In this Article
জন্মের পর শিশুদের চার থেকে সাত মাসের মধ্যে দাঁত ওঠা শুরু হয়।একজন মা হিসেবে আপনি উতলা হয়ে উঠতে পারেন যখন আপনার সন্তানের দাঁত উঠতে দেখেন।তবে দাঁত ওঠা একটি শিশুর পক্ষে ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক কারণ এটির ফলে তার ঘুমাতে অসুবিধা সহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।সুতরাং,এখানে এমন কয়েকটি উপায় রইল যেগুলির দ্বারা ব্যথা লাঘব করে শিশুটিকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা যেতে পারে।
দাঁত ওঠার লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি
১. কামড়ানো
দন্তদগমনের জন্য মাড়ির মধ্য দিয়ে দাঁতের খোঁচাগুলি খুবই যন্রণাদায়ক হয়ে থাকে যা সেই অঞ্চলের উপর চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে উপশম করা যেতে পারে।সুতরাং দাঁত ওঠার ব্যথা দমন করতে সদ্য দন্তোদগম হওয়া শিশুরা তাদের নাগালের মধ্যে যা কিছুই পায় সেগুলিকে কামড়ায় এবং চিবায়,যা হল একটি প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি।
২. লালা ঝরতে থাকা
দাঁত ওঠার কারণে শিশুদের স্বাভাবিকের থেকেও বেশি পরিমাণে মুখ থেকে লালা ঝরতে থাকে,সুতরাং আপনি যদি আপনার সন্তানের মুখ থেকে অতিরিক্ত লালা নিঃসৃত হতে লক্ষ্য করেন তবে সেটি তার দাঁত ওঠার সম্ভাবনা হয়ে থাকতে পারে।আপনার ছোট্টটির থুঁতনিটি হরদম মুছিয়ে দেওয়ার জন্য আপনার হাতের কাছে একটি ছোট তোয়ালে অথবা ন্যাপকিন রাখুন।
৩. ঘ্যান ঘ্যান করতে থাকা
দাঁত ওঠার যন্ত্রণা বাচ্চার মেজাজকে খিঁচিয়ে রাখে।তাই দাঁত ওঠার সময় আপনার ছোট্ট ব্যক্তিটি যে খুব বিরক্ত এবং উত্তেজিত হয়ে উঠবে সেটিই আশা করুন।
৪. ঘুমের ব্যাঘাত
দাঁত ওঠার কারণে শিশুদের যে সকল অস্বস্তিগুলির মুখোমুখি হতে হয় তা তাদের শান্তিপূর্ণ ঘুমের ক্ষেত্রে বাঁধার সৃষ্টি করতে পারে এবং আপনি হয়ত লক্ষ্য করতে পারেন যে মধ্য রাত্রেও আপনার ছোট্টটিকে পর্যায়ক্রমে জেগে উঠতে অথবা ঘুমের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে।
৫. ক্ষুধা হ্রাস পাওয়া
যদিও এটি পরস্পরবিরোধী বলে মনে হতে পারে,মায়ের থেকে স্তন চোষণের ফলে তা মাড়ির ক্ষতকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে যার ফলে তার মধ্যে ক্ষুধামান্দ্য দেখা দিতে পারে।তাই স্তন পান করানোর পূর্বে চেষ্টা করুন ব্যথা প্রশমিত করার,এবং আপনি লক্ষ্য করতে পারবেন যে তার খিদে পুনরায় বাড়তে থাকবে।
৬. গাল ঘষা এবং কান টানতে থাকা
আপনি হয়ত লক্ষ্য করতে পারেন যে আপনার শিশুটিকে তার কানগুলিকে টানতে থাকে অথবা ক্ষিপ্ত হস্তে তার গালগুলিকে ঘষতে।এটি গাল এবং কানের পথে ভাগ করে নেওয়া স্নায়ুর কারণে হতে পারে।তবে ভীষণ মাত্রায় কান টানাটানি কানের সংক্রমণের ইঙ্গিত দিতে পারে,সুতরাং সে বিষয়ে নজর রাখুন।
দাঁত ওঠার সময় শিশুর ঘুমে সহায়ককারী কিছু পরামর্শ
একজন নতুন মা হিসেবে,আপনি অভিভাবকত্বের বিষয়ে প্রচুর উপদেশ পাবেন,যা আপনার মনে শঙ্কা গড়ে তুলতে বাধ্য।আপনার শিশুটি তীব্র ব্যথায় ভুগবে আর সেই কারণে তার ঘুমের সময়সূচীটি বিঘ্নিত হতে পারে।কাজেই,এখানে এমন কিছু দরকারী পরামর্শ রইল যা আপনার সদ্য দন্তোদগম হওয়া শিশুটিকে ঘুম পাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।
১. আপনার সন্তানকে ঠাণ্ডা কিছু চিবানোর জন্য দিন
ঠাণ্ডা স্নায়ুকে অসাড় করে এবং ব্যথা হ্রাস করে।এই কারণে আজকাল বেশিরভাগ খেলনা সংস্থাগুলি রাবার অথবা জেল ভিত্তিক টিথারগুলি প্রস্তুত করছে যেগুলিকে ফ্রীজে ঠাণ্ডা করা যেতে পারে।টিথার হল একটি বিশেষ ধরনের খেলনা যেগুলি প্রস্তুত করা হয় বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় তাদের চিবাতে দেওয়ার জন্য।চিবানোর ফলে শিশুর দাঁতে যে চাপ সৃষ্টি হয় তা দাঁত ওঠার যন্ত্রণা থেকে স্বস্তি আনতে পারে।আর দাঁত ওঠার যন্ত্রণা কমাতে কোনও কিছু চিবানো শুরু করার প্রবৃত্তিটি মানুষ এবং প্রাণীদের মধ্যে স্বাভাবিক।আপনার যদি কোনও রেফ্রিজারেটর-বান্ধব টিথিং খেলনা না থাকে তবে আপনি এটির পরিবর্তে বিকল্প হিসেবে একটি পরিষ্কার, হিমায়িত কাপড়ের টুকরোর সাহায্যে নিতে পারেন।টিথিং খেলনাগুলিকে ফ্রীজে ঠাণ্ডা করে জমাট বাঁধাবেন না কারণ এটি সেগুলিকে কঠিণ করে তুলবে এবং যা আপনার শিশুর দাঁতে আঘাত করতে পারে। আপনার বাচ্চাকে সেটি হস্তান্তরিত করার আগে এগুলি কেবল শীতল করে নিন।এছাড়াও আপনার বাচ্চাটি যখন কোনও কিছু চিবাবে তা অবলক্ষণ করার জন্য সর্বদা তার সামনে উপস্থিত থাকুন।টিথিং খেলনাগুলিকে কেবল বাচ্চাদের চিবানোর জন্যই নকশায়িত করা হয়,গিলে ফেলার জন্য নয়,সুতরাং আপনার সন্তানের উপর সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখুন।
২. মাড়িগুলি মালিশ করুন
আপনার বাচ্চা হয়ত একা ঘুমাতে অস্বীকার করতে পারে যখন তার দাঁত ওঠা শুরু হয়।আপনার বাচ্চাকে বিছানায় শোয়নোর পর তার মাড়িগুলি আপনার আঙ্গুল দিয়ে ধীরে ধীরে মালিশ করে দিন।এটি তার ব্যথা লাঘব করে তাকে ঘুমিয়ে পড়তে সহায়তা করে।যদি সে মাঝ রাতেও ব্যথার জন্য জেগে ওঠে তবে পুনরায় তার মাড়িগুলি মালিশ করে দিতে পারেন।যেহেতু আপনি আপনার সন্তানের মাড়িগুলিকে মালিশ করেন তাই আপনি অনুভব করতে পারবেন যে তার মাড়ির কোন জায়গাগুলি থেকে দাঁত নির্গত হচ্ছে।মালিশের জন্য দাঁত নির্গমনের সেই বিশেষ অঞ্চলগুলির প্রতিই আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করুন।তবে আপনার ছোট্টটির মাড়িগুলি মালিশ করার পূর্বে আপনার হাতের আঙ্গুল গুলিকে পরিষ্কার রাখার বিষয়টিকে সুনিশ্চিত করুন।
৩. ক্যামোমাইল চা দিন
ক্যামোমাইল চা প্রদাহ হ্রাস করতে,পেট ব্যথা প্রশমনে,অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি করতে, শিথীলকরণকে উন্নীত করতে এবং ঘুমকে প্ররোচিত করতে সহায়তা করে।সদ্য দাঁত ওঠা শিশুদের ক্যামোমাইল চা প্রদান তাদের দাঁত ব্যথায় উপশম আনবে এমনকি ঘুমকে প্ররোচিত করবে।ক্যামোমাইল চা শিশুকে তার ফিডিং বোতলে করে ঘরের তাপমাত্রায় অথবা হালকা উষ্ণ অবস্থায় দেওয়া যেতে পারে।আপনি আবার এমনকি একটা ছোট কাপড়ের টুকরোকে এই চায়ের মধ্যে ভিজিয়ে নিয়ে সেটিকে বাচ্চাকে চিবাতে দেওয়ার আগে হিমায়িত করে নিতে পারেন।তবে এটি মাথায় রাখা উচিত যে নূন্যতম ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের ক্যামোমাইল চা দেওয়া উচিত নয়।আপনি অর্ধ বর্ষের সীমারেখা পার করা শিশুদেরকে ক্যামমাইল চা দিতে পারেন তবে আপনার ছোট্টটির জন্য এই প্রতিকারটিকে বেছে নেওয়ার পূর্বে একজন ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিয়ে নেওয়ার জন্য আপনাকে পরামর্শ দেওয়া হল।
৪. ঘুম পাড়াবার আগে বাচ্চাকে ঠাণ্ডা খাবার খাওয়ান
ঠাণ্ডা মাড়ির ব্যথা প্রশমন করে এবং ভর্তি পেট ঘুমকে প্ররোচিত করে।আপনি আপনার শিশুকে ঠাণ্ডা দই অথবা আঙ্গুর অথবা সেদ্ধ গাজরের মত ঠাণ্ডা ফল বা সবজি দিতে পারেন।তবে তাকে তার বয়স ভিত্তিক সঠিক এবং উপযুক্ত খাদ্যগুলি দেওয়ার বিষয়টিকে মাথায় রাখবেন অর্থাৎ সবজি অথবা ফল যেগুলি সে উপযুক্তভাবে চিবোতে সক্ষম হবে সেইগুলিই দেবেন।এর জন্য একটি ভাল বিকল্প হতে পারে বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য জালিযুক্ত একটি ব্যাগ ক্রয় করা।একদম ছোট শিশুদের কঠিন খাবার খাওয়ানো শুরু করার ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার নিরাপদজনক,কারণ এটি ব্যবহারের ফলে তাদের খাবারের কোনও বড় টুকরো গিলে ফেলার অথবা বিষম খাওয়ার মত ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে না।
৫. একটি শান্ত পরিবেশ গড়ে তুলুন
আপনার শিশুকে ঘুম পাড়াতে তার জন্য আপনার একটি ঘুমের সময়সূচী নির্ধারণ করা খুবই প্রয়োজন।যখন শিশুরা কোনও একটি নির্দিষ্ট ভাবে ঘুমাতে থাকে তখন সেই অনুযায়ী সামঞ্জস্যে এনে তাদের দেহও স্থির হয়।একটি শয়নকালীন রুটিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘুমের সময় নিকটবর্তী হওয়ার সাথে সাথে তাদের ঘুমে আচ্ছন্ন করে তোলে,কারণ এই রুটিনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে পর্যায়ক্রমে যখন কিছু নির্দিষ্ট ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করা হয় তখন এটি অবচেতনভাবেই ইঙ্গিত দেয় যে এটি ঘুমানোর সময়।আর একটি অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও এটি এই একই নীতিতে অপরিহার্যভাবেই কাজ করে থাকে।এই রুটিনের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রাখতে পারেন- বাচ্চাকে একটি উষ্ণ স্নান করানো,প্রয়োজনানুয়ী পায়জামার পরিবর্তন,ছোট ছোট গল্প পড়ে শোনানো,আপনার বাচ্চার জন্য ঘুম পাড়ানি গান গাওয়া অথবা যতক্ষণ না সে ঘুমিয়ে পড়ে আপনার বাহুর মধ্যে নিয়ে তাকে দোল দিতে থাকা ইত্যাদি।
৬. স্তন দুগ্ধ পান করানো
স্তন দুধ পান করানো আপনার সন্তানকে শান্ত করে তুলতে সহায়তা করে।আপনার সোনার দাঁত উঠতে শুরু করার কারণে সে হয়ত আপনার স্তনবৃন্তগুলি কামড়ে অথবা চিবিয়ে ফেলে আপনাকে ব্যথা দিতে পারে।এটি প্রতিরোধ করতে,স্তন পান করানোর পূর্বে আপনার সন্তানের মাড়িগুলিকে ঘষে মালিশ করে দিন।আপনার বাচ্চাকে প্রশমিত করে ঘুম পাড়ানোর খুব ভাল একটি কার্যকর উপায় হল তাকে বুকের দুধ পান করানো।
৭. ব্যথা নিয়ামক ওষুধের ব্যবহার
যদি আপনি অন্যান্য সকল পদ্ধতি প্রয়োগের পরেও কোনও রকম ইতিবাচক ফলাফল না পেয়ে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে এটিই আপনার শেষ অবলম্বন হওয়া উচিত। ব্যথানাশকগুলি আপনার ছোট্টটির ব্যথার উপশম করে তাকে ঘুমিয়ে পড়তে সহায়তা করে থাকে।তবে এই ওষুধগুলিকে অবলম্বন করার পূর্বে সর্বদা ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিয়ে নেবেন।এর জন্য কখনওই ওভার দ্য কাউন্টার ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যগুলি ক্রয় করবেন না।আইবুপ্রোফেনের মত ব্যথানাশকগুলিতে বিশেষ মিশ্রিত সূত্র রয়েছে যেগুলি মূলত একদম ছোট শিশু এবং অল্প বয়সী বাচ্চাদের জন্যই বিশেষভাবে প্রস্তুত। প্রাপ্তবয়স্কদের ব্যথা নাশকগুলি কখনই শিশুদের জন্য ব্যহার করবেন না।আপনার ছোট্ট ব্যক্তিটিকে যেকোনও রকম ওষুধ দেওয়ার আগেই আপনার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে অবশ্যই আলোচনা করে নেবেন।
কত দিন ধরে দাঁত ওঠার যন্ত্রণা বহাল থাকে?
কত দিন ধরে দাঁত ওঠার যন্ত্রণা স্থায়ী থাকতে পারে সেটি বলা খুবই কঠিণ ব্যাপার।উদাহরণ হিসেবে একটি শিশু তার প্রকৃত দাঁত ওঠার আগে হয়ত কয়েক মাসের জন্যও যন্ত্রণা অনুভব করতে পারে।এদিকে আবার অন্য শিশুরা হয়ত বা মাড়ির মধ্যে তাদের দাঁত গঠিত হয়ে যাওয়ার পর সেগুলি মাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসার পর ব্যথা অনুভব করতে পারে।ব্যথার তীব্রতা এক শিশুর থেকে অন্য শিশুর মধ্যে হয়ত আলাদা হতে পারে।তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যথাগুলি উধাও হয়ে যায় মাড়ি থেকে সম্পুর্নরূপে দাঁতগুলি বেড়িয়ে বেড়ে ওঠার পর।যদিও আপনার সোনার সামনের দাঁতটি তার এক বছর বয়সের মধ্যেই বেরিয়ে যায় তবে পিছনের সারির পেষক দাঁতগুলি তার এক বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার পরই দেখা দেয়,সুতরাং দাঁত ওঠার যন্ত্রণার চাপ থেকে স্বস্তি পাওয়ার একটি সময়কাল রয়েছে।
তবে শিশুদের দাঁত ওঠা হল টানা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং সেটি আপনার এবং আপনার সন্তান উভয়ের জন্যই একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে! অতএব, কখন আপনার শিশুর কোন দাঁতটি বিস্ফোরিত হতে পারে বলে আপনি আশা করতে পারেন,এবং আপনার শিশু যদি দাঁত ওঠার যন্ত্রণার সহিত মোকাবিলা করে থাকে তবে সেক্ষেত্রে কীভাবে আপনি তাকে শান্ত করে তুলতে পারেন এই ধরণের তথ্যগুলি সম্পর্কে জানা থাকলে আপনার এ ব্যাপারে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকার ক্ষেত্রে সহায়তা হবে। আপনার নিষ্কৃতির জন্য বেবি টিথিং টুলটিতে প্রবেশ করুন।প্রদত্ত চিত্রটির বিভিন্ন অংশে কেবল ক্লিক করুন,আপনি চিহ্ণিত করতে সক্ষম হবেন কখন আপনার বাচ্চার একের পর এক দাঁতগুলি বিস্ফোরিত হতে থাকবে সেই ব্যাপারে এবং এর সাথে আসা সকল চ্যালেঞ্জের সহিত মোকাবিলা করার মত সহজ পরামর্শগুলি সহজেই পেয়ে যাবেন।
সতর্কীকরণমূলক পরামর্শ
- আপনার বাচ্চা কিছু চিবলেই সেটি লক্ষ্য রাখুন তা সেটি টিথিং খেলনা,মাড়ি সিড়সিড়ের সময় চিবানোর উপযোগী কাপড়ের টুকরো অথবা কোনও খাবারই হোক না কেন।এগুলি থেকে শিশুর গলায় বিষম লেগে যেতে পারে,সুতরাং সতর্ক থাকুন।
- আপনার বাচ্চাকে কোনও রকম বেদনানাশক ওষুধ দেওয়ার আগে আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে আলোচনা করে নিন।
- যদি টিথিং খেলনাটি আপনার বাচ্চার গলায় একটি সুতা বা রজ্জুতে সুরক্ষিতও থাকে,আপনার বাচ্চার ঘুমানোর সময় সেটিকে সেই অবস্থায় তার কাছে রেখে কোথাও যেন চলে যাবেন না।যখন বাচ্চাটি ঘুমের মধ্যে গড়াবে এটি কোথাও আটকে যেতে পারে এবং পরিশেষে বাচ্চাটির শ্বাসরোধ হয়ে যেতে পারে।
- একটি খুবই সাধারণ অথচ বিপজ্জনক ঘরোয়া প্রতিকার হল অ্যাসপিরিন ট্যাবলেটের গুঁড়ো দিয়ে আপনার শিশুর মাড়ি ঘষে দেওয়া।এই প্রতিকারটিকে চয়ন করবেন না কারণ এটি শিশুটিকে মারাত্মকভাবে অসুস্থ করে তুলতে পারে।
- দাঁত ওঠার সময় বাচাদের মধ্যে মাঝেমধ্যে তাদের কান ধরে টানার অভ্যাসটি বেড়ে যায় যেহেতু দাঁত ওঠার যন্ত্রণাটি তাদের কর্ণ গহ্বরের মধ্যে স্থানান্তরিত হতে পারে।যদি যন্ত্রণাটি মারাত্মক হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারবাবুর সহিত আলোচনা করুন আপনার ছোট্টটি হয়ত এক্ষেত্রে তার কানের সংক্রমণে ভুগে থাকতে পারে।
- অসাড় করার ওষুধ হিসেবে কখনই আপনার শিশুর মাড়িতে ওভার দ্য কাউন্টার ক্রীম বা জেলগুলি প্রয়োগ করবেন না।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১. দাঁত ওঠার সময়েও কি আমার ঘুমের প্রশিক্ষণটি চালিয়ে যাওয়া উচিত?
হ্যাঁ,ঘুমের প্রশিক্ষণটি বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময়েও সমানে চালিয়া যাওয়া উচিত।মনে রাখবেন যে এই “পর্যায়টি” এক বছর পরে আবার ফিরে আসে এবং বাস্তবিকপক্ষেই, একটি শিশুর সব কটি দুধের দাঁত ঠিক জায়গা মত ওঠার আগে এটি প্রায় তিন বছর মত সময় নেবে।দাঁত ওঠার যন্ত্রণা কয়েক রাত্রির ঘুম কেড়ে নেবে, তবে অনবরতই আপনার বাচ্চার ঘুমের প্রশিক্ষণটি কিন্তু অব্যাহত রাখা উচিত।নিয়মিত ঘুমের সময়ের সহিত সংলগ্ন রাখা এবং একটি ঘুমের রুটিন গঠণ করে তার সাথে নিয়মিতভাবে তাদের অভ্যস্থ করে তোলার জন্য তাদের বাধ্য করে তোলা হল দাঁত ওঠার যন্ত্রণায় ভুক্তভুগী শিশুদের ঘুম পাড়িয়ে রাখার একটি অন্যতম চাবিকাঠি।ঘুমের প্রশিক্ষণটি প্রয়োগের সাথেই এগিয়ে চলুন কারণ আপনার বাচ্চার দাঁত ওঠার ফলে হয়ে থাকা ভীষণ যন্ত্রণার কারণে সে ঘুমাতে পারে না যা স্বভাবতই তার ঘুমে আরও জটিলতার সৃষ্টি করে।
২. দাঁত ওঠা কি কিছু বাচ্চাকে আরও বেশি ঘুম পাড়িয়ে রাখতে পারে?
একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট অনুসারে, কিছু মা-বাবা কৌতুকপূর্ণভাবে জানিয়েছিলেন যে দাঁত বেড়নোর সময় তাদের শিশুরা আরও বেশি মাত্রায় ঘুমিয়েছিল।দাঁত ওঠার ফলে বাচ্চা কিছুটা নিস্তেজ বোধ করতে পারে এবং তার ফলে সে হয়ত আরও বেশি ঘুমিয়ে পড়তে পারে।তবে এটি প্রমাণের কোনও নজির নেই।বৃদ্ধির দৌড়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার কারণেও আপনার বাচ্চা হয়ত কিছুটা বেশি ঘুমাতে পারে।শিশুরা এই সময় তাদের বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকে,তাদের বৃদ্ধি সর্বদা একই হারে নাও হয়ে থাকতে পারে,এক সময় এটি বৃদ্ধি পেতে পারে আবার অন্য সময় এটি স্থিতিশীলও হতে পারে,সুতরাং এটিই হল “বৃদ্ধির দৌড়”।বৃদ্ধির দৌড়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া শিশুদের কিছুটা বেশিই ঘুমোতে দেখা যায়,যদিও সেটি দিবা নিদ্রা অথবা সম্পূর্ন রাত্রি জুড়ে গভীর নিদ্রা হয়ে থাকতে পারে।দাঁত ওঠা হল একটি স্বাভাবিক সহজাত প্রক্রিয়া এবং মাঝেমধ্যে এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াটির সহিত যন্ত্রণা সংযুক্ত হতে পারে।একজন মা হিসেবে আপনি সবচেয়ে ভাল জানেন,সুতরাং যেটি আপনার বাচ্চার জন্য সঠিক বলে মনে হয় আপনি সেটিই করুন।
ইত্যবসরে,ঘুমের প্রশিক্ষণের সহিত সংলগ্ন থাকুন কারণ কয়েক বছরের মধ্যে আপনার শিশুটি ঠিক হয়ে যাবে,সারা রাত্রি ব্যাপী একটি নিশ্ছিদ্র ঘুমের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়ার পরেই সে জেগে উঠবে সাদা ঝকঝকে একেবারে নতুন দাঁত সহযোগে একটি অমূল্য হাসির সহিত,যা হল দাঁত ওঠার যন্ত্রনাময় কঠিণ রাত্রিগুলিকে আপনার ভুলে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সেরা প্রাপ্তি।