শিশুদের ত্বক ভীষণ সংবেদনশীল এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অত্যন্ত দুর্বল ও ক্রমবিকাশের পর্যায়ে থাকে,যা তাদের বিভিন্ন অ্যালার্জি এবং সংক্রমণের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে।আপনার শিশুর ত্বকে হয়ে থাকা সামান্য অস্বস্তি এবং জ্বালা জ্বালা ভাবটি তার ত্বক জনিত ফুসকুড়িগুলিকে ক্রমশ বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং তা তাকে অত্যন্ত বিরক্ত এবং ঘ্যানঘ্যানে করে তোলে।আমরা জানি যে আপনি সর্বদাই আপনার ছোট্ট শিশুটিকে সুরক্ষিত এবং নিরাপদে রাখার পক্ষপাতি কিন্তু ত্বক জনিত অ্যালার্জি বা ফুসকুড়িগুলি ছোট শিশু এবং বাচ্চাদের মধ্যে হয়ে থাকাটা স্বাভাবিক এবং এ ব্যাপারে আপনি করতে পারেন এমন সবচেয়ে ভাল বিষয়টি হল এগুলির ব্যাপারে আগে থেকে সচেতন থাকা।বেশ কিছু ত্বক জনিত অ্যালার্জি আবার অন্যান্য অনেক অ্যালার্জির থেকেই বেশি সাধারণ এবং জানা যায় যে এগুলিকে সহজেই সামাল দেওয়া যায় বলে প্রমাণিত।অতএব,বিভিন্ন ধরণের ত্বক জনিত অ্যালার্জি এবং কীভাবেই বা আপনি সেগুলির চিকিৎসা করতে পারেন সে সম্পর্কে জানতে পড়ুন।
সাধারণত ত্বক জনিত অ্যালার্জি হয়ে থাকে যখন ত্বকে একটা অস্বস্তি হয়ে থাকে অথবা কোনও অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে এসে ত্বকে একটা প্রদাহের সৃষ্টি হয়।অনুরূপভাবে,যখন কোনও অ্যালার্জেনের উপস্থিতির কারণে দেহে রাসায়নিক হিস্টামিনের বহিঃপ্রকাশ ঘটে, তখন সেটি একটি প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়ার দিকে পরিচালিত করে।এরপর এই অ্যালার্জিটি বিভিন্ন ধরণের র্যাশ বা ত্বক জনিত ফুসকুড়ি কিম্বা আমবাতগুলির মধ্য থেকে যেকোনও একক রূপে ত্বকের উপর উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।সংবেদনশীল ত্বক হওয়ার কারণে শিশুদের মধ্যে ত্বক জনিত অ্যালার্জিগুলি দেখা দেওয়াটা বেশি সাধারণ। আবার এমনকি ময়লা ডায়পার,মুখ থেকে ক্রমাগত লালা ঝরা,খাদ্য এবং ব্যবহার করা সাবান ও ডিটার্জেন্টের মত কিছু বিষয়গুলিও শিশুদের মধ্যে হয়ে থাকা অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
শিশুদের মধ্যে ত্বকজনিত অ্যালার্জি এবং র্যাশগুলি হয়ে থাকা খুবই সাধারণ একটি বিষয় এবং এর জন্য প্রায় কোনওরকম ওষুধ ব্যবহার বা চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না বললেই চলে।বেশিরভাগ ত্বকের সমস্যাই সময়ের সাথে সাথে সেরে ওঠে,কিন্তু সেটি যদি না হয়ে থাকে,আপনার ছোট্ট সোনাটিকে সেক্ষেত্রে একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান।শিশুদের উপর প্রভাব ফেলে এমন কিছু সাধারণ ত্বক জনিত অ্যালার্জির উল্লেখ নিম্নে করা হলঃ
একজিমা হল এমন এক প্রদাহযুক্ত ত্বকজনিত সমস্যা যা 1-5 বছর বয়সের মধ্যে থাকা শিশুদের মধ্যে বিকাশ পেয়ে থাকে।তবে,এই শর্তটি আবার অনেক সময় তিন থেকে চার মাস বয়সী শিশুদের মধ্যেও বিকাশ পেয়ে থাকে।একজিমাকে লালচে চুলকানি যুক্ত ছোট ছোট র্যাশ বা ফুসকুড়িগুলির দ্বারা চিহ্নিত করা যায় যা,আবার ছোট ছোট লালচে ফোড়ার মতও হতে পারে।যদিও একজিমা বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে কিন্তু ছোট্ট শিশু এবং বচ্চাদের মধ্যে সাধারণত অ্যাটোপিক একজিমাই বিকাশ পেয়ে থাকে।
কারণ সমূহ
একজিমার একটি অন্যতম কারণ হল জিনগত কারণ,তবে বেশ কিছু বিশেষ পোশাক এবং সাবানের ব্যবহার আবার এটিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।মাঝে মধ্যে আবার,খাদ্যজনিত অ্যালার্জিগুলি এবং পরিবেশ দূষণকারী পদার্থ যেমন ধোঁয়া এবং ধূলোও আবার একজিমার কারণ হতে পারে।উষ্ণ এবং অত্যন্ত শীতল আবহাওয়ায় আবার ঘামের পুঞ্জীভবনের কারণটিও অনেক সময় এই শর্তটির জন্য দায়ী হয়ে থাকে।
উপসর্গগুলি
একজিমা সারা দেহেই দেখা দিতে পারে।শুকনো,খসখসে,পুরু চামড়া বা ত্বক কিম্বা চুলকানিযুক্ত লালচে ফুসকুড়ি বা র্যাশগুলি হল এই ধরণের অ্যালার্জির কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ।
চিকিৎসা
আপনার শিশুর দেহে যদি ত্বকের এই ধরণের শর্তটি ক্রমশ বিকাশ পেতে থাকে,তাকে ভালভাবে স্নান করান।কোনওরকম সুগন্ধিহীন এবং একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা নির্ধারিত একটি হালকা মানের স্কিন–ক্লিনজার ব্যবহার করুন।কখনই আপনার ছোট্টোটির জন্য ওভার দ্য কাউন্টার একজিমা অয়েনমেন্ট বা মলমগুলি কিনে ব্যবহার করবেন না।যদি বিষয়টি ক্রমশ গুরুতর হয়ে ওঠে,আপনার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে তাকে নিয়ে গিয়ে একবার পরীক্ষা করিয়ে নিন,তিনি প্রদাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য খুব সম্ভবত স্টেরয়েড মলমগুলি নির্ধারণ করবেন যা হয়ত আপনার ছোটটিকে কিছুটা স্বস্তি দেবে।
এই ধরণের র্যাশ সাধারণত দেহের প্রকাশ্য অঞ্চলে যেমন হাত,মুখমণ্ডল এবং গলায় দেখা যায়।এটি শিশুদের মধ্যে বেশ সাধারণ এবং সারা দেহে এটি এমনভাবে আমবাত আকারে দেখা দিতে পারে যা দেখে আপনার ধারণা হতে পারে প্রচুর পোকামাকড়ের কামড় বলে যদিও সেটা সেরকম কিছু নয় কেবল একটিই হতে পারে।যদিও এটি সাধারণত 2-6 বছর বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে প্রভাব ফেলে,তবে এটি আবার একদম ছোট শিশুদের মধ্যেও দেখা দেয়।
কারণ সমূহ
প্যাপুলার আরটিকেরিয়া হল পোকামাকড়ের কামড়ের মত একধরণের অ্যালার্জি জনিত প্রতিক্রিয়া।পোষা বিড়ালের গায়ে পাওয়া এক ধরণের মাছি এই জাতীয় অ্যালার্জির মূল কারণ।তবে বার্ড মাইট বা পাখির গায়ে থাকা ক্ষুদ্র পরজীবি বিশেষ,বিছানার ছাড়পোকা,মশা,ডাশ,শুয়োপোকা এবং কার্পেট বিটেলের ন্যায় পোকামাকড়ের কামড়গুলিও আবার এই ধরণের র্যাশ দেখা দেওয়ার কারণ হতে পারে।
উপসর্গগুলি
এটি শুরুতে এমন এক ধারণের র্যাশ হিসেবে বের হয় যা ত্বকের উপর ছোট ছোট ফুসকুড়ি আকারে দেখতে লাগে,যা এরপরে লালচে ভাব থেকে খয়েরী বা বাদামী ভাবের মত রঙে রূপান্তরিত হয়।এই ফুসকুড়িগুলি সামাণ্য চুলকানি যুক্ত হতে পারে।
চিকিৎসা
যেহেতু এটি একটি সাধারণ ত্বকজনিত অ্যালার্জি,তাই চুলকানি থেকে স্বস্তি পাওয়ার জন্য সাধারণত টপিক্যাল স্টেরয়েড ক্রীম ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।আবার স্বস্তি দেওয়ার জন্য অনেক সময় একটি অ্যান্টিহিস্টামিনও রাত্রে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।যদি কোনও কারণে র্যাশ বা ফুসকুড়িগুলি সংক্রামিত হয়ে ওঠে,সেক্ষেত্রে আপনার ছোট্টটির ডাক্তারবাবু হয়ত তার জন্য একটি অ্যান্টিবায়োটিক ক্রীম নির্ধারণ করে সেটি ব্যবহারের পরামর্শ দেবেন।
গরমের র্যাশ (ঘাম অথবা গরমের থেকে হয়ে থাকা ঘামাচি)সাধারণত শিশুদের মুখমণ্ডল,গলা,ঘাড়,বোগল এবং নিতম্ব অঞ্চলে দেখা যায়।এটি এমন একধরণের ত্বক জনিত ফুসকুড়ি যেটি দেখা দেয় যখন ত্বক খুব বেশি গরম হয়ে যায়।সংবেদনশীল ত্বকের সাথে গরম আওহাওয়ায় বসবাসকারী শিশুরা বিশেষ করে এই ধরণের অ্যালার্জি প্রবণ হয়ে থাকে।
কারণ সমূহ
এই ধরণের গরমের র্যাশের প্রধান কারণ হল ত্বকের নিচে ঘামের পুঞ্জীভবন।শিশুর দেহের ঘর্মগ্রন্থিগুলি ছোট হওয়ার কারণে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তাদের দেহে কম থাকে।ফলে তাদের দেহে গরমের র্যাশগুলি বের হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।আদ্র আবহাওয়ায় আপনি যদি আপনার শিশুকে বেশ আঁটসাট জামা–কাপড় পরান অথবা ভ্রমণকালে দীর্ঘ সময়ব্যাপী তাকে গাড়ির সিট বেল্টের বাধনে বেঁধে রাখেন,সেক্ষেত্রেও এই ধরণের র্যাশ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।
উপসর্গগুলি
ঘর্মগ্রন্থিগুলি অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এটি ছোট ছোট লালচে ফুসকুড়ি কিম্বা পূয পূর্ণ ফোঁড়ার আকারে দেখা দেয়।
চিকিৎসা
এটি সাধারণত নিজে থেকেই সেরে যায় এবং এর জন্য বিশেষ কোনও চিকিৎসারও প্রয়োজন পড়ে না।তবে আপনার শিশুর যদি গরমের র্যাশ হয়ে থাকে,তবে তাকে হালকা আরামদায়ক পোশাক পরান–এটি এই ধরণের র্যাশ নিরাময় প্রক্রিয়ার গতি ত্বরাণ্বিত করতে সহায়তা করবে।
এই ধরনের ছত্রাকজনিত সংক্রমণ দেহের অন্য যেকোনও অংশের তুলনায় মাথার ত্বকে,পায়ের পাতায় এবং শরীরের গুপ্ত অংশগুলিতে বেশি প্রভাব ফেলে।এটি সংক্রামক বা ছোয়াচে তবে যন্ত্রণাদায়ক বা বিপজ্জনক নয় এবং এটি সংক্রামিত শিশুর চাদর,তোয়ালে,জামাকাপড় এবং খেলনাপত্রের দ্বারা দ্রুতই অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কারণ সমূহ
দাদ সংক্রমণটি হওয়ার সাধারণ কারণটির মধ্যে রয়েছে শিশুর ত্বকের উপর ঘাম জমে থাকা এবং ত্বকের খাঁজগুলিতে ঘামের ভিজে প্যাচ বা দাগগুলি।এই সংক্রমণটি আবার শিশুর দেহে প্রবেশ করতে পারে কোনও সংক্রামিত ব্যক্তি বা পশুর সংস্পর্শে আসার পর শিশুর ত্বকের উপর থাকা কোনও কাটা ক্ষত বা আঁচড় এর মাধ্যমে।
উপসর্গগুলি
এই ধরনের র্যাশটি দেখতে হয়ে থাকে সাধারণত সংক্রামিত অঞ্চলের উপর লালচে বলয়ের ন্যায় এবং সম্ভবত চুলকানি যুক্ত হয়ে থাকে।এই বলয়টির মধ্যস্থলটি সাধারণত মসৃণ হয় এবং বাইরের চারপাশের ধারগুলো খোলস যুক্ত এবং খসখসে হয়ে থাকে।
চিকিৎসা
শিশুদের দাদ সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টি–ফাঙ্গাল ক্রীমগুলি সহায়তা করতে পারে।সংক্রামিত এলাকাটিকে ভালভাবে ধুয়ে শুকনো করে নেওয়ার পরেই ক্রীমগুলি প্রয়োগ করা উচিত।আর মাথার খুলির ত্বকে যদি দাদ সংক্রমণটি হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে ক্রীমের পরিবর্তে একটি মেডিকেটেড বা ওষুধযুক্ত শ্যাম্পুই ব্যবহারের প্রয়াজন হতে পারে।
আমবাত সংক্রামক নয় এবং এটি হয় কয়েক ঘন্টার মধ্যেই উধাও হয়ে যেতে পারে অথবা আবার কয়েক সপ্তাহের জন্যও স্থায়ী হতে পারে।আমবাত সাধারণত চুলকানিযুক্ত এবং ত্বকের উপর ফুলে ওঠা দাগের ন্যায় হয়ে থাকে।সেগুলি আকার এবং আয়তনে বিভিন্ন পরিসরে হতে পারে এবং দেহের যেকোনও জায়গায় বিকাশ পেতে পারে।
কারণ সমূহ
ভাইরাল সংক্রমণ,পোকামাকড়ের কামড়,কিছু বিশেষ ধরণের খাদ্য অথবা তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা রাসায়নিক হিস্টামিন উৎপন্ন করলে আমবাত বিকাশ করে।আমবাত দেখা দিলে আপনার শিশুটি হয়ত চুলকানি বা একটি জ্বলন অনুভব করতে পারে।
উপসর্গগুলি
যদি আপনার বাচ্চার দেহ লালচে হয়ে যায়, বা দেহের যেকোনো জায়গায় ফোলা ফুসকুড়ি দেখা যায় বিশেষত যদি তার সর্দি–কাশি এবং জ্বর সহ পোকামাকড় কামড়ানোর ন্যায় ত্বকে দেখতে লাগে কিম্বা চিনাবাদাম,ডিম বা সী–ফুড খাবার পরে যদি তার দেহের তাপমাত্রার খুব বেশি পরিবর্তন দেখা যায় তাহলে সেটা আমবাত হতে পারে।
চিকিৎসা
আন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ আপনার বাচ্চাকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে সাহায্য করবে।যদি এটা মাঝেমাঝেই হয় তাহলে হয়ত আপনার ডাক্তারবাবু আপনার বাচ্চার সারাদিনের কার্যক্রম লিপিবদ্ধ করতে বলতে পারেন যার দ্বারা কেন এটি হচ্ছে তা তিনি বুঝতে পারবেন।আবার এটির কারণ জানার জন্য পরবর্তী সময়ে তিনি হয়ত রক্ত ও প্রস্বাব পরীক্ষা করতে বলতে পারেন।
এটা সাধারণত বাচ্চাদের ছয়মাস বা তার কম বয়সে দেখতে পাওয়া যায়।মাথার ত্বক,ভ্রু,কান,গলা,চিবুক,এবং বুকে সেবোরোহিয়া হয়ে থাকে।এটা দোলনার টুপি বা ক্রেডেল ক্যাপ নামেই পরিচিত।সাধারণত এটা মাথার ত্বকে কিম্বা ভ্রূতে হয়ে থাকে।এটা যন্ত্রণাবিহীণ এবং আপনার শিশুর কোনোরকম জ্বলনের সৃষ্টি করে না।
কারণ সমূহ
এটি হওয়ার সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি তবে মনে করা হয় ত্বকের গ্রন্থিদ্বারা একমাত্র উৎপাদিত তৈলাক্ত পদার্থ সিবামের অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য এটি হয়ে থাকে।
উপসর্গগুলি
হলদেটে বা আঁশের মত চিহ্নগুলো আপনার বাচ্চার সেবোহোরিয়া হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ।মাথার ত্বকে চোখের ভ্রূতে এটা হলে অনেক সময় খুশকি বলে লোকে ভুল করে থাকে।যখন এটা কানের পিছনে হয় তখন এই আলার্জিটাকে খড়খড়ে এবং আঁশ বহুল মনে হয় যখন এটি বুকে বা গলার কাছাকাছি অঞ্চলে হয় তখন এটা লালচে এবং অমসৃণ দেখায়।
চিকিৎসা
আপনার বাচ্চার মাথার ত্বকের উপর আঁশের মত জিনিসগুলো জমা হতে শুরু করলে সেগুলোকে ভাল ভাবে ব্রাশ বা আঁচড়িয়ে দিন এবং অলিভ অয়েল দিয়ে মাথায় ম্যাসাজ বা মালিশ করে দিন।আন্টি–ড্যানড্রফ শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে দিন এবং কানের পিছন দিকটা ধুয়ে দিলেও ভাল ফল পাওয়া যায় বলে প্রমাণিত।
গোলগাল চাদপানা মুখো শিশুদের ত্বকের খাঁজগুলিতে প্রায়শই এই ধরনের র্যাশ দেখতে পাওয়া যায় আর তার সাথেই গলা–ঘাড়ে এই র্যাশের দাগগুলি দেখতে পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি।এটি সাধারণত যন্ত্রণাহীনই হয়ে থাকে যদিও ত্বকে ত্বকে ঘর্ষণের কারণে তা আবার মাঝে মধ্যে কিছুটা যন্ত্রণাযুক্তও হয়ে উঠতে পারে।
কারণ সমূহ
এই ধরণের র্যাশ দেখা যায় যখন শিশুর ত্বকের ভাজে লালা এবং থুতু থেকে অতিরিক্ত আদ্রতা পুঞ্জীভূত হয়ে থাকে।ত্বকের এই অংশগুলি বাতাসে উন্মুক্ত না হওয়ার কারণে,সেই আদ্র অঞ্চলগুলি শুকনো হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে,যা আপনার শিশুকে সংক্রমণের ঝুঁকির মুখে এগিয়ে দেয়।
উপসর্গগুলি
এটি লালচে অথবা লালচে–বাদামী দেখতে হয়ে থাকে।এটিতে চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং ত্বকটি যখন খসখসে কিম্বা ফাটলযুক্ত হয়ে থাকে তখন আবার তা থেকে হয়ত বিশ্রী গন্ধও নির্গত হতে পারে।
চিকিৎসা
আপনি অবশ্যই শিশুর ত্বকের ভাঁজগুলিকে জল দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিন।এরপর নিরাময় প্রক্রিয়াটিকে ত্বরাণ্বিত করতে ত্বকের ভাঁজ অঞ্চলগুলিতে পেট্রোলিয়াম জেলি কিম্বা একটি জিঙ্কঅক্সাইড ব্যারিয়ার ক্রীম প্রয়োগ করুন।গুরুতর ক্ষেত্রে আবার ওরাল বা মুখে খাওয়ার একটি ওষুধ হিসেবে একটি টপিক্যাল স্টেরয়েডও নির্ধারিত হতে পারে।
কিছু সাধারণ সতর্কতা অবলম্বনের দ্বারা নবজাত শিশুদের হয়ে থাকা ত্বকজনিত সাধারণ সমস্যাগুলির বেশির ভাগটাই প্রতিরোধ করা যেতে পারে।এক্ষেত্রে শিশুদের ত্বক পরিষ্কার এবং আদ্র রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।ত্বকজনিত অ্যালার্জিগুলি প্রতিরোধে আপনি করতে পারেন এমন কিছু বিষয়ের উল্লেখ এখানে করা হলঃ
উপরের উল্লেখানুযায়ী আবারও বলা হল বেশির ভাগ ত্বকের সমস্যাগুলিরই সমাধান সময়ের সাথে সাথে নিজে থেকেই হয়ে যায় এবং বাড়িতেও এর চিকিৎসা করা যেতে পারে।তবে কিছুক্ষেত্রে আবার এ ব্যাপারে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে তার পরামর্শ নেওয়াটাও জরুরী। আপনার সন্তানের যদি ত্বকজনিত অ্যালার্জি হয়ে থাকে এবং দিন দিন ক্রমশ র্যাশগুলি আরও খারাপ হয়ে উঠতে থাকে,আপনার তাকে একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।মাঝেমধ্যে আবার এই ধরণের ত্বকের র্যাশ কিছু অসুস্থতার সংকেতও দিয়ে থাকতে পারে–এইসব ক্ষেত্রে,অবিলম্বে এ ব্যাপারে ডাক্তারী মনোনিবেশ করানো প্রয়োজন।যদি আপনার শিশুর জ্বর হয়ে থাকে এবং সে অনবরত একনাগাড়ে কাঁদতে থাকে অথবা সর্বদা একটা আলিস্যি ভাব দেখা দেয়,সেক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে তার পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শিশুদের ত্বকের অ্যালার্জির সাথে মোকাবিলা করার সময় একটা ভাল মাত্রায় ধৈর্য রাখা প্রয়োজন।প্রতিরোধই হল মূল চাবিকাঠি,আবার যখন সেটি ত্বকের অ্যালার্জির প্রসঙ্গ আসে।যতটা সম্ভব আপনার শিশুর ত্বককে পরিষ্কার এবং শুকনো রাখার দ্বারা একটা ভাল স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে আপনার ছোট্টটিকে ত্বকজনিত অ্যালার্জি থেকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করুন।
বিধিসম্মত সতর্কীকরণঃ এই সকল তথ্য ও নথিগুলি হল কেবল একটি নির্দেশিকা মাত্র এবং এটি কখনই একজন যোগ্যতা সম্পন্ন পেশাদারের চিকিৎসাজনিত পরামর্শের বিকল্প নয়।