গর্ভবতী মহিলারা সাধারণত তাদের ত্বক কতটা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে এবং তাদের চুলগুলি আগের তুলনায় কতটা ভাল বলে মনে হচ্ছে এ ধরনের মন্তব্যগুলি পেয়ে থাকেন।শরীরের জৈব রসায়নের বিকাশ শেষ পর্যন্ত মহিলার দেহের অভ্যন্তরে এবং তার পাশাপাশি বাইরেও তার ফলাফলের ক্ষেত্র তৈরী করে।কিন্তু সেগুলির সবগুলিকেই স্বাগত জানানো হয় না।প্রারম্ভিক গর্ভাবস্থায় চোখের তলায় কালি পড়া হল সেইগুলির মধ্যে এমন একটি বিষয় যা একজন গর্ভবতী মহিলার স্ব–চিত্রকে নাশ করার প্রবণতা থাকে যেটি আপনার মধ্যে হয়ত থাকতে পারে।নিশ্চিত থাকুন,সেগুলিকে সঠিক ভাবে হ্রাস করার উপায় রয়েছে।
হ্যাঁ,আপনি গর্ভবতী হলে আপনার চোখের তলায় কালি পড়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে, যেটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি পরিচিত বিষয়,যাকে সাধারণত মেলাসমা বলা হয়ে থাকে।সাধারণ ব্যক্তির পরিভাষায় গর্ভাবস্থাকালীন মুখোশ বা প্রেগনেন্সি মাস্ক হিসেবে বর্ণিত,এটি সাধারণত হয়ে থাকে যখন ত্বকের মেলানিন মুখের উপরে জমতে শুরু করে একটি মুখোশের আদলে।বেশীরভাগ সময়েই,এই পিগমেন্টেশনটি চোখের তলার অঞ্চলে বৃদ্ধি পেয়ে শেষ হয়,যার ফলে সেখানে ডার্ক সার্কেল গড়ে ওঠে।
যদিও চোখের তলায় কালি পড়ার প্রাথমিক কারণগুলির মধ্যে একটি হল পিগমেন্টেশন,তবুও এছাড়াও আরও এক গুচ্ছ অন্যান্য কারণও আছে যেগুলি এটির জন্য বেশ ভাল মত দায়ী।
একজন গর্ভবতী মহিলার দেহে বিভিন্ন হরমোনের মাত্রার দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে,যা শরীরের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করে শেষ হয়।এর প্রভাবগুলির মধ্যে একটি রক্তবাহের উপর পড়ে এবং সেটি আরও বেশি পরিমাণে রক্ত সঞ্চালন করতে থাকে। এই কারণেও প্রচুর পরিমাণে রক্ত এই অঞ্চলে একত্রিত হয়ে জমে ওঠে,সেই কারণে অঞ্চলটি ডার্ক সার্কেলের অনুরূপ ঘন লাল হয়ে ওঠে।
একজন স্বাস্থ্যকর ব্যক্তির রক্তের রঙ সাধারণত উজ্জ্বল লাল বর্ণের হয়ে থাকে।কারণ ভাল রক্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন বহন করে এটিকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।অলসতা বা ব্যায়াম অনুশীলনের অনুপস্থিতি অথবা অভাবের কারণে অক্সিজেন সংশ্লেষ কমে গেলে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে শুরু করে।এই কারণে এর রঙ বদলে নীলচে–কাল হওয়ার দিকে যায়, যার ফলে ত্বকের উপর কালচে অঞ্চল গড়ে ওঠে।
গর্ভবতী হোক কিম্বা না হোক প্রত্যেকেই জর্জরিত হয়ে ওঠে এমন কারণগুলির মধ্যে এটি একটি। চোখের তলায় কালি পড়ার একটি অন্যতম বড় কারণ হল ঘুমের অভাবে ভোগা,যেহেতু এটির কারণে ত্বক পুনরুদ্ধার এবং পুনর্নিমিত হতে যথেষ্ট সময় পায় না।এর ফলে চোখের উপর বেশ ভাল মত চাপ পড়ে যার পরিণতিতে চোখের তলায় কালি পড়ে যায়।
যখন শরীরের কোনও একটি অঞ্চলে প্রদাহ হয়ে থাকে,তখন প্রথমেই যেটি ঘটে তা হল রক্ত প্রবাহ কমতে শুরু করে।এই কারণে ঐ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে রক্ত থেকে যায়।সমস্ত রক্ত কোষের সম্মিলিত রঙ ঘন–লালের অনুরূপ হতে পারে,যা ত্বকের উপর কাল রঙের মত দেখায়।
দেহে তরল ধারণ করে রাখা,একটি খুবই সাধারণ সমস্যা যা অনেক গর্ভবতী মহিলার মধ্যেই দেখতে পাওয়া যায়।যদিও এটির ফলে সরাসরি ডার্ক সার্কেল নাও হতে পারে,তবে এটি অবশ্যই প্রদাহ হওয়ার পূর্বাভাস।প্রদাহযুক্ত অঞ্চলগুলির কারণে নির্দিষ্ট অঞ্চলে রক্ত স্রোত বৃদ্ধি পায় যার ফলে ডার্ক সার্কেল সৃষ্টি হয়।
এক গুচ্ছ দ্রুত ঘরোয়া প্রতিকার গর্ভবতী মহিলাদের ডার্ক সার্কেল বা চোখের তলায় কালি পরার প্রতিকারে বেশ কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।
ফেস মাস্কগুলি হল সর্বোত্তম প্রতিকার যা একজন গর্ভবতী মহিলা বেছে নিতে পারেন দ্রুত ডার্ক সার্কেল হ্রাস করার জন্য এবং তার সাথে আবার পুনরায় তার ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরে পাওয়ার জন্যও।
এই মাস্কটি কেবলমাত্র ত্বকের ট্যানিং হ্রাস করা এবং মুখমন্ডলের ঔজ্জ্বল্য পুনরায় ফিরে পাওয়ার জন্যই একটি দুর্দান্ত প্রতিকার হিসেবে কাজ করে না,এর উপাদানগুলির অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি আবার একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজনও বটে।
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
কীভাবে ব্যবহার করবেন
পেঁপের উপাদানগুলি ত্বকের পিগমেন্টেশন হ্রাস করার জন্য পরিচিত,যা এটিকে মহিলাদের জন্য একটি দুর্দান্ত মাস্ক হিসেবে গড়ে তুলেছে।
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
কীভাবে ব্যবহার করবেন
শসা এবং লেবুর সমন্বয়,ব্যবহারযোগ্য একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ফেস মাস্ক হিসেবে সুপরিচিত।
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
কীভাবে ব্যবহার করবেন
এ ব্যাপারে বেশ কয়েকটি উপায় আছে যেগুলির দ্বারা আপনি গর্ভাবস্থায় ডার্ক সার্কেল বা চোখের তলায় কালি পড়ার সম্ভাবনাকে হ্রাস করতে পারেন।
ডার্ক সার্কেল বা চোখের তলায় কালি পড়া আবার থাইরয়েডের সমস্যা অথবা এমনকি অ্যানিমায়ারও একটি লক্ষণ হতে পারে।এই কারণের জন্যই এটি হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য একবার ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করিয়ে নিন।যদি ডার্ক সার্কেলগুলি জ্বালা জ্বালা করতে শুরু করে,ত্বক নমনীয় ও লাল হয়ে ওঠে এবং এমনকি রক্তপাত হতে শুরু হয়,তৎক্ষণাৎ আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
গর্ভাবস্থায় চোখের তলায় কালি পড়া সেই বিষয়গুলির মধ্যে পড়ে না যা একজন মহিলা তার জীবনের সবচেয়ে সেরা পর্যায়ে প্রত্যাশা করে থাকেন।যদিও এটি হতে পারে বিভিন্ন চিকিৎসাগত কারণের জন্য,তবে জীবনযাত্রার পছন্দগুলিও এই একই ফল প্রকাশ করতে পারে।সংশ্লিষ্ট যথাযথ ব্যায়াম অনুশীলন এবং নিজেকে উপযুক্তভাবে হাইড্রেট ও আনন্দে রাখার মাধ্যমে প্রায় কোনও রকম সময় ব্যাতীতই এই সকল ডার্ক সার্কেল বা চোখের তলার কালিগুলি বিলীন হয়ে যাবে।