In this Article
আপনার ছোট্ট শিশুটি ক্রমশ বড় হয়ে ওঠার সাথে সাথে তার খাদ্যাভ্যাসও দ্রুত পরিবর্তিত হতে থাকে।প্রথম দুই বছরের মধ্যে,আপনার সন্তানের দাঁত উঠতে শুরু করবে,তরল থেকে বা তরলের পাশাপাশি শক্ত খাবারে স্থানান্তরিত হবে এবং খাবার সময়ে পরিবারের সকলের সাথে একসাথে বসে খাওয়ার জন্য কম–বেশি অংশগ্রহণ করবে।
আপনার টলটলায়মান ছোট্ট শিশুটির খাবার সময়ের পরিবর্তন কীভাবে হয়?
আপনার ছোট্টটির দাঁত ওঠার সাথে সাথে সে শক্ত খাবার খেতে শুরু করবে।এরা খুবই অধৈর্য্য হয়ে থাকে এবং এমনকি খাওয়ার সময় প্রায়ই উঠে উঠে পালায়।
দেড় বছর (18 মাস)বয়সী শিশুরা সাধারণত নিজে নিজে খাওয়ার ক্ষেত্রে একটি চামচকে ধরে সেটি পরিচালনা করতে শেখে।
আর 24 মাসের মধ্যে,আপনার ছোট্টটি নিয়মিত বড়দের উঁচু টেবিলে যোগদান করবে!
আপনার সন্তানের মধ্যে খাওয়ার একটি সুঅভ্যাস গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ
একটি ছোট শিশুর খাওয়ার অভ্যাস এবং রুচি কেবল তখন থেকেই প্রতিষ্ঠিত হয় যখন সে প্রথম শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে।আর এটি হল সেই সময় যখন মা–বাবাদের তাদের সন্তানের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা চালানো উচিত।
- অতিরিক্ত তেল–মশলা যুক্ত ফাস্ট ফুড এবং মিষ্টি গোলা কার্বনযুক্ত পানীয়গুলির সাথে আপনার ছোট্টটির পরিচয় ঘটানোর ক্ষেত্রে বিলম্ব করুন এবং তাজা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যগুলিকে বেছে নিয়ে তার একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়তা করুন।
- খাওয়ার নির্দিষ্ট সময়কালের কঠোর অনুশাসনের মধ্যে থাকুন।খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট রুটিন প্রতিষ্ঠা করলে তা আপনার শিশুর প্রত্যহ সঠিক সময়ে ক্ষুধার্ত হয়ে ওঠার মাধ্যমে তাকে একটি নির্দিষ্ট খাওয়ার সময় গড়ে তোলার দিকে পরিচালিত করবে।
- খাওয়ার সময়ের ঠিক আগের মুহূর্তেই আপনার ছোট্টটিকে ভারী জলখাবার খাওয়ানো কিম্বা প্রচুর তরল পান করানো থেকে বিরত থাকুন।
- প্রতিটি খাবার সময় খুব বেশি 20 মিনিটের জন্য স্থায়ী হওয়া উচিত এবং তার বেশি নয়।
2 বছর বয়সী শিশুর জন্য খাদ্য
যদিও একটি সুষম আহার আমাদের জন্য জরুরি,শিশুদের জন্য প্রয়োজন বিস্তৃত পুষ্টির একটি সম্ভার,যা তাদের বেড়ে উঠতে সহায়তা করে।
1. দুগ্ধজাত পণ্য
দুধ,দই এবং পনীর এগুলি সবই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য,আর ক্যালসিয়াম শক্তিশালী হাড় গঠণে সহায়তা করে।যদি কোনওক্ষেত্রে আপনার সন্তান ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে তার ক্যালসিয়াম গ্রহণের ব্যবধানটি পূরণ করতে তার হয়ত ক্যালসিয়ামের পরিপূরক গ্রহণ করার প্রয়োজন হতে পারে।
2. মুরগির মাংস
মুরগির মাংস এবং অন্যান্য অনিরামিষাশী খাদ্যগুলির মধ্যে ভাল পরিমাণে সহজে শোষণযোগ্য আয়রণ থাকে।আয়রণ রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে শক্তি দেয় এবং রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।নিরামিষ খাবারে পাওয়া আয়রণ শরীরের পক্ষে শোষণ করা শক্ত আর তাই প্রয়োজনীয় পরিমাণ পেতে আপনার সন্তানের কমপক্ষে এটির দ্বিগুণ পরিমাণ সেবন করা প্রয়োজন হবে।
3.মাছ
মাছ হল অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিডের (EFA) একটি ভাল উৎস। EFA রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এবং কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেমকে বা হৃদসংবহন তন্ত্রকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে।শাকাহারীদের EFA এর উৎসগুলি যথাযথভাবে প্রতিস্থাপন করতে হবে, কারণ এগুলি দেহের মধ্যে উৎপন্ন হয় না এবং শুধুমাত্র বাহ্যিকভাবেই অর্জন করা যেতে পারে।
4.স্বাস্থ্যকর তেল
শণ বীজ,আখরোট,সয়াবিন এবং অন্যান্য বাদাম এবং সেগুলির তেলের মধ্যে রয়েছে পরিমিত পরিমাণে EFA.
5.গাজর
গাজর ভিটামিন A এর একটি সমৃদ্ধ উৎস হিসেবে পরিচিত।পালং শাক,পাতাকপি এবং অন্যান্য আরও বেশ কিছু সবজির মধ্যেও ভিটামিন A থাকে।আপনার শিশুর খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্যগুলি অন্তর্ভূক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ।ভিটামিন A হাড়ের বিকাশে সহায়তা করে।
6.সাইট্রাস ফল
লেবু এবং কমলাগুলি তাদের মধ্যস্থ ভিটামিন C এর জন্য প্রখ্যাত।ভিটামিন C এর অভাবে স্কার্ভির মত গুরুতর রোগ দেখা দিতে পারে।ভিটামিন C মাড়ি এবং রক্তবাহগুলিকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে এবং আঘাত পাওয়া বা কালশিটে পড়া থেকে নিরাময় হয়ে উঠতে সহায়তা করে।পেয়ারা,আম,কলা,টমেটো এবং পালং শাকের মধ্যেও আবার ভিটামিন C থাকে।
7.সূর্যারশ্মি
যদিও এটি প্রযুক্তিগতভাবে কোনও খাদ্য নয়,এটি হল এমন একটি জিনিস যা দেহ শোষণ করে,সুতরাং বিকাশের ক্ষেত্রে এটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বিবেচনা করে আমরা এটিকেও এই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারি।সূর্যারশ্মি বা রোদ থেকে আমরা যে উপাদানটি লাভ করি তা হল ভিটামিন D.ভিটামিন D একটি শিশুর জন্য অপরিহার্য তার সর্বাপেক্ষা সম্ভাব্য বৃদ্ধি অর্জনের জন্য।ভিটামিন D সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে মাছ এবং দুগ্ধজাত পণ্যগুলি।
8.কলা
হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য এবং মাংস পেশীর কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য দুটি উপাদান হল ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম,আর এই উভয় উপাদানই কলার মধ্যে পাওয়া যায়।এই উপকারি ফলটিকে বিভিন্ন দানা শস্য এবং অন্যান্য খাদ্যগুলির সাথে অন্তর্ভূক্ত করতে পারার কারণে এটিকে একটি অন্যতম প্রধান ফল হিসেবে পরিগণিত করে তুলেছে।
2 বছর বয়সী শিশুর জন্য খাদ্য তালিকা/সময়সূচী
প্রাতঃরাশ |
মাঝ সকাল |
মধ্যাহ্নভোজ |
বিকালের জলখাবার |
নৈশভোজ |
|
রবিবার | তাজা ফল সহযোগে দানা শস্য | এক কাপ দুধ | যেকোনও ডাল দিয়ে প্রস্তুত কারি অথবা ভাত এবং দই | পনীর কাটলেট আর দুধ | মিসি রুটির(ছোলার আটা দিয়ে প্রস্তুত একটি পাঞ্জাবী স্পেশাল ডিশ) সাথে আলু মটর |
সোমবার | ধোসার সাথে মুগ ডালের ছিলা | মরশুমি ফল | রুটির সাথে পাঁচমিশালি সবজির তরকারি | ফ্রুট মিল্কশেক | সয়া চাঙ্ক ফ্রাইয়ের সাথে রুটি |
মঙ্গলবার | টোস্টের সাথে ভালভাবে সেদ্ধ করা ডিম | ভেজিটেবিল স্যুপ | ভেজ বিরিয়ানি আর তার সাথে শসার ফালি | দুধ,বিস্কুট | সবজির খিঁচুড়ি |
বুধবার | ইডলী এবং সাম্বার | চাটনি দিয়ে দুটি ইডলী | আলুর পরোটা,সাথে দই | ফল | ভাত আর সেদ্ধ করা মুরগির মাংস |
বৃহঃস্পতিবার | রাগীর পুডিং আর তার উপর বাদাম কুঁচি ছড়ানো | ফল | ছোলার ডালের খিঁচুড়ি | উপমা | ভেজিটেবিল স্যুপের সাথে দুটি কাটলেট(নিরামিষ কিম্বা অনিরামিষ) |
শুক্রবার | দুধ দিয়ে ওট রান্না করে | পনীর ভুজিয়া | রুটির সাথে ছোলার কারি | ওটের খিঁচুড়ি | ভাত দিয়ে সাম্বার |
শনিবার | সবজির পরোটা | দুধ,বিস্কুট | পনীর পোলাও | সিঙ্গারা | ভেজিটেবিল পোলাও আর তার সাথে দই |
2 বছর বয়সী শিশুর জন্য ঘরে প্রস্তুত কিছু খাবারের রেসিপি
খাদ্য তালিকা থেকে নির্বাচিত কিছু রেসিপির উল্লেখ এখানে করা হল যেগুলির সাথে আপনি হয়ত খুব বেশি পরিচিত নাও হয়ে থাকতে পারেনঃ
1.মুগ ডালের ছিলা
আপনার দিন শুরু করার জন্য একটি শক্তিতে ভরপুর খাবার!
উপকরণ
- 1 কাপ মুগ ডাল
- 1/4 চা–চামচ হলুদ এবং লাল লঙ্কা গুঁড়ো,1/2 চা–চামচ ভাজা জীরে
- স্বাদমত লবণ
- 1/4 কাপ পিঁয়াজ কুঁচি
- 1 চা–চামচ আদা বাটা
- মিহিভাবে কুঁচানো কাঁচা লঙ্কা(নামমাত্র)
- এক চিমটে হিং
- মাখন
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
- সারা রাত ধরে মুগ ডালটিকে জলে ভিজিয়ে রাখুন
- ভিজিয়ে রাখা জলটিকে ছেঁকে নিয়ে পরিমিত জল দিয়ে সেটিকে গ্রাইণ্ডারের মধ্যে ঘুরিয়ে একটি গাঢ় পেস্ট আকারে গড়ে তুলুন–ঠিক ধোসার ব্যাটারের অনুরূপ।
- এবার ব্যাটারের সাথে মশলাগুলি যোগ করে ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
- এর সাথে ফোড়নের মশলা এবং এক চিমটে হিং যোগ করে পুনরায় ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
- এবার সম্পূর্ণ ব্যাটারটিকে 15-20 মিনিটের জন্য একভাবে স্থিরাবস্থায় রেখে দিন।
- একটা নন–স্টিক চাটুতে মাখন নিয়ে গরম করুন,আবার ঠিক যেভাবে আপনি ধোসা বানান সেভাবেই এই ব্যাটারটিকেও ঐ চাটুর উপর ছড়িয়ে দিন।
2.নারকেলের চাটনি
ইডলী,ধোসার সাথে একটি ঐতিহ্যবাহী সঙ্গী!
উপকরণ
- 1/2 কাপ তাজা নারকেল কোড়া
- বড় 2 চামচ ভাজা ছোলার গুঁড়ো
- 1/2 চা–চামচ জীরে
- 2 টি কাঁচা লঙ্কা
- 1 কোয়া রসুন
- 1/4 চা–চামচ সরষে
- 1 টি লালা শুকনো লঙ্কা
- 3/4 চা–চামচ বিউলীর ডাল
- হিং
- কারি পাতা
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
- মশলা ব্যতীত বাকি সকল উপকরণগুলি একত্রে ব্লেন্ড করে নিন।
- ব্লেন্ড করার সময় সেগুলির সাথে জল এবং লবণ(স্বাদের জন্য) যোগ করুন।
- একটি কড়াইয়ে কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে গরম করুন এবং তার মধ্যে মশলাগুলি ফোঁড়ণ দিয়ে সাঁতলে নিন।
- এবার এই ফোঁড়ন ও মশলার সাথে ব্লেন্ড করে রাখা চাটনি যোগ করে একটু নেড়েচেড়ে গ্যাস নিভিয়ে দিন।ইডলী কিম্বা ধোসার সাথে এই চাটনিটি এবার পরিবেশন করুন।
3.ছোলার ডালের খিঁচুড়ি
খুব সামাণ্য মশলা এবং ছোলার প্রাকৃতিক স্বাদের সাথে প্রস্তুত একটি সহজ রেসিপি!
উপকরণ
- 1/2 চা–চামচ লাল লঙ্কা গুঁড়ো
- এক চিমটে হিং
- 1/2 কাপ চাল
- 1/2 কাপ ছোলার ডাল
- তেল,জল,লবণ
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
- রান্না করার পূর্বে চালটিকে ভালভাবে ধুয়ে নিয়ে আধ ঘন্টার জন্য জলে ভিজিয়ে রাখুন।
- ছোলার ডালটি রান্না করার আগে 4-5 ঘন্টার জন্য ভিজিয়ে রাখা উচিত।(যদি সময়ে না কুলায়,তবে আপনি এটিকে গরম জলে 30 মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখতে পারেন)
- একটি প্রেসার কুকারের মধ্যে বড় এক চামচ তেল নিয়ে গরম করে তার মধ্যে মশলাগুলি যোগ করুন।
- এবার এর সাথে ভিজিয়ে রাখা জল ঝরানো ছোলার ডাল যোগ করুন এবং তার সাথে স্বাদের জন্য লবণ মেশান এবং সব একসাথে ভাল করে নেড়ে নিন।
- এর সাথে এক কাপ মত জল মিশিয়ে দুটো হুইসেল না পড়া পর্যন্ত অথবা 6 মিনিটের জন্য প্রেসারে রেখে রান্না করুন।
- প্রেসার কুকারটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তার মধ্যে এবার চালগুলি যোগ করুন এবং 1-2 হুইসেল পড়া অবধি রান্না করুন।
4.পনীরের কাটলেট
সাধারণ ভেজিটেবিল কাটলেটের মধ্যে পনীর প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম সরবরাহে মদত যোগায় এবং তার সাথে আবার কাটলেটের মধ্যেও একটি অনন্য নমনীয় গঠণও প্রদান করে।
উপকরণ
- 2 চিমটে হলুদ গুঁড়ো
- 1/4 চা–চামচ লাল লঙ্কা গুঁড়ো
- 1/2 চা–চামচ ধনে গুঁড়ো
- 1/2 চা–চামচ জীরে গুঁড়ো
- 1/4 চা–চামচ গরম মশলা
- 200 গ্রাম পনীর
- 150 গ্রাম আলু
- 100 গ্রাম গাজর
- 1/3 কাপ কড়াইশুঁটি
- পেস্টঃ 1 টি কাঁচা লঙ্কার
- 2 কোয়া রসুন
- আদার টুকরো– 1 ইঞ্চি
- বড় 3 চামচ চাল গুঁড়ি
- বড় 3 চামচ রাভা
- বড় 3 চামচ তেল
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
- কাঁচা লঙ্কা,আদা,রসুন কেটে নিয়ে গ্রাইন্ডারে্র মধ্য একটি পেস্ট বানিয়ে নিন
- সকল সবজিগুলির খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে টুকরো করে কাটুন এবং তার সাথে 2 কাপ জল দিয়ে 4 টি হুইসেল দেওয়া অবধি প্রেসার কুকারে করে রান্না করে নিন।
- ঠাণ্ডা হলে জল ঝরিয়ে নিয়ে সেদ্ধ করা সবজিগুলিকে একটি বড় বাটিতে ঢেলে একসাথে চটকে মিশিয়ে নিন।
- এবার চটকে মিশিয়ে নেওয়া পেস্টটির সাথে মশলাগুলি যোগ করে আবার ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
- এর সাথে এরপর পনীর যোগ করুন(পনীরটি অবশ্যই ছোট ছোট টুকরো বা ঝিরি ঝিরি করে কুড়ানো হওয়া উচিত)।
- এরপর এর সাথে বড় 3 চামচ চাল গুঁড়ো, স্বাদের জন্য লবণ যোগ করে পুনরায় সব একসাথে ভাল করে মিশিয়ে নিন
- এবার এই মিশ্রণের থেকে অল্প পরিমাণ নিয়ে তাকে প্যাটিসের আকার দিন।
- সেগুলিকে এবার রাভার প্রলেপ দিয়ে একটি অগভীর কড়াইয়ে ভাজতে থাকুন যতক্ষণ না উভয় পাশই সোনালী বাদামী বর্ণ না হয়।ভাজা হয়ে গেলে কাটলেটটি কেচাপ বা চাটনির সাথে গরম গরম পরিবেশন করুন।
5.সয়া চাঙ্ক ফ্রাই
এটি একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু খাদ্য পদ যেটি তৈরী করাও সহজ।এটি ভাত,রুটি উভয়ের সাথেই দারুণভাবে চলে!
উপকরণ
- 1/2 কাপ সয়াবিনের খণ্ড
- 2 টি পিঁয়াজ,ঝিরি ঝিরি করে কাটা
- 2 টি কাঁচা লঙ্কা,চেরা
- আদার একটি বড় টুকরো,পাতলা সরু সরু টুকরো করে কাটা
- 4 কোয়া রসুন,কুঁচানো
- বড় 1/2 চামচ গরম মশলা
- বড় 1/2 চামচ চাট মশলা
- 1/2 চা–চামচ লাল লঙ্কা গুঁড়ো
- 2 টি টমেটো,মিহি করে কাটা
- ধনে পাতা
- বড় 2 চামচ তেল
কীভাবে প্রস্তুত করবেন
- 20 মিনিটের জন্য গরম জলের মধ্যে সয়াবিনের টুকরোগুলিকে ডুবিয়ে রাখুন।
- একটা কড়াইয়ে তেল গরম করে তার মধ্যে পিঁয়াজ কাটাগুলি সাঁতলে নিন।
- পিঁয়াজ কুঁচিগুলি সোনালী বাদামী বর্ণ হয়ে গেলে,তার সাথে আদা এবং রসুন কুঁচিগুলি যোগ করুন।
- এরপর পর পর কাঁচা লঙ্কা,টমেটো যোগ করুন
- এর সাথে মশলাগুলি যোগ করে ভালভাবে মিশিয়ে রান্না করুন, মিশ্রণটি রান্না হয়ে গেলে গ্যাসটি নিভিয়ে নিন।
- এখন সয়াবিনের জলটিকে ঝরিয়ে নিন(ভালভাবে জল ঝরানোর জন্য একটি ঝাঁঝরি ব্যবহারের দ্বারা আপনি সেগুলিকে ভালভাবে চিপে নিতে পারেন)।
- সয়াবিনের খণ্ডগুলি এবার মিশ্রণটির সাথে মিশিয়ে পুনরায় সেগুলিকে রান্না করুন।
- স্বাদের জন্য লবণ যোগ করুন এবং কড়াইয়ের উপকরণগুলির সাথে সম্পূর্ণরূপে মিশিয়ে নিন যাতে সয়াবিনের খণ্ডগুলির গায়ে ভালভাবে মশলা লেগে যেতে পারে(আপনি আবার এর সাথে সামাণ্য লেবুর রসও যোগ করতে পারেন টক ভাবের একটা খাট্টা স্বাদ দেওয়ার জন্য)।
- সয়াবিনের টুকরোগুলি বাদামী বর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কড়াইয়ের মধ্যে করে সেগুলিকে রান্না করুন।
- রান্না হয়ে গেলে গ্যাস নিভিয়ে দিন এবং সূক্ষ্ম ভাবে কাটা ধনে পাতা সহযোগে সেটিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলে গরম গরম পরিবেশন করুন।
খাওয়ানোর পরামর্শগুলি
- যখন 2 বছর বয়সী শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য সরবরাহ করা হয়,তখন তাদের খাওয়ানোর পরিমাণগুলির উপর কোনও স্থির মাপ থাকে না।এটি এক শিশুর থেকে অন্য শিশুর ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন দিন ও খাওয়ার সময়ের মধ্যে পরিবর্তিত হবে।
- একটি 2 বছর বয়সী শিশুর খাবারের প্রয়োজনীয়তায় কখনই কৃত্রিম পরিপূরক অন্তর্ভূক্ত করা ঠিক নয়।
- একটি 2 বছর বয়সী শিশুর জন্য ভারতীয় খাদ্য রেসিপিগুলি মশলাযুক্ত হতে পারে।আপনার শিশু যদি এগুলি খাওয়ার ব্যাপারে ঘ্যান ঘ্যান করতে থাকে,আপনি সেগুলিতে কিছু মশলার পরিমাণ বিশেষ করে লাল লঙ্কা গুঁড়ো কমিয়ে তাদের সেগুলি খেতে দিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
- প্রতিবার খাওয়ানোর আগে আপনার বাচ্চাকে জানান দিন।এটিতে তারা খাওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করে এবং অনেক ক্ষেত্রে তা তাদের ক্ষিদে বাড়াতে সাহায্য করে।
- খাবার সময় আপনার শিশুটি খাবারের জায়গায় আসার সময় আপনি তার খাবারটিকে প্রস্তুত করুন এবং প্লেটে করে তার খাবারটিকে সাজিয়ে দিন।
- খাদ্যাভ্যাসটি গড়ে তোলার সময় আপনার ছোট্টটিকে খাওয়া নিয়ে কখনও শাস্তি কিম্বা পুরস্কৃত করবেন না কারণ পরে এটি তার খাওয়ার ব্যাপারে একটি সমস্যাজনক মনোভাব গড়ে তুলতে পারে এবং খাবারের সাথে আপনার বাচ্চার সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে।
- খাওয়ার সময় আপনার ছোট্টটিকে টেলিভিশন দেখার অনুমতি দেবেন না,কারণ তা না হলে খাবারের প্রতি তার মনোযোগ হারাবে,যেটি একদমই ঠিক নয়।এর পরিবর্তে বরং আপনি তার সাথে কথা বলুন এবং পরিবারের সকল সদস্যের সাথে আলাপচারিতায় তাকে অন্তর্ভূক্ত করুন।
যেগুলি তাজা এবং কোনওরকম প্রিজারভেটিভ যুক্ত নয় এমন ধরণের পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ করার ক্ষেত্রে অনেকেই আবার খুব বেশি প্রয়াস চালাতে থাকেন,কিন্তু সঠিক প্রেরণার সাথে করলে এটি কোনও কঠিণ কাজই নয় বরং একটি অভ্যাস হয়ে উঠতে পারে!
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ
- অ্যালার্জির দিকে দৃষ্টি রাখুন।আপনার সন্তান কিছু নির্দিষ্ট বাদাম,দানা শস্য কিম্বা দুগ্ধজাত পণ্যের প্রতি অ্যালার্জিপ্রবণ হয়ে থাকতে পারে।এইসকল খাদ্যগুলি এড়িয়ে চলা এবং অ্যালার্জির ব্যাপারে আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে আলোচনা করে পরামর্শ নেওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করুন।
- যখন আপনার ছোট্টটির সাথে নতুন খাদ্যের পরিচয় করাবেন তখন একবারে একটি নতুন খাদ্যের সাথেই তার পরিচয় করানোর ব্যাপারটি আপনার নিশ্চিত করা উচিত,কারণ এর ফলে আপনার শিশু সেই খাদ্যটির প্রতি অ্যালার্জিক কিনা তা চিহ্নিত করতে সহজ হবে এবং এটি আবার আপনার শিশুর খাদ্য পছন্দগুলি বুঝতে পারার ক্ষেত্রেও আপনার সহায়ক হবে।
- আপনার শিশুটি যদি ডায়রিয়ায় ভুগে থাকে,তাকে পুরোপুরিভাবে খাওয়ানো বন্ধ করে দেবেন না।এ ব্যাপারে আপনার ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন এবং তাকে এমন ধরণের খাবারগুলি খাওয়ান যেগুলি পুষ্টিকর এবং ডায়রিয়াও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
- জোর করে আপনার বাচ্চাকে খাওয়াবেন না।ছোট শিশুরা খাওয়ার ব্যাপারে খুঁতখুঁতে এবং খেয়ালী হতে পারে,ধৈর্য্য রাখুন এবং কখন তার প্রয়োজন মত যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়া সম্পন্ন হয়েছে বা হচ্ছে, তা আপনি জানতে এবং বুঝতে চেষ্টা করুন।