In this Article
লেবুর রস হল একটি সতেজকারক পানীয় যা মুহূর্তের মধ্যে আমাদের পেটের পাশাপাশি আমাদের স্বাদকোরককেও প্রশমিত ও তৃপ্ত করে।এটি আবার গা গুলানো বমি বমি ভাব ও প্রাতঃকালীন অসুস্থতার ক্ষেত্রেও দ্রুত স্বস্তি নিয়ে আসার কারণে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি একটি আদর্শ পানীয়তে পরিণত হয়েছে।খোসা ছাড়ানো একটি লেবুর মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম,নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, ফোলেট,ভিটামিন B6,ভিটামিন C এবং রাইবোফ্লাবিনের মত উচ্চ পরিমাণে খনিজ এবং ভিটামিনগুলি।এর পুষ্টিগুণের কথা বিবেচনা করে,এটিকে অবশ্যই গর্ভবতী মহিলাদের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা উচিত।যাই হোক,তবে গর্ভাবস্থার সময়ে এটি পান করার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থা কালে লেবুর রস পান করা কি নিরাপদ?
গর্ভবতী মহিলারা বারে বারে,ক্ষেপে ক্ষেপে লেবুর রস পান করতে পারেন।কিন্তু আপনার এটি পরিমিত পরিমাণে সংযমের সাথে পান করা উচিত।বেশি পরিমাণে লেবুর রস পান করলে তা দ্রুত ডিটক্সিফিকেশনের কারণ হয়ে উঠতে পারে।সুতরাং,গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে খুব বেশিমাত্রায় এটি পান করার সুপারিশ (না এটি নিরাপদও)করা হয় না। আপনার প্রাত্যহিক ডায়েটে এটিকে অন্তর্ভূক্ত করার আগে আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে এব্যাপারে একবার আলোচনা করে পরামর্শ নিয়ে নেবেন।এর পাশাপাশি আবার ক্যানজাত বা প্রক্রিয়াজাত বাজার চলতি লেবুর রসগুলিকেও পান করা এড়িয়ে চলার পরামর্শ আপনাকে দেওয়া হল।আপনি যদি লেবুর রস পান করতেই চান,তবে সেক্ষেত্রে তা জলে ধুয়ে নিয়ে তার রস বের করে দিনের দিন তাজা পান করুন এবং এর সাথে খুব বেশি চিনি যোগ করা থেকে বিরিত থাকুন।
গর্ভাস্থায় লেবুর রস পান করার উপকারিতাগুলি
যদি সীমিত পরিমাণে পান করা হয় তবে লেবুর রস কোনও গর্ভবতী মহিলার জন্য একাধিক উপকারিতা নিয়ে আসতে পারে।এর বেশ কিছু উপকারিতাগুলির উল্লেখ নিম্নে করা হল:
1. প্রাতঃকালীন অসুস্থতার চিকিৎসায় সহায়তা করে
লেবুগুলি সাধারণত গর্ভবতী মহিলাদের দ্বারা অনুভূত গা গুলানো বমি বমি ভাবের মত সদংবেদনগুলি,যেগুলি মূলত তাদের গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে হয়ে থাকা প্রাতঃকালীন অসুস্থতার সাথে জড়িত,হ্রাস করতে সহায়তা করে।লেবুর রস পান করলে তা পিত্তের অতিরিক্ত প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং পাচন তন্ত্রে উপস্থিত জমে থাকা শ্লেষ্মা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।এটি আবার পাচনতন্ত্রে বাধা রোধ করার ক্ষেত্রেও সহায়ক।লেবু আবার এক প্রকার মাউথ ফ্রেশনার হিসেবেও কাজ করে।তবে লেবুর রস যদি আপনার ক্ষেত্রে কাজ না করে এবং আপনি যদি সেটি পান করার পরেও তীব্র বমি বমি ভাব অনুভব করে থাকেন,তবে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে যোগাযোগ করুন।
2. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
লেবু হল ভিটামিনের খুব ভাল একটি উৎস,যা রক্তবাহগুলিকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।লেবুর রস পান করলে তা রক্তবাহের নমনীয়তা এবং কোমলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে,এছাড়াও এটি আবার আভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ রোধ ও উচ্চ রক্ত–চাপের মাত্রা হ্রাস করেও অতিরিক্ত ভাবে সহায়তা করে।লেবুর রস পান করলে তা আবার আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
3. কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে স্বস্তি আনে
গর্ভবতী মহিলারা আর একটি অন্য যে সমস্যা ভোগ করেন তা হল কোষ্ঠকাঠিন্য। তবে চিন্তার কিছু নেই কারণ প্রতিদিন এক গ্লাস করে লেবুর রস পান করলে তা কোষ্ঠকাঠিন্যকে দূরে ঠেলে রাখে!ভাল,যেহেতু লেবু লিভার থেকে লিভার মধ্যস্থ দূষিত পদার্থগুলি অপসারণে সহায়তার দ্বারা সেটিকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে তাই লেবু খাওয়া আবার যকৃতের স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল,অতএব লেবু আপনাকে যকৃতের কার্যের উন্নতি সাধন করার সাথে সাথে আপনার স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।
4. বদহজম নিরাময়ে সাহায্য করে
গর্ভাবস্থায় বদ হজমের অভিজ্ঞতা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়,পেটকে প্রশমিত করার একটি কার্যকর প্রতিকার হল লেবু–জল পান করা।লেবুর জল পান করলে তা যথাযথ হজমে সাহায্য করতে পারে এবং পেটের যেকোনও সমস্যাকে সহজ করে তুলতে পারে।
5. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে
জ্বর,সাধারণ সর্দি–কাশি এবং কিছু বিশেষ ধরণের জ্বরের মত সাধারণ সংক্রমণগুলি লেবু–জল পান করার দ্বারা প্রতিরোধ করা যেতে পারে বলে জানা যায়।ভিটামিন C এর একটি সমৃদ্ধ উৎস হওয়ার কারণে লেবু দেহের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারে এবং তার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আমাদের সহায়তা করে।
6. হাড়ের শক্তি বজায় রাখে এবং উন্নতি ঘটায়
লেবু মধ্যস্থ ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম উপাদানগুলি গর্ভস্থ শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে এবং তার বিকাশে সাহায্য করতে পারে।এটি ছাড়াও,লেবুর জল আবার আপনার অনাগত শিশুকে অন্যান্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজও সরবরাহ করে থাকে।লেবুর মধ্যে আবার আরেকটি যে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে তা হল পটাসিয়াম, যা গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকোষের পরিচর্যাতেও সাহায্য করতে পারে।
7. জননাঙ্গ সংক্রান্ত সংক্রমণ গুলি প্রতিরোধে সাহায্য করে
লেবুতে মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য আছে বলে জানা যায়,যা কিডনির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং এর ক্রিয়া স্বাভাবিক করে।আর তার ফলে জননাঙ্গ এবং মূত্রাশয় অঞ্চলে সংক্রমণের সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
8. দেহের pH মাত্রা বজায় রাখে
লেবু–জল সাস্থ্যকর ক্ষারত্ব অর্জন করে দেহের pH এর মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।হ্যাঁ,লেবু হল অ্যাসিডধর্মী,তবে সেটি যখন লেবুর রস অথবা জ্যুসের মাধ্যমে আমাদের অন্ত্রে প্রবেশ করে তখন তা ক্ষারীয় হয়ে যায়।লেবুর দ্বারা রয়ে যাওয়া ক্ষারীয় অবশিষ্টগুলি এর অ্যাসিডিক লক্ষণগুলি হ্রাস করতে সাহায্য করে।মানব রক্তের pH হল সামান্য ক্ষারধর্মীয় যার পরিধি 7.3-7.45এর মধ্যে।যখন এই pH এর স্তরগুলি অ্যাসিডধর্মীতে রূপান্তরিত হয়,তখন ক্ষতিপূরণের জন্য দেহ দাঁত এবং হাড়গুলি থেকে ক্ষারত্ব ধার করার দ্বারা এক বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ক্রিয়া সম্পাদন করে।লেবুজল পান করার দ্বারা এটি এড়ানো যেতে পারে,যা দৈহিক ক্ষারের স্তরকে সংরক্ষণ করে রাখে এবং ভ্রূণের বিকাশ প্রক্রিয়ার সময় তা সহজেই উপলব্ধ করে তোলে।রক্তের pH এর মাত্রাটি আবার কোষগুলিতে অক্সিজেনের সহজলভ্যতাকেও নির্দেশ করে।ভ্রূণের বিকাশের জন্য কোষগুলি যথাযথ ভাবে অক্সিজেপূর্ণ থাকা খুবই জরুরি।
9. পা ফোলা থেকে স্বস্তি আনে
ওডেমা অথবা পা ফুলে যাওয়া গর্ভাবস্থায় হয়ে থাকা স্বাভাবিক ব্যাপার,কিন্তু তাই বলে এটি কখনই বলা যায় না যে,এটি যন্ত্রণাপূর্ণ নয়।এইরকম অবস্থাটি মূলত ভীষণ অস্বস্তিকর এবং যন্ত্রণা যুক্ত হয়ে থাকে।যাই হোক, তবে ইষৎ উষ্ণ জলের সাথে এক চামচ লেবুর রস সেবন করার মাধ্যমে এটির চিকিৎসা করা যেতে পারে।লেবুর রস যন্ত্রণা হ্রাস করতে এবং পা ফোলা কমাতে সাহায্য করে।
10. ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে
গর্ভাবস্থায় হাইড্রেট থাকা ভীষণ জরুরি কারণ এটি বিভিন্ন জটিলতা গুলি দেখা দেওয়া থেকে দেহকে রক্ষা করে,যেমন মাথা ধরা,বমি বমি ভাব,খিচুনি,তন্দ্রাচ্ছন্ন ও ঝিমুনি ভাব এবং ওডেমা বা পা ফুলে যাওয়া।আপনি যখনই জলপান করুন না কেন,তা সর্বদাই আপনার দেহের জন্য সহায়ক হয়,আর লেবুজল পান করলে তা দেহে একটা চনমনে তাজা ভাব নিয়ে আসার মাধ্যমে আপনার শারীরিক অনুভূতিতে একটা পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।লেবুর জল বেশ সুস্বাদু এবং তা আপনাকে হাইড্রেট রাখার ক্ষেত্রেও সহায়তা করে।
11. প্রসবকালীন শ্রমবেদনার সময় চাপ হ্রাস করে
প্রসবকালীন শ্রমবেদনাটি বেশ চাপ যুক্ত এবং যন্ত্রণাদায়ক একটি প্রক্রিয়া হতে পারে।মধুর সাথে লেবুজল পান করলে তা প্রসবকালীন শ্রমের সময় চাপ হ্রাস করতে সাহায্য করবে। এই প্রতিকারটিকে কার্যকর করে তোলার জন্য আপনার মধুর সাথে লেবুজল পান করা শুরু করা উচিত গর্ভাবস্থার পঞ্চম মাস থেকে।তবে যাইহোক না কেন সব কিছুর শেষে আপনাকে আবারও এই পরামর্শই দেওয়া হচ্ছে যে গর্ভাবস্থায় লেবুজল পান করা শুরু করার আগে আপনি অবশ্যই একবার আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করে তাঁর পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
কীভাবে লেবু–জল প্রস্তুত করতে হবে
গর্ভাবস্থায় লেবুর রস পান করলে তা শরীরের জন্য বেশ সতেজদায়ক হয়ে উঠতে পারে,বিশেষ করে যদি আপনি গ্রীষ্মকালে গর্ভবতী হয়ে থাকেন।কিন্তু তাই বলে আপনি গর্ভাবস্থায় কখনই বাইরে থেকে অতিরিক্ত চিনি ও প্রিজারভেটিভ মিশ্রিত বাজার চলতি ক্যানে প্রাপ্ত জল ভরা রেডিমেড লেবুর রস পান করতে পারেন না।গর্ভাবস্থায় আপনার সর্বদাই তাজা লেবু থেকে নিংড়ে বের করা টাটকা রসই পান করা উচিত।আর তাই এখানে সে রকমই দুটি রেসিপি দেওয়া হল
1. লেবুর রস
এখানে বলা হল কীভাবে আপনি লেবুর রস প্রস্তুত করবেন
- একটি লেবু নিয়ে তাকে প্রথমে ভালভাবে ধুয়ে অর্ধেক করে দুই টুকরো করে নিন।এবার একটি বাটির মধ্যে ঐ কাটা দুই টুকরোর মধ্যে একটি টুকরোকে নিয়ে ভালভাবে নিংড়ে তার রস বের করে নিন।
- এবার সেই লেবুর রসটিকে এক গ্লাস পরিষ্কার জলের সাথে যোগ করে ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
- এর সাথে চিনির বদলে বরং মধুর মত প্রাকৃতিক মিষ্টি যোগ করে তার মধ্যে কিছুটা মিষ্টতা নিয়ে আসুন এবং সেটিকে পান করুন।
2. আদা এবং লেবু–চা
আদা এবং লেবু–চা গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব এবং প্রাতঃকালীন অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করে তা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। গর্ভাবস্থায় সেবন করার মত এটি একটি ভাল এবং স্বাস্থ্যকর পানীয়।
- এক গ্লাস পানীয় জলকে ফুটিয়ে নিন।
- এক ইঞ্চি মত আদা নিয়ে তার খোসা ছাড়িয়ে সেটিকে থেঁতো করে নিন।
- একটি লেবু নিয়ে তাকে টুকরো করে কাটুন।এবার ঐ কাটা লেবুর দুইটি টুকরো এবং আদা থেঁতোকে ফুটানো জলের সাথে যোগ করুন।
- এবার মিনিট দশেকের জন্য সেটিকে ঢাকা দিয়ে একভাবে রেখে দিন।তারপর মিশ্রণটি ভালভাবে নাড়িয়ে নিন এবং আপনার প্রস্তুত হয়ে যাওয়া আদা–লেবুর চায়ে চুমুক দিন।
গর্ভাবস্থায় লেবুর রস সেবন করার সময় অবলম্বিত সাবধানতাগুলি
লেবুর রস পান করা নিরাপদ যদি সেটি সীমিত পরিমাণে সেবন করা হয়ে থাকে। খুব বেশি মাত্রায় সেবন করলে এটি আপনার দেহের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।এখানে এমন কিছু সাবধানতার কথা উল্লেখ করা হল যেগুলি গর্ভাবস্থায় লেবুর রস পান করার ব্যাপারে আপনার মনে রাখা উচিত।
- লেবুর অ্যাসিড ধর্মীতা আপনার দাঁতের এনামেলে প্রভাব ফেলতে পারে।যেকোনও রকম দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য লেবু জল সেবন করার পর ভালভাবে কুলকুচি করে আপনার মুখটিকে ধুয়ে নেওয়ার এবং গার্গেল করার জন্যই আপনাকে পরামর্শ দেওয়া হল।
- আপনি যদি লেবুর রস পান করা শুরু করতে চান তবে শুরুতে অল্প পরিমাণে সেবন করে পরীক্ষা করে দেখে নিন যে,এটি থেকে কোনও রকম গ্যাসের সমস্যা বা গলা বুক জ্বালা অম্বলের সমস্যা দেখা দেয় কিনা।
- কেবল মাত্র রসাল তাজা লেবুর টাটকা রসই সেবন করুন।
- একটা গোটা লেবুর রস কিছু কিছু গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে খুব বেশি হয়ে যেতে পারে, তাই গর্ভাবস্থায় পান করার জন্য একটা সম্পূর্ণ গোটা লেবুর পরিবর্তে অর্ধেক লেবুর রস পান করার এবং সেটিকে গাঢ় অবস্থায় পান করা এড়িয়ে চলারই পরামর্শ আপনাকে দেওয়া হয়।
- লেবুর রসকে ইষদুষ্ণ জলে বিপরীতে ফুটন্ত জলের সাথে মিশিয়ে নিন।এটি বলা হয়ে থাকে যে,ফুটন্ত জল লেবুর প্রভাবকে দুর্দান্ত ভাবে হ্রাস করে থাকে।
- শুরুতে প্রত্যহ একটি লেবুর চার ভাগের এক ভাগ নিয়ে 0.4-0.5 লিটার জলের সাথে মিশিয়ে সেবন করুন।এরপর ধীরে ধীরে সেটি বাড়িয়ে তুলতে পারেন একদিনে দুই থেকে তিন গ্লাস পর্যন্ত।
লেবু–জল পান করার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি
যদিও লেবু জল পান করা যেকোনও গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে উপকারী,এর আবার বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও আছে।আপনার নিয়মিত ডায়েটে লেবু–জল অন্তর্ভূক্ত করার আগে আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের একবার পরামর্শ নিয়ে নেওয়ার পরামর্শই আপনাকে দেওয়া হয়।এর বেশ কিছু সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উল্লেখ এখানে করা হল।
1. গর্ভাবস্থাকালীন ব্যাধিগুলি এবং হৃদয় জ্বলন বা গলা–বুক জ্বালা অম্বল
গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভাবস্থাকালীন সমস্যাগুলি এবং বুক–জ্বালা অম্বল অনুভব করার সম্ভাবনা রয়েছ,বিশেষ করে তাদের গর্ভাবস্থার শেষের পর্যায়গুলিতে।লেবু মধ্যস্থ উচ্চমাত্রার সাইট্রিক অ্যাসিড আবার মাঝে মধ্যে এই অবস্থাগুলিকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।এসব ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং উপসর্গগুলি পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত লেবু জল পান করা থেকে বিরত থাকাই আপনার উচিত
2. দাঁতের সমস্যা
গর্ভাবস্থায় দাঁত এবং হাড়ের ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা থাকে।লেবু মধ্যস্থ উচ্চমাত্রার সাইট্রিক অ্যাসিড এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে,যার ফলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং দাঁতের অন্যান্য সমস্যাগুলির সৃষ্টি হয়।এই ধরণের কোনও রকম দাঁতের সমস্যা দেখা দিলেই আপনার দন্ত চিকৎসকের সাথে দেখা করে পরামর্শ নিন এবং আপনার দাঁতের গঠণ এবং বর্ণের কোনও পরিবর্তন না হওয়ার বিষটি নিশ্চিত করুন।নিয়মিত ভাবে প্রতিদিন খুব বেশি মাত্রায় লেবু জল পান করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শই আপনাকে দেওয়া হয়।
3. সর্দিকাশি
গর্ভাবস্থায় ঠাণ্ডা অথবা কনকনে ঠাণ্ডা লেবুর রস পান করার ফলে ঠাণ্ডা লেগে সর্দি কাশি হতে পারে।তাই সামান্য গরম বা ইষদুষ্ণ অথবা ঘরের তাপমাত্রায় রাখা লেবুর রস পান করাই সব চেয়ে ভাল,বিশেষ করে শীতের মাস গুলিতে।
গর্ভাবস্থার নয়টি মাস হল প্রচুর চড়াই–উৎরাইয়ের পথ।এই সময় আপনার সর্বদা হাসিখুশি ও আনন্দে থাকা প্রয়োজন,যদিও মুহূর্তগুলি মটেই সে অর্থে খুব একটা সুখের হয় না।গর্ভাবস্থায় আপনি যা কিছুই খাবেন তার সবটাই আপনার স্বাস্থ্যের থেকে আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলবে তা সে ভালই হোক কিম্বা মন্দ।সুতরাং গর্ভাবস্থায় আপনার খাদ্যাভ্যাসের প্রতি আপনার সতর্ক থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিক্ষেত্রের মত এবারেও আপনাকে এই পরামর্শই দেওয়া হচ্ছে যে গর্ভাবস্থায় পান করার জন্য লেবু জল আপনার পক্ষে নিরাপদ কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করে একবার তাঁর পরামর্শ নিয়ে নিন।অধিকাংশ গর্ভবতী মহিলারা প্রথম ত্রৈমাসিকে তাদের মধ্যে হওয়া অস্বস্তি কাটিয়ে ওঠার জন্য একটি টনিক হিসেবে লেবু জল সেবন করেন।চাপ সৃষ্টি করতে পারে এমন যেকোনও পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য লেবু জল পানের যেকোনও সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি সম্পর্কে নিজেকে ভালভাবে অবগত করে তুলুন।লেবু কোনও ওষুধের সাথে কোনও রকম নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া করে না,অতএব চিন্তা করবেন না।আপনার ডাক্তারবাবু এবং পুষ্টিবিদের সাথে আলোচনার দ্বারা নিশ্চিত হয়েই সুস্বাস্থ্যের পথে লেবু জলের পেয়ালায় আস্বাদের চুমুক দিন।