।এগুলির মধ্যে উপস্থিত কলোসাপোনিন এবং অক্সিটোসিন সার্ভিক্স এবং জরায়ুর সংকোচনের নরমকরণের ফলে গর্ভপাত প্রক্রিয়াকে প্ররোচিত করে।
৮. গর্ভপাত করানোর জন্য অ্যাকাসিয়া বা বাবলা শুঁটি এবং কলা পাতা
বাবলা শুঁটি এবং কলা পাতা অঙ্কুরগুলি গর্ভপাত ঘটানোর ক্ষেত্রে ভীষণ ভাবে কার্যকরী।আপনি সম পরিমাণে বাবলা বীজ এবং কলা পাতার অঙ্কুর নিয়ে সেগুলিকে শুকানোর পর গুঁড়ো করে নিতে পারেন।ঋতুস্রাব শুরু না হওয়া পর্যন্ত আপনি সেই গুঁড়ার মিশ্রণটিকে চিনি এবং গরম জলের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।যদিও এই প্রক্রিয়াটির পিছনে সঠিক বৈজ্ঞানিক কারণটি প্রতিষ্ঠিত হয়নি,তথাপি এই প্রতিকারটি অযাচিত গর্ভাবস্থা রোধের জন্য কার্যকর হিসাবে পরিচিত।
৯.গর্ভপাত করানোর জন্য ক্যামোমাইল চা
সকল চা প্রিয়দের জন্য ক্যামোমাইল চা একটি আশীর্বাদ স্বরূপ।এই সুগন্ধি চাটি অনিদ্রা,অবসাদ এবং তড়কার চিকিৎসায় উপকারী।যাইহোক,অনেক লোকই না জানতে পারেন যে,ক্যামোমাইল চা আবার প্রাকৃতিক উপায়ে গর্ভাবস্থা প্রতিরোধের দূর্দান্ত উপায়।ক্যামোমাইলে থুজনের উপস্থিতি জরায়ু সংকোচন ঘটায় যে কারণে গর্ভপাত হয়ে থাকে।আপনি যদি গর্ভপাত করানোর জন্য ক্যামোমাইল চা খেতে চান,তবে আপনাকে এই চা খাওয়ার পরিমাণকে বাড়িয়ে দিতে হবে প্রতি দিন 2-3 কাপ পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য।
১০.গর্ভপাতের জন্য সান্ধ্য(ইভিনিং)প্রাইমরোজ অয়েল
ত্বক এবং হাড়ের অসুস্থতার জন্য সান্ধ্য প্রাইমরোজ তেলে আছে প্রচুর স্বাস্থ্যকর উপকারিতা।যাইহোক,যদি আপনি এটিকে পিল বা বড়ি রূপে সেবন করেন অথবা সার্ভিক্সের উপর যথেষ্ট পরিমাণে প্রয়োগ করেন,এটির ফলে গর্ভপাত হতে পারে।
১১.গর্ভপাতের জন্য মুগওয়ার্ট পাতা
মুগওয়ার্ট একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ যা মূলত বহু শতাব্দী ধরে মহিলাদের প্রজননজনিত অসুস্থতার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।এটি ছাড়াও এই উদ্ভিদটি ব্রঙ্কাইটিস,হজমের সমস্যা,পেশী শক্ত হয়ে যাওয়ার মত এবং অন্যান্য আরও বিভিন্ন চিকিৎসাগত অবস্থার চিকিৎসায় ভীষণভাবে কার্যকরী।এই ভেষজটি আবার গর্ভপাতকে প্ররোচিত করতেও কার্যকর। মুগওয়ার্ট ভোলাটাইল অয়েল বা উদ্বায়ী তেল, ফ্ল্যাবনয়েডস, অ্যাবসি্নথিন এবং ট্যানিনে সমৃদ্ধ,যেগুলি জরায়ু উদ্দীপক এবং গর্ভপাতের কারণ হিসেবে পরিচিত।
১২.গর্ভপাতের জন্য কটন রুট বার্ক বা তুলা মূলের ছাল
এই দ্বিবার্ষিক গুল্মটি বহু শতবর্ষ ধরেই গর্ভপাত করানোর বৈশিষ্ট্যের জন্য সুপরিচিত।কটন রুট বার্ক ব্যবহার করা হত প্রজনন সমস্যায়,মাসিকের বাধায় এবং ল্যাবিয়া টিউমারের চিকিৎসায়।তুলা মূলের ছাল হল গর্ভপাত করানোর জন্য একটি কার্যকর প্রাকৃতিক উপায়।যাইহোক এটি অত্যন্ত জরুরি যে,আপনার এমন একটি তুলা গাছের দিকে যাওয়া উচিত যেটি ক্ষতিকারক রাসায়নিক এবং কীটনাশক মুক্ত।এই ভেষজটিকে জলের মধ্যে নিয়ে সেটিকে ফুটিয়ে নিয়ে আপনি এর একটি ক্কাথ বানাতে পারেন।আপনার ঋতুস্রাব শুরু না হওয়া পর্যন্ত আপনি তুলা মূলের ছাল দ্বারা প্রস্তুত চা গ্রহণ করতে পারেন।
১৩.গর্ভপাতের জন্য পেনিরয়াল
অযাচিত গর্ভাবস্থার সাথে মোকাবিলায় পেনিরয়াল একটি কার্যকরী ভেষজ।এই ভেষজটি দুটি রূপে পাওয়া যায়,ইউরোপিয়ান পেনিরয়াল এবং আমেরিকান পেনিরয়াল।এই ভেষজটি ব্যবহারের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবশ্যই অবলম্বন করা উচিত,অবহেলার সাথে পরিচালনায় এটি মারাত্মক পরিণতি এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।আপনি এই ভেষজিটিকে যতটা সম্ভব তাজা এবং শুকনো অবস্থায় নিয়ে সেটিকে জলের মধ্যে ফুটিয়ে চা তৈরী করতে পারেন।পুনরায় রক্ত স্রাব না হওয়া পর্যন্ত কিছুদিনের জন্য আপনি এটিকে একদিনে 4-5 বার পান করতে পারেন।
১৪.গর্ভপাতের জন্য দারুচিনি
দারুচিনি হল সারা বিশ্ব জুড়ে অত্যন্ত প্রিয় এবং জনপ্রিয় একটি মশলা।এই তীব্র সুগন্ধি মশলাটি বিভিন্ন খাদ্য,পানীয়,মিষ্টান্ন এবং এমনকি ওষুধ প্রস্তুতিতেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।যদি গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে এটিকে গ্রহণ করা হয়,এটি জরায়ুর সংকোচন এবং রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে এবং যার ফল হল গর্ভপাত ঘটা।এর মধ্যস্থ উপাদানগুলির জটিলতা গর্ভপাতের ফলাফলের সঠিক কারণটি স্থাপন করা কঠিন করে তোলে।কিন্তু এই মশলাটিকে অনুশীলন করা হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে অপ্রত্যাশিত গর্ভাবস্থা বন্ধ করার ক্ষেত্রে।আপনি দারুচিনিকে এর পাউডার রূপে অথবা এর সম্পূরক রূপে খেতে পারেন।যাইহোক,এই মশলাটিকে খাওয়ার সাথে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় না যেহেতু এটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।
১৫.গর্ভপাতের জন্য আকুপাংচার
আকুপাংচার হল একটি প্রাচীন অনুশীলন যেটি বহু শতাব্দী ধরে প্রচলিত হয়ে আসছে।আকুপাংচার এই নীতির উপর ভিত্তি করে যে,শরীরের শক্তি প্রবাহ ব্যহত হওয়ার ফলে অসুস্থতা দেখা দেয়।এই ব্যাহত শক্তিটিকে আবার শরীরের মধ্যে প্রবাহিত করেই দেহকে বলিষ্ঠ ও সুস্থ করে তোলা হয়।শরীরের এই নির্দিষ্ট অঞ্চল বা দাগগুলিকে উদ্দীপিত করা হয় শক্তি প্রবাহ হওয়ার জন্য।অযাচিত গর্ভাবস্থায় গর্ভপাতের জন্য,আকুপাংচারে আছে এমন কিছু নির্দিষ্ট বিন্দু যা উদ্দীপিত হতে পারে।যখন এই পয়েন্টগুলি উদ্দীপিত হয় তার ফল হল গর্ভস্রাব।এই বিন্দুগুলি হল SP6 এবং L14;যাইহোক,আপনি যদি এই পদ্ধতির দ্বারা আপনার গর্ভাবস্থা বন্ধ করতে চান তবে একজন আকুপাংচার পারদর্শীর সাহায্য নেওয়ার জন্য দৃঢ়ভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৬.গর্ভপাতের জন্য যৌন সঙ্গম
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও,যৌন মিলন করার ফলেও প্রাকৃতিক উপায়ে গর্ভপাত করানো যায়।গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে দিনে বহুবার প্রচন্ড উত্তেজনার সাথে সঙ্গম করলে তা গর্ভপাত ঘটাতে পারে।সুতরাং আপনি যদি আপনার গর্ভাবস্থাকে শেষ করতে চান,আপনি নিয়মিত সঙ্গম অনুশীলন করতে পারেন যেহেতু অত্যাধিক কামউদ্দীপনা প্রাকৃতিক ভাবেই গর্ভপাতের কারণ হয়ে থাকে।
১৭.গর্ভপাতের জন্য গরম জলে স্নান
আপনি অবাক হয়ে যেতে পারেন যে কীভাবে প্রতিদিনের গরম জলের স্নান আপনার অপ্রত্যাশিত গর্ভাবস্থাকে শেষ করে দিতে পারে।এটা ঘটার কারণ হল এই যে,আপনার গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে যখন আপনি আপনার শরীরকে চূড়ান্ত তাপমাত্রায়(102 ডিগ্রী অথবা তারও বাশী) উন্মুক্ত করেন,আপনার ব্যাসাল বডি টেম্পারেচার বেড়ে যায় তখন আপনার দেহ সঙ্কটময় পরিস্থিতে চলে যায়।আপনার শরীর তখন ভ্রূণের উপর মনযোগ না দিয়ে আপনার ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সজাগ কাজ করে।দীর্ঘ সময়ের জন্য,তা প্রায় দু সপ্তাহ পর্যন্ত অথবা আপনার প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এই গরম জলে স্নান করার সুপারিশ করা হয়।
১৮.গর্ভপাতের জন্য মালিশ
ক্লান্ত পেশীগুলিকে শিথিল করার এক দুর্দান্ত উপায় হল মালিশ করা। যাইহোক,শিথিলকরণের এই পদ্ধতিটি গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে কখনই সুপারিশ করা হয় না যেহেতু এটি গর্ভপাত ঘটাতে পারে।কিন্তু যদি আপনি গর্ভপাত করানোর বিবেচনা করে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে মালিশ হল একটা দুর্দান্ত উপায়।আপনি যেকোনও মালিশের তেল নিতে পারেন এবং সেটিকে পেটের চারপাশের অঞ্চলে মালিশ করতে পারেন।মূল আঘাতটা নিম্নাভিমুখী হওয়া উচিত এবং শ্রোণীঅঞ্চলে চাপ প্রয়োগ করা উচিত।এই চাপ এবং আঘাতের ফলে ভ্রূণের অপসারণ ঘটবে।
১৯.গর্ভপাতের জন্য অ্যাসপিরিন গ্রহণ
যদি আপনি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন হল সেই সকল প্রথম শ্রেণীর ওষুধগুলির মধ্যে একটি যেটি আপনাকে গ্রহণ না করার জন্য জন্য বলা হবে।যাইহোক,তবে যদি অযাচিত গর্ভাবস্থা আপনাকে বিরক্ত করে তোলে,সেক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন গ্রহণ আপনাকে সমাধান এনে দিতে পারে।আপনি একটি অ্যাসপিরিন কিছু দিনের জন্য দিনে 5-6 বার নিতে পারেন অথবা গর্ভাবস্থার অবসান করা পর্যন্ত।আপনি অন্যান্য খাদ্য উপকরণেরও সংযোজন করতে পারেন,যেমন ডুমুর,আদা এবং দারুচিনি যেগুলি দেহের তাপমাত্রা উৎপাদনে কার্যকর সুতরাং এগুলি গর্ভপাত ঘটানোর জন্য সহযোগী।তবে গর্ভপাত করাতে অ্যাসপিরিন গ্রহণের জন্য আপনার ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নেওয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে।
২০.গর্ভপাতের জন্য ব্যায়াম
আমাদের শরীর এবং মনকে স্বাস্থ্যকর রাখার সবচেয়ে ভাল উপায় হল ব্যায়াম করা।গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে,আপনাকে শ্রমসাধ্য ব্যায়াম করার বিরুদ্ধে পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।কিন্তু,আপনি যদি আপনার এই অপ্রত্যাশিত গর্ভাবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার আকাঙ্খা করেন, গর্ভপাতের জন্য ব্যায়াম করাই হল আপনার উপায়।উচ্চ প্রবলতাযুক্ত ব্যায়াম যেমন সিট আপ(উঠবোস), ক্রাঞ্চেস(সংকোচন), স্কোয়াট(উবু হয়ে বসা),ছোটা,জগিং অথবা এমনকি ভারোত্তোলন প্রশিক্ষণও করা যেতে পারে আপনার কাঙ্খিত ফলার্জন পর্যন্ত।
দাবী পরিত্যাগীঃ উপরে উল্লিখিত পদ্ধতিগুলি অযাচিত অথবা অপ্রত্যাশিত গর্ভাবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটাতে কার্যকর।কিন্তু এটি দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করা হয় যে,যেকোনও ধরনের জটিলতা এড়িয়ে চলার জন্য,গর্ভপাত ঘটানোর ক্ষেত্রে উপরে বর্ণিত যেকোনও পদ্ধতি অবলম্বনের আগে আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে অবশ্যই আলোচনা করে নেওয়া উচিত।