আপনার ছোট্ট সঙ্গীটির কাছে ঘুম পাড়ানোর গল্পগুলি পড়া হল, তা তার সাথে আপনার বন্ধনটিকে আরও গভীর করে তোলার একটি সুন্দর উপায়।গল্প পাঠ আপনার জুনিয়র চ্যাম্পের মধ্যে পড়ার প্রতি একটি ভালোবাসার জাগরণ করে এবং তা বদ্ধমূল করে তার মনের অন্তরে এবং এছাড়াও এটি তাকে ভাষাটি আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে।যখন আপনি বিছানায় শুয়ে আপনার ছোট্টটিকে অশ্লেষে জড়িয়ে ধরেন এবং তাকে ঘুম পাড়ানির গল্পগুলিকে পড়ে শোনান, সেক্ষেত্রে একটি শান্ত প্রভাব ক্রিয়া করে এবং আপনার ছোট্ট শিশুটিকে শান্ত করে তুলে তাকে ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে। রঙীন চিত্র সমন্বিত বই এবং এমনকি নানা ধরণের শব্দের প্রভাব আছে এমন ধরণের বইগুলি পাঠের জন্য ব্যবহার করাটা একটা দারুণ ধারণা হয়ে উঠতে পারে কারণ এই সকল বইগুলি শিশুদের অত্যন্ত আকর্ষণ করে ও তাদের মনোযোগ সে দিকেই টানে।আপনি যদি আপনার সন্তানকে ঘুম পাড়াবার সময় তার সামনে গল্পের বই পাঠ করেন, সেক্ষেত্রে আমরা জানি যে একজন মা হিসেবে, আপনার এবং আপনার বাচ্চার কাছে ঘুম পাড়ানি গল্প বলার কাজটি ভীষণ একঘেয়ে হয়ে উঠতে পারে যদি আপনি আপনার সোনার কাছে দিনের পর দিন একই গল্প বার বার বলতে বা পড়তে থাকেন।আপনি যদি এগুলির বাইরে গিয়ে আপনার সন্তানের কাছে নতুন কিছু গল্প বর্ণন করতে চান, তবে আপনার জন্য আমাদের কাছে সেরকমই কিছু আছে।আপনার বাচ্চার কৌতুহল উদ্দীপনকারী মনোহর এই গল্পগুলি তার সামনে পড়ুন!
ছোট বাচ্চা এবং খুব ছোট শিশুদের জন্য ঘুম পাড়ানি গল্পগুলি
এখানে ছোট বাচ্চা এবং খুব ছোট শিশুদের জন্য বারটি আদর্শ ঘুম পাড়ানি গল্প দেওয়া হলো।এগুলি হল সর্বাধিক জনপ্রিয় ঘুম পাড়ানি গল্পের বই যা নিশ্চিতভাবে আপনার শিশুর উপর একটি প্রশান্তির প্রভাব ফেলবে এবং তাকে শান্ত করে তুলে ঘুমে আচ্ছন্ন করবে।
1.শুভ রাত্রি চাঁদ
এটি হল অন্যতম একটি সর্বাধিক জনপ্রিয় ঘুম পাড়ানি গল্প যেটি আপনি আপনার ছোট্টটিকে ঘুম পাড়ানোর সময় তার সামনে পড়তে পারেন।নানা রঙ বেরঙের ছবি যুক্ত এই বইটির লেখক হলেন মার্গারেট ওয়াইজ ব্রাউন এবং এই গল্পটি একটি ছোট্ট খরগোশ ঘুমোতে যাওয়ার আগে যা যা কাজ করে সেই রুটিনেরই একটি ধারাবিবরণী যা একটি কাহিনীর মাধ্যমে পরিবেশিত করেছেন লেখক।ছোট্ট খরগোশটি তার চারপাশে থাকা সব কিছুকেই শুভ রাত্রি জানায়।একটি ছন্দবদ্ধ কবিতার আকারে রচিত, শুভ রাত্রি চাঁদ গল্পটিতে বর্ণনা করা হয়েছে একটি ছোট্ট খরগোশ তার চারপাশের বিভিন্ন জীবিত এবং নির্জীব বস্তুগুলিকে যেমন একটি পুতুলের ঘর,একটি লাল রং এর বেলুন, দুটি বিড়াল বাচ্চা, চাঁদ ইত্যাদিকে কীভাবে শুভ রাত্রি জানায়।আপনার শিশুকে ঘুম পাড়ানোর জন্য এটি হল একটি দারুন মিষ্টি গল্প।
2.প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত শুঁয়োপোকা
এরিক ক্যারল বিরোচিত এটি একটি সুপরিচিত গল্পের বই।এই বইটি নানা রঙীন ছবিতে পূর্ণ এবং বইটির কয়েকটি পাতায় ফুটো আছে, যেটি বোঝায় যে শুঁয়োপোকাটি নানা রকম খাবার খেয়ে বেড়াচ্ছে।এই গল্পটি একটি শুঁয়োপোকার জীবন চক্র সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে,এতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে একটি শুঁয়োপোকা কীভাবে ডিম থেকে বেরিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রজাপতিতে পরিণত হয়।এক রবিবার সকালে একটি শুঁয়োপোকা ডিম থেকে বেরিয়ে এসে খাবারের সন্ধান করতে থাকে।সে একটি পাতা খেয়ে ফেলে কিন্তু তাতে সে সন্তুষ্ট হয় না।তার পরের পাঁচ দিন ধরে সে আরো অনেক কিছু খাবার আরও বেশি পরিমাণে খেয়ে চলে।সোমবার শুঁয়োপোকাটি একটি আপেল খেয়ে ছিল, মঙ্গলবার সে খায় দুটি নাশপাতি, বুধবার দিনকে সে তিনটি প্লাম খেয়ে ফেলে, বৃহস্পতিবার চারটি স্ট্রবেরি এবং শুক্রবার দিন পাঁচটি লেবু খেল।শনিবার দিনকে সেই শুঁয়োপোকাটি এক টুকরো চকলেটের কেক, আচার, তার উপর আইসক্রিমের কোণ, সালামি, সুইজ চীজ, ললিপপ, সসেজ এবং তার সাথে চেরি পাই, কাপ কেক এবং তরমুজ সহযোগে এক মহাভোহ সারল। এরপর, সেই শুঁয়োপোকাটির পেটে প্রচন্ড রকম যন্ত্রণা হয় যেহেতু সে মাত্রারিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেছিল।রবিবার দিনকে তার শরীর তুলনামূলক তবু ভালো ছিল যেহেতু সে তার রোজকার সাধারণ খাবার একটি সবুজ পাতা ভোজনেই ফিরে গিয়েছিল।তারপর সে তার চারিদিকে একটি গুটি বানিয়ে সেটির দ্বারা নিজেকে আচ্ছাদিত করল এবং তার মধ্যে সেইভাবে দু সপ্তাহ মত কাটাল।যেই নাকি দুই সপ্তাহ কেটে গেলে আর অমনি সেই শুঁয়োপোকাটিকে সেই গুটির ভিতর থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেল দুটি ঐশ্বর্যশালী ডানার সাথে একটি রঙীন প্রজাপতি রূপে। এই বইটি আপনার শিশুকে 5 পর্যন্ত সংখ্যা গুনতে শেখাতে পারবে, এছাড়াও সে এর থেকে শিখবে নানা রকম খাবারের নাম,এক সপ্তাহের সকল দিনের নাম এবং তার সঙ্গে অবশ্যই একটি প্রজাপতির জীবনচক্র সম্পর্কেও জানবে।
3 ডাক্তার সওজের ঘুমের বই
ডাক্তার সওজের বইটিতে বিভিন্ন জীবের ঘুমের সময়ের রুটিনের বর্ণনা করা হয়েছে। বইটিতে গল্পটি শুরু হয় কাউন্টি অফ কেক নামে একটি জায়গায দিয়ে, যেখানে ভ্যান ভ্লেক নামে একটি ছোট্ট ছারপোকা এত বড় করে হাই তোলে যে, যে কেউ তার গলা পর্যন্ত দেখতে পেয়ে যাবে।এই হাইটি কিছু কিছু পাখির কাছ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল যারা রাত্রে ঘুমানোর জন্য তাদের নিজস্ব বাসা বাঁধছিল।গল্পটিতে নানা অদ্ভুত জীব যেসকল অদ্ভুত উপায়ে ঘুমায় তারও বর্ণনা করা হয়েছে।গল্পটির যত এগোয়, আমরা জানতে পারি যে কিছু কিছু জীব আবার তাদের ঘুমের মধ্যেই অনিচ্ছাকৃতভাবে কি কি করে থাকে, যেমন স্বপ্ন দেখে, নাক ডাকে, ঘুমের মধ্যে বকবক করে এবং এমনকি আবার ঘুমের মধ্যে হেঁটেও বেড়ায়।গল্প বইটির একদম শেষে একটি পাতা আছে যেখানে দেখা যায় যে, ঘুমন্ত জীবগুলি তাদের চোখ বন্ধ করে এবং মুখে একটি হাসি নিয়ে নিজেদের মধ্যে গুতোগুতি করে।
4 শান্ত হও খুধে শিশু
এই বইটি লিখেছেন সিলভিয়া লং এবং এটি প্রাচীন ঘুম পাড়ানি গানের অন্যতম একটি সংস্করণ।আসল ঘুম পাড়ানির গানে ছিল এমন এক কাহিনী যেখানে একটি শিশুকে কথা বলা পাখি এবং একটি হীরের আংটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল যদি সে ঘুমিয়ে পড়ে তবে।আর সিলভিয়া লং যেটি লিখেছিলেন সেটিতে রয়েছে একটি মা খরগোশ তার ছোট্ট ছানাকে কি করে ঘুম পাড়ায় গান গেয়ে তার অসাধারণ বর্ণনা।এই ঘুমপাড়ানির গানটিতে প্রকৃতির অনেক অসাধারণ জিনিস,খঁঞ্জনা পাখি,সন্ধ্যাবেলার আকাশ, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক,একটি আগুনের উল্কা এবং হৈমন্তিক চন্দ্রের বর্ণনা রয়েছে।গল্পটির শেষ করা হয়েছে এমনভাবে যেখানে মা খরগোশটি তার ছোট্ট খরগোশ ছানাকে একটি ঘুমপাড়ানি গান শোনানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
5 শেরীদন কাইন–এর লেখা কুর্মুর করে চিবিয়ে ফেলা শুঁয়োপোকা
এই বইটিতে বেশ উত্তেজনাপূর্ণময় এবং উজ্জ্বল ছবির সম্ভার আছে।গল্পটি হল একটি শুঁয়োপোকার গল্প, যে সবসময় ক্ষুধার্ত থাকে।যখনই অন্যান্য সব উড়ন্ত জীব তার কাছে আসে তখনই শুঁয়োপোকাটি নানা রকম গাছের পাতা চিবোতে ব্যস্ত থাকে। একদিন এক ভোমরা, একটি চড়ুই পাখি এবং একটি প্রজাপতি তার কাছে ঘুরতে আসে।এরপর যখন শুঁয়োপোকাটি তাদের কাছে তাদের মত করে তার উড়তে চাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে তখন তাকে তারা বলে যে সে অত্যন্ত মোটাসোটা ও ভারী এবং তাছাড়াও তার তো ওড়ার জন্য কোনও ডানাও নেই।তখনই শুঁয়োপোকাটি নিজেকে একটি পাতার মধ্যে মুড়ে ফেলে এবং নিজের দেহকে ঘিরে একটি গুটি বানায়।তারপর সে দীর্ঘ সময় ধরে তার ভিতর ঘুমোয়।যখন সে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে প্রসারিত করল, তখন সে দেখল যে তার দুটো ডানা হয়ে গিয়েছিল এবং সে একটি সুন্দর প্রজাপতিতে পরিণত হয়েছে।
6.এরিক করলের লেখা গ্রাউচে লেডি বাগ (খিটখিটে গুবরে পোকা)
এই গল্পটি হল এমন এক বদ মেজাজি রগচটা লেডি বাগকে নিয়ে, যে নিজেকে অন্য সকল জীবকুল থেকে শ্রেষ্ঠ মনে করত এবং কাউকেই কখনও “অনুগ্রহ করে” এবং “ধন্যবাদ” শব্দ দুটি বলতে নারাজ ছিল। সেই লেডি বাগটি প্রতি ঘন্টায় একটি করে নতুন প্রাণীর সাথে দেখা করে এবং তাদের সাথে ঝগড়া শুরু করে। প্রথমে সে একটি বোলতার সঙ্গে দেখা করে তারপর একটি স্ট্যাগ গুবরের সাথে দেখা করে এবং একে একে এরপর আরও অন্যান্য এমন সব প্রাণীর সঙ্গে দেখা করে যারা প্রতিবারই ক্রমশ তার তুলনায় আকার এবং আয়তনে বড় হতে থাকে আর তাদের সাথেই সে ক্রমশ তার ঝগড়া বজায় রেখে চলে।তারপর অবশেষে তার সামনে একটি তিমি এসে উপস্থিত হয় এবং সে তার সঙ্গে লড়াই করতে হাজির হয়।কিন্তু সেই তিমি তাকে এক থাবড়ায় ডাঙ্গায় পাঠিয়ে দেয়।তারপর সেই ক্ষুধার্ত, ক্লান্ত লেডি বাগটি তার অ্যাফিড যুক্ত পাতা দিয়ে তৈরী বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় যেখানে অন্য একটি দয়ালু লেডিবাগ উপস্থিত হয়েছিল এবং তার অ্যাফিডগুলি তার বন্ধুর সঙ্গে ভাগাভাগি করতে রাজি হইয়েছিল নৈশভোজের জন্য।এই বইটি হল শিশুদের জন্য আদর্শ যেহেতু এই বইটির প্রত্যেকটা পাতায় একটি করে ঘড়ির ছবি দেওয়া আছে যাতে সময় দেখা যায়।এইভাবে এই বইটি আপনার শিশুকে ঘড়ি দেখতে শেখাবে,এটি থেকে তারা ছোট এবং বড় জিনিস এর মধ্যে তফাৎ বের করতে পারবে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখবে।এই গল্পটি আপনার শিশুদের পড়ান যদি সে পশু পাখির গল্প শুনতে পছন্দ করে।
7.পেগী রথমন–এর লেখা শুভ রাত্রি গরিলা
এই বইটি রঙীন চিত্রে ভরপুর এবং এর গল্পগুলি পড়লে আমরা জানতে পারি চিড়িয়াখানায় রাখা একটি দুষ্টু গরিলার কথা।বইটিতে খুবই কম শব্দ আছে কিন্তু সেই অসাধারণ রঙিন ছবিগুলি গল্পগুলিকে একটি মজাদার ভাবে সাজিয়ে তুলেছে। চিড়িয়াখানার রক্ষী যখন তার রাত্রের কাজে বাইরে যান তখন তিনি একটি সিংহ একটি জিরাফ এবং একটি গরিলাকে শুভ রাত্রি জানান।কিন্তু সেই পাজি গরিলাটি চিড়িয়াখানার রক্ষ্মীর কাছ থেকে চাবিগুলি নিয়ে নেয় এবং সমস্ত পশুকে তাদের খাঁচা থেকে বের করে দেয়।তাদের মধ্যে যে পশুগুলি ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল সেগুলি হল একটি ইঁদুর, একটি সিংহ একটি জিরাফ, একটি আরমেডিলো এবং একটি হাতি।তারপর সেই পশুগুলি চিড়িয়াখানার রক্ষীর পিছন পিছন যায় এবং অবশেষে তার বাড়ি পৌঁছায়।তখন সেই চিড়িয়াখানার লোকটির স্ত্রী তাদের সকলকে চিড়িয়াখানায় ফেরত নিয়ে গিয়ে বলেন যে তাদেরকে খাঁচার মধ্যেই থাকতে।এটি হলো একটি মজাদার পশু-পাখির গল্প এবং এটি অবশ্যই আপনার ছোট্ট সোনাটিকে হাঁসাবে।
8. আদ্রে পেন রচিত চুম্বনরত হাত
এটা একটা খুব সুন্দর গল্প, যেটি রচিত ছোট্ট রাকুনকে নিয়ে যার নাম ছিল চেস্টার।সে খুব ভীত ছিল তার মার কাছ থেকে দূরে তার মাকে ছেড়ে থাকতে হবে এই ভেবে, কারণ পরের দিনই তাকে তার মা কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করতে পাঠাবেন স্থির করেছিলেন। রাকুনের মা তার ভয় কাটাবার জন্য তাকে বিভিন্ন মজাদার এবং আকর্ষক গল্পগুলি বলেছিলেন যেগুলি সে স্কুলে পেতে পারে।তিনি তাকে বলেছিলেন যে, সে স্কুলে গিয়ে শিখবে কীভাবে বই পড়তে হয়, নতুন নতুন খেলনা নিয়ে খেলতে পারা যায় এবং স্কুলে তার আরো অনেক নতুন বন্ধু হবে সে কথাও তাকে জানিয়েছিলেন।রাকুন তবুও ভয় পাচ্ছিল।তখন তার মা তাকে “চুম্বনরত হাত“এর গোপন রহস্যটি বলেছিলেন।তার মা তার ছোট্ট তালু দুটিতে চুমু দিয়ে বলেছিলেন যখন একাকীত্ব অনুভব করবে বা তার মায়ের অনুপস্থিতি তাকে ব্যথিত করে তুলবে তখন সে যেন তার হাত দুটিকে তার চিবুকের উপর রেখে সামাণ্য হালকা চাপ দেয় এবং মনে করে যেন তার মা তাকে আদর করছে।রাকুন শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারল যে তার মা তাকে সবসময়ই ভালোবাসে সে যেখানেই থাকুক না কেন।এরপর চেস্টার ফিরে আসে যখন তার মা তার হাতে একটি চুম্বন দিয়ে তার ভালোবাসা জানিয়ে দেন, এবং তখন সে মহানন্দে স্কুলে যায়।
9.মার্গারেট ওয়াইস ব্রাউন–এর দা রানওয়ে বান্নি(ছুটন্ত খরগোশ)
এই গল্পটিতে, একটি ছোট্ট খরগোশ তার মাকে বলেছিল যে, সে তার ঘর ছেড়ে বেরোতে চায়।তার মা তখন তাকে এই বলে আশ্বস্ত করল যে সে রবে তার পিছনে পিছনে যাবে এবং তার যখনই কোন জিনিসের প্রয়োজন লাগবে সেটি তাকে তার মা দেবে।এই গল্পটি শুরু হয়েছিল এমনভাবে যেখানে খরগোশ শাবকটি বলেছিল যে সে পালিয়ে যাবে, তখন তার মা তার পিছু পিছু যাবে এই প্রতিশ্রুতি দেয়, ছোট্ট খরগোশটি তখন বলল যে তার মা যদি তার পিছনে যায় তবে সে একটি মাছ হয়ে নদীর স্রোতে সাঁতার কেটে পালিয়ে যাবে।তখন তার মা বলল তবে সে জেলে হবে এবং জাল দিয়ে তার ছানা খরগোশটিকে ধরে নেবে।তখন ছোট্ট খরগোশটি বলল সে একটা বড় পাথর হবে পর্বতের।যার উত্তরে তার মা বলে তাহলে সে হবে পর্বত আরোহী এবং তাকে অতিক্রম করে যাবে।তারপর খরগোশ কল্পনা করে বলল সে বাগানের কাশ ফুল হবে।তার মা বলল তাহলে সে সেই বাগানের মালি হবে।খেলাটা এভাবে চলতে থাকল অবশেষে খরগোশটি বলল যে সে একটি ছোট্ট বালক হবে এবং ঘরের ভিতরে ঢুকে যাবে দৌড়ে।তখন তার মা বলল যে, সে তাহলে তার মা হবে এবং তাকে জাপটে ধরে রাখবে।তখন ছোট্ট খরগোশটি বুঝল সে যেখানে আছে ঠিকই আছে এবং তার মায়ের কাছে ছোট্ট শিশু হয়ে আদরে নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করছে।
10.এক্সেল সেফলার এবং জুলিয়া ডোনাল্ডসন– এর লেখা বাঁদরের গোলক ধাঁধা
এই গল্পটি হল একটি ছোট্ট বাঁদরের যে একটি প্রজাপতির সাহায্যে তার মাকে খুঁজতে চেয়েছিল। প্রজাপতিটিকে বলেছিল যে সে তার মাকে হারিয়ে ফেলেছে তার উত্তরে প্রজাপতিটি তার মাকে খুঁজে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।যখন সে প্রজাপতিকে বলেছিল তার মা প্রজাপতিটির থেকেও আকারে অনেক বড় তখন প্রজাপতি তাকে হাতির কাছে নিয়ে গিয়েছিল।বাদর তখন প্রজাপতিকে বলল হাতিটি তার মা নয় কারণ তার মায়ের শুড়,বড় বড় দাঁত এবং মোটা মোটা পা নেই।সে এটাও জানালো যে তার মায়ের লেজ গাছের আশেপাশে গুটিয়ে রাখে।এই কথা শুনে প্রজাপতিটি তাকে সাপের কাছে নিয়ে গেল। তখন ছোট্ট বাদরটি বলল যে তার মায়ের পা আছে আর তাই সাপটি তার মা নয়।এই কথা শুনে প্রজাপতি তাকে এবার মাকড়সার কাছে নিয়ে গেল।সে বলল মাকড়সা তার মা নয় কারণ তার মা গাছে বাস করে।তখন প্রজাপতি তাকে একটি টিয়া পাখির কাছে নিয়ে গেল।বাদরটি প্রজাপতিকে বলল টিয়া পাখি তার মা নয় কারণ তার মা লাফাতে পারে এবং দুলতে পারে। তখন প্রজাপতি তাকে একটি ব্যাঙের কাছে নিয়ে গেল।গল্পটি এইভাবে এগোতে থাকে।শেষ পর্যন্ত বাদরটি প্রজাপতিকে বলল যে, তার মাকে তার মতোই দেখতে।তখন প্রজাপতিটি বলল যে সে সেটা জানত না যে, সে তার মায়ের মতই দেখতে, বাচ্চারা মায়ের মত দেখতে হয় জানলে সে সেরকমই অনুধাবন করত।যাই হোক শেষ পর্যন্ত প্রজাপতিটি বাঁদরটিকে তার মায়ের কাছে নিয়ে গেল।এই গল্পটি পড়তে খুব মজা লাগবে, আর আমরা নিশ্চিত যে আপনার ছোটটির এই গল্পটা দারুণ পছন্দ হবে।
11. স্যান্ড্রা বয়নটন–এর লেখা স্নুজারসঃ সাতটি ছোট ছোট ঘুম পাড়ানি গল্পের সংকলন ছোট্ট প্রাণবন্ত বাচ্চাদের জন্য
ছোট্ট বাচ্চাদের জন্য এই বইটিতে ঘুম পাড়ানির কিছু গল্পের উল্লেখ আছে। গল্পগুলি ছোট ছোট কবিতার আকারে ছন্দময় শব্দ দ্বারা রচনা করা হয়েছে। বইটির বিভিন্ন গল্পগুলির নাম হল– স্নুজারস, আমি ক্লান্ত নই, একটি বড় হাই, পায়জামা, 6 টি ঘুমন্ত ভেড়া, রাত্রির শব্দ,ঘুম পাড়ানির গান।‘স্নুজারস‘ গল্পটির চরিত্রগুলি হল একটি শূকরছানা একটি হাঁস এবং একটি কুকুর ছানা, যাদের কাহিনী গল্পটিতে বর্ণিত হয়েছে তাদের সারাদিন ধরে নাক ডেকে ঘুমানোর নানা ভঙ্গিমা যেমন লম্বালম্বিভাবে আবার উলটে পালটে গিয়ে এভাবে তাদের মজাদার বক্তব্যগুলি বলা হয়েছে।এই গল্পটা শেষ হয়েছে এইভাবে যখন রাত্রি নামে তখন তারা পায়জামা পড়ে নেয় এবং তাদের মায়েদের জাপটে ধরে থাকে আর চেষ্টা করে সারা রাত্রি জেগে থাকতে।দ্বিতীয় গল্প ‘আমি ক্লান্ত নই‘ হল একটি ছোট্ট ভাল্লুকের গল্প, যে নিজেকে একটি চেয়ারের আড়ালে লুকিয়ে রাখে তার ঘুমোবার সময় এবং তার বাবা–মাকে বোঝায় যে সে ক্লান্ত নয়।তার বাবা–মা বকাবকি করা সত্ত্বেও সে বিছানায় যেতে চায় না।শেষ পর্যন্ত সে তার লুকোবার জায়গা অর্থাৎ চেয়ারের নিচে ঘুমিয়ে পড়ে, তার বাবা–মা সেখান থেকে তাকে বের করে তার বিছানায় শুইয়ে দেয় এবং একটা মিষ্টি স্বপ্ন দেখার আশীর্বাদ প্রদান করে। ‘একটি বড় হাই‘ হল একটি ডাইনোসরের গল্প যার নাম টেরানোডন যে বড় বড় হাই তুলত। ‘পায়জামা‘ গল্পটি হল বিভিন্ন পশু পাখি যেমন মুরগি,শুকর ছানা, জলহস্তী, সিংহ, খরগোশ এবং ইঁদুরগুলি কীভাবে পায়জামা পরতে ভালবাসত তার কাহিনী। ‘ছয়টি ভেড়ার গল্প‘-এ বলা হয়েছে ছয়টি ভেড়া একটির পর একটি কীভাবে নানা কাজ করত যেমন রাতের আকাশের ছবি আঁকত,গান করত অথবা ঘুম পাড়ানি গান গাইত। ‘রাত্রির শব্দ‘ গল্পটিতে নানা পশু যেমন বাঘ, চিতা,কুমির এবং হাতি ঘুমানোর সময় কি ধরনের আওয়াজ করে সেই বিষয়ে।শেষ গল্প ‘ঘুম পাড়ানি গান‘ হল একটি গান যেটি খুব সহজ শব্দ যেমন‘গো টু স্লিপ,মাই জুডল;মাই ফিবলটি ফিটসি ফু‘গুলি দ্বারা রচিত।
12.মেরা বার্গম্যান এর লেখা অলিভার যে কোনওমতেই ঘুমাতে চায় না
এই গল্পটি হল একটি ছোট্ট বালক অলিভারের যে ঘুমোতে যেতে প্রস্তুত নয় এবং সারাক্ষণ সে জেগে থাকতে চায়।তার বাবা–মা গল্প বলে তাকে চুম্বন করে শুভরাত্রি জানায় এবং তাকে বিছানায় শুইয়ে দেয়,কিন্তু সে জেগে থাকে এবং বিছানা থেকে উঠে পড়ে। সে তখন রং করে, ছবি আঁক্ বই পড়ে এবং গান গায়।সে আবার তার রেসিং কার নিয়ে খেলাও করে।তারপর সে কল্পনা করে সে তার রকেটে করে উপরে উঠে দেখবে ছাদটাকে,গাছপালা এবং বাড়িঘর আর তার সাথে গোটা শহরটাকে সারারাত ধরে।সে ভাবতে থাকে তার রকেট চাঁদ, তারা ছাড়িয়ে গিয়ে মঙ্গল গ্রহে ল্যান্ড করবে। সে মঙ্গল গ্রহে একা দাঁড়িয়ে আর মহাশূণ্যের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। হঠাৎ করে সে অনেক দূরে তার বাড়িটিকে দেখতে পায় আর সে বাড়ি ফিরে যেতে চায়। রকেটে আবার সে চেপে বসে আর বাড়ির দিকে যাত্রা শুরু করে। পাহাড়,গাছপালা তারপর বাড়ির ছাদ পার করে সে তার নিজের ঘরে ফিরে আসে।অলিভার ঘরে ফিরে এসে দেখে তার প্রিয় খেলনা গুলো উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাচ্ছে তাকে বিছানায় শুয়ে পড়ার জন্য।অতঃপর অলিভার একটা বড় হাই তোলে এবং শেষ পর্যন্ত ঘুমিয়ে পড়ে তার বিছানায় তার প্রিয় খেলনা গুলোকে সঙ্গী করে।
এরকম কয়েকটি গল্প রাত্রে ঘুম পাড়াবার সময় আপনি আপনার সোনামণিকে পড়ে শোনাতে পারেন।যদি আপনার সন্তানটি ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটু মজা করতে চায় তাহলে আপনি এই গল্পগুলিকে মজাদার এবং রোমাঞ্চকর করে তুলতে পারেন গল্পগুলি পড়ার সময় আপনার বাচনভঙ্গিকে মজাদার করে তুলে এবং তার সাথে সাথে অঙ্গভঙ্গি এবং বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে এগুলিকে আরও প্রাণবন্ত এবং আকর্ষণীয় ও উপভোগ্য করে করে তুলতেও পারেন।রাত্রে শুতে যাওয়ার সময় গল্পগুলি পড়ার মাধ্যমে ঘুমাতে যাওয়ার একটি সুন্দর নিয়ম তৈরী করতে পারেন এবং এটি আপনাদের দুজনকে আপনার সন্তানের আরো কাছে নিয়ে আসতে সাহায্য করবে।