প্রজননে সহায়তার জন্য 11 টি ভিটামিন এবং খনিজ

প্রজননে সহায়তার জন্য 11 টি ভিটামিন এবং খনিজ

আপনি যদি একটি পরিবার গড়ার পরিকল্পনা শুরু করে থাকেন,তবে আপনি নিশ্চই এর মধ্যে বেশ কয়েকটি গর্ভাবস্থা বা প্যারেন্টিং-এর ম্যাগাজিনও সাবস্ক্রাইব করে রেখেছেন এবং গর্ভাবস্থার ব্যাপারে সমস্ত তথ্য একত্রিত করে সংগ্রহ করার জন্য ইন্টারনেটটিও ভাল করে ঘেঁটে তা খুঁজে রেখেছেন।আপনি এখন নিশ্চই এই পৃথিবীতে নতুন একটি জীবন আনার জন্য গুরুতর চিন্তাভাবনায় ব্যস্ত,আর তার জন্য এই সময় আপনার শরীরকে প্রস্তুত করাও খুবই জরুরী।একটি শিশু গড়ে তোলার জন্য মহিলা এবং পুরুষ উভয়েরই প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলি গ্রহণ করা উচিত।ভিটামিন হল আমাদের পুষ্টি গ্রহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং সেগুলি দেহের বিভিন্ন কার্যে,বিশেষ করে জনন কার্যে একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।আপনি যদি সন্তানধারণের চেষ্টা করে থাকেন,আপনি কিছু ভিটামিন গ্রহণের কথা বিবেচনা করতে পারেন।

গর্ভাবস্থা এবং শিশু লালনের জন্য যেমন আপনার দেহকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন ঠিক তেমনই সন্তান ধারণের জন্যও আপনার আবেগ এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া উচিত।সন্তান ধারণের প্রস্তুতির জন্য পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ গ্রহণ করা দরকার। এখানে এমন কিছু ভিটামিন এবং পুষ্টির উল্লেখ করা হল যেগুলি গর্ভধারণের জন্য দম্পতিরা গ্রহণ করা শুরু করতে পারেন।যাইহোক, বুদ্ধিমানের মত কোনও প্রস্তাবিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এই সকল পরিপূরকগুলি গ্রহণের ক্ষেত্রে সেগুলি ভালভাবে গবেষণা করে তার উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি সম্পর্কে অবগত হয়ে ওঠার পরামর্শ আপনাকে দেওয়া হল।

প্রজননে সহায়তা করতে পারে এমন কিছু ভিটামিন এবং খনিজের তালিকা

ভিটামিন এবং খনিজগুলি হল মানব দেহের ক্রিয়া মসৃণভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জৈব যৌগ।একটি আদর্শ ডায়েটে অল্প পরিমাণে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলিই অন্তর্ভূক্ত হওয়া উচিত কারণ সেগুলি দেহ দ্বারা অতিরিক্ত পরিমাণে সংশ্লেষিত হতে পারে না।যদি সেগুলি আপনার গ্রহণ করা সাধারণ খাদ্যগুলির মাধ্যমে আপনার দেহে প্রবেশ না করে থাকে তবে সেক্ষেত্রে বাইরে থেকে অতিরিক্তভাবে গ্রহণ করা বলবৃদ্ধিকারী ফর্টিফায়েড বা পরিশোধিত খাদ্য এবং পরিপূরকগুলি সহায়তা করতে পারে।আপনার গর্ভবতী হয়ে ওঠার সম্ভাবনাকে আরও উন্নত করে তুলতে আপনি অনেক কিছুই করতে পারেন তবে আপনার ডায়েটে এই সকল ভিটামিন এবং খনিজগুলিকে অন্তর্ভূক্ত করা হল সেগুলির মধ্যে সবচেয়ে সহজ সমাধান।

1. ফোলিক অ্যাসিড

গর্ভবতী হতে চাওয়া যেকোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে অবশ্যই এটি নিশ্চিতভাবে গ্রহণ করা প্রয়োজন। আবার B9 হিসেবে পরিচিত ফোলিক অ্যাসিডটি গর্ভাবস্থার ন্যায় বিষয়টির ক্ষেত্রে একটি বিশেষ অবদান রাখে বা এ ব্যাপারে এটি একটি ‘সুপার হিরো’ও বটে।একজন মহিলার প্রজননকালীন বয়সে এবং গর্ভধারণের জন্য চেষ্টা করার সময় প্রতিদিন অবশ্যই 400 mcg ফোলিক অ্যাসিড গ্রহণ করা প্রয়োজন।এটি হল একটি B-কমপ্লেক্স ভিটামিন যা দেহে লোহিত রক্ত কণিকা গঠণ করতে সহায়তা করে।এটি মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতার ক্ষেত্রে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং এটি নিউরাল টিউবের ত্রুটির(শিশুর মেরুদন্ডের একটি সমস্যা)সম্ভাবনা হ্রাস করে।পুরুষরাও এই ভিটামিনটি গ্রহণ করতে পারেন কারণ এটি তাদের স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু উৎপাদনে সহায়তা করে থাকে।ফোলিক অ্যাসিড প্রাকৃতিক রূপের পাশাপাশি সিন্থেটিক ভিটামিন রূপেও উপলভ্য।আপনি যদি এর প্রাকৃতিক বিকল্পগুলির খোঁজ করে থাকেন,আপনি লেবু জাতীয় সাইট্রাস ফ্রুট,সম্পূর্ণ শস্য,সবুজ শাক-সবজিগুলি গ্রহণ করতে পারেন কারণ এগুলি সবই হল ফোলিক অ্যাসিডের খুব ভাল উৎস।গর্ভধারণের চেষ্টায় রত দম্পতিদের ক্ষেত্রে গর্ভধারণ করার কমপক্ষে এক বা দুই মাস আগে থেকে মহিলাকে অবশ্যই ‘ফলিক অ্যাসিড’ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করতে হবে।

ফোলিক অ্যাসিড

2. ভিটামিন D

ভিটামিন D এবং প্রজনন একে অপরের সাথে বেশ ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত,স্বাভাবিক মাত্রায় ভিটামিন D গ্রহণের সাথে মহিলাদের স্বাভাবিকভাবেই গর্ভধারণের সম্ভাবনা থেকে থাকে।এটি একটি ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন যা প্রজনন হরমোনগুলির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।ভিটামিন D পাওয়া যেতে পারে বল বৃদ্ধিকারী দুগ্ধজাত পণ্য,স্যালমন, ম্যাকেরেল,টুনা,কড লিভার অয়েল ইত্যাদির মধ্যে।সকালের দিকে আপনার সঙ্গীর সাথে একটা ছোট্ট প্রাতঃভ্রমণ আপনার দেহে সূর্যারশ্মি পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে,যা হল ভিটামিন D এর খুব ভাল একটি উৎস।

3. জিঙ্ক

পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই প্রজনন ক্ষমতার উন্নয়নের ক্ষেত্রে জিঙ্ক হল একটি অপরিহার্য খনিজ।জিঙ্ক মহিলাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় তবে এটি আবার পুরুষদের জন্যও সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।জিঙ্ক শুক্রাণুর গুণমান এবং সক্রিয়তার উন্নয়নেও সহায়তা করে।পুরুষদের জন্য সুপারিশকৃত জিঙ্কের দৈনিক ডোজটি হল 11 mg আর মহিলাদের জন্য 8 mg.ঝিনুক উচ্চ মাত্রায় জিঙ্কে সমৃদ্ধ,তবে দম্পতিরা আবার পর্যাপ্ত জিঙ্ক পেতে সম্পূর্ণ শস্য বা হোল গ্রেইন,শিম্ব জাতীয় ডাল,মটরশুঁটি,কাঁকড়া এবং গলদা চিংড়ির ন্যায় খাদ্যগুলিকেও গ্রহণ করতে পারেন।

4. আয়রণ

গর্ভাবস্থা একজন মহিলার উপর অতিরিক্ত বোঝা চাপাতে পারে এবং তার মধ্যে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে।তবে শিশু গঠণের প্রক্রিয়াকালে উচ্চ মাত্রায় আয়রণ গ্রহণ একজন মহিলার গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে উন্নত করতে পারে এবং গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে তাকে সহায়তা করে।দেহের মধ্যে নিম্ন মাত্রায় আয়রণের উপস্থিতির কারণে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা দেখা দেয় যা আবার গর্ভধারণের সম্ভাবনার মাত্রাকেও নিম্ন করে তোলার পিছনে অবদান রাখে। সুতরাং আপনি যদি গর্ভধারণের পরিকল্পনা করা থাকেন,তবে গর্ভধারণের আগে আপনার দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রণ গ্রহণ করার ব্যাপারটি নিশ্চিত করুন।দেহে আয়রণের মাত্রা পরীক্ষা করার জন্য একজন মহিলার অবশ্যই প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলি করানো প্রয়োজন এবং কোনও রকম ঘাটতির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিপূরকগুলি গ্রহণ করা আবশ্যক।আয়রণ দেহে রক্তের মাত্রা গড়ে তোলে এবং প্রজননে সহায়তা করে এছাড়াও আবার ডিম্বোস্ফোটনের ভারসাম্য বজায় রাখে।মাংস,টমেট,বীট,ব্রকোলি,পালং শাক এবং কুমড়ো খাওয়ার মধ্য দিয়ে দেহে আয়রণ গ্রহণ করা যেতে পারে এছাড়াও আবার যদি দেহে আয়রণের মাত্রা খুব কম হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আয়রণের ঘাটতি পূরণেরে জন্য সংশ্লেষিত ট্যাবলেট রূপেও দেহের মধ্যে আয়রণ পাওয়া যেতে পারে।

আয়রণ

5. ভিটামিন E

মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভিটামিন E-ও অপরিহার্য।এ ছাড়াও এটি আবার পুরুষদের মধ্যেও তাদের শুক্রাণুর গুণমানকে উন্নত করে তোলে।এটি নিষেকের পর ডিম্বাণু এবং শুক্রাণু DNA এর একীভবন হওয়াকে রক্ষা করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।ভিটামিন E হল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহকে মুক্ত মূলকগুলি থেকে রক্ষা করে।আর এই মুক্ত মূলকগুলি দেহস্থ কোষগুলির ক্ষতিসাধন করতে পারে এবং পরিণাম স্বরূপ শরীরে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে ওঠে।(এটি কাদের ক্ষেত্রে হয় পুরুষ নাকি মহিলা?)পুরুষদের মধ্যে,ভিটামিন E নিম্ন মাত্রায় থাকার ফলে তাদের শুক্রাশয়ের ক্ষতি হতে পারে,পরিণতিতে তাদের শুক্রাণু উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে।আর মহিলাদের মধ্যে ভিটামিন E এর অভাব হলে তা তাদের ডিম্বোস্ফোটনে বাধা সৃষ্টি করে এবং তার ফলে তাদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে।আপনি আপনার প্রতিদিনের খাদ্যে বিভিন্ন ধরণের বীজ যেমন সূর্যমুখীর বীজ,কুমড়োর বীজ অন্তর্ভূক্ত করার মাধ্যমে আপনার দেহে ভিটামিন E মাত্রা বাড়াতে পারেন।এর জন্য আবার আপনি আমন্ড বাদাম,হ্যাজেলনাট এবং বাদামের মাখন বা পিনাট বাটারও খেতে পারেন। আবার এমনকি কিউয়ি এবং আমের মত ফলগুলিও ভিটামিন E তে সমৃদ্ধ হওয়ায় আপনি সেগুলিও স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করতে পারেন আপনার দেহে আয়রণের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য।পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই এইসকল খাদ্যগুলি গ্রহণ করতে পারেন তাদের দেহে ভিটামিন E চাহিদা পূরণার্থে।যাইহোক,তবে যতক্ষন না ডাক্তারবাবু পরামর্শ দেন বা তাঁর পরামর্শ ব্যতীত ভিটামিন E এর পরিপূরকগুলি সেবন করার সুপারিশ করা হয় না।

6. ভিটামিন B

B গ্রুপের সকল ভিটামিনগুলিই প্রজননের জন্য অপরিহার্য।সেগুলির মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে থিয়ামিন(B1),রাইবোফ্লাভিন(B2),পাইরিডক্সিন(B6),এবং সায়ানোকোবালামিন (B12)।B গ্রুপের সকল ভিটামিনগুলিই গর্ভধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে কারণ এগুলি ডিম্বোস্ফোটনের সময় ডিম্বাণু মুক্ত করার ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়কে সাহায্য করে থাকে।ভিটামিন B6 একটি মহিলার দেহে প্রোজেস্টেরন মাত্রার ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে এবং তাছাড়াও আবার এটি লুটিয়াল দশারও উন্নতি করতে পারে,যার ফলে সেটি ঋতুস্রাব এবং ডিম্বোস্ফোটনের মাঝের সময়টিকে নিশ্চিত করে যেটি হল সফল গর্ভাবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ।ভিটামিন B12 আবার পুরুষদের শুক্রাণু উৎপাদনের গুণমান বৃদ্ধি করা এবং হরমোন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হিসেবে পরিচিত।B গ্রুপের সকল প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলি ছোলা,সম্পূর্ণ শস্য,সবুজ শাক-সবজি,টুনা,কলা, ঝিনুক,ক্যাভিয়ার(সামুদ্রিক মাছের ডিম),ফুলকপি,সরষে শাক,দই এবং ডিমের মধ্যে পাওয়া যায়।

7. বিটা ক্যারোটিন

মানব দেহ বিটা ক্যারোটিনকে ভিটামিন A (রেটিনল) তে রূপান্তর করে, যা ত্বক এবং চুলের জন্য দুর্দান্ত।এটি আবার স্বাস্থ্যকর দৃষ্টিশক্তি, শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি এবং অনাক্রম্যতার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে, এটি একটি হরমোন নিয়ন্ত্রক এবং গর্ভপাত রোধে সহায়তা করে। গাজর,ফুটি, মিষ্টি আলু, পাতা কপি,বাটারনাট স্কোয়াশ এবং ব্রোকলিতে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যরোটিন পাওয়া যায়।

8. ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড

প্রজনন এবং গর্ভাবস্থার জন্য পরম সুপারখাদ্য,ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিডগুলি চূড়ান্ত মাত্রায় আবশ্যক।এগুলি মহিলাদের শরীরে ডিম্বাণুগুলি মুক্ত করতে,জরায়ুতে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করতে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।শুধু এটুকুই নয়, গর্ভধারণের পরে ভ্রূণের মস্তিষ্ক এবং বুধ্যঙ্কের বিকাশেও এটি সাহায্য করে।যদিও সব ভিটামিনের মধ্যেই ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে না,তবে কেউ এটিকে পরিপূরক হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।ওমেগা 3 সমৃদ্ধ খাদ্যগুলি হল চিয়া বীজ,শণ বীজ, অ্যানচাভি(হেরিং জাতীয় ছোট মাছ যা স্বাদে গন্ধে কড়া এবং এই জাতীয় মাছ দিয়ে চাটনী জাতীয় খাদ্য প্রস্তুত করা হয়),হেরিং(এক ধরণের ক্ষুদ্র সামুদ্রিক মৎস বিশেষ),আখরোট,কড লিভার তেল,শন বীজের তেল,সার্ডিন ইত্যাদি।আপনি যদি মাছের স্বাদ পছন্দ না করেন সেক্ষেত্রে আপনি আবার ট্যাবলেট আকারে এর পরিপূরকগুলিকেও গ্রহণ করতে পারেন আপনার ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিয়ে।ওমেগা 3 এর মধ্যে দুটি অ্যাসিড থাকে যেগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,একটি হল DHA এবং অপরটি হল EPA.শরীরে DHA এর মাত্রা কম থাকার কারণে আবার অকাল প্রসবের সম্ভাবনা থাকে,জন্মের সময় শিশুর কম ওজন হয় এবং বাচ্চাদের অতি সক্রিয়তা ও বেপরোয়া হয়ে ওঠার প্রবণতাগুলি থাকে।

ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড

9. সিলেনিয়াম

এটি একটি অ্যান্টঅক্সিডেন্ট যা কোষ ধ্বংসকারী মুক্ত মূলকগুলি থেকে ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুকে রক্ষা করতে সহায়তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।সিলেনিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা পুরুষদের মধ্যে শুক্রাণুর গতিশীলতা এবং মহিলাদের মধ্যে ইস্ট্রোজেন বিপাক উন্নীত করে।এটি পুষ্টির একটি শক্তিশালী উৎস এবং সবুজ শাক-সবজি,ব্রাজিলিয়ান বাদাম,সম্পূর্ণ শস্য ও মাছের মধ্যে পাওয়া যায়।

10. কোএনজাইম Q10

এই পরিপূরকটি গ্রহণ করলে তা পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই তাদের প্রজনন ক্ষমতার উন্নতিতে সাহায্য করে।এটি ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিনের মত আরেকটি যৌগ যা মানবদেহে প্রাকৃতিকভাবেই হয়ে থাকে।এটি যদি শরীরের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন না হয় সেক্ষেত্রে খাবারের সাথে অবশ্যই গ্রহণ করা প্রয়োজন।এটি কোষের ক্রিয়াকলাপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্পাদান একটি উপাদান।এটি পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য পরিচিত এবং প্রতিদিনের ডোজ হিসেবে 30-200 mg সারা দিনের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।এটি মাংস,চর্বিযুক্ত মাছ,সম্পূর্ণ শস্যের মধ্যে পাওয়া যায়।

11. L-কার্নিটাইন

এটি শুক্রাণু এবং শুক্রাণুর পূর্ণতার জন্য একটি পরম শক্তির উৎস,এটি আবার শুক্রাণুর সক্রিয়তা বৃদ্ধির জন্যও ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।এটি হল অ্যামাইনো অ্যাসিডের মত একটি যৌগ যার প্রধান কাজ হল শক্তি উৎপন্ন করা।দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যগুলির মধ্যে এটি উচ্চ মাত্রায় পাওয়া যায়।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

1. গর্ভবধারণে সাহায্যের জন্য আপনি কি প্রজননকারী পরিপূরকগুলি গ্রহণ করতে পারেন?

অবশ্যই হ্যাঁ,প্রজননকারী পরিপূরকগুলি গর্ভধারণে সাহায্যের জন্য গ্রহণ করা যেতে পারে কিন্তু শুধুমাত্র আপনার ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নেওয়ার পরেই।

2.পুরুষদের জন্য শ্রেষ্ঠ প্রজননকারী পরিপূরকগুলি কি?

যদিও জিঙ্ক খনিজটি পুরুষদের মধ্যে শুক্রাণুর সক্রিয়তা উন্নত করার জন্য সবচেয়ে ভাল কাজ করে,তবুও তাদের শুক্রাণুর সংখ্যা এবং সক্রিয়তা দুটোই বাড়ানোর ক্ষেত্রে তারা আবার L-কার্নিটাইন এবং L-আর্গিনিন-ও সেবন করতে পারেন।

আপনি যদি গর্ভধারণের চেষ্টা করে চলেন,উপরে উল্লিখিত ভিটামিন এবং খনিজগুলি গ্রহণ করলে তা আপনাকে শুরু করার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।আপনি আবার এগুলির পরিপূরকগুলিকেও গ্রহণ করতে পারেন,তবে এই সকল ভিটামিন এবং খনিজের যেকোনও একটিও সেবন করা শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিন।এগুলির ডোজ এবং নিরাপত্তার ব্যাপারেও আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে আলোচনা করে জেনে নিন!