প্রসব পরবর্তী ব্যায়াম: প্রসবের পরে করার শারীরিক কসরত

প্রসব পরবর্তী ব্যায়াম

In this Article

সন্তানের জন্মের পরে আপনার শরীরকে আবার আগের আকারে ফিরিয়ে আনা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি কেবল আপনার স্বাস্থ্যকেই উন্নত করে না, প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতাও প্রতিরোধ করে। সৌভাগ্যক্রমে, একটি ভাল পরিকল্পিত ব্যায়ামের সময়সূচীর সাহায্যে প্রসবের পরে আগের অবস্থায় ফিরে আসা খুব কঠিন নয়। যাইহোক, আপনার কোন ধরনের প্রসব হয়েছে তার উপর নির্ভর করে, একটি শারীরিক কসরতের সূচী বেছে নেওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভাল।

গর্ভাবস্থার পরে আপনার ফিটনেস পুনরুদ্ধার করা গুরুত্বপূর্ণ এবং ডায়েট ও ব্যায়ামের একটি বুদ্ধিদীপ্ত সংমিশ্রণ আপনাকে অল্প সময়ের মধ্যে আপনার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারে। ব্যায়ামের সময় আপনি যদি রক্তক্ষরণ বা মাথা ব্যাথার মত অস্বস্তি বোধ করেন তবে রুটিন বন্ধ করুন এবং অবিলম্বে আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞর সাথে কথা বলুন।

শিশুর জন্মের পরে কখন আপনি ব্যায়াম শুরু করতে পারেন?

জন্মের পরে ওজন কমানোর জন্য সেরা উপায় হল ব্যায়াম করা এবং ডায়েটের উপর ভালো নিয়ন্ত্রণ রাখলে, আপনি বেশী ঝামেলা ছাড়াই আগের আকৃতিতে ফিরে আসতে পারেন। একটি ব্যায়াম কর্মসূচী শুরু করার সময়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সিদ্ধান্তটি সাবধানে নেওয়া উচিত। আপনার ডাক্তার বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সাধারণত আপনার ছয়-সপ্তাহ-ব্যাপী অপরিহার্য প্রসব-পরবর্তী-চেক-আপ সম্পন্ন করার পরে ধীরে ধীরে ব্যায়াম শুরু করতে বলবেন।

আপনি যদি আপনার গর্ভাবস্থায় সঠিকভাবে ব্যায়াম করে থাকেন এবং আপনার স্বাভাবিক প্রসব হয়ে থাকে, তবে হাঁটা এবং প্রসারিত করার মতো হালকা ব্যায়াম অনুমতিযোগ্য। তবে, আপনি অতিরিক্ত ব্যায়াম যেন না করে ফেলেন সে ব্যাপারে সতর্ক হবেন, বিশেষ করে যদি আপনার শরীর ব্যায়াম রুটিনের সাথে পরিচিত না হয় এবং আপনি গর্ভাবস্থায় এটি না করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে, ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করা এবং কোনও প্রসব পরবর্তী ব্যায়াম শুরু করার আগে তাঁর অনুমোদন নেওয়া ভাল।

ব্যায়াম শুরু করার আগে অনুসরণ করার নির্দেশিকা

প্রসব এবং শ্রমের চাপ থেকে আরোগ্য পেতে, আপনার শক্তি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন, তার পরই কোনো ব্যায়াম কর্মসূচী বা পেট আঁটসাঁট করার ব্যায়ামে সময় দেবেন। যে ধরনের ব্যায়ামই আপনি নিজের জন্য বেছে নিন না কেন, ধীরে ধীরে শুরু করতে মনে রাখবেন। সাধারণত প্রসবের ছয় সপ্তাহ পরে ব্যায়াম শুরু করা নিরাপদ (আপনার প্রথম প্রসব পরবর্তী চেক-আপের পরে)। এটি যোনি প্রসবের ক্ষেত্রে সুপারিশ করা হয়। সিজারিয়ান প্রসবের ক্ষেত্রে, আট সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

হাঁটার মত একটি কম প্রভাবশীল কার্যকলাপ দিয়ে শুরু করা হবে একটি আরো কঠোর শাসনের জন্য আপনার শরীরকে তৈরি করার একটি নিখুঁত উপায়। হাঁটা আপনার শক্তি ধীরে ধীরে ফিরিয়ে আনার জন্য আদর্শ এবং আপনি হাঁটার দৈর্ঘ্য এবং সময় ক্রমশ বৃদ্ধি করতে পারেন। হাঁটা রক্ত জমা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং আপনার শরীরের নিরাময় করার একটি দুর্দান্ত উপায়। সেইসব সেশনগুলিতে অংশগ্রহণ করুন যেখানে আপনি গর্ভাবস্থার পরে কিভাবে ব্যায়াম করতে হয় এবং বাড়িতে সেগুলি কিভাবে প্রয়োগ করতে হয় তা শিখতে পারবেন।

আপনি কোনো ব্যায়াম অনুশীলন শুরু করলে, পেট এবং পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করার সহজ প্রসব-পরবর্তী ব্যায়ামগুলি আপনার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। ধীরে ধীরে এটিতে স্তর যোগ করুন এবং তাদের তীব্রতা বৃদ্ধি করুন। 10 মিনিটের ব্যায়ামও অনেক উপকার করবে।

বাচ্চা হওয়ার পরে আপনার কতটা ব্যায়াম করা উচিত?

নতুন মায়েরা প্রায়ই ভাবেন, “আমি কি খুব বেশি ব্যায়াম করছি এবং খুব শীঘ্রই?” সাধারণত, প্রসবের পরে (যদি আপনার স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়ে থাকে) অবিলম্বেই হাঁটা শুরু করা নিরাপদ। ধীরে ধীরে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়ান। 15 বা 30-মিনিটের হাঁটা দিয়ে শুরু করুন যাতে আপনি আপনার রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে পারেন এবং কিছু সাধারণ বহিরঙ্গন ব্যায়ামও করুন। আপনি যদি এটিতে আরামদায়ক মনে করেন তবেই এটি চালিয়ে যান এবং যদি এই পরিশ্রমের সাথে মানিয়ে নিতে না পারেন তাহলে কম সময় ধরে করুন। ধীরে ধীরে, আপনার সময় বাড়ান এবং আপনার নিজের গতিতে আপনার সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছান।

বাচ্চা হওয়ার পরে আপনার কতটা ব্যায়াম করা উচিত?

কমপক্ষে 30 মিনিট ধরে সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচবার ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনার ডাক্তার অনুমোদন করার পরে, আপনি সপ্তাহে 4 থেকে 5 দিন 60 মিনিট পর্যন্ত হেঁটে আপনার ব্যায়ামের মাত্রা বাড়াতে পারেন। সর্বাধিক পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য আপনার গতিকে ক্রমশ বাড়িয়ে তুলুন, তবে নিজেকে কোনওভাবে কষ্ট দেবেন না এবং আপনার কোনো অস্বস্তিকর অনুভূতি হলে আপনার ডাক্তারকে বলুন।

আপনি কিভাবে ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত হবেন

আপনি যদি পেটের চর্বি হ্রাস করার জন্য এবং আপনার প্রসব পূর্ববর্তী ফিটনেস ফিরে পাওয়ার জন্য ব্যায়াম শুরু করতে খুব আগ্রহী হলে, তাহলে আপনি নিজের জন্য একটি নিয়মিত রুটিন সেট করুন। ব্যায়াম শুরু করার আগে, নিচের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:

  • ব্যায়ামের জন্য আলগা-মাপের এবং আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন করুন। এটি আপনাকে শান্ত থাকতে সাহায্য করবে।
  • ব্যায়ামে যাওয়ার আগে আপনার বাচ্চাকে খাইয়ে দিন বা আপনার অস্বস্তি এড়ানোর জন্য বুকের দুধ টিপে বের করে দিন দিন।
  • পুরোপুরি ফিট করে এবং আপনার ব্যায়ামের সময় ভালোভাবে আপনার স্তনকে অবলম্বন দেয় এমন ধরনের সঠিক ব্রা নির্বাচন করুন।
  • হাতের কাছে একটি জলের বোতল রেখে এই জন্মোত্তর ব্যায়াম করার সময় নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন।

ব্যায়ামের আগে কিভাবে উষ্ণ হতে হয়

উষ্ণ হওয়ার জন্য আলাদা করে একটু সময় রাখতে হবে এবং আপনার কমপক্ষে 10 মিনিট সময় উষ্ণ হওয়ার জন্য ব্যয় করা উচিত। আপনার রক্তকে প্রবাহিত করার জন্য এটি আপনার প্রয়োজন যাতে আপনার পেশী ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত থাকে। নিম্ন পিঠ, পেলেভিক অঞ্চল এবং উরুর পেশীগুলি প্রসারিত করুন এবং কয়েক সেকেন্ডের জন্য এই প্রসারিত অবস্থাগুলি ধরে রেখে আপনি শুরুর অবস্থানে ফিরে যান। উষ্ণ হওয়ার অংশ হিসাবে, আপনি একই জায়গায় হাঁটারও চেষ্টা করতে পারেন।

ছয়টি সেরা গর্ভাবস্থা-পরবর্তী ব্যায়াম যা দিয়ে শুরু করা যেতে পারে

1. হাঁটা

ব্লকের চারধারে বা পার্কে একটি নৈমিত্তিক হাঁটা দিয়ে শুরু করুন। বিশেষ করে শুরুতে, শরীরের নড়াচড়ার উপর লক্ষ্য রাখুন এবং আপনি ক্রমশ শক্তিদায়ী হাঁটা শুরু করতে পারেন। হাঁটার জন্য আপনার বাচ্চাকে সাথে আনুন এবং তাকে সামনের থলিতে রাখুন, এর ফলে কিছুটা ওজন যোগ হবে এবং সাথে কিছুটা তাজা বাতাসও পাবেন।

হাঁটা

উপকারিতা: এটার জন্য কোনো সরঞ্জাম প্রয়োজন নেই এবং সাধারণ এক জোড়া দৌড়ানোর / হাঁটার জুতাই যথেষ্ট। এটি একজন নতুন মায়ের জন্য সহজতম কিন্তু অত্যন্ত কার্যকরী ব্যায়ামগুলির মধ্যে একটি এবং এটি আপনাকে আরো কঠোর প্রণালীর জন্য প্রস্তুত করার জন্য উপযুক্ত।

2. পেট সংকোচন দ্বারা পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নেওয়া

সোজা, খাড়াভাবে বসে, ডায়াফ্রাম থেকে বায়ু টেনে গভীরভাবে শ্বাস নিন। পেট সংকুচিত করে শ্বাস নিন এবং পেটকে শক্তভাবে ধরে রাখুন এবং নিশ্বাস ছাড়ার সময় পেট শিথিল করুন।

পেট সংকোচন দ্বারা পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নেওয়া

উপকারিতা: এই ব্যায়াম পেশী শিথিল করার জন্য সহায়ক এবং আপনার পেট এলাকাকে টানটান ও শক্তিশালী করার একটি দুর্দান্ত উপায়।

3. পেলভিক অঞ্চলের ঢালে ভাঁজ সৃষ্টি করা

আপনার পায়ের পাতা ও হাতের তালু দিয়ে মেঝে স্পর্শ করে বসুন। শ্বাস নিতে নিতে আপনার নিতম্ব সামনের দিকে টেনে আনুন, আপনার পেলভিসকে বাঁকান এবং পিউবিক হাড়টিকে ঠেলে উপরের দিকে তুলুন। তিন পর্যন্ত গুণে ধরে রাখুন, ছেড়ে দিন এবং আবার করুন।

পেলভিক অঞ্চলের ঢালে ভাঁজ সৃষ্টি করা

উপকারিতা: এটি আপনার পেট এলাকাকে শক্তিশালী করার জন্য সেরা ব্যায়ামগুলির একটি। এটি পেটকে টানটান করার সহায়ক।

4. কেগেলস

শুরুতে, প্রস্রাব করার সময় বাথরুমে এই রুটিনটি অনুশীলন করুন। প্রস্রাব করার এলাকার পেশীগুলিকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করুন যে প্রস্রাব প্রবাহ বন্ধ হয় এবং তারপর ছেড়ে দিন। পরে, প্রস্রাব না করার সময়, এই পেশীগুলিকে সংকুচিত করুন, ধরে রাখুন এবং ছেড়ে দিন। প্রতিদিন 3টি সেশনে অন্তত 10 বার করে করুন।

কেগেলস

উপকারিতা: এটি মূত্রাশয়ের পেশীগুলিকে টানটান করতে সাহায্য করে এবং সাধারণত শিশুর জন্মের পরে হওয়া অসংযমী মূত্রত্যাগের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক।

5. পিঠের উপরের দিকের ব্যায়াম

সোজা হয়ে বসে আপনার বুকের উপর আপনার হাতদুটি ক্রস করে রাখুন। তারপর ডান দিকে পাকান এবং তারপর বাম দিকে পাকান। এই ব্যায়াম প্রতিটি পাশে 10 বার পুনরাবৃত্তি করা যেতে পারে।

পিঠের উপরের দিকের ব্যায়াম

উপকারিতা: এই ব্যায়াম আপনার ভঙ্গিকে উন্নত করে এবং উপরের পিঠ এলাকায় ব্যথা উপশম করে। এটি আপনার পুরো পিঠ এবং ঘাড় এলাকাকে ভালোভাবে প্রসারিত হতে দেবে।

6. ঘাড়ের ব্যায়াম

সোজা হয়ে বসুন এবং ধীরে ধীরে ডান দিকে আপনার মাথা ঘোরান, ধরে রাখুন এবং তারপর বাম দিকে ঘোরান। বাম কাঁধে আপনার বাম কান স্পর্শ করার এবং ডান কাঁধে ডান কান স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। সামনের দিকে ঝুঁকে আপনার চিবুক ঝুলিয়ে দিন এবং তারপর উপরে সিলিং-এর দিকে তাকান। এই ব্যায়ামটি খুব ধীরে ধীরে করুন কারণ যেকোনো ধরনের আকস্মিক আন্দোলনের ফলে মাথা ঝিমঝিম করতে পারে। যদি তা ঘটে তবে তখনই থেমে যান এবং যদি দীর্ঘক্ষণ ধরে এই অনুভূতি থাকে তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

ঘাড়ের ব্যায়াম

উপকারিতা: এটি আপনার শরীরের ভঙ্গিকে উন্নত করতে সহায়তা করবে যা শিশুটিকে বহন করার সময় বা দুধ খাওয়ানোর সময় ঝোঁকার কারণে বেঁকে গিয়ে থাকতে পারে।

কিভাবে ব্যায়ামের পরে আপনার শিথিল হওয়া উচিত?

ব্যায়ামের শেষে 5 মিনিট ধরে শীতল হওয়া প্রয়োজন যাতে আপনার হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক হয়ে যায়। আপনি আপনার পেশীর বেদনা এড়াতে সেগুলিকে প্রসারিত করতে পারেন এবং শরীরকে শিথিল করতে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে হাঁটতে পারেন। কয়েক মিনিটের জন্য চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন, তাহলেই হবে।

একবার আপনি ব্যায়াম শুরু করার পর কিভাবে অনুপ্রেরিত থাকবেন

ছোট ছোট লক্ষ্য অর্জনের এবং সীমিত সাফল্য লাভের আশা রাখুন। লক্ষ্য উঁচু রাখলে তা সহায়ক নাও হতে পারে কারণ ক্রমাগত কাজকর্ম আপনার শরীরে সহ্য না হতে পারে। আপনি যদি সপ্তাহে তিনবার ব্যায়াম করতে পারেন অথবা প্রতিদিন আপনার ব্যায়ামের সময় 10 মিনিট করে বাড়াতে পারেন, তাহলে নিজেকে পুরস্কৃত করুন। যখন আপনি গর্ভাবস্থায় বেড়ে যাওয়া ওজন এবং পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমানোর জন্য এই প্রসব পরবর্তী ব্যায়ামগুলি করবেন, আপনার স্মার্টফোনে থাকা অনেকগুলি অ্যাপ্লিকেশানের মধ্যে কোনো একটিকে ব্যবহার করে আপনার অগ্রগতি অনুসরণ করুন।

ব্যায়াম করার সময় পেটের পেশী সম্পর্কে কিভাবে সতর্ক হতে হবে

আমি কি আমার নিম্ন এবং উপরের পেটের ব্যায়াম করতে পারি? এটি একটি সাধারণ দ্বিধা যা মায়েরা প্রসবের পরে মুখোমুখি হন এবং ব্যায়াম করতে খুব আগ্রহী হন। অনেক মহিলার প্রসবের পরে ডায়াস্টাসিস রেক্টি নামের একটি অবস্থা তৈরি হয় যেখানে পেটের পেশীগুলির মধ্যে একটি ফাঁক তৈরি হয় এবং শিশুর জন্মের পরেও এটি বন্ধ হয় না। প্রশিক্ষকদের সুপারিশ করা পেটের পৃথকীকরণ ব্যায়াম সম্পর্কে একজন থেরাপিস্টের সাথে কথা বলুন, নিজে নিজে করতে যাবেন না।

ব্যায়াম করার সময় পেটের পেশী সম্পর্কে কিভাবে সতর্ক হতে হবে

ব্যায়াম করার সময়, সিট-আপ এবং সংকোচন করা একদমই যাবে না, কারণ এর ফলে ওই পেশীগুলিতে গুরুতর চাপ সৃষ্টি হতে পারে। পেটের পেশীগুলির বিন্যাস ঠিক করার জন্য থেরাপিস্টরা রেক্টাস অ্যাবডোমিনিস ব্যায়ামেরও প্রস্তাব করতে পারেন।

এই সতর্কতা চিহ্নগুলি দেখতে পেলে ধীর হয়ে যান

  1. আপনি তাজা অনুভবের পরিবর্তে ক্লান্ত বোধ করতে পারেন।
  2. আপনার পেশীগুলিতে ব্যায়ামের পরে দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যথা অনুভব করতে পারেন এবং কখনও কখনও সেগুলি কাঁপছে বলে মনে হতে পারে।
  3. আপনার সকালে বিশ্রামের সময় হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে যেটি হল একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে আপনার একটি জোরালো শারীরিক কার্যকলাপ চলছে।
  4. ব্যায়ামের সময় গাঁটের ব্যথা, পেশীর যন্ত্রণা বা জন্ম সম্পর্কিত ব্যথা পুনরায় আবির্ভূত হতে পারে।
  5. রক্তপাত পুনরায় আরম্ভ হয় এবং যোনি স্রাব আরো গাঢ় রঙের হয়ে যায়।

প্রসব পরবর্তী ব্যায়াম কি বুকের দুধ খাওয়ানোকে প্রভাবিত করবে?

না। প্রসব পরবর্তী ব্যায়াম কোনো ভাবেই বুকের দুধ খাওয়ানোকে প্রভাবিত করে না। আসলে, এই ব্যায়ামগুলি সামগ্রিক সুস্থতা এবং স্বাস্থ্যের প্রতি অবদান রাখে এবং গর্ভাবস্থার ও প্রসবের চাপের পরে স্বাভাবিকে ফেরার জন্য এগুলি ভালো। গর্ভাবস্থা পরবর্তী পর্যায়ে পেশীগুলির আলগা হওয়া দরকার এবং সেগুলির ব্যায়াম করা দরকার যাতে আপনার পক্ষে শিশুকে সামলানো ও অন্যান্য দায়িত্ব সামলানো সহজ হয় এবং ব্যায়ামগুলি মায়ের দুধ খাওয়ানো বা অন্য কোনও কাজকে প্রভাবিত করে না।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

1. গর্ভাবস্থা পরবর্তী কালে কোন ব্যায়ামগুলি আপনার করা উচিত নয়?

যতক্ষন না আপনার ছয় দিনের যোনি রক্তপাত বা স্রাব বন্ধ হয়, ততক্ষণ সাঁতার সম্পূর্ণরূপে এড়ানো উচিত। হাত এবং হাঁটুর সমন্বয় জড়িত ব্যায়াম প্রথম ছয় মাস এড়ানো উচিত কারণ প্লেসেন্টা যেখানে অবস্থিত ছিল সেই জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে।

2. আমি কিভাবে আমার পেলভিস এবং পিঠকে শক্তিশালী করব?

পেলভিক মেঝের ব্যায়াম পেলভিস এবং পিঠকে শক্তিশালী করার জন্য সুপারিশ করা হয়। মনে রাখবেন এই ব্যায়ামগুলি শক্তি অর্জনের জন্য কমপক্ষে 8 থেকে 12 সপ্তাহ সময় নিতে পারে, তাই চালিয়ে যান এবং মাঝখানে ছেড়ে দেবেন না।

3. আমার একটি সিজারিয়ান হয়েছিল। আমি কি প্রথম কয়েক সপ্তাহে ব্যায়াম করতে পারি?

হ্যা, আপনি পারেন। আসলে, যোনী ডেলিভারি হওয়া কারোর থেকে আপনার পক্ষে এটি করা সহজতর হবে কারণ আপনার পেশীগুলি বেশী শক্তিশালী থাকবে। অবশ্যই, ভারী ওজন তোলা এড়িয়ে যান এবং কঠোর সময়সূচীতে যাওয়ার আগে হাঁটার মতো সাধারণ ব্যায়ামগুলি অনুশীলন করুন।

ব্যায়াম হল প্রসব পরবর্তী সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যায়ামের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যেন না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য ডাক্তার দ্বারা প্রদত্ত নির্দেশাবলী অনুসরণ করা আবশ্যক। এটি মা-কে তাঁর শরীরের আকৃতি, ওজন সম্পর্কে আস্থা অর্জনে সহায়তা করে, এবং প্রসব পরবর্তী বিষণ্নতা হ্রাসে একটি বড় ভূমিকা পালন করে।