প্রসবের পর স্তনের সাধারণ পরিবর্তনগুলি

প্রসবের পর স্তনের সাধারণ পরিবর্তনগুলি

গর্ভাবস্থাকালে এবং সন্তান প্রসবের পরে অন্যতম যে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি মহিলারা অনুভব করে থাকেন তার মধ্যে একটি হল স্তনের আকার বৃদ্ধি।আকারে ছোট স্তন বিশিষ্ট মহিলারা যদিও এটিকে উচ্চ মাত্রায় স্বাগত জানিয়ে থাকেন, কিছু মহিলা আবার এ ব্যাপারে হয়ত উচ্চ মাত্রায় ইতস্তত বোধ করতে পারেন এবং প্রসবের পর সেগুলির আকার কীভাবে হ্রাস করে একজন সাধারণ মহিলার ন্যায় স্বাভাবিক আকারে ফিরিয়ে আনা যায় সে ব্যাপারে চিন্তান্বিত হয়েও উঠতে পারেন।এই ধরণের কিছু ক্ষেত্রে ব্যায়ামাদি হয়ত কিছুটা কাজে আসতে পারে, তবে স্তনের সমগ্র পরিবর্তনটি তার আকারের সাথে সম্পর্কিত নয়।

সন্তান প্রসবের পর স্তনগুলি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?

যদিও গর্ভাবস্থা ইতিমধ্যেই স্তনের আকার এবং সেগুলির উপস্থিতিকে একাধিক বিভিন্ন উপায়ে প্রভাবিত করতে শুরু করে, সন্তানের জন্মদান করাটিকে সেক্ষেত্রে সার্বিকভাবে বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ের সূচনা মনে করা যেতে পারে।স্তনের মধ্যে হয়ে থাকা কিছু পরিবর্তনগুলি হল গঠণগত, যদিও সেক্ষেত্রে আবার এর অন্যান্য পরিবর্তনগুলি যতটা শীঘ্র সম্ভব সংশোধন বা চিকিৎসা করার প্রয়োজন হতে পারে।

1.স্তনের আকার বৃদ্ধি

যদিও গর্ভাবস্থাকালে স্তনের আকার ক্রম বর্ধিত হতে থাকে যাতে প্রসবের পর সন্তানের স্তন পান করার ক্ষেত্রে তা সহায়ক হয়ে উঠতে পারে, তবে সন্তানের জন্মদান করার পর তা আবার সামাণ্য বড় হয়ে ওঠার প্রবণতাও থাকে।

এটি হওয়ার কারণ

একদিকে এর কারণ হল মায়ের ডায়েট, যা তাঁর ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী হয়ে উঠতে পারে এবং তা তাঁর স্তনের আকারেও প্রতিফলিত হতে শুরু করে।অনুরূপভাবে আবার হরমোনগুলিও এখনও স্থিতবস্থায় এসে পৌছায় না যার ফলে সেগুলি সমানে নানাভাবে দেহে প্রভাব ফেলতে পারে।

আপনি যা করতে পারেন

আপনার সাধ্যমত এমন সব খাদ্য পদগুলির সাথে সংলগ্ন থাকুন যেগুলি পুষ্টিকর এবং আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করতে পারে।এমন একটি ব্রা ক্রয়ের জন্য বিনিয়োগ করুন যেটি আপনার পক্ষে আরামদায়ক এবং কোনওরকম সমস্যা ছাড়াই আপনার বৃহত স্তনদ্বয়কে সমর্থন করতে পারে।

2.উঁচু-নীচু অসম স্তনবৃন্ত

গর্ভদশাটি একবার শুরু হয়ে গেলে, সময়ের সাথে সাথে স্তনের চারপাশের অ্যারিওলা অঞ্চলটি ক্রমশ গাঢ় হতে শুরু করে।আর একই সাথে স্তনবৃন্তগুলিও সুস্পষ্ট রূপে অভিক্ষিপ্ত হতে শুরু করে।আর এর উপর এবং চারপাশের অঞ্চলে ছোট ছোট ফুসকুড়ির ন্যায় বিন্দুগুলি আরও প্রতীয়মান হয়ে উঠতে থাকে।

এটি হওয়ার কারণ

স্তন এবং স্তনবৃন্তের উপর হয়ে থাকা এই সকল নানাবিধ পরিবর্তনগুলির সবগুলিই প্রসবের পর সন্তানকে মায়ের স্তনবৃন্তগুলিকে সহজে সনাক্ত করতে এবং সেগুলির সাথে সংলগ্ন থাকার ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্যই হয়ে থাকে।এই সকল বৈশিষ্ট্যগুলি নবজাতের দুর্বল দৃষ্টিশক্তি এবং ক্রম বিকশিত সংবেদনশীল ধারণার সাথে তাকে সহজেই স্তন পান করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে।

আপনি যা করতে পারেন

সময় হল একমাত্র এমন এক বিষয় যা এই সকল পরিবর্তনগুলিকে হ্রাস করতে পারে।সন্তানের জন্মদানের পর মাত্র কয়েক মাস কিম্বা তার থেকে আরেকটু বেশি সময় পরেই আপনার স্তনবৃন্তগুলি তার প্রকৃত অবস্থায় পুনরায় ফিরে আসবে, আর এই একই বিষয়টি স্তনের অন্যান্য অঞ্চলের জন্যও অনুসরণযোগ্য।

3.স্তনের উপর প্রসারণ রেখা বা স্ট্রেচ মার্ক

গর্ভাবস্থায় শরীর এবং পেট বেশ কিছুটা বেড়ে যায়।অধিকাংশ মায়েরাই স্ট্রেচ মার্ক বা প্রসারণ রেখাগুলির ব্যাপারে সচেতন ও অবগত থাকেন যেগুলি পেটের উপর দেখা যায়।কিন্তু এই একই জিনিস স্তনের উপরেও দেখতে পাওয়াটা তাদের কাছে বেশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে।

এটি হওয়ার কারণ

সকল মায়েরাই তাদের স্তনের উপরে এই ধরণের স্ট্রেচ মার্ক বা প্রসারণ রেখাগুলি উপলব্ধি করেন না এবং এটি বংশগত কারণে হয়ে থাকে বলে অভিহিত করা যেতে পারে।আবার আপনার এমন এক স্থিতিস্থাপক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ত্বক থাকতে পারে যেটি অন্যদের তুলনায় আরও বেশি বারে বারে প্রসারিত ও সংকুচিত হতে পারে, যার ফলে ওজন বৃদ্ধির সাথে এই স্ট্রেচমার্কগুলি আরও সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়ে উঠতে পারে।

আপনি যা করতে পারেন

এ ধরণের ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল উপায় হল ওজন বৃদ্ধিটিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা এবং একটি স্বাস্থ্যকর ও সুষম আহার গ্রহণ বজায় রাখা।বেশিরভাগ স্ট্রেচ মার্কগুলিই এক বছরের মধ্যে নিজে থেকেই মিলিয়ে এবং হালকা হয়ে যায়।আবার আপনি যদি চান তবে পরবর্তিতে আপনার ত্বকের চিকিৎসা করানোকেও আপনি বেছে নিতে পারেন।

4.অপ্রতিসম স্তন

উভয় স্তন কখনই সর্বদা নিখুঁত হয় না।আপনি হয়ত লক্ষ্য করে থাকতে পারেন যে আপনার নিজের স্তনগুলিও সামাণ্য বৈসাদৃশ্যপূর্ণ ও ভারসাম্যহীন, তবে তা সাথে সাথেই বেশ দৃশ্যমান হয়ে ওঠে না।তবে গর্ভাবস্থার পরবর্তীতে স্তনদ্বয়ের তীর্যক প্রকৃতিটি আরও দৃঢ় মাত্রায় প্রতীয়মান হয়ে উঠতে পারে।

এটি হওয়ার কারণ

স্তনের ভারসাম্যহীন প্রকৃতিটি হয়ে থাকে প্রতি পাশের স্তন কলার অসম বৈশিষ্ট্যের কারণে।এটি আবার স্তনের উপর হরমোনগুলির ক্রিয়ারও একটি কারণ।অতএব, এর ফলে বৃহৎ স্তনটিকে দেখে আগের থেকে আরও বড় মনে হয়, যা পার্থক্যটিকে আরও প্রকট করে তোলে।

আপনি যা করতে পারেন

গর্ভাবস্থায় স্তনের আকার যে বৃদ্ধি পায় তা স্বাভাবিক এবং এ ব্যাপারে এমন কিছুই করণীয় নেই যা প্রতিটি স্তনের বৃদ্ধির হারকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য করা যেতে পারে। সঠিক ব্রা ব্যবহার করলে তা প্রথম দিকের সপ্তাহগুলিতে সেগুলির চাক্ষুষ দৃশ্যের কিছুটা উন্নতি ঘটাতে পারে।পরবর্তী মাসগুলিতে আপনার স্তনগুলি তাদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।

5.ঝুলে যাওয়া স্তন

প্রসব পরবর্তী হয়ে থাকা স্তনের পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি অন্যতম বৃহৎ পরিবর্তন হল স্তনের ঝুলে যাওয়া যা গর্ভাবস্থার পরে স্তনগুলিতে দেখা যেতে পারে।গর্ভাবস্থায় স্তনের ক্রম বর্ধিত আকার যদিও অনেক মহিলার কাছেই বেশ আনন্দদায়ক হয়ে থাকে, তবে স্তনের ঝুলে যাওয়াটি পরিণামে দৈহিক চিত্রের এবং স্ব-মূল্যের উপর বেশ কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।

এটি হওয়ার কারণ

ওজন বৃদ্ধি পাওয়া থেকে শুরু করে, স্তনের কলার বিকাশ, ত্বকের স্থিতিস্থাপকতার মত বিভিন্ন বিষয়গুলি স্তনের ঝুলে যাওয়ার পিছনে এক বিশেষ অবদান রাখে।যে সকল মহিলারা শুরু থেকেই বৃহৎ স্তনের অধিকারিণী হয়ে থাকেন, তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে স্তন ঝুলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হওয়ার সম্ভাবনাটি খুব বেশি থাকে।বংশগত কারণগুলিও এর বহির্ভূত হতে পারে না।

আপনি যা করতে পারেন

কিছুটা খোলাখুলি ভাবে বলাই ভাল, স্তনগুলির ঝুলে যাওয়ার মত এই অশুভতা মোকাবিলা করার একমাত্র উপায় হল এমন একটি ব্রা ব্যবহার করা যা সেগুলিকে দেখতে যথাযথ এবং দারুণ লাগাতে পারে এবং তার পাশাপাশি একটি নিয়ন্ত্রিত ডায়েট বজায় রাখা যা অবস্থাটিকে আরও খারাপ না করে তুলতে পারে।কয়েকটি ক্রীম বা কৌশল ত্বককে দৃঢ় করে তুলতে পারে স্তনগুলিকে কিছুটা যথাযথ দেখতে লাগার জন্য কিন্তু এটি কেবলই সাময়িক মাত্র।

6.ফুলে ফেঁপে ওঠা আকারে বৃহৎ এবং ব্যথা যুক্ত স্তন

গর্ভাবস্থায় স্তনের আকার বেড়ে ওঠা হল একটা জিনিস, তবে প্রসবের পরে, অনেক মায়েদের মধ্যেই তাদের স্তনগুলি প্রকৃতই ফুলে-ফেঁপে একটা বৃহদাকার ধারণ করার প্রবণতা দেখা যায় এবং একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টের পরে সেগুলিতে যথারীতি ব্যথাও শুরু হতে পারে।

এটি হওয়ার কারণ

সন্তান প্রসবের পর দ্রুত গতিতে দুগ্ধক্ষরণ হয়ে থাকে এবং একটা সময় এটি হয়ে থাকে দুগ্ধ দ্বারা স্তনগুলি পরিপূর্ণ হয়ে ওঠার কারণে।এটি স্তনগুলির উপর একটি চাপ সৃষ্টি করে এবং তার ফলে সেগুলি থেকে দুধ ওভারফ্লো হওয়ার সাথে সেগুলিতে ব্যথা করতে থাকে।এর পাশাপাশি এই সময় আবার স্তনবৃন্ত থেকে দুগ্ধ ক্ষরণ বা লিকেজ হতেও দেখা যেতে পারে।

আপনি যা করতে পারেন

পাম্প করে স্তন দুগ্ধ নিঃসৃত করে মজুত করে রাখলে তা ফুলে-ফেঁপে ওঠা টনটন করা স্তন থেকে দ্রুত উপশম এনে দিতে পারে এবং তার সাথে আবার স্তনের ব্যথাও হ্রাস করতে পারে।আর সেটি করা যদি সম্ভব না হয়, একটি আইস প্যাক কিম্বা ঠাণ্ডা কিছু বাঁধাকপির পাতা নিয়ে সেগুলিকে ব্রা-এর মধ্যে রাখলে তা সেই অনুভূতিগুলিকে অসাড় করার ক্ষেত্রে এবং যন্ত্রণা হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে।

7.অবরুদ্ধ দুগ্ধ নালী

দুগ্ধ উৎপাদন প্রক্রিয়াটি হল বেশ আকর্ষণীয় একটি পদ্ধতি।আর সেই কারণেই বেশ কিছু মহিলা ঠিকভাবে স্তনপান করানোর পরেও কেন তাদের দুগ্ধ নালী অবরুদ্ধ হয়ে যায় বলে মনে হয় সে ব্যাপারে চিন্তাণ্বিত হয়ে থাকেন।

এটি হওয়ার কারণ

এক্ষেত্রে সাধারণত মূল অভিযুক্তকারী হল একটি অযথাযথ ব্রা।যে সকল মহিলারা প্রসবের পরে অন্তর্বাসের সাথে ব্রাগুলি ব্যবহার করা অব্যাহত রাখেন, তাদের ক্ষেত্রে সেগুলি স্তনের নিচে অবস্থিত দুগ্ধ নালীগুলির প্রতিবন্ধক হয়ে ওঠে।এটি দুগ্ধ প্রবাহ এবং দুগ্ধ উৎপাদনের অন্তরায় হয়ে ওঠে।

আপনি যা করতে পারেন

এমন ব্রায়ের সন্ধান করুন যাতে সুতির কোমলতা বজায় থাকে এবং আপনার ত্বকে ঘষা লেগে কোনওরকম ক্ষতের বা অস্বস্তির সৃষ্টি না হয়।বর্ধিত সমর্থনের সাথে স্তনদানকারী ব্রাগুলিও আবার বাজারে সহজলভ্য।

8.যন্ত্রণাদায়ক এবং চিঁড়ে যাওয়া স্তনবৃন্ত

গর্ভাবস্থাকালে এবং এমনকি সন্তান প্রসবের পরেও সবচেয়ে বড় সমস্যার মুখোমুখি হয় স্তনবৃন্তগুলি।এই সময় হয়ে চলা দৈহিক অন্যান্য পরিবর্তনগুলির মধ্যে আবার এমন কিছু দৃষ্টান্তও রয়েছে যেখানে স্তনবৃন্তগুলি অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয়ে উঠতে পারে অথবা আবার এমনকি সেগুলি চিঁড়েও যেতে পারে, যার পরিণাম হিসেবে যন্ত্রণা হতে থাকে।

এটি হওয়ার কারণ

আপনার স্তনগুলিতে এক বৃহৎ পরিসরে পরিবর্তন ঘটে যাওয়ার কারণে সেগুলিতে হালকা ধরণের একটা ব্যথা অনুভব করাটা স্বাভাবিক।তবে মারাত্মক ব্যথা বা চিঁড়ে যাওয়া আপনার ছোট্ট সোনাকে ঠিকমত স্তনপান করানোতে ব্যর্থ হওয়া কিম্বা স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে আপনার স্তনবৃন্তের উপর তার সংলগ্ন না থাকাতে পারারই লক্ষণ।

আপনি যা করতে পারেন

স্তনবৃন্তের উপর অস্বস্তির পুনরাবৃত্তি হ্রাস করতে, স্তন পান করানোর সময় আপনার সন্তান যাতে সঠিকভাবে স্তনের সহিত সংলগ্ন থেকে চোষণ করে সে ব্যাপারটিকে নিশ্চিত করুন।উপশমের জন্য স্তনবৃন্তে লাগাতে আপনি কয়েকটি নির্দিষ্ট ক্রীম কিম্বা অয়েনমেন্ট ব্যবহার করতে পারেন, যেগুলি বাচ্চাদের জন্যও সুরক্ষিত ও নিরাপদ।

9. ম্যাসাটাইটিস বা স্তনপ্রদাহ

সন্তান প্রসবের পর স্তনবৃন্তগুলি বাইরের দিকে উদগত হয়, অ্যারিওলা অঞ্চলটি আরও গাঢ় হয়ে ওঠে এবং স্তনের ওপর অসংখ্য ছোট ছোট ফুসকুড়ি বিশেষ ফুটে ওঠে।এই সকল পরিবর্তনগুলির মধ্যে আপনি হয়ত লক্ষ্য করে থাকতে পারেন এমন এক লালচে দাগকে আপনার স্তনের ওপর ফুটে উঠতে যা বেশ যন্ত্রণাদায়ক এবং দ্রুত ফুলে ওঠে জ্বলন সৃষ্টি করে।

এটি হওয়ার কারণ

আপনার স্তন অবিরত দুধ এবং লালার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে থাকে।যদি অযথাযথভাবে খাওয়ানোর কারণে স্তনবৃন্তগুলি চিঁড়ে গিয়ে থাকে, তবে সমগ্র অঞ্চলটিই ব্যাকটেরিয়ার জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হয়ে ওঠে, যা ম্যাসাটাইটিস নামে অভিহিত সংক্রমটির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

আপনি যা করতে পারেন

ম্যাসাটাইটিস হওয়ার জন্য মূলৎ দায়ী হল অবরুদ্ধ দুগ্ধনালী।কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে দুধের সঞ্চিতকরণ এড়াতে নিয়মিত আপনার স্তনগুলি পাম্প করার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।

10.ফোড়া বিশেষ

সাধারণত ম্যাসাটাইটিসের পরেই এগুলি দেখতে পাওয়া যায়, এক্ষেত্রে এমন নজির দেখতে পাওয়া যায়, যেখানে প্রথম দিকে দেখা দেওয়া লালচে দাগগুলি হয়ত একটি ফোড়ার আকার ধারণ করে হলদেটে রঙে রূপান্তরিত হয় এবং যন্ত্রণা শুরু হয় যা পূঁজে পূর্ণ থাকে।

এটি হওয়ার কারণ

যদি কোনও মা তার হয়ে থাকা ম্যাসামাইটিসকে অবজ্ঞা করেন এবং সেটি ঠিকমত চিকিৎসা করাকে উপেক্ষা করেন, সেক্ষেত্রে সংক্রমণটি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।এটি মায়ের জন্য যেমন একদিকে খুব যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে ঠিক তেমনই আবার বাচ্চার জন্যও এটি অস্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে, যেহেতু বাচ্চাটির মুখটিও ওই পূঁজপূর্ণ অঞ্চলটির সাথে যুক্ত হয়ে থাকে।

আপনি যা করতে পারেন

সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারদের সম্পূর্ণভাবে অস্ত্রপচারের সাহায্যে ফোলা অঞ্চলটি অপসারণ করার প্রয়োজন হতে পারে।কখনও কখনও আবার পূঁজগুলি বের করার ক্ষেত্রে বাইরে থেকে নূন্যতম যন্ত্রাংশ হিসেবে সূচ ব্যবহারও করতে হতে পারে।

প্রসব পরবর্তী হয়ে থাকা স্তনের এই সকল পরিবর্তনগুলি কি স্থায়ী?

মায়েরা প্রসবের পর তাদের স্তনের আকার হ্রাস করার জন্য যোগ-ব্যায়ামগুলি করাকে বেছে নিতে পারেন, যেটি একটি ভালো জিনিস।এই সময় হয়ে থাকা স্তনের অধিকাংশ পরিবর্তনগুলিই সাধারণত কয়েক মাসের মধ্যেই মিলিয়ে যায়, যদিও সেগুলির মধ্যে অনেকগুলিই আবার সারাজীবন ধরেই রয়ে যেতে পারে।সৌভাগ্যবশত, আপনার স্তপনগুলিকে যথা সম্ভব সুন্দর দেখানো নিশ্চিত করার জন্য সর্বদাই এর বিশেষ কিছু প্রতিকার ও উপায়ও রয়েছে।

গর্ভাবস্থার পরবর্তীতে স্তনের আকার কীভাবে সুনিয়ন্ত্রিত রাখবেন?

আপনার স্তনের যত্ন নেওয়া এবং গর্ভাবস্থার আগের মতই সেগুলিকে আকর্ষণীয় দেখতে লাগার বিষয়টিকে নিশ্চিত করা যেতে পারে কয়েকটি সহজ টিপস অনুসরণ করার সাথেঃ

আপনার স্তনের পেশীগুলি শক্তিশালী করার জন্য এবং সেগুলিকে উন্নত ভাবে ধরে রাখার জন্য দায়বদ্ধ অঞ্চলগুলির দিকে লক্ষ্য স্থির রেখে উপযুক্ত ব্যায়ামাদি অনুশীলন করা শুরু করুন।স্তনগুলিকে দৃঢ় এবং সুঠাম করে তোলার জন্য এগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

যদিও আপনি আপনার গর্ভাবস্থাকালীন অর্জিত ওজন দ্রুত হ্রাস করতে চাইতে পারেন, কিন্তু তার জন্য কোনও চরম মাত্রার ডায়েটকে বেছে নেবেন না। আকস্মিক ওজন হ্রাসও আবার আপনার স্তনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।এর বদলে বরং স্বাস্থ্যকর আহার গ্রহণকেই মনোনীত করুন।

আপনার স্তন অঞ্চলে রক্ত ​​চলাচলের উন্নতি এগুলিকে সহজেই উত্থিত করতে ও পুনর্নব করতে সহায়তা করতে পারে।স্নানের সময়  ঠাণ্ডা-গরম জলের বিকল্পটি আপনার শরীরের মাধ্যমে রক্তের প্রবাহকে উদ্দীপিত করে তোলার ক্ষেত্রে আদর্শ হয়ে উঠতে পারে।

মাঝেমধ্যে কখনও কখনও আবার স্তনগুলি শক্ত এবং যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে পারে।এ ধরণের ব্যাপারগুলিও সহজেই সমাধান করা যেতে পারে কিছু সহজ স্তন ম্যাসাজ বা মালিশের প্রক্রিয়া অনুসরণের দ্বারা যা সেগুলিকে পুনরায় তার দৃঢ় আকারে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।

কোনও শক্ত ধরণের বা স্তনের জন্য আরামদায়ক ও নমনীয় নয় এমন ধরণের ব্রা অন্তর্বাস হিসেবে পরা আপনার পক্ষে শ্রেষ্ঠ নির্বাচন নাও হয়ে উঠতে পারে। এর পরিবর্তে সর্বদা স্তনদানের উপযোগী একটি ব্রেস্টফিডিং ব্রা বা সুতির কোমলতা যুক্ত কোনও ব্রা-ই ব্যবহার করুন, যা স্তনের একটি ভাল আকার বজায় রাখতে সহায়তা করবে।   বিভিন্ন যোগ-ব্যায়াম অনুশীলন করা এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা সত্ত্বেও মহিলারা প্রায়শই চিন্তত হয়ে ওঠেন প্রসবের পরবর্তীতে তাদের স্তনের আকার কীভাবে হ্রাস করা যায় সে ব্যাপারে, বিশেষ করে যদি তাদের প্রথম দিকে আকারে ছোট স্তন থেকে থাকে।এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, শরীর বিবিধ উপায়ে পরিবর্তিত হয়ে থাকে আর একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্থ দেহ এই সময় অন্য যেকোনও কিছুর উর্দ্ধে উচ্চ মাত্রায় প্রয়োজনীয়।