In this Article
আপনি যদি আপনার গর্ভাবস্থার আট মাস চিহ্ণে আঘাত করে থাকেন,তবে আপনি প্রায় সেখানেই আছেন!পূর্ণ গর্ভবতী হওয়ার অনুভূতি এই মাসে আপনি প্রায় সম্পূর্ণ রূপেই অনুভব করেন এবং কখনই অবাক হবার কিছু নেই যদি আপনি ইতিমধ্যেই আপনার সন্তানের জন্য নতুন জামা কাপড় কেনার কথা চিন্তা করতে শুরু করেন।তৃতীয় ত্রৈমাসিকের শুরুটি আসে এটির নিজের চ্যালেঞ্জের সাথে কারণ আপনার বাচ্চা বেশি ওজন লাভ করতে থাকে এবং সে বেড়িয়ে আসার জন্য প্রস্তুত হতে থাকে।আপনার সন্তানের বৃদ্ধি,যে পরিবর্তনগুলি আপনার শরীরে আসে এবং আপনার গর্ভধারণের এই পর্যায়ে যেগুলি আপনার করা উচিত সেগুলি সম্পর্কে জানতে আরো বেশী করে পড়ুন।
গর্ভাবস্থার অষ্টম মাসের সাধারণ লক্ষণ–গুলি
সাধারণত গর্ভাবস্থার অষ্টম মাস হল এমন একটা সময় যখন মায়ের শরীরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন গুলি হয়।তৃতীয় ত্রৈমাসিক পর্যায়ের সূচনাকে চিহ্ণিত করে এমন কিছু সাধারণ লক্ষণগুলি হল,
1. শ্বাস–প্রশ্বাসের দুর্বলতা অনুভব
ক্রমবর্ধমান শিশু এবং ফলস্বরূপ আচমকা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শিশুর শরীরে কিছু অতিরিক্ত ওজন সংযুক্ত হয়।অভ্যন্তরীণ ভাবে,জরায়ুর বিস্তার ফুসফুসের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং এটিকে সংকুচিত করে।এই শারীরিক পরিবর্তনগুলি শ্বাসকষ্টের কিছুটা কারণ।এই অবস্থার কিছুটা উন্নতি ঘটে যখন শিশুটির অবস্থান এই মাসে সেফালিক পজিশনে থাকে।
2. কৃত্রিম সংকোচন
ব্রাক্সটন হিক্স সংকোচন নামে এমন একটি সংকোচন সম্ভবত এই মাসে ঘটে থাকে যেটি প্রকৃত প্রসবকালীন সংকোচনের মতই যন্ত্রণাদায়ক। সাধারণত সেগুলি কেবলমাত্র কয়েক সেকেণ্ডের জন্যই হয়ে থাকে।প্রসবের জন্য জরায়ুর পেশীগুলিকে প্রস্তুত করতে শরীর এই স্বাভাবিক পদক্ষেপটি গ্রহণ করে।কম পরিমাণে জল পান করা এই সংকোচনকে আরও বেশী মাত্রায় বাড়িয়ে তোলে।
3. কোষ্ঠকাঠিন্য
জরায়ুর বৃদ্ধির ফলে পেলভিক অঞ্চলে অন্ত্র এবং শরীরের অন্যান্য আভ্যন্তরীণ অঙ্গাণুর জায়গা অধিকার করে নেয়।এই কারণের জন্যই আপনি সম্ভবত এই মাসে গর্ভের আন্দোলনে অসুবিধা অনুভব করতে পারেন।মাঝে মধ্যে আবার এই অতিরিক্ত চাপের কারণে আপনার মলের মধ্যে কিছু রক্তও আসতে পারে।জোলাপের দ্বারা এই অবস্থাটি সহজেই চিকিৎসাযোগ্য,সুতরাং যখন আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্মুখীন হবেন আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে আলোচনা করে নিন।
4. স্তনদুগ্ধের লিকেজ
বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য প্রস্তুতি–মূলক পদক্ষেপ হিসেবে,মায়ের দেহ আগে থেকে কোলোস্ট্রাম তৈরী করে।এই মাসে আপনার স্তন থেকে সামান্য পরিমাণে কোলোস্ট্রাম বা হলদেটে দুধ লিক হওয়া লক্ষ্য করতে পারেন।যদিও এটি প্রত্যেকটি মহিলার জন্য খুব একটা সাধারণ সমস্যা নয়,তবে এটি স্তন প্যাড পরিধানের মাধ্যমে সহজেই সমধান করা যেতে পারে।
5. কোমড়ে যন্ত্রণা
বেড়ে যাওয়া শিশুর ওজন এবং পেট পিছনে কটিদেশীয় অঞ্চলে চাপ সৃষ্টি করে।এটি মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্রকেও পরিবর্তন করে এবং দেহকে বাধ্য করে একটি খারাপ অবস্থানে দাঁড়াতে।এর ফল স্বরূপ এই পর্যায়ে অনেক মহিলারই কোমড়ে যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে,বিশেষ করে অনেক ঘন্টা বসে বা দাঁড়িয়ে থাকার পর।এটি সংশোধিত করা যেতে পারে অঙ্গ–বিন্যাসের সংশোধন দ্বারা,কঠিন পৃষ্ঠতলে ঘুমানোর দ্বারা এবং গর্ভাবস্থাকালে নিরাপদ এমন কিছু সাধারণ যোগ–ব্যায়াম অনুশীলনের দ্বারা।
গর্ভধারণের অষ্টম মাসে শারীরিক যে পরিবর্তন–গুলি ঘটে থাকে
গর্ভধারণের অষ্টম মাস হল আপনার সন্তানের উল্লেখযোগ্যজনক ভাবে ওজন বৃদ্ধির এবং বেশ দ্রুততার সাথে বেড়ে ওঠার সময়।এই সময়টি সরাসরি মায়ের শরীরে বহু পরিবর্তন নিয়ে আসে।সেগুলির মধ্যে আপনি নিম্নলিখিত পরিবর্তন–গুলি লক্ষ্য করা শুরু করতে পারেন।
- একটা সুস্পষ্ট পরিবর্তন হিসাবে, আপনার শিশু বাম্পটি ক্রমশ আকারে বেড়ে উঠতে থাকে।কিছু প্রত্যাশিত মায়ের জন্য এটা সেই মাস হয়ে উঠতে পারে,যখন মানুষ আপনার উল্লেখযোগ্য গর্ভাবস্থাকালীন এই বাম্পটি দৃষ্টিগোচর শুরু করেন।
- প্রস্রাবের অসংযমতা দেখা দিতে পারে।আপনার হাঁচি দেওয়া, কাশি অথবা এমনকি হাসার সময়েও প্রতি ক্ষেত্রেই সামান্য পরিমাণ প্রস্রাব লিক হয়ে যেতে পারে।এটা পুরোপুরি বিব্রতকর ও বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে।আপনার জীবনে যদি দিনের পর দিন এটা ক্রমশ বাড়তেই থাকে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করুন।এছাড়াও মূত্রাশয় পেশী দৃঢ়সংলগ্ন করতে কেগেল ব্যায়াম অনুশীলন করুন।
- গলা–বুক জ্বালা,বিশেষ করে রাতের বেলায় আপনাকে নিদ্রাহীন রাত্রি–গুলি এনে দিতে পারে।ঘরোয়া প্রতিকারের চেষ্টা করুন অথবা আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করুন এই গলা–বুক জ্বালার জন্য সাধারণ এবং নিরাপদ ওষুধ দেওয়ার জন্য।জলধারণ এবং চরম ভাবে ফুলে যাওয়া হল তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময় খুব সাধারণ ব্যাপার।কিছু মহিলার আবার যোনি থেকে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের নিঃসরণ হতে পারে।শক্তিশালী তীব্র গন্ধ এবং তরলের গঠনের উপর ভিত্তি করে প্রস্রাবের থেকে এটিকে পৃথক করা যেতে পারে।
- বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শিশু বাম্প–এর কারণে ঊর্দ্ধশ্বাস এবং মাথা ঘোরার মত সমস্যা–গুলি হতে পারে।
- কৃত্রিম সংকোচন দেখা দিতে পারে যা আবার ব্র্যাক্সটন–হিক্স সংকোচন নামেও পরিচিত,যেটি তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময় ঘটে থাকে। এটি কিন্তু প্রসবের সময় ঘটে থাকা প্রকৃত সংকোচন নয়,কিন্তু এটা প্রায় সেইরকমই অনুরূপ এবং কিছু মিনিটের জন্য স্থায়ী থাকে।যদি এটা না কমে তবে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করুন।
- কিছু মহিলার আবার স্তন থেকে সামান্য পরিমাণ প্রথম বুকের দুধ যা কোলোস্ট্রাম নামে পরিচিত তা লিক হতে পারে।
- কিছু মহিলার আবার তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময়ে সারা শরীরে গরমের ঝলাকানিও হয়ে থাকতে পারে।
- গর্ভধারণের অষ্টম মাসে উদ্বেগ,বিরক্তি এবং অস্থিরতা বেড়ে যেতে পারে কারণ আসন্ন প্রসবের তারিখ খুব কাছাকাছি এসে গেছে বলে মনে হয় যদিও সেটা এখনও অনেকটাই দূরে। এই পর্যায়ে বেশীর ভাগ মহিলার জন্যই এটা খুব সাধারণ একটা ব্যাপার।
যে উদ্বেগ–গুলি মা এবং সন্তানের উপর প্রভাবিত হতে পারে
গর্ভাবস্থার প্রতিটি ত্রৈমাসিক তার নিজস্ব চ্যালেঞ্জের সাথে আসে।সাধারণত গর্ভাবস্থার অষ্টম মাসে,এগুলি হল এমন কিছু ধরণের উদ্বেগ যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
1. প্রিক্ল্যাম্পসিয়া
গর্ভাবস্থাকালীন সময়ে অনেক মহিলার উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে।এটি জেস্টেশনাল হাইপারটেনশন নামে পরিচিত, এবং এটি মানসিক চাপ অথবা শারীরিক অন্যান্য শর্তগুলির কারণে হতে পারে।যদি এই উচ্চ রক্তচাপটি জরায়ুর উচ্চ প্রোটিনের সাথে মিলিত হয়,তবে এটিকে প্রিক্ল্যাম্পসিয়া বলা হয়।অচিহ্ণিত অথবা অচিকিৎসারত প্রিক্ল্যাম্পসিয়া ভ্রূণের পুরোপুরি ক্ষতি করতে পারে যেহেতু এটি শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।এই উদ্বেগ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মোকাবিলা করতে হবে।
2. নির্ধারিত সময় পূর্বে জন্ম
গর্ভাবস্থার অষ্টম মাসে অকাল প্রসব ঝুঁকির একটা কারণ হয়ে ওঠে কারণ অনেক শিশুই সেফালিক পোজিশনে স্থায়ী হয়ে যায় এবং পূর্ণ সময়ের তুলনায় দ্রুত জন্মগ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়।অন্যান্য শারীরিক অবস্থা যেমন প্রিক্ল্যাম্পসিয়া,প্ল্যাসেন্টা বা অমরার অস্বাভাবিকতার ফলেও শিশুর জরুরী জন্ম হতে পারে।আট মাসে যে সকল শিশুর জন্ম হয় তাদের বেঁচে থাকার একটা ভাল সম্ভাবনা থাকে কিন্তু অনেক দিনের জন্য প্রয়োজন হয় তাদের অত্যন্ত যত্ন নেওয়ার।
অষ্টম মাসে শিশুর বিকাশ
তৃতীয় ত্রৈমাসিকে পড়া মাত্র ভ্রূণের বিকাশের শেষ পদক্ষেপটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।এখানে অষ্টম মাসে শিশুর মধ্যে হওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের উল্লেখ করা হল।
- গর্ভধারণের অষ্টম মাসে শিশু ব্রীচ অবস্থান থেকে সেফালিক অবস্থানে পরিবর্তিত হয়, যার অর্থ হল শিশুটি ঘুরতে থাকে এবং তার মাথাটিকে পেলভিক হাড়ের মধ্যে তৈরি গহ্বরের ভিতরে স্থির রাখে।শিশুর সাধারণ প্রসবের জন্য প্রস্তুত হওয়ার এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।একবার মাথাটা স্থায়ী ও স্থির হলে, শিশুটি অ্যামনিওটিক তরলের মধ্যে চলাচল বন্ধ করে এবং প্রসব না হওয়া পর্যন্ত সেফালিক পজিশনের মধ্যেই অবস্থান করে।
- শিশুর মস্তিষ্কের প্রাকৃতিক সংযোগ খুব দ্রুত হতে থাকে এবং শিশুর মস্তিষ্ক গর্ভের বাইরে থেকে শব্দ / আলো–এগুলির প্রক্রিয়াকরণ শুরু করে।
- এই মাসেই শিশু উল্লেখযোগ্য ওজন ও উচ্চতা লাভ করে।
- মাথাটি স্থায়ী ও স্থির হওয়ার আগে শিশুর আন্দোলন খুব সীমিত হবে স্থানটির অভাবের কারণে।
- শিশুর কিডনি বা বৃক্কের বিকাশের চিহ্ন হিসেবে শিশুর জন্মের পূর্বে প্রতি বার অ্যামনিওটিক তরলের মাত্রা পরিমাপের সময় সেটি কমতে থাকে।
- এই সময় থেকে যৌনাঙ্গের বিকাশের অংশ হিসেবে ছেলেদের ক্ষেত্রে টেস্টিক্যাল এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ভালভা–এর বিকাশ হতে থাকে।
- শিশুর ত্বকের নরম চুল–গুলি প্রথম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের সময়ে ঝড়ে যেতে শুরু করে এবং পরিণত ত্বক গঠিত হতে শুরু করে।
যেগুলি করা উচিত এবং উচিত নয়
গর্ভাবস্থার অষ্টম মাসে নেওয়া পরিচর্যা ও সাবধানতার অংশ হিসেবে এই পর্যায়ে এখানে রইল আপনার কি করা উচিত এবং উচিত নয়সেই বিষয়গুলি।
করণীয়
- নিয়মিত ব্যবধানে স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার খান।স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স খাবার পছন্দ করুন আপনার দুটো মূল খাবারের মাঝের সময়ে প্রচন্ড খাদ্যের চাহিদা মেটাতে।
- হাঁটা অভ্যাস রাখুন বা সামান্য হালকা কাজ করুন আপনার পেলভিক অঞ্চলে নমনীয়তা বজায় রাখার জন্য।
- আপনার শরীরে যাতে জলের অভাব না ঘটে সেই জন্য নিয়মিত প্রচুর জল পান করার বিষয়টি মনে রাখুন।প্রস্বাবের সমস্যা কমাতে কিগেল ব্যায়ামটি অভ্যাস করুন। এটা প্রসবের পর পেলভিক পেশীর শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
- বাড়ি এবং অফিসে কম চাপ নিন।যেকোন চাপ যুক্ত কাজ থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে পিছিয়ে নিন,এটা আপনার বাচ্চার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
- ভোরবেলা এবং বিকাল বেলায় সূর্যের আলো গায়ে লাগান। ভিটামিন D অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আপনার এবং আপনার সন্তানের হাড়ের গঠনের জন্য।
- হসপিটালে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করে রাখুন যাতে প্রসব বেদনা উঠলেই সেখানে যাওয়া যায়।
- ছেলে বা মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এমন জিনিসগুলো কিনে ফেলুন।আপনার সন্তান এসে গেলে আপনি খুব কম সময় পাবেন।
- স্তনপান করানো এবং শিশুর যত্নের অন্যান্য বিষয় গুলিতে জ্ঞান অর্জন করুন।ক্লাস করুন বা অনলাইন ফোরামগুলোর সাথে যুক্ত হন যারা এই সব মৌলিক কৌশল গুলো নিয়েই আলোচনা করে।আপনার শিশুর জন্মাবার পরে যখন আপনি এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন তখন এটা সাহায্য করবে।
- একটা তালিকা করুন কোন কোন জিনিস আপনার প্রয়োজন হসপিটালে নিয়ে যাবার জন্য। এবং প্রসবের পর আপনার দরকারী জিনিসপত্রগুলো যেমন নরম তুলা, স্যানিটারি প্যাড,দুধ খাওয়ানোর গাউন,স্তন মোছার প্যাড,দুধ খাওয়ানোর বালিশ ইত্যাদি কিনে ফেলুন।
করবেন না
- প্রসেসড ফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড বা মশলাদার খাবার খাবেন না।এটা আপনার হজমের সমস্যা এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি করবে।
- নিয়মিত ভিটামিন এবং খনিজের(মিনারেল)সাপ্লিমেন্ট খেতে ভুলবেন না।
- ডাক্তারবাবু বা প্রশিক্ষিত শিক্ষকের নির্দেশ ছাড়া কোনোরকম যোগ অভ্যাস বা ব্যায়াম করবেন না।
- প্রসব এবং প্রসব যন্ত্রণার ব্যাপারে ভেবে বেশী চাপ নেবেন না।আপনি অনয়াসেই সেতু অতিক্রম করে যাবেন যখন তার সামনে আসবেন।অনেক আগে থেকে বাজে ভাবনা চিন্তা আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করবে।
- এই সময়ে মদ্যপান এবং ধূমপান করবেন না।বিভিন্ন ধরণের পানীয় এবং ক্যাফিন এড়িয়ে চলুন।
খাদ্য
প্রতি মাসের মতই গর্ভাবস্থার আট মাসে খাদ্য তালিকায় খাদ্যগুলি সুষম এবং স্বাস্থ্যকর হওয়া প্রয়োজন।অতিরিক্ত ভাবে আপনার খাদ্যে বেশী পরিমাণে তন্তু থাকা উচিত যা কোষ্ঠকাঠিণ্য কমায় যেটা এই সময়ে প্রায়ই হয়ে থাকে।আপনার শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যে ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার বা তার সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।কাঁচা,ঠিকমত রান্না না হওয়া খাবার,কাঁচা শামুক জাতীয় খাবার,প্রসেসড ফুড, কফি,এবং পাস্তুরাইজড নয় এমন দুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন এগুলো খেলে আপনার খাদ্য বিষক্রিয়া বা অ্যালার্জি হতে পারে।
বাবা হয়ে উঠতে পরামর্শ
সমান অংশীদার হবার জন্য বাবাদেরও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে সন্তান জন্মের আগে এবং পরে।এখানে কয়েকটি বিষয় রইল হবু বাবাদের মনে রাখার জন্য।
1. প্রত্যয় বৃদ্ধি করা আসল বিষয়
যেহেতু গর্ভাধারণের এই সমগ্র যাত্রাপথে মা নানা রকম শারীরিক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করে,তার শিশুর স্বাস্থ্য, তার চেহারা,তার ভবিষ্যৎ ইত্যাদি।স্বামি হিসাবে আপনি সবসময় আপনার স্ত্রীকে ইতিবাচক প্রত্যয় জুগিয়ে চলবেন।তার আবেগ প্রবণতার দিকগুলিও এই পর্যায়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
2. সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন
বর্ধণশীল ওজন এবং নানা ধরণের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য ঘরের দৈনন্দিন কাজকর্ম–গুলি যেগুলো প্রচুর শ্রমসাধ্য সেগুলো হবু মায়েদের পক্ষে করা কঠিণ হয়ে পরে।তাই এই ঘরের কাজ গুলোতে আপনি তাকে সাহায্য করুন যাতে সে কিছুটা সময় আরাম করতে বা নিজেকে নিয়ে থাকতে পারে।
3. প্রশয় দিন
আপনি তার পা টিপে দিন অথবা স্পা এর জন্য একটা বুকিং করার ব্যাপারে প্রশয় দিন।নিজের জন্য যত্ন এবং সময়ের অভাব দেখা দেবে শিশুটির জন্মের পর।আপনি তাকে যথেষ্ট প্রশয় দেওয়া নিশ্চিত করুন জন্মের পর শিশুর যত্নের মত কঠিণ কাজ করার আগে।
4. আপনার অর্থনৈতিক পরিকল্পনা স্থির করুন
শিশুর জন্ম এবং সদ্যোজাতের যত্ন অত্যন্ত ব্যয়বহুল।আপনার অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করে রাখুন যাতে সমস্ত ধরণের হসপিটাল বিল মেটানো যায়।আপনার ইন্সুওরেন্স কোম্পানির সাথে কথা বলুন এবং জেনে নিন কীভাবে দাবিগুলি পেতে হবে।
আট মাস হল সঠিক সময় আপনার গর্ভাবস্থা উপভোগ করার ক্ষেত্রে এবং যতটা সম্ভব ততটা উদযাপন করুন।আপনার বিরাট দিনের থেকে আর কয়েক ইঞ্চি দূরে আছেন আপনি, আপনার শরীর ক্রমশ পরিবর্তিত হয়ে চলেছে আপনার ক্রম বিকাশমান শিশুর জন্য।সময় নিন এবং প্রশয় উপভোগ করুন যেহেতু আর মাত্র কয়েকটা দিন পরেই আপনি মিলিত হতে চলেছেন আপনার এক গুচ্ছ আনন্দের সাথে!