খাবার হল একটা অভিজ্ঞতা;আপনি প্রায়ই আপনার খাবার খাওয়ার প্রতি আপনার বাচ্চার কৌতুহল দেখতে থাকেন।সাধারণ পিউরির স্বাদ নেওয়ার পরেও আপনি তাদের মধ্যে ক্ষুধা লক্ষ্য করতে পারেন।কিন্তু এই ভারতীয় জটিল খাবারের রেসিপিতে পরিবর্তন করার ভয় হল এটাই যে তাদের পাচন তন্ত্র সেগুলিকে সহ্য করতে পারবে কিনা।সুতরাং ভারতীয় খাবার গুলির সরলকৃত পদ্ধতির সাথেই তাদের পরিচয় করানো অপরিহার্য।
12 মাস বয়সী শিশুর জন্য ভারতীয় খাবারের রেসিপি
এখানে আমাদের সযত্নে বাছাই করা রেসিপি গুলি এক বছর বয়সী শিশুর পেটে সহ্য করানোর জন্য সংশোধন করা হয়েছে।খাবারের মূল কোর্সের বিভিন্ন বিভাগ থেকে নির্বাচন গুলি করা হয়েছে যাতে আপনি কেবল সমগ্র পুষ্টিই পান না তাতে এমন কিছু জিনিসও আছে যা যেকোনো শিশুর খাওয়ার সময়সূচীর মাপসই করা হয়েছে।1 বছর বয়সী ভারতীয় শিশুর জন্য সবথেকে ভাল জলখাবারের কিছু রেসিপি এবং আকর্ষণীয় কিছু দক্ষিণ ভারতীয় শিশু খাদ্যের রেসিপির কিছু সরলীকরণ করা হয়েছে 1 বছর বয়সী শিশুদের সাথে সেই ভারতীয় রন্ধন প্রণালীর সহজেই পরিচয় করানোর জন্য।
মনে রাখবেন
- দুধ হতে পারে ডেয়ারি,স্তন দুধ অথবা ফরমূলা,স্তন দুধ গরম করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যক।
- সম্ভব হলে বাড়িতেই উপকরণ তৈরী করুন।ক্যানজাত সামগ্রী কেনা এড়িয়ে চলুন।
- যদি আপনার বাচ্চা এখনও 12 মাস বয়সের না হয়ে থাকে তবে মিষ্টির বিকল্প হিসেবে মধু ব্যবহার করবেন না।
1.পোরিজ বা জাউ
এটি হল অনেক পছন্দের প্রথমের দিকের একটি,এর তরল নরম ঘনত্ব এটিকে সহজে খেতে পারার উপযোগী করে তোলে।
ক) রাগির পোরিজ বা জাউ
এটি উচ্চ তন্তু সমৃদ্ধ এবং হাড়ের ঘনত্ব ও পেশী গঠনে সাহায্য করে।
উপকরণঃ
- রাগির দানা-3-4 টেবিল চামচ
- জল
- দুধ+গুড় অথবা
- দই+লবণ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- ধুয়ে,সূর্যের তাপে শুকিয়ে রাখা রাগির দানা সারা রাত ধরে ভিজিয়ে রাখুন।
- জল দিয়ে এগুলিকে পিষে সাদা চটচটে একটা পেষ্ট বানান।
- যথেষ্ট পরিমাণে জল দিয়ে এটিকে ফোটান।
- এটা ঘন হয়ে গেলে আগুনের শিখা নিভিয়ে দিন,এটিকে মিষ্টি স্বাদ দেওয়ার জন্য এর সাথে কিছু পরিমাণ দুধ এবং গুড় যোগ করুন।
- বিকল্প হিসাবে এটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে এর সাথে দই এবং লবণ মেশান।
খ) রাভার পোরিজ বা জাউ
অন্যান্য পোরিজ বা জাউয়ের থেকে একটা ভাল বিরতি পাওয়া হল রাভা খাওয়া।এটি মিষ্টি স্বাদের এবং সহজেই হজম হয়।
উপকরণঃ
- রাভা-2 টেবিল চামচ
- জল ½ কাপ
- ঘি-1 অথবা 2 চা চামচ
- গুড়–স্বাদের জন্য
- দুধ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- কম আঁচে ঘি দিয়ে রাভা কে ভাজুন,তবে বাদামী করবেন না।যখন গন্ধ ছাড়বে আগুন নিভিয়ে দিন।একপাশে সরিয়ে রাখুন।
- জল ফোটান এবং তার মধ্যে ধীরে ধীরে ভাজা রাভা যোগ করুন।যখন বেশীর ভাগ জল শুষে যাবে এবং মিশ্রণটি ঘন হয়ে উঠবে আগুন নিভিয়ে দিন।
- 10 মিনিট পরে সম্পূর্ণ রূপে ঘন হয়ে ওঠা উপমার সাথে গুড় এবং দুধ যোগ করুন।ততক্ষন যোগ করতে থাকুন যতক্ষন না এটি পোরিজ বা জাউয়ের ঘনত্বে আসে।
2. ভাত
যেকোনো উপকরণের স্বাদই ভাতের সাথে সহজেই মিশে যায়,এটি সহজে হজম হয়ে যায়।
ক) চটচটে কদলী ভাত
এটি সবচেয়ে সহজে গিলে ফেলা যায়,এটি গ্রাস করার গতি দেখে আপনি বিস্মিত হবেন।
উপকরণঃ
- চাল– 1 কাপ
- নারকেলের দুধ(মিশ্রিত)- দুই কাপ
- গুড়– বড় 1 চামচ
- কলা– 2 টো মাঝারি অথবা ছোট কলা
- নারকেলের ঘন দুধ– 2 টেবিল চামচ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- চাল গুলিকে সারা রাত ধরে মিশ্রিত নারকেলের দুধের মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন।
- বেশি পরিমানে জল দিয়ে প্রেসার কুকারে বেশ কয়েকটি সিটি দিয়ে রান্না করুন।
- গুড়ের সাথে নারকেলের ঘন দুধ গরম করুন এবং তার মধ্যে ভাত গুলি মেশান।
- পরিবেশনের বাটিতে কলাকে চটকে নিন এবং তার মধ্যে মিষ্টি ভাতটি যোগ করুন।
খ) কাড়া পংগল
এটি বিভিন্ন স্বাদের খুব ভাল একটি খাবার।
উপকরণঃ
- চাল-1 কাপ
- মুগ ডাল– ½ কাপ
- জিরা-1 চা চামচ
- ঘি-1 চা চামচ
- কারি পাতা– কিছুটা
- আদা–এক বড় চিমটি
- মরিচ–স্বাদের জন্য (ইচ্ছে হলে)
- লবণ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- চাল এবং মুগের ডালের মিশ্রণটিকে ভাল ভাবে ধুয়ে আধ ঘণ্টার জন্য ভিজিয়া রাখুন।
- একটা প্রেসার কুকারের মধ্যে ঘি গরম করে তার মধ্যে জিরে দিন।
- এক মিনিটের জন্য আদা এবং কারি পাতা গুলিকে সাঁতলে নিন।
- এর সাথে চাল–ডালের মিশ্রণটি এবং 5 কাপ জল যোগ করুন।
- লবণ এবং মরিচ যোগ করুন।
পরিবেশন করার আগে কারি পাতা গুলিকে বের করে নিয়ে খাবারটিকে পিষে চটকে নিন।
3. স্যুপ
স্বাস্থ্যকর একটা খাবার যেটি অসুস্থ থাকার সময় খাওয়া যেতে পারে।
ক) টমেটো এবং গাজরের স্যুপ
এটি ভিটামিনে পূর্ণ একটা দারুন খাবার।
উপকরণঃ
- গাজর-1 টা
- টমেটো-1 টা
- পিঁয়াজ–মিহি করে কুঁচানো 2 টেবিল চামচ
- রসুন–মিহি করে কুঁচানো 1 টা ছোটো কোয়া
- মাখন-1 চা চামচ
- গোটা জিরে– ¼ চা চামচ
- মরিচ গুড়ো–এক চিমটি
- জল-1.5 কাপ
- লবণ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- সমস্ত সবজি গুলিকে খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে সেগুলিকে ছোট ছোট কিউবের আকারে কাটুন।
- প্রেসার কুকারের মধ্যে মাখন নিয়ে গরম করে তার সাথে গোটা জিরে যোগ করুন।
- পিঁয়াজ এবং রসুন গুলিকে ভালোভাবে না ভাজা পর্যন্ত সাঁতলাতে থাকুন
- যথেষ্ট পরিমাণে জলের সাথে গাজর এবং টমেটো গুলিকে এবং এছাড়াও এর সাথে নুন এবং মরিচকেও যোগ করুন।
- এবার এটিকে সেদ্ধ হতে দিন।
- মাঝারি আঁচে প্রেসার কুকারে এটিকে 3 টি সিটি দিয়ে রান্না করুন।
- পিষে এবং ছেঁকে নিন।
- যদি আপনি ছেঁকে না নিতে চান তবে মনে রাখবেন টমেটো গুলিকে ভালোভাবে খোসা ছাড়িয়ে নিতে।
- ঈষৎ উষ্ণ পরিবেশন করুন।
খ) চিকেন স্যুপ
বিশেষ করে দারুণ মুখোরোচক যখন ঠান্ডার সময় সেগুলো দেওয়া হয়।
উপকরণঃ
- চিকেন বা মুরগির মাংস-2 টুকরো মিহি করে কুঁচানো
- পিঁয়াজ–ছোট 1টা মিহি করে কুঁচানো
- সবজি(গাজর,আলু)-2 টেবিল চামচ ছোট কিউবের আকারে কেটে
- চিকেন স্টক/জল-1 কাপ
- নুন
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- একটি প্রেসার কুকারের মধ্যে মাখন নিয়ে তার মধ্যে কুঁচানো পিঁয়াজ গুলিকে দিয়ে তার রঙ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত সেটিকে সাঁতলাতে থাকুন।
- এরপর এর সাথে চিকেনের পাশাপাশি সবজি ও জলও যোগ করুন।
- প্রেসার কুকারে 2 টো সিটি দিন।
- মিশ্রণটিকে ঠাণ্ডা হতে দিন এবং তাপর সেটিকে পিষে নিন ও ঈষৎ উষ্ণ পরিবেশন করুন।
4. কারী
এগুলি স্বাদে ভরপুর হয়,ভারতীয় ভাত বা রুটির সাথে এগুলি পরিবেশন করা সবচেয়ে ভাল
ক)মাছের কারী
শিশুর সাথে মাছ এবং মশলার পরিচয় করানোর অন্যতম ভাল একটা উপায়।
উপকরণঃ
- নারকেল তেল–বড় 1 চামচ
- বড় মাপের পিঁয়াজ-1 টা মিহি করে কুঁচানো
- রসুনের কোঁয়া-1 টা মিহি করে কুঁচানো
- আদা-1 চা চামচ মিহি করে কুঁচানো
- টমেটো-2 টো মিহি করে কুঁচানো
- সাদা মাংসল মাছ(কাঁটা যুক্ত মাছ এড়িয়ে চলুন)ছাল বাদ দিয়ে-125 গ্রাম
- দই-30 মিলি
- গরম মশলা-1 চা চামচ
- স্বাদের জন্য লঙ্কার গুড়া বা মরিচ গুড়া (লঙ্কা গুড়া থেকে সাবধান থাকবেন,এটিকে খুব বেশী মশলা যুক্ত করবেন না)
- জল-200 মিলি
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- একটি ফ্রাইং প্যানের মধ্যে তেল গরম করে তার মধ্যে আদা,পিঁয়াজ,রসুন নিয়ে সেগুলিকে সাঁতলাতে থাকুন তার রঙ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত।
- এর সাথে মরিচ বা লঙ্কার গুড়ো মেশান।
- এর সাথে টমেটো এবং জল যোগ করে সেটিকে ফুটতে দিন।
- এরপর কয়েক মিনিটের জন্য তার আঁচ কমিয়ে দিন।
- এর সাথে মাছ যোগ করুন এবং ঢাকা দিয়ে 2 মিনিটের জন্য রান্না হতে দিন।এরেপর এর সাথে দই এবং ধনে যোগ করে আরও এক মিনিটের জন্য রান্না করুন।
- ভাত রান্না করে মাছের কারীর সাথে পরিবেশন করুন।
- স্বাদের জন্য এর সাথে গরম মশলা যোগ করুন।
- ইচ্ছে হলে এটি টমেটো,পিঁয়াজ এবং ধনের স্যালাডের সাথে পরিবেশন করুন।
খ) ডাল কারী
ডাল হল কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনের ভাল সমন্বয়।
উপকরণঃ
- মুগ ডাল-1/2 কাপ
- অরহর ডাল-1/2 কাপ
- হলুদ-1 চা চামচ
- ঘি-2 চা চামচ
- জিরা-1 চা চামচ
- জল-3 কাপ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- ভাল করে ডাল ধুয়ে নিয়ে তার সাথে হলুদ এবং নুন মেশান
- প্রেসার কুকারে 3 কাপ জল দিয়ে রান্না করুন।
- ঘিয়ের মধ্যে জিরা ভেজে নিয়ে তা ডালের সাথে যোগ করুন।
5. ডিমের পদ
ডিম হল জটিল খাদ্যের একটা ভাল সূচনা।
ক) ডিম ভুরজি
এটি খুব ভাল একটা জলখাবার।এমনকি এটা দই ভাতের সাথেও দেওয়া যেতে পারে।
উপকরণঃ
- ডিম-1 টা
- এক চিমটি মরিচ গুড়ো
- 3 টেবিল চামচ ফোটানো দুধ
- চীজ-1 চা চামচ কুড়ানো
- মাখন-1/2 চা চামচ
- লবণ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- দুধের সাথে ডিমকে ভাল করে ফ্যাটান।
- কিছুটা মাখন গলিয়ে নিয়ে সেটি ঐ ফ্যাটানো ডিমের উপরে দিন।\
- চীজ,মরিচ এবং নুন মেশান।
- গ্যাস নেভানোর আগে পর্যন্ত সমানে নাড়তে থাকুন।
খ) ডিম পাউরুটির টোস্ট
ডিমের নরম ভাব পাউরুটির শুকনো ভাবকে কমিয়ে দেয়।
উপকরণঃ
- ডিম-1 টা ফ্যাটানো
- এক চিমটি মরিচ গুড়ো ইচ্ছে হলে
- পাউরুটি-2 স্লাইস
- মাখন-1 চা চামচ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- পাউরুটির শেষ প্রান্ত গুলি কেটে নিন।
- ফ্যাটানো ডিমের উপর লবণ এবং মরিচ গুড়ো ছড়িয়ে দিন।
- একটা চাটুতে মাখন গরম করুন।
- পাউরুটি গুলিকে ডিমের মধ্যে ডুবান এবং পাউরুটির উভয় পাশেই ভাল করে ডিমের আস্তরণ দিন এবং এবার এটিকে গরম চাটুতে স্থানান্তরিত করুন।
- এটিকে টোকা মেরে দেখার আগে যতক্ষন না এটি সোনালী বাদামী রঙের হয় রান্না করুন।
- পাউরুটিটির অপর পাশের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপা্রের পুনরাবৃত্তি করুন।
6. চটপট করা যায় এমন ধোসা
ধোসা হল দক্ষিণ ভারতীয় জলখাবারের মধ্য প্রধান একটা খাদ্য।
ক) রাভার বা সুজির ধোসা
ধোসার এই সংস্করণটিতে এটিকে গাঁজানোর কোন প্রয়োজন নেই যেহেতু এটি শিশুদের খাওয়ানো হয় তাই এর সাথে সবজি যোগ করুন।
উপকরণঃ
- সুজি/রাভা-1/2 কাপ
- দই-1/2 কাপ
- চাল গুড়ো-1/2 কাপ
- জল-3-4 কাপ
- জিরা-1 চা চামচ
- লবণ
- ঘি
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- রাভা বা সুজি,চাল গুড়ো,নুন এবং জিরা সব একসাথে মেশান।
- এর সাথে সাবধানে দই যোগ করুন এবং অল্প পরিমাণে জলও যোগ করুন।এটাকে দলা পাকাতে দেবেন না।
- এর ঘনত্ব হওয়া উচিত ঘন বাটার মিল্কের মত।ঘন নয় কিন্তু খুব পাতলাও নয়।
- চাটুটি ভাল করে গরম করুন এবং ধোসার মিশ্রণটিকে চাটুর বাইরের দিক থেকে ভিতরের দিক পর্যন্ত ভালভাবে ছড়িয়ে দিন।
- ধোসার মধ্যে ছিদ্র থাকবে,ঢাকা দেওয়ার আগে এক চা চামচ ঘি গোল করে ঘুরিয়ে এর উপর দিয়ে দিন।
- যখন কুড়মুড়ে হয়ে যাবে এটিকে তুলে নিন।
খ) গমের ধোসা
গমের সাথে পরিচয় করানোর এটা সবথেকে ভাল একটা উপায়।
উপকরণঃ
- গমের আটা– 2 কাপ
- চাল গুড়ো– 1/4 কাপ
- পিঁয়াজ– 1 মিহি করে কুঁচানো
- আদা–বড় 1 চামচ ভাল ভাবে কুঁচানো
- জিরা-1/2 চা চামচ
- জল-4 কাপ
- নুন
- ঘি
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- গমের আটা,চাল গুড়ো,গোটা জিরে,কুঁচানো পিঁয়াজ, আদা এবং নুন সব একসাথে মেশান।
- সামান্য জল যোগ করে ভাল করে মেশান।এর ব্যাটারটিও রাভা বা সুজির ধোসার মতই অনুরূপ হবে।
- নন–স্টিক চাটুটিকে গরম করে তার বাইরের দিক থেকে ভিতরের দিক পর্যন্ত পুরো জায়গাটায় ভালভাবে ব্যাটারটিকে ছড়িয়ে দিন।
- এটি ফাঁপা ও বাদামী রঙের না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
7. মিষ্টান্ন
চিনি সমৃদ্ধ মিষ্টান্ন গুলি শক্তি জোগায় এবং মেজাজের উন্নতি ঘটায়।
ক) মিষ্টি পোঙ্গাল
দক্ষিণ ভারতের যেকোনো অনুষ্ঠানেই এটি অবশ্যই থাকে।
উপকরণঃ
- চাল-1/2 কাপ
- মুগ ডাল-1-1.5 টেবিল চামচ
- গুড়-1/2 কাপ
- এক চিমটি লবণ
- জল-2.5 কাপ
- এলাচ গুড়ো-1/4 চা চামচ
- ঘি-4 চা চামচ
- দুধ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- 1/2 কাপ জলের মধ্যে গুড়টিকে গুলে সম্পূর্ণ রূপে গলিয়ে নিন।তরলটিকে ছেঁকে নিয়ে একপাশে রেখে দিন।
- একটা প্রেসার কুকারের মধ্যে ঘি গরম করে তার মধ্যে মুগ ডালটিকে ভেজে নিন।এর সাথে ধুয়ে রাখা ভিজানো চাল যোগ করে জল মেশান।
- 4 টে সিটি দেওয়া পর্যন্ত প্রেসার কুকারে এটি রান্না করুন।
- কুকারের প্রেসারটা কমে গেলে সেটির ঢাকনা খুলে নিয়ে মিশ্রণটির সাথে গুড়ের জলের পাশাপাশি ঘি,নুন এবং এলাচ গুড়োও মিশিয়ে নিন।ঘনত্ব অনুযায়ী এর সাথে 1/2 কাপ দুধ যোগ করুন।
- কয়েক মিনিটের জন্য রান্না করুন এবং অনবরত নাড়তে থাকুন।
খ) নারকেল অথবা এলানীর পায়েস
একটা অন্য ধরনের মিষ্টি যা গ্রীষ্ম কালের জন্য সব থেকে ভাল।
উপকরণঃ
- নরম নারকেলের জল-1 কাপ
- নরম নারকেলের শাঁস-1 কাপ
- দুধ-2 কাপ
- গুড়-1/4 কাপ
- এলাচ গুড়ো-1/2 চা চামচ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- নরম নারকেলের শাঁসটিকে ভালোভাবে পিষে নিয়ে তার সাথে নরম নারকেলের জল যোগ করে সেটিকে শীতলীকরণ করুন।
- দুধ ও গুড়কে জাল দিয়ে ঘন করুন এবং তার সাথে এলাচ গুড়ো মিশিয়ে নিন।
- এই ঘন দুধটিকে নরম নারকেলের শাঁসের উপর ঢেলে সেটিকে ঠাণ্ডা হতে দিন।
গ) অ্যারারুট পুডিং
এটি এমন এক ধরণের মিষ্টি যা কোষ্ঠকাঠিন্যকে দূরে ঠেলে রাখার উপায় হিসেবে কাজ করে।
উপকরণঃ
- অ্যারারুট পাউডার-1/2 কাপ
- গুড়-2 মাঝারি মাপের
- এলাচ গুড়ো-1/4 চা চামচ
কীভাবে রান্না করবেনঃ
- 10 মিনিটের জন্য অ্যারারুটকে জলের মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন এবং এর ধোয়া নোংরা জলটি ফেলে দিন।
- সামান্য জল যোগ করে এর একটা পাতলা পেষ্ট বানান।
- নারকেলের দুধ,গুড় এবং এলাচ গুড়োকে ভালভাবে ঘেঁটে নিন।
- এটিকে একটা প্যানে করে ফোটান এবং অল্প অল্প করে অ্যারারুটের পেষ্টটিকে এর সাথে যোগ করুন অনবরত নাড়তে নাড়তে।
- যতক্ষন না পেষ্টটি ঘন হয়ে কাস্টার্ডের ঘনত্বে আসে সমানে নাড়িয়ে যান।
- একটা বড় বাটিতে ঘি বা মাখনের প্রলেপ লাগিয়ে তার মধ্যে মিশ্রণটিকে ঢেলে দিন।
- এবার এটাকে ঠাণ্ডা হতে দিন।
আপনি সবসময়ে উপকরণ গুলিকে যোগ করতে বা বাদ দিতে পারেন আপনার অথবা আপনার বাচ্চার স্বাদ অনুযায়ী।এক বছর বয়সী শিশুর জন্য আমিষ এবং নিরামিষ সকল ভারতীয় রেসিপি গুলিই সহজে পরিবর্তন করে যেতে পারে।উপরের সকল কিছুই অত্যন্ত চাপ নিয়ে রান্না করবেন না,রান্না করুন ভালোবেসে, আনন্দের এবং ইতিবাচকতার সাথে।শিশুরা খাবারের মধ্যে যতটা না স্বাদ বুঝতে পারে তার থেকে অনেক বেশী স্বাদ তারা অনুভব করতে পারে আপনার হাতের ছোঁয়ায়।