আপনার তিন মাসের শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশ

আপনার তিন মাসের শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশ

এটি বিশ্বাস করা কঠিন নয় কি যে আপনার ছোট্ট শিশুটি ইতিমধ্যেই তিন মাসের হয়ে উঠেছে ? একা হাতেই সে আপনার জীবনটি কে পরিবর্তন করে দিয়েছে, এবং সব নিয়ে যা একটি নতুন অর্থ তৈরি করেছেএইসময় শুধুমাত্র সে দ্রুত গতিতে বেড়েই ও এটি বিশ্বাস করা কঠিন নয় কি যে আপনার আদরের ছোট্ট সোনাটি ইতিমধ্যেই 3 মাসের হয়ে ঠে না প্রতিদিনই সে নতুন নতুন অবাক করানোর মত কান্ড ঘটায়আপনি সম্পূর্ন আঠার মত আটকে থাকবেন আপনার শিশুর প্রতিটি মাইলফলকের উত্তরণের লেখচিত্র দেখে3 মাসের বাচ্চাদের বিকাশ আরো ভালো ভাবে বোঝার বিভিন্ন উপাদান গুলি জানতে নিচের প্রবন্ধটি ভালো করে পড়ুন, যেখানে বিভিন্ন প্যারামিটার গুলি উল্লেখ করা হয়েছে

শিশুর বৃদ্ধি

তার নতুন পৃথিবীতে তিন মাস বয়সে, আপনার শিশুটি লম্বায় কিছুটা বেড়ে যায় এবং যার ফলে তাকে আরো কিছুটা বড়ো লাগেশিশুদের বড়ো মাপের জামাকাপড় কেনাকাটা মায়েদের সবসময় অগ্রাধিকার দেবে যেহেতু তাদের চোখের সামনে প্রতি নিয়ত বেড়ে ওঠা শিশুদের আর জন্মমূহুর্ত কালীন জামাকাপড় গুলি গায়ে মানানসই হয় নাযাইহোক,আমাদের দেশ ভারতে গরমকালে আপনি আপনার শিশুর জন্য কিছু অতিরিক্ত খরচ করতে পারেন সুতির ছোট তোয়ালে এবং নরম কিছু হাতকাটা পাতলা ভিতরে পরার জামা কাপড় কিনে, যেগুলি এই সময়ে আপনার বাচ্চার সঠিক বেশভূষামাথায় রাখবেন এই সময় থেকে আপনার বাচ্চার ওজন এবং উচ্চতা দুইই ক্রমশ বাড়ে তাই চিন্তা করে সেই ধরণেরই জামাকাপড় ব্যবহার করুন যেগুলি পরবর্তীকালেও কিছুদিন ব্যবহার করা যেতে পারে

শিশুর বিকাশ

নীচে কিছু সাপ্তাহিক বিকাশের উল্লেখ করা হল যার মধ্য দিয়ে আপনার শিশুটি অতিবাহিত করে

12 সপ্তাহে শিশুর বিকাশ

আপনার 12 সপ্তাহের শিশুটি আগের থেকে অনেক বেশী সময় ধরে একটানা ঘুমাবে এবং মাঝে এক বা দুবার ঘুম থেকে উঠবে এবং এই প্রক্রিয়াটি ধীরে ধীরে হলেও নিশ্চিতভাবে হবেই রাতের ঘুম নিশ্চিত করার জন্য আপনার বাচ্চাকে দিনের বেলায় অল্প কিছু ঘন্টা ঘুমাতে দিনতার চোখ গুলি আরো বেশী সক্রিয় হবে এবং দৃষ্টিক্ষমতা ও কোন কিছু ভালোভাবে বুঝতে পারার ক্ষমতাও আরো বাড়বে যদি আপনার শিশুর চোখের দৃষ্টি একটু অন্যরকম৷ হয় বা ট্যারা ভাবে তাকায় তবে আপনার ডাক্তার বাবুর পরামর্শ নিন এটি থেকে পরবর্তীকালে দৃষ্টি সংক্রান্ত কোন সমস্যা হতে পারে কিনা তা জেনে নিন।

13 সপ্তাহে শিশুর বিকাশ

এই সময় আপনার শিশুর দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে 20 ফুট দূরের বস্তুও তার চোখে ধরা পড়ে এবং রঙ এর পার্থক্যও সে অনুভব করতে পারে আপনার শিশুকে তাজা ফুল এবং সুগন্ধযুক্ত কিছু ফল দেওয়ার এটি একটি উপযুক্ত সময় সে কোন মজাদার শব্দ কিম্বা গানের দিক অনুধাবন করে সেইদিকেই তার মাথাটি কে ঘোরাতে পারে এই 13 সপ্তাহেই আপনার শিশুটি তার হাত গুলিকে উপরে তুলতে শেখে, তার হাতের কাছের কোন জিনিসকে খপ করে মুঠো করে ধরে নিতে পারে, এমনকি আপনার চুল ও যখন সে 13 সপ্তাহে প্রবেশ করে তখন থেকেই তার হাত, পা,চোখ এর সঞ্চালন ও অন্যান্য ক্রিয়াকলাপ গুলির সঙ্গে তাদের সমন্বয় আরো ভালোভাবে হতে শুরু করে মাঝে মধ্যেই গলা দিয়ে চিৎকার করা খুবই সাধারণ ব্যাপার বয়সের এই ধাপে, আর আপনি প্রায়ই দেখতে পাবেন যে আপনার ছোট্ট সোনা নিজে নিজেই মুখ দিয়ে নানা রকম আওয়াজ করতে থাকে

14 সপ্তাহে আপনার শিশুর বিকাশ

এই সময় আপনার শিশুর পৃথিবী রঙীন গরিমায় পূর্ণ হয়ে ওঠে, যেহেতু সে গাঢ় এবং হালকা রঙের মধ্যে প্রভেদ করতে পারে বিশুদ্ধ এবং বিভিন্ন রঙের বৈচিত্রের গুণে তার কাছে পৃথিবীটা হয়ে দাঁড়ায় সম্পূর্ণ নতুন একটা কিছু ঘরে আপনার উপস্থিতি বুঝে সে আরো বেশী উৎসাহের সাথে সাড়া দিতে থাকে, বিশেষত আপনার গলার আওয়াজ পেলে আরো বেশী চনমন হয়ে ওঠে সে যখন তারই মত অন্য কোন ছোট শিশু কে সে দেখতে পায় তখন সে আরো বেশী করে হাঁসতে থাকে যেন তার প্রিয় গল্পের বইয়ের মতই,আর আয়নার দিকে তাকাতেও ভালবাসে হয়ত সে বুঝতেই পারে না যে এটি তারই প্রতিরূপ, তাই সে তাকিয়েই থাকে কিন্তু সে ওই বাচ্চাটিকে ভালবাসে, যে তার জন্যও হাসি ফিরিয়ে দেয়

15 সপ্তাহে আপনার শিশুর বিকাশ

আপনি আপনার ছোট বাচ্চার উপর এই সময়ে যা যা আশা করেন,15 সপ্তাহ হল সেই বিশেষ মাইলফলক আপনার শিশুর জন্য,যদিও তার এই অবস্থায় আসার জন্য আপনার সাহায্য ও সমর্থনের প্রয়োজন হয় যেহেতু তার ঘাড় ও পেটের পেশীগুলি এই সময় অনেক বেশী শক্তিশালী হয়, সে তার পেটটি কে উল্টে ফেলতে পারে, কিন্তু সেটি ঘটতে আরো কিছু দিন বাকি থাকে আপনার বাচ্চার পেশী গুলি শক্তিশালী করতে তাকে সাহায্য করুন, তার পিছনে বালিশ ধরে তার শরীরের ভার ঠিক রাখতে সাহায্য করুন অথবা স্ট্রলারে তার ঘাঁড়টিকে সামান্য উপরের দিক করে তুলে দিন রাতের বেলাতেও কিছু সময় কাঁদতে পারে, যখন তারা দিনের মতই সেই কাজগুলি ও আরো নতুন কিছু করার চেষ্টা করতে থাকে এটি সবথেকে ভাল হয় আপনি যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার শিশুটি কে তার পেটের উপর ভর দিতে শেখান, যাতে সে সেটিকে ঠিকমত ব্যবহার করতে পারে

শিশুর স্বাস্থ্য

আমরা বড়োরা যখনই শরীরে কোন অসুবিধা বোধ করি কিম্বা রোগে আক্রান্ত হই সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করি সেই অসুবিধা গুলি দূর করার জন্য, যেটি 3 মাসের শিশুর ক্ষেত্রে পুরোপুরি অসম্ভব ও অবাস্তব যাইহোক তারা অন্যভাবে সেগুলি জানান দেয়—কান্নাকাটি করে, সবসময় ধরে অন্যায্য ভাবে কাঁদতেই থাকে যদি সেই সময় তাদের মধ্যে দুর্বলতা দেখা যায়,তাদের নড়াচড়া কমে যায় সাথে সাথে তাদের কোন শিশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান

শিশুর মাইলফলক – 3 মাস বয়সে

আপনার শিশুর বিকাশ সাধারণত শারীরিক, ঞ্জানীয় এবং মানসিক এই তিন ক্ষেত্রে আবর্তিত হয় এই মাইলফলকগুলি মূলত নির্দেশ করে শিশুর বৃদ্ধি এবং সেগুলি পরিমাপে সাহায্য করে

  • শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিকাশ – শিশু তার মাথাটি কে 45 ° কোণে উপরে তুলতে সমর্থ হবে এবং তার ঘাড়ের পেশীর শক্তি বৃদ্ধির ফলে সে তার উদরের উপর ভর দিয়ে মাথাটিকে কিছুটা উপরে তুলতেও সক্ষম হবে
  • শব্দে প্রতিক্রিয়া করে আপনার শিশু কোন শব্দ শুনে তার উৎপত্তি স্থান খোঁজার জন্য সে দিকে তার মাথা ঘোরবে, এর থেকে বোঝা যায় যে, আপনার শিশুর শ্রবণ ক্ষমতার ক্রমশ বিকাশ ঘটছে পরিবারের সদস্যদের কণ্ঠ্যস্বর কিম্বা আপনার গলার আওয়াজ অথবা ফোনের রিং টোন শুনলে সে বেশী মাত্রায় প্রতিক্রিয়া দেখাবে
  • কণ্ঠ্যযোগাযোগবাড়বে – এই পর্বে এসে দেখবেন আপনার শিশু যা কিছুই শোনে তার প্রত্যুত্তর দেওয়ার চেষ্টায় মুখে নানা রকম আওয়াজ করতে থাকবে যদিও তার মুখের এই বিভিন্ন আওয়াজ করা ও প্রতিক্রিয়াগুলি প্রকৃত উত্তরের অনুরূপ হয়না, তবুও এই প্রতিক্রিয়া গুলি আপনার শিশুর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক

আচার আচরণ

এই ছোট্ট মানুষ টিকে ঘিরে আপনার জীবনে নিশ্চিত একগুচ্ছ আনন্দ এসে হাজির হবে তার তিন মাস বয়সেই এবং বাড়িতে তার উপস্থিতির জানান দেবে তার মিষ্টি গলার তীক্ষ্ণ আওয়াজ ও কলকাকুলি তার গলার আওয়াজের মিষ্টতায় মেতে উঠবে পুরো পরিবার এবং সকলেই ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে পড়বে যেহেতু সে চেষ্টা করে নতুন নতুন কণ্ঠ্য দক্ষতা (কখনই জরুরী নয় সেগুলি ভীষণ শ্রুতি মধুর হতেই হবে) অর্জন করার আপনার শিশু সামান্য ভয় পেয়ে যেতে পারে নিজের কণ্ঠ্য স্বরেই তাই তার কণ্ঠ্য স্বর‍ যে ঠিকই আছে এটুকু তাকে নিশ্চিত করানোর জন্য আপনার ভাল প্রতিক্রিয়া টি ভীষণ জরুরী

3 মাসের শিশুর ক্রিয়াকলাপ

যদি আপনি জানতে চান যে আপনার শিশুর বৃদ্ধির সময় সে কি কি নতুন করতে শেখে তবে নিচের ধারণাগুলি দেখে নিন যা আপনার শিশুর সাথে আপনার সেরা সময়টি কাটাতে সাহায্য করবে

  • খেলনাদিতেহবেআপনার শিশুটিকে পিঠের দিক করে বা উদরের উপর ভর দিয়ে রাখুন আর তার থেকে দূরে তার জন্য আনা খেলনাটি ধরে রাখুন সেই খেলনা গুলি বিভিন্ন আকারের ও বিভিন্ন ধরণের হতে হবে যাতে সেগুলি আপনার শিশুটি সহজেই খপ করে ধরে ফেলতে পারে ও মুঠো করে নিতে পারে মাথায় রাখবেন আপনার বাচ্চা কিন্তু সেগুলি সহজেই মুখে পুরে ফেলতে পারে,তাই সেই অনুযায়ী তার জন্য খেলনা নির্বাচন করবেন
  • মাথাটি কে ধরে রাখার অনুশীলন করানআপনার শিশুটিকে আপনার কোলে এমনভাবে নিন যাতে সে আপনার দিকে মুখ করে থাকে, যখন প্রয়োজন হবে তখন তার পিঠের দিকে বা ঘাড়ের দিকে কিছুটা সাপোর্ট দিন, মুখে নানা রকম আওয়াজ, গরগর শব্দ করে কিম্বা তার নাম ধরে ডেকে আপনার দিকে তার মনোযোগ আকর্ষন করান যাতে সে আপনার দিকে তাকায়
  • পেটের উপর ভর দিয়ে কিছুটা উঠতে শেখানআপনার শিশুকে তার পেটের দিকে উঠতে সাহায্য করুন,এর জন্য কিছু উজ্জ্বল রঙের কিছু বস্তু বা খেলনা ঠিক তার সামনের দিকে রাখুনসেগুলিকে ধরার জন্য তাকে উৎসাহ দিন আপনি তার ঠিক সোজাসুজি শুয়ে থাকতে পারেন, যাতে সে তার হাত গুলিকে ব্যবহার করে আপনাকে দেখার চেষ্টা করে এ রকম আরো অনেক কিছুর দ্বারা আপনি তার শরীরের উপরের ভাগটি ক্রমশ শক্তিশালী করে তুলতে পারেন আর সেই সাথে আপনাদের দুজনের বন্ধনটিও আরো অটুট হয়ে ওঠে
  • খেলনা অনুসরণআপনার বাচ্চাকে মেঝেতে রাখুন আর তার সামনে একটি বল গড়িয়ে দিন বা একটি খেলনা গাড়ি চালিয়ে দিন এটি তাকে উৎসাহ দেবে সেইগুলিকে বা তাদের গতিপথকে অনুসরণ করতেযদি প্রাথমিক ভাবে সেগুলির উপর উৎসাহ প্রকাশ না করে তবে তার মনোযোগ আকর্ষণ করতে তার সামনে হাততালি দিন বা কিছু আওয়াজ করুন
  • শিশুর নাম ব্যবহার করুনযতটা সম্ভব তাকে তার নাম ধরে ডাকার চেষ্টা করুন যেহেতু এটিই হল প্রথম শব্দ যার দ্বারা সে যোগাযোগ করতে পারে এটি ব্যবহার করুন যখন গান গাইবেন, তাকে ডাকবেন এবং তার সাথে কথোপকথন করবেন যখন তার জন্য গান গাইবেন সেই গানের প্রতি আপনার শিশুটির আগ্রহ বজায় রাখাবার জন্য আপনার গলার কণ্ঠ্যস্বরটিকে যথাসম্ভব তীক্ষ্ণ করার চেষ্টা করুন

3 মাসের শিশুর যত্ন

জীবনের এই পর্বে আপনার শিশুকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে নিচের পরামর্শগুলি অনুসরণ করুন।

  • স্তন্যদুগ্ধ পান করানো অবশ্যই জরুরিঃ শিশুর ডায়েটে মাতৃ স্তন্য দুগ্ধ অপরিহার্যতাই আপনার তিন মাসের শিশুটিকে নিশ্চিতভাবে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে তাকে নিয়মিত স্তন্যদুগ্ধ পান করান।তাকে খাওয়ানোর একটি নির্দিষ্ট সময় তালিকা তৈরী করুন।যেকোন সলিড খাবার,গরুর দুধ বা জুস খাওয়ানো এড়িয়ে চলুন,যেহেতু আপনার বুকের দুধই হল আপনার ছোট্ট সোনার জন্য সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবার।
  • ঘুম ভীষণ জরুরীঃ আপনার শিশুটি একটানা 4-5 ঘুমাবেসে যদি নিজে থেকে না ওঠে তাকে জোর করে টেনে তুলবেন না।সে রাত্রে ঘুমের মধ্যে এক দুবার উঠতে পারে তবে আবার সে নিজে নিজেই ঘুমিয়ে পড়বে, অথবা পুনরায় ঘুমের জন্য তাকে খাওয়াতে হবে।
  • তার সাথে ভালভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবেঃ আপনার তিন মাসের শিশু এই সময়ে যে কোনোরকম শব্দ এবং ভঙ্গীমার সাড়া দেওয়ার প্রবণতা খুব বেশী মাত্রায় থাকে এবং ভীষন আবেগপ্রবণও হয়। এই সময় আপনি আপনার বাচ্চার সাথে পিকবু খেলাটি খেলতে পারেন (এটি সব বাচ্চাই ভীষণ ভালবাসে),এমন কিছু ভঙ্গীমা করুন যাতে আপনার শিশু হাঁসে এবং তার সাথে হাঁসি মুখে কথা বলার চেষ্টা করুন।তাকে উৎসাহিত করার জন্য তার কাছে কিছু বল বা সফট টয়েস দিতে পারেন যাতে সেগুলি সে সহজেই মুঠো কয়রে ধরতে পারে।
  • ভাল মত আগাম সুরক্ষাব্যবস্থা করতে হবেঃ আপনার বাচ্চার সুরক্ষার জন্য আপনাকে এখন থেকে একটু বেশি যত্নশীল হতে হবে।এই সময় থেকেই তার নড়াচড়া ও নানারকম অংগভঙ্গী করার ক্ষমতা ক্রমশই বাড়তে থাকেসে সবকিছুই তার মুখের ভিতরে ঢোকাতে চায়,যেটি ভীষণ ভয়ের ব্যাপার।আপনার বাচ্চার বিছানাটি খোলা জানলা ও ওষুধের থেকে দূরে রাখুন এবং এটি মাথায় রাখবেন, যেকোন ছোটো জিনিসই যেন তার নাগালের বাইরে থাকে।
  • তার বিকাশের পরিবর্তনগুলি সমর্থন করুনঃ তিন মাস বয়সে শিশুর বিকাশের অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয় যেমন তারা দুলতে শেখে,চিবোতে শেখে,কন কিছু চুষতে শেখে।এই বয়সে শিশুরা যেহেতু সবকিছু চিবোবার চেষ্টা করে তাই এই সময় থেকেই তাদের জন্য টিথার ব্যবহার করা ভীষণ ভালো, যেটি তাদের উপর একটা দারুণ প্রভাব ফেলে কিছু সময়ের জন্য তাদের বাড়ির বাইরে পার্কে নিয়ে যান তাদের চারপাশের পরিবেশের স্বাদ দেওয়ার জন্য

খাওয়ানো

তিন মাসের মধ্যেই আপনি আপনার ও আপনার শিশুর মধ্যে খাওয়ানোর একটি সুন্দর রূটিন তৈরী করে ফেলেন নাটকীয়ভাবেই আপনার শিশুটির খাওয়ার ধরণের উন্নতি হতে থাকে এবং আপনিও সক্ষম হন ধৈর্যের মাত্রা অস্বাভাবিক বাড়িয়ে তুলতে একজন মা হিসেবে আপনি আপনার শিশুর ক্ষিধে পাওয়ার কান্না এবং বিরক্ত হয়ে বা অন্য কোন কারণের জন্য কান্নার মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন আপনার শিশুর ঘুমের পরিমাণ এই সময়ে বেড়ে যাওয়ার ফলে আপনিও কিছুটা স্বস্তি পান, যদি আপনি বুকের দুধ খাওয়ান তাকে যদি আপনার শিশুটি বোতলের দুধ খায় তবে আশা করা যায় যে ঘুমের সময়টা আর সামান্য কিছু বাড়ানো যেতে পারে

ঘুমানো

সাধারণত আপনার তিন মাসের বাচ্চা দিনে 14-15 ঘণ্টা ঘুমোবে, যেটি দিনে ও রাতে ঘুমের মধ্যে ভাগ করা থাকবে এই সময় থেকে রাত্রে তুলে খাওয়ানো যতটা সম্ভব কমতে থাকে, আশা করা যায় আপনার শিশুটি একটানা 4-5 ঘন্টা ঘুমাবে এটি হয় কারণ এই সময়ে আপনার শিশুর নার্ভ সিস্টেমটি অনেকটা পরিণত হয়, যার ফলে তার পেটে একবারে অনেকটা পরিমাণে দুধ বা শিশু খাদ্য ধরে যাইহোক তাই বলে এটা আশা করবেন না যে, সে এই রকম ভাবেই সারারাত একটানা ঘুমিয়ে কাটাবে, আপনাকে অবস্থা বুঝে তাকে 1-2 বার ঘুম থেকে তুলে খাওয়াতে হবে

পিতামাতাদের জন্য পরামর্শ

পেরেন্টিং হল বেশিরভাগ হাতে কলমে কাজ করার অভিজ্ঞতা, কিছুটা সহযোগীতা অভিজ্ঞ ভাল বন্ধুদের থেকে বা আত্মীয়দের থেকে পাওয়া যায়। এই খানে কয়েকটা পরামর্শ রইল যাতে আপনার জীবনের এই পর্যায় অতিক্রম করতে সুবিধা হয়।

  • যাই উপদেশ আপনি শুনে থাকুন না কেন শক্ত খাবার এই সময় দেবেন না। আপনার বাচ্চার 4 থেকে 6 মাস বয়স হলেই তা দিতে শুরু করবেন। এই সময় পর্যন্ত বুকের দুধ হল আদর্শ খাবার। সে সব ধরনের পুষ্টি এর থেকেই পেয়ে যাবে।
  • একটা রুটিন তৈরী করুন যাতে আপনার শিশুর খাবার শোবার এবং খেলা সময় মেনে চলে।এটা নিশ্চিত করুন যে আপনার সোনামণি নির্দিষ্ট সময় মেনে কাজ গুলো করছে এবং রাতে কোন অসুবিধা ছাড়াই ঘুমাচ্ছে।রাত 7 টা থেকে 9 টার মধ্যে ঘুমতে যাওয়াই হল আদর্শ।এটা তাকে রাতে দীর্ঘ সময় একটানা ঘুমাতে উৎসাহ দেবে।
  • শিশুটির যাবতীয় চেকআপ করান এবং পরবর্তি মাসের কর্মসূচি তৈরী কয়রে ফেলুন।
  • পিতামাতারা প্রায়শই অনিশ্চয়তায় ভোগেন যে তিন মাস বয়সি শিশুর আদর্শ ওজনের ব্যাপারে। এই ব্যাপারে আপনার শিশুর ডাক্তারবাবু কথাই শেষ কথা। যদি ছেলে হয় তাহলে তবে তার ওজন 6 থেকে 6.5 কেজি আর মেয়ে হলে 5.5 থেকে 5.8 কেজি হওয়া স্বাভাবিক।

এটা বুঝতে হবে প্রতিটি শিশুর বৃদ্ধির গতি ভিন্ন ভিন্ন। ফলে মাইল ফলক গুলো আগে বা পরে আসতে পারে। আপনার শিশুর বৃদ্ধির বিষয়ে আপনার উদ্বেগ যুক্তিযুক্ত কিন্তু এটা থেকে সহজেই চিন্তা মুক্ত হন। আপনি আপনার সন্তানের বিকাশের ওপর নজর রাখুন আর যদি কোন অস্বাভাবিক কিছু দেখেন তাহলে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন, এটাই হল সামনের দিকে এগোনোর সঠিক উপায়।