গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া কি নিরাপদ?

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া কি নিরাপদ?

মিষ্টান্ন এবং মিষ্টিজাত খাদ্যগুলি সকলেই ভালবাসে এবং সেগুলিকে ছেড়ে থাকা প্রায় অসম্ভব, তবে এ ব্যাপারে গর্ভাবস্থায় মিষ্টি খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা অতিরিক্ত যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।গর্ভাবস্থাকালে খুব বেশি মাত্রায় মিষ্টি খেলে তা শিশুর বৃদ্ধির ওপর একটা খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।তারসাথে এই অতিরিক্ত মিষ্টি আবার দেহের অযথা ওজন বাড়িয়ে তুলতে পারে, ইনসুলিন এবং গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং একজন গর্ভবতী মহিলার মধ্যে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়।একটা সুস্থ গর্ভাবস্থা বজায় রাখার জন্য অল্প কিছুটা ওজন বৃদ্ধি স্বাভাবিক এবং তা প্রয়োজনীয়ও বটে, কিন্তু অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে তা পিঠে ব্যথা এবং দাঁতের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।আপনি যদি গর্ভবতী হন এবং একজন মিষ্টি প্রেমী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার অতি পছন্দের গোলাপ জাম কিম্বা কাজু বরফির দিকে তাকানোর আগে আপনার নিজেরই উপকারের জন্য সে ব্যাপারে আপনার অবশ্যই দুবার করে ভাবা উচিত।অনেক বেশি মিষ্টি খাওয়া কেন আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক চমৎকার একটা ব্যাপার নাও হয়ে উঠতে পারে তা জানার জন্য পড়ুন।

গর্ভাবস্থায় খুব বেশি মিষ্টি খাওয়ার প্রভাবগুলি

মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলিকে এড়িয়ে চলা সবসময়ের জন্যই একটা ভাল ধারণা, তবে গর্ভাবস্থায় তা আরও বেশি।আপনি যদি সন্তানধারণ করার পরিকল্পনা করে থাকেন তবে আপনার মিষ্টি গ্রহণের পরিমাণটি সর্বনিম্ন রাখুন কারণ এটা আপনার এবং আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি জাতীয় খাদ্যগুলি খাওয়ার সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি নীচে দেওয়া হল।

1.ওজন বৃদ্ধি

একটা বিশাল পরিমাণে মিষ্টি সেবন অপ্রয়োজনীয় ওজন বৃদ্ধির সাথে যুক্ত।গর্ভাবস্থায় কুকিজ, প্যাস্ট্রি, মিষ্টি, হালুয়া এবং কেকের মত উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবারগুলি গ্রহণ করলে তা অতিরিক্ত ওজন বাড়িয়ে তোলে।এমনকি কোল্ড ড্রিঙ্কস এবং মিষ্টি শরবত জাতীয় পানীয়গুলিও ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণ হয়ে উঠতে পারে যা পিঠে ব্যথা, দাঁতের সমস্যা এবং এমনকি আবার কোনও কোনও সময় গর্ভকালীন ডায়েবেটিসের মত সমস্যাগুলিও তৈরী করতে পারে।

2.রক্তে সুক্রোজের মাত্রা বৃদ্ধি

গর্ভাবস্থায় খুব বেশি মিষ্টি খেলে তা রক্তে সুক্রোজের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।ডায়েটের মধ্যে সুক্রোজের প্রধান উৎস হল মিষ্টি জাতীয় খাদ্য এবং পানীয়গুলি।আহার পরবর্তীতে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি রোধ করার জন্য গর্ভাবস্থাকালীন সবচেয়ে বুদ্ধিমান বিকল্পটি হল ফল বাদে সুক্রোজ যুক্ত সকল খাদ্যগুলিকে এড়িয়ে চলা।

3. শিশুর মধ্যে ওজন সম্পর্কিত সমস্যা

গর্ভাবস্থাকালে অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি এবং মিষ্টিজাত খাদ্যগুলি গ্রহণ করলে তা শিশুর স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।একজন নবজাত শিশু ডায়াবেটিস এবং মেটাবলিক সিন্ড্রমের ঝুঁকিতে বেশি থাকে যদি অন্তঃসত্ত্বাকালে তাকে গর্ভে বহন করার সময় তার মা খুব বেশি মাত্রায় মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলি গ্রহণ করে থাকেন।এটি আবার শিশুর জন্মের ওজনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কখনও কখনও আবার অকাল প্রসবের মত জন্ম সম্পর্কিত সমস্যাগুলির ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।গর্ভদশায় মা যদি খুব বেশি মিষ্টি খেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আবার শিশু অতিরিক্ত ওজনের সাথে জন্মগ্রহণ করতে পারে এবং ভবিষ্যতে তার মধ্যে হৃদ্‌ রোগ এবং নানা ধরণের অ্যালার্জি দেখা দেওয়ার ঝুঁকি গড়ে উঠতে পারে।

4.শিশুর জ্ঞানীয় ক্ষমতাগুলি প্রভাবিত হতে পারে

গর্ভাবস্থায় মিষ্টি জাতীয় খাদ্যগুলি দ্বারা উদর পূর্তি করলে তা বাচ্চাকে অ্যাজমা বা হাঁপানির ঝুঁকিতে ফেলতে পারে এবং এটি তার জ্ঞানীয় ক্ষমতাগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারে। আমেরিকান জার্নাল অফ প্রিভেন্টিভ মেডিসিনে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে জানা যায় যে, গর্ভবতী মহিলার দ্বারা চিনি এবং সোডা গ্রহণ তার সন্তানের স্মৃতিশক্তি এবং শিখন দক্ষতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আদর্শ মিষ্টি গ্রহণ

মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের হিসেবে দৈনিক গ্রহণের পরিমাণ হল 100 ক্যালোরি / 1 দিন (25 গ্রাম বা 6 চামচ)। স্বাস্থ্যবতী, রোগাপাতলা অথচ সক্রিয় ও সক্ষম মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি ঠিকঠাক ও উপযুক্ত পরিমাণ বলে মনে করা হয়।গর্ভাবস্থায় যদি কেউ বেশি ওজন বা স্থূলত্বের শিকার হন তবে সফট ড্রিঙ্কস, বেক করা খাদ্যপণ্য এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলি তাদের ডায়েটে কোনওভাবেই রাখা উচিত নয়।সুতরাং প্রকৃত এবং একক উপাদানযুক্ত খাবারগুলির সাথেই নিজেকে বেঁধে রাখুন আর প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলি এড়িয়ে চলুন যেগুলিতে চিনি এবং পরিশোধিত শর্করা বেশি মাত্রায় থাকে।

এখন যেহেতু গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার খারাপ প্রভাবগুলি সম্পর্কে আপনি অবগত, আপনার মত মিষ্টি প্রেমীরা তবে এখন নিশ্চই একথা ভাবছেন যে, গর্ভাবস্থায় তাহলে আপনি যদি কিছু কৃত্রিম মিষ্টিকারক ব্যবহার করতে পারেন…. অতএব, আসুন এটিরও সন্ধান করা যাক!

গর্ভাবস্থায় কৃত্রিম মিষ্টিকারকগুলি কি নিরাপদ?

গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্থায় সর্বদাই তাদের ডায়েট এবং পুষ্টির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকেন।সুইটনার বা মিষ্টিকারক উপাদানগুলিকে পুষ্টিকর(ক্যালোরিযুক্ত) এবং অপুষ্টিকর(ক্যালোরি বিহীন)-এই দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।প্রাকৃতিক মিষ্টি বা চিনি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সর্বদাই সেরা বিকল্প হিসেবে পরিচিত।কিন্তু কৃত্রিম মিষ্টিগুলি কখনই না, বিশেষ করে যখন সেগুলি খুব বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা হয়।সকল গর্ভবতী মহিলাদের তাদের গর্ভাবস্থার ডায়েটে স্যাকারিন যুক্ত করা এড়ানো উচিত কারণ এর ব্যবহারের ফলে শিশুর মূত্রাশয়ের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে।অনেক সময় কৃত্রিম সুইটনার কিম্বা টেবিল টপজাতীয় মিষ্টিকারক উপাদানগুলিকে গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানের সময় নিরাপদ বলে মনে করা হয় তবে এটি কিন্তু অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।যাইহোক, সুক্রোজ, ডেক্সট্রোজ, মধু, কর্ন সুগার, ফ্রুক্টোজ এবং ম্যালটোজ জাতীয় পুষ্টিকর মিষ্টিকারকগুলি (শর্করা)গর্ভাবস্থায় পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।

স্বাস্থ্যকর ডেজার্ট জাতীয় মিষ্টান্নের রেসিপিগুলিগর্ভাবস্থাকালে আপনি চেষ্টা করতে পারেন

আপনি যদি গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যকর কিছু ডেজার্ট জাতীয় মিষ্টান্ন উপভোগ করতে চান, তবে নীচে দেওয়া রেসিপিগুলি চেষ্টা করতে পারেন। বিঃদ্রঃ এই সকল মিষ্টান্নগুলিই বাড়িতে তাজা উপকরণের দ্বারা প্রস্তুত করুন।

1.ময়েস্ট ক্যারোট কেক

1.ময়েস্ট ক্যারোট কেক

ময়েস্ট ক্যারোট কেক ভীষণ স্বাস্থ্যকর একটা ডেজার্টের রেসিপি, যেটা খুব সহজে এবং তাড়াতাড়ি তৈরী করা যেতে পারে।এটা বাড়িতে তৈরী করুন, তবে তাই বলে খুব বেশী গোগ্রাসে খেয়ে ফেলবেন না।আপনি যদি প্রচণ্ড মিষ্টিভক্ত হন, তবে এর থেকে একটা ছোট অংশ আপনার জন্য রাখুন।

উপকরণ

  • 1/4 কাপ গাজরভালভাবে কোঁড়ানো
  • 2 টি ডিম
  • 1/4 কাপ সাদা দই
  • 2 কাপ ময়দা
  • 1 কাপ আপনার পছন্দসই মিষ্টিকারক উপাদান
  • 2 চাচামচ বেকিং পাউডার
  • 3 টেবিলচামচ সানফ্লাওয়ার তেল
  • 3 টেবিলচামচ মাখন
  • 4 আউন্স ক্রীম চীজ(নরম)
  • স্বাদের জন্য মিষ্টি
  • 1/2 চাচামচ ভ্যানিলা

প্রণালী

  • ভ্যানিলা, দই এবং তেলের সাথে ডিমটাকে ভালমত ফেটিয়ে নিন
  • অন্য আরেকটি বাটির মধ্যে বেকিং পাউডার, সুইটনার বা মিষ্টিকারক পদার্থ এবং ময়দা একসাথে ভালকরে চেলে নিন।এরপর সেটিকে ডিমের মিশ্রণের বাটির মধ্যে ঢেলে দিন।এর সাথে গাজর কোঁড়াটাও ঢেলে যোগ করুন।
  • এবার একটি কেকের বাটি নিয়ে সেটিতে সামাণ্য তেলের প্রলেপ দিয়ে তার মধ্যে সমগ্র মিশ্রণটি ঢেলে দিন।মোটামুটি প্রায় 40 মিনিট ধরে 350°F (175°C)- এ সেটিকে বেক করুন।এবার একটা টুথপিক দিয়ে সেটির মধ্যে ফুটিয়ে দেখে নিন যে তার গায়ে কিছু লেগে থাকছে কিনাযদি টুথপিকটির গায়ে কিছু না লেগে থাকে এবং সেটি শুকনোভাবে উঠে আসে, তবে আপনার কেক প্রায় প্রস্তুত, সেটিকে ঠাণ্ডা হতে দিন।
  • এরপর মাখন, সুইটনার বা মিষ্টিকারক উপাদান, ক্রীমচীজ এবং ভ্যানিলাকে একসাথে ফ্যাটাতে থাকুন যতক্ষণ না সেটি মসৃণ পেস্ট জাতীয় হয়ে ওঠে। এইভাবে প্রস্তুত আইসিংটি এবার কেকের উপরে ছড়িয়ে দিতে হবে, আপনার কেক প্রস্তুত।

2.মাখানা বা পদ্মের বীজের ক্ষীর

2.মাখানা বা পদ্মের বীজের ক্ষীর

মাখানা(পদ্মের বীজ) হল ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনে পরিপূর্ণ।মাখানা বা ফক্স নাটকে কম ফ্যাট যুক্ত দুধের সাথে জাল দিয়ে ক্রীমের মত সুস্বাদু ক্ষীর তৈরী করা যেতে পারে।এখানে দেওয়া হল কীভাবে আপনি এই অসাধারণ মাখানা ক্ষীর তৈরী করতে পারেনঃ

উপকরণ

  • 1 কাপ মাখানা
  • 1 চাচামচ ঘি
  • 4 1/2 কাপ লো ফ্যাট দুধ
  • 1 টেবিলচামচ চিনি
  • কেশর বা জাফরানের কয়েকটি সূত্র
  • 1/4 চাচামচ জায়ফল গুঁড়ো

প্রণালী

  • একটা উঁচু ননস্টিকের কড়াই নিন এবং তার মধ্যে ঘি গরম করুন।এর সাথে মাখানা যোগ করে সেটিকে কম আঁচে 2-3 মিনিট ধরে নাড়াচাড়া করুন অথবা যতক্ষণ না সেগুলি মুচমুচে হয়ে ওঠে।
  • একটু খড়খড়ে মোটা দানার মিশ্রণ করে তুলতে সেটিকে ব্লেন্ড করুন
  • এরপর একটা উঁচু ননস্টিকের কড়াইএ দুধ ফুটান এবং তার সাথে খড়খড়ে মোটা দানার মাখানার মিশ্রণ এবং চিনি মেশান।
  • সমানে অবিরতভাবে নাড়তে নাড়তে সেটিকে মাঝারী আঁচে 120 সেকেন্ড ধরে রান্না করুন।
  • এর সাথে কেশর এবং জায়ফলের গুঁড়ো যোগ করে ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
  • সাথে সাথে পরিবেশন করুন।

3.লাপসি

3.লাপসি

এটি ভাঙা গম দিয়ে তৈরী হয় এবং ভারী খাবারের পরে খাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট হালকা।এটি একটি দুর্দান্ত ডেজার্ট জাতীয় মিষ্টি যা আপনাকে শক্তি, প্রোটিন এবং আয়রন সরবরাহ করবে।

উপকরণ

  • 1/2 কাপ ভাঙ্গা গম(ডালিয়া)
  • 1/2 কাপ গুড়
  • 3 টেবলচামচ শুদ্ধ ঘি
  • 2 টেবলচামচ আমন্ড কুঁচি
  • 1/2 চাচামচ এলাচ গুঁড়ো
  • 3 টেবলচামচ গরম দুধ

প্রণালী

  • একটা কড়াইয়ে ঘি গরম করুন, সোনালী বাদামী না হওয়া পর্যন্ত ভাঙ্গা গম বা ডালিয়া তাতে ভেজে নিন
  • আরেকটি পাত্রে দেড় কাপ জল গরম করুন
  • এরপর এই গরম জলটি ভেজে রাখা ডালিয়ার কড়াইয়ে যোগ করুন এবং সেটি ভালমত রান্না করে নিন।
  • যখন ডালিয়া প্রায় রান্না হয়ে আসবে, তার মধ্যে চিনি, এলাচ গুঁড়ো এবং আমন্ড কুঁচিগুলি ঢেলে ভালমত মিশিয়ে নিন।
  • সেটি থেকে ঘি ভেসে ওঠা না অবধি কম আঁচে কড়াটিকে বসিয়ে রান্না হতে দিন
  • এটা ঠিকমত হয়ে গেলে কড়াইটিকে ঠাণ্ডা হতে দিন এবং তারপর তার মধ্যে দুধ ঢেলে পুনরায় সেটিকে গরমে বসান, আর গরম গরম পরিবেশন করুন।

4. কাস্টার্ড ক্ষীর

4. কাস্টার্ড ক্ষীর

কাস্টার্ড ক্ষীর স্বাদে অতুলনীয় এবং খুব তাড়াতাড়ি তৈরী করা যায়।এর স্বাদকে বাড়িয়ে তুলতে আপনি এর সাথে ফলের টুকরো এবং বাদাম যোগ করতে পারেন।এর রেসিপিটি এখানে দেওয়া হলঃ

উপকরণ

  • 1 লিটার দুধ
  • 4 টেবিলচামচ চাল(আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা)
  • 2 টেবিলচামচ ভ্যানিলা কাস্টার্ড পাউডার
  • 8 টেবিলচামচ চিনি
  • 1 চাচামচ আমন্ড কুঁচি
  • 1 চাচামচ পেস্তা বাদাম কুঁচি

প্রণালী

  • আগে থেকে ভিজিয়ে জল ঝরিয়ে নেওয়া চালটিকে একটা কাপড়ের উপর ছড়িয়ে শুকিয়ে নিন।
  • একটা পাত্রে দুধ ফোটান
  • শুকিয়ে নেওয়া চালটাকে শুকনো খোলায় ভেজে নিন এবং সেটিকে একটু খড়খড়ে দানা আকারে গুঁড়ো করুন।
  • এর মধ্যে 1/2 কাপ দুধ ঢেলে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
  • এবার এই মিশ্রণটিকে ফোটানো দুধের মধ্যে ঢেলে কম আঁচে বসিয়ে রান্না করুন।
  • ভ্যানিলা স্বাদের কাস্টার্ডর পাউডার নিয়ে তার মধ্যে 1/2 কাপ দুধ যোগ করে ভালমত মিশিয়ে নিন।
  • এখন কাস্টার্ড গোলাটিকে চালদুধের মিশ্রণের সাথে যোগ করে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন।
  • সবশেষে এর উপর আমন্ড এবং পেস্তা বাদাম কুঁচিগুলি ছড়িয়ে দিন।
  • ঠাণ্ডা হয়ে গেলে সেটিকে ফ্রিজের মধ্যে রেখে ঠান্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন।

গর্ভাবস্থায় মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছেটাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন

চিনি, মিষ্টি এগুলিকে পরিহার করা কঠিন ব্যাপার, বিশেষ করে আপনি যখন গর্ভবতী হয়ে ওঠেন এবং মিষ্টি খাওয়ার তীব্র বাসনা জেগে ওঠে, তখন তা আরও মুশকিল হয়ে ওঠে।কিন্তু গর্ভাবস্থায় একটা সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থা বজায় রাখার জন্য এই মিষ্টি খাওয়ার বাসনাটিকে সংযম করতে আপনাকে শিখতে হবে।আর সেটা ঠিক কীভাবে আপনি করতে পারেন এখানে তা বলা হলঃ

  • আপনার রক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ প্রতিবার পরিমাণে অল্প আহার করলে এটি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে এবং অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি খাওয়া এড়াতে সহায়তা করবে।কম পরিমাণ খাওয়ায় আপনার শরীরের মধ্যে ধীরে ধীরে শর্করা মুক্ত হবে এবং রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
  • প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলি এড়িয়েঃ প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং সফট ড্রিঙ্কগুলি গোগ্রাসে খাওয়া এড়িয়ে চলুন কারণ প্রক্রিয়াজাত খাদ্যগুলির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি থাকে।
  • প্রচুর জল পান করেঃ প্রচুর জল পানের দ্বারা আপনার পেটকে পূর্ণ করে তোলার মাধ্যমে আপনার মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলি খাওয়ার প্রবল আকাঙ্খাকে আপনি দমন করতে পারেন।তাছাড়াও পর্যাপ্ত জল পান করলে তা আপনাকে হাইড্রেট রাখবে যা গর্ভাবস্থার জন্য ভীষণ জরুরী।
  • ধ্যান এবং যোগব্যায়ামঃ আপনার জিভে জল আনা সেই সব মিষ্টি খাবারগুলির কথা মাথা থেকে দূর করার জন্য আপনার মনটাকে অন্যদিকে সরাতে যোগা করার চেষ্টা করুন।এছাড়াও আপনি ধ্যান করতে পারেনগর্ভাবস্থার জন্য ভাল এবং স্বাস্থ্যকর বস্তুগুলির ব্যাপারে চিন্তা করুনএটি আপনাকে শুধুই ভালো জিনিসগুলিকে বেছে নেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করবে যেগুলি আপনার গর্ভাবস্থার জন্য উপকারী।

মিষ্টির স্বাস্থ্যকর বিকল্পগুলি

আপনি যদি গর্ভাবস্থায় কিছু মিষ্টির আস্বাদ নিতে চান কিন্তু তার সাথে আবার স্বাস্থ্যকর বিষয়গুলির সাথেও কোনওরকম আপস না করেতে চান, তবে আমরা আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি যে, নীচের তালিকায় দেওয়া মিষ্টিগুলিকে আপনি বেছে নিতে পারেন যেগুলি হল সাধারণ মিষ্টিগুলির স্বাস্থ্যকর বিকল্প।

  • ফ্রুট কাবাব
  • শুকনো ফল
  • ঘরে তৈরী দই এবং ফলের পপসিকল্‌
  • মিষ্টি আলু মাখা
  • স্বাস্থ্যকর স্মুদি

যদিও গর্ভাবস্থায় মিষ্টির জন্য আকুল হয়ে ওঠাটা স্বাভাবিক একটা ব্যাপার কিন্তু এটিকে এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে ভাল।গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য গর্ভাবস্থায় পরিমিত পরিমাণে মিষ্টি সেবন করাই ভাল এবং নিরাপদ।কারণ তা না হলে এর বিরূপ প্রভাবগুলির জন্য আপনাকে সারাজীবনের জন্য অনুশোচনা করতে হতে পারে।তবে এক্ষেত্রে কিছু স্বাস্থ্যকর ডেজার্ট জাতীয় মিষ্টিগুলিও রয়েছে যেগুলি দ্বারা আপনি আপনার মিষ্টি খাওয়ার বাসনা চরিতার্থ করতে পারেন।সুতরাং স্বাস্থ্যকর বিকল্পগুলির দিকে যান এবং চাপমুক্ত একটা সুস্থ গর্ভাবস্থা বজায় রাখুন।