4 মাস বয়সী শিশুর যত্ন – সাহায্যকারী দরকারী টিপস

4 মাস বয়সী শিশুর যত্ন - সাহায্যকারী দরকারী টিপস

4 মাস বয়সে আপনার শিশুর ধীরে ধীরে তার অনন্য ব্যক্তিত্ব বৈশিষ্ট্যগুলি প্রকাশ হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে, আপনার গর্ভাবস্থা পরবর্তী আরোগ্য সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। এখন, আপনি আপনার সন্তানের প্রয়োজনীয়তাগুলি, যা তাকে সুখী করে এবং সাধারণভাবে সে যা পছন্দ করে তা আরও বেশী নিশ্চিত ভাবে বোঝেন। ঘুমানোর এবং খাওয়ানোর প্যাটার্নগুলি তৈরি শুরু হতে পারে যা আপনাকে আপনার শিশুর প্রয়োজনীয়তার সম্বন্ধে আগে থেকে জানতে সহায়তা করে এবং তারপরে সেই অনুযায়ী সেটি সরবরাহ করা যেতে পারে। কোনো কোনো দিন এটি সহজ মনে হতে পারে আবার কোনো কোনো দিন এটি একটি চ্যালেঞ্জের চেয়ে কম হয় না।

এই পর্যায়ে আপনার শিশুর উল্লেখযোগ্য বিকাশ দেখা যেতে পারে। তার ওজন বৃদ্ধি শুরু হতে পারে যা বোঝায় যে সে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাচ্ছে। 4 মাস বয়সী শিশুর গড় উচ্চতা সাধারণত ছেলেদের জন্য 63.8 সেমি এবং মেয়েদের জন্য 62 সেমি হয়। গড় ওজন সাধারণত ছেলেদের জন্য 7 কেজি এবং মেয়েদের জন্য 6.4 কেজি।

অন্যান্য বিশিষ্ট বিকাশের মধ্যে থাকতে পারে ঘনিষ্ঠ দৃষ্টি ও চোখের সাথে হাতের সমন্বয়, পাশের দিকে ঘুরে যাওয়া, মুখে হাত দেওয়া, হাতে খেলনা ধরে সেগুলিকে ঝাঁকানো। আপনার বাচ্চা স্নেহের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করতে পারে যেমন মানুষের দিকে চেয়ে হাসা বা অন্যের নড়াচড়া ও মুখের অভিব্যক্তিগুলির অনুকরণ করা। সে আধ-আধ কথা বলতে পারে এবং দুঃখ, আনন্দ বা বিরক্তির মতো বিভিন্ন আবেগ প্রকাশ করতে পারে।

কিভাবে 4-মাস-বয়সী শিশুর যত্ন নিতে হবে?

প্রত্যেক নতূন দিনের সাথে সাথেআপনি আপনার চার মাস বয়সী শিশুর যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে আরো অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। 16 সপ্তাহ বয়সীর যত্ন নেওয়া কিছু সময়ে একটি কাজ হতে পারে। এখানে চার মাসের শিশুর যত্নের জন্য কয়েকটি দরকারী পরামর্শ রয়েছে:

1. আপনার শিশুকে খাওয়ানো

যেহেতু স্তন দুগ্ধ সম্পূর্ণ পুষ্টি সরবরাহ করে, তাই আপনার শিশুকে অপরিহার্যভাবে স্তন দুগ্ধের উপরই রাখতে হবে শক্ত খাবারের সাথে পরিচয় করানোর জন্য কোন তাড়া নেই এই পর্যায়ে আপনার শিশুকে বোতলে খাওয়ানোর সাথে পরিচয় করানো ভালো পরিকল্পনা হতে পারে আপনি একটি বোতলের মধ্যে পাম্প করে বের করা বুকের দুধ বা ফরমূলা দুধ ভরে কখনও কখনও আপনার শিশুকে খাওয়ানোর চেষ্টা করতে পারেন

2. ঘুমের প্যাটার্ন

আপনার শিশুর ছোট ছোট ঘুম এবং রাতের ঘুমের জন্য একটি ধারাবাহিক রুটিন মেনে চলার চেষ্টা করুন। ঘুম পাড়ানোর জন্য আপনি আপনার শিশুকে ঘোরাতে পছন্দ না করতে পারেন যাতে সে নিজে নিজে শিথিল হতে শেখে এবং ঘুমাতে শিখতে পারে।

3. পড়ে যাওয়া প্রতিরোধ করুন

আপনার বাচ্চা লাথি মারতে পারে, পাশ ফিরতে পারে বা উপুড় হওয়া থেকে চিত হতে পারে। তার চারপাশে যেন তেমন কোনো বস্তু না থাকে যেটিকে সে লাথি মারতে পারে যার ফলে তার নিজের আঘাত লাগতে পারে। এছাড়াও আপনার সন্তানকে কখনো কিছুক্ষণের জন্য একা রাখতে হলে, পড়ে যাওয়া আটকাতে তার চারপাশে বালিশ বা কুশন রাখুন।

4. টিকাদান

আপনার শিশুর নির্ধারিত টিকার জন্য ডাক্তারের সাথে একটি সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা ঠিক করতে মনে রাখবেন। যখন শিশুটিকে শট দেওয়া হয়, তখন তার মনোযোগ অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। তারপরে, আপনি আস্তে আস্তে তাকে দোলানোর মাধ্যমে বা কাপড় দিয়ে মুড়ে তাকে শান্ত করতে পারেন। টিকা দেওয়ার পর, আপনার শিশু খিটখিটে হয়ে যেতেপারে অথবা তার হালকা জ্বর হতে পারে। এই উদ্বেগ সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা নিন।

5. ডায়াপার জনিত ফুসকুড়ি মোকাবিলা করা

ডায়াপার ময়লা হয়ে গেলেই ডায়াপার বদলে ফেললে, প্রতিদিন কিছুটা সময় ডায়পার না পরিয়ে রাখলে এবং ভালো স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখলে, ডায়াপার জনিত ফুসকুড়ি প্রতিরোধ করতে পারেন। ব্যাকটেরিয়া আর্দ্র জায়গায় সংখ্যাবৃদ্ধি করে। ডায়পার এলাকাটি যেন পরিষ্কার এবং শুষ্ক থাকে তা নিশ্চিত করুন। একটি ঔষধযুক্ত শিশু নিরাপদ ডায়াপার ফুসকুড়ি ক্রিম ব্যবহার করুন।

6. মালিশ

প্রতিদিন বাচ্চাকে মালিশ করুন কারণ এটি শিশুর পিঠের পেশীগুলির বিকাশে, মেরুদণ্ডের থোরাসিক বক্রতা গঠনে এবং তার সামগ্রিক বৃদ্ধিকে উন্নীত করতে সহায়তা করে। একটি হালকা মালিশ শুধুমাত্র আপনার শিশুকে শান্তই করে না, সাথে ভালো ঘুমাতেও সাহায্য করতে পারে। এটা আপনার স্নেহ ও যত্ন প্রকাশ করার এবং আপনার শিশুর সাথে বন্ধন তৈরি করার একটি চমৎকার উপায়। খাবারের অব্যবহিত পর আপনার বাচ্চাকে মালিশ করা এড়িয়ে চলুন।

7. দাঁত বেরোনো

আপনার শিশুর এই পর্যায়ে দাঁত বেরোনো শুরু হতে পারে। তার খুব লাল পড়তে পারে এবং সে অনেক জিনিস চিবাতে শুরু করতে পারে। সে তার হাতের কাছে যা পাবে তা-ই মুখে পুরে দেওয়ারও চেষ্টা করতে পারে। সুতরাং আপনি আপনার বাচ্চাকে খেলনা দেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করুন যাতে সেগুলি শিশুর গলায় আটকে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি না করে। আপনি আপনার শিশুকে নরম টিথিং রিং-ও দিতে পারেন।

8.গাড়ীর নিরাপত্তা

সর্বদা আপনার বাচ্চাকে একটি শিশুর-গাড়ীর-সীটে সাবধানে বসান এবং গাড়িতে ভ্রমণ করার সময় তাকে পিছনের আসনে রাখুন। আপনি আপনার বাচ্চাকে গাড়ীতে একা এবং অসহায় অবস্থায় ছেড়ে রাখবেন না।

যখন একটি শিশুর যত্ন নেওয়ার কথা আসে, তখন তার মায়ের প্রবৃত্তি কখনও ভুল করে না। সুতরাং, আপনার প্রবৃত্তি এবং শিশুর কাছ থেকে পাওয়া সংকেতগুলি আপনাকে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার জন্য গাইড করতে পারে। যদি আপনার মনে হয় যে কোথাও কোনো সমস্যা আছে, তাহলে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ চাইতে লজ্জিত হবেন না।